- মিশর থেকে উদ্ধার করা ‘আর্তনাদরত মমি‘র যন্ত্রণাকাতর চেহারার সম্ভাব্য কারণ বের করেছেন প্রত্নত্তত্ববিদরা।
- ১৮৮১ সালে মিসরের দেইর এল-বাহারিতে প্রত্নত্তত্ববিদরা এই মমিটি আবিষ্কার করেন।
- ধারণা করা হয়, তিনি ফারাও সম্রাট তৃতীয় রামেসিসের ছেলে ছিলেন।
এই মমিটি আবিষ্কারের পরে প্রত্নতত্ত্ববিদরা এর যন্ত্রণাকাতর মুখমণ্ডল দেখে অবাক হয়ে যান। দেখে আর্তনাদ করছে বলে মনে হওয়ায় এটি ‘Screaming Mummy‘ বা ‘আর্তনাদরত মমি’ নামে পরিচিত। যন্ত্রণাকাতর মুখমণ্ডলের কারণ হিসেবে অনেক তত্ত্ব দেওয়া হলেও কোনোটিই এ পর্যন্ত সঠিক কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেনি। তবে নতুন কিছু পরীক্ষার পরে ধারণা করা হচ্ছে, ফারাওদের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তাকে মৃত্যুপরবর্তী জীবনে ‘প্রবেশে বাধা দান করা হয়’।
ধারণা করা হয় ফারাও সম্রাট তৃতীয় রামেসিসের এই ছেলে বাবাকে হত্যা করে সিংহাসন দখলের ব্যর্থ পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এর ফলে তাকে নিজেই নিজের জীবন নেওয়ার শাস্তি দান করা হয়, যা তার যন্ত্রণাদায়ক মুখমণ্ডলের কারণ বলে মনে করেন কেউ কেউ। আবার অনেকের মতে, কোনো এক সময় মমির মাথা পিছনে সরে গিয়ে দুই চোয়াল আলাদা হয়ে যায় বলে এটিকে আর্তনাদ করার মতো দেখায়।
সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ববিদরা ধারণা করছেন, তাকে সম্ভবত বিষ প্রয়োগের পরে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল। তবে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
‘ইজিপশিয়ান সুপ্রিম কাউন্সিল অব অ্যান্টিকুইটিস’ এর সদস্য ড. জাহি হাওয়াস জানান, অন্য সব মমি সাদা লিলেন কাপড়ে মোড়ানো থাকলেও এটি ভেড়ার চামড়ায় মোড়ানো ছিল। এর অর্থ দাঁড়ায় তিনি কলুষিত ছিলেন, তাই তাকে মিশরীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী পরবর্তী জীবনে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
হাওয়াস বলেন,”প্রাচীন মিসরীয়দের মতে, ভেড়ার চামড়া দিয়ে মোড়ানোর মানে তিনি পবিত্র ছিলেন না। তিনি তার জীবনে খারাপ কিছু করেছেন।” সম্ভবত নিজ পরিবারের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করায় তার জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে কেউ তার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিল। তাই পরবর্তীতে প্রাথমিকভাবে করা এই ব্যবস্থা বাতিল করার চেষ্টা করা হয়।
ফিচার ইমেজ: YouTube