দক্ষিণ কোরিয়ায় পরবর্তী মাসে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিকে প্রতিযোগী ও চিয়ারলিডার পাঠাতে রাজি হয়েছে উত্তর কোরিয়া। আজ মঙ্গলবার দুই কোরিয়ার মুখোমুখি আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বৈঠকের প্রথমদিন আলোচনা শেষে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মন্ত্রী চুন হায়-সাং জানান, উত্তর কোরিয়ার পাঠানো দলে শিল্পী ও সংবাদকর্মীও থাকবে। ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই অলিম্পিকের উদ্বোধনী ও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে দুই কোরিয়ার একসাথে মার্চ করার প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। উল্লেখ্য, দুই কোরিয়া এর আগে সিডনি (২০০০) ও এথেন্সে (২০০৪) অনুষ্ঠিত অলিম্পিক এবং টুরিনে অনুষ্ঠিত (২০০৬) শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী ও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে একসাথে মার্চ করেছে।
উত্তর কোরিয়ার পাঁচ প্রতিনিধি বিশিষ্ট দলটি গাড়ির শোভাযাত্রার মাধ্যমে সীমান্তে পৌঁছায় এবং স্থানীয় সময় সকাল ৯:৩০ এ পায়ে হেঁটে আলোচনার স্থান পানমুঞ্জম গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামটি সামরিক নিয়ন্ত্রণের আওতামুক্ত দুই কোরিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। বৈঠকের প্রথম অংশ প্রায় দুই ঘণ্টার অধিক সময় স্থায়ী হয়ে স্থানীয় সময় বেলা ১২.২০ এ শেষ হয়।
আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণ মূল বিষয় হলেও, দুই কোরিয়ার মধ্যকার অন্যান্য বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। ১৯৫০-৫৩ সালের কোরিয়ার যুদ্ধের পরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পারিবারিক সদস্যদের পুনর্মিলন পুনরারম্ভ করার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। পরবর্তী মাসের চান্দ্র নববর্ষের ছুটিতে এই পুনর্মিলনীর প্রস্তাব দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। এছাড়াও রয়টার্সের বিবৃতি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিরা দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ এড়াতে সামরিক আলোচনারও প্রস্তাব দেন।
কূটনীতিবিদদের মতে, উত্তর কোরিয়ার উপর আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর জন্য কিম জং-উন সিউল ও ওয়াশিংটনকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃক প্রস্তাবিত নিউক্লিয়ার কার্যক্রম বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তার জবাবে উত্তর কোরিয়া বলেছে যে, আলোচনার মাধ্যমে দুই কোরিয়াকে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সমন্বয়সাধন করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের পর প্রায় দীর্ঘ দুই বছরের অধিক সময় পরে এই প্রথম উত্তর কোরিয়া তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেছে।
ফিচার ছবি: Yonhap/Reuters