পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ সোয়াত ভ্যালিতে তালেবানের জনক বলে খ্যাত ৯৩ বছর বয়সী সুফি মোহাম্মদকে স্বাস্থ্য পরিস্থিতির বিবেচনায় জামিনে মুক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। তিনি আর কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করবেন না বলে কর্তৃপক্ষকে কথা দিয়েছেন।
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত সোয়াত ভ্যালিতে কঠোর রক্ষণশীল ইসলামিক আইন প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করায় সুফি মুহাম্মাদকে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রদ্রোহ ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
গত ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের আদালত মানবিক দিক বিবেচনায় তাকে পেশোয়ার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেয়। তবে তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার শুনানি চলতে থাকবে।
সোমবার তার ছেলে সোয়াত জেলায় মিংগোরা কর্তৃপক্ষের কাছে সাত লক্ষ পাকিস্তানী রুপি সমমূল্যের জামিনের মুচলেকা জমা দিলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ফিদা গুল। সুফি মোহাম্মদ ডায়াবেটিস ও কিডনি সংক্রান্ত অসুস্থতায় ভুগছেন। ফিদা গুল বলেন, “তিনি আদালতকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তিনি আর এমন কোনো কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত করবেন না যা আদালতের রিটের বিরুদ্ধে যায় অথবা আন্দোলন (তালেবান) বর্ধিত করে।”
ধারণা করা হচ্ছে, সুফি মুহাম্মাদ ইসলামাবাদ থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত তার নিজ শহর তিমারগারায় প্রত্যাবর্তন করবেন। দ্য গার্ডিয়ান থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এ মুক্তিদানের ফলে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের সম্পর্কে টান পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পূর্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেন, যা পাকিস্তান অস্বীকার করেছে।
সুফি মুহাম্মাদ তেহরিক-ই-নাযাফ-ই-শরিয়র-ই-মুহাম্মাদি দলের প্রধান নেতা ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আফগানিস্তান আক্রমণের সময় হাজার হাজার সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করার লক্ষ্যে আফগানিস্তান যান। পাকিস্তানে ফিরে আসার পরে তাকে আটক করা হয়। তিনি বর্তমান পাকিস্তানী তালেবানদের নেতা মোল্লা ফজলুল্লাহর শ্বশুর। ধারণা করা হয়, মোল্লা ফজলুল্লাহ বর্তমানে আফগানিস্তানে লুকিয়ে আছেন।
ফিচার ইমেজ: Fox News