সমগ্র কোরিয়ার জনগণকে দুই কোরিয়াকে একত্রীকরণের ব্যাপারে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া! আজ বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ বিরল আহ্বান জানানো হয়।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা থেকে প্রচারিত এই ঘোষণায় দেশে এবং বিদেশে অবস্থিত সকল কোরীয় নাগরিককে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, তারা যেন উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যোগাযোগ, ভ্রমণ এবং সাহায্য-সহযোগিতা বৃদ্ধি করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পিয়ংইয়ং দুই কোরিয়ার একত্রীকরণের বিরুদ্ধে যেকোনো প্রচেষ্টাকে ‘চূর্ণ’ করে দেবে। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে সামরিক উত্তেজনাকে দুই কোরিয়ার একত্রীকরণের পথে প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, বিদেশী শক্তির সাথে যৌথ সামরিক মহড়া শান্তির পথে অন্তরায় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
North Korea wants to “smash” obstacles to Korean reunification https://t.co/vsNtJQDfhK pic.twitter.com/YcKEC7lrsb
— Newsweek (@Newsweek) January 25, 2018
দীর্ঘকাল ধরেই দুই কোরিয়ার মধ্যে শীতল কূটনৈতিক সম্পর্কে চলে আসছিল। গত বছর এই সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে, যখন উত্তর কোরিয়া একের পর এক পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে থাকে এবং দক্ষিণ কোরিয়া সহ এর আশেপাশের দেশগুলোকে ধ্বংস করার হুমকি দিতে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবেই দক্ষিণ কোরিয়াতে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিক গেমসকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে বরফ শীতল সম্পর্ক গলতে শুরু করে। উত্তর কোরিয়া তাদের একদল ক্রীড়াবিদকে অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াতে পাঠানোর ঘোষণা দেয়।
বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর কোরীয় খেলোয়াড়দের প্রথম দলটি দুই দেশের মধ্যকার এতকালের অভেদ্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রবেশ করে। এ দলটিতে আছেন ১২ জন আইস হকি খেলোয়াড়, যারা আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়দের সাথে মিলে একটি যৌথ দল গঠন করবেন।
“Let’s work together closely… to improve inter-Korea relations”.
North Korea have announced they’re keen to pursue a “reunification” with the South. pic.twitter.com/dkxQ8pOqLn
— Channel 4 News (@Channel4News) January 25, 2018
অলিম্পিক গেমস উপলক্ষে উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই বছরেরও বেশি সময় পরে প্রথমবারের মতো কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সিদ্ধান্ত হয়, দুই কোরিয়ার সমন্বয়ে গঠিত দলের খেলোয়াড়রা একীভূত কোরীয় উপদ্বীপের পতাকা বহন করবেন এবং একতার প্রতীক জার্সি পরিধান করবে।
উত্তর কোরিয়ার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে সহ অনেক রাজনীতিবিদ। প্রেসিডেন্ট মুন এই অলিম্পিক গেমসকে দুই কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়ন এবং শান্তি স্থাপনের পক্ষে যুগান্তকারী সুযোগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু রাজনীতিবিদ উত্তর কোরিয়ার উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, কিম জং উন অলিম্পিক গেমসকে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন।
ফিচার ইমেজ- AFP/Getty Images