- সিরিয়ার সরকারের সাথে কুর্দিদের একটি সমঝোতা হয়েছে, যার ফলে সিরীয় সেনাবাহিনী শীঘ্রই আফরিনে প্রবেশ করবে।
- এ সমঝোতার মূল উদ্দেশ্য কুর্দি প্রধান আফরিনে তুরস্কের সেনাবাহিনীর অভিযানকে প্রতিহত করা।
- জ্যেষ্ঠ কুর্দি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ সংবাদ জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং কুর্দি সংস্থা রুদাও।
- সিরিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদটি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।
Syrian Kurdish official Badran Jia Kurd, told Reuters army troops would deploy along some border positions and could enter Afrin within the next two days, although “there are sides that are not satisfied and want to make (the understandings) fail.” – https://t.co/THAjrigWVb
— kees kalkman (@keesamok) February 18, 2018
সিরিয়ার কুর্দি বাহিনী এবং বাশার আল-আসাদের সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে, যার ভিত্তিতে কুর্দি প্রধান আফরিন অঞ্চলে তুর্কি আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সিরিয়ার সেনাবাহিনী আফরিনে প্রবেশ করবে। গতকাল রবিবার এক জ্যেষ্ঠ কুর্দি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ সংবাদ জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সিরিয়ার উত্তরে অবস্থিত কুর্দি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রশাসনের একজন উপদেষ্টা বাদরান জিয়া কুর্দ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, সরকারের সাথে সমঝোতা অনুযায়ী আগামী দুদিনের মধ্যে সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে নিযুক্ত করা হবে। আফরিনের উপর তুরস্কের আক্রমণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই বর্বর আক্রমণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতার আলোকে যে পক্ষই আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে, আমরা তার সাথেই কাজ করব।”
অন্যদিকে সিরিয়ান কুর্দিশ ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন কর্মকর্তা শেইখো বিলো কুর্দি সংবাদ সংস্থা রুদাওকে জানান, কুর্দি-আরব জোট এসডিএফ (সিরিয়া ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস) এবং সিরিয়া একটি ঐক্যমতে পৌঁছেছে। এই ঐক্যমত অনুযায়ী সিরিয়ার সেনাবাহিনী সোমবার আফরিনে প্রবেশ করবে। তিনি আরো বলেন, এই সমঝোতা একান্তই সামরিক, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে সীমান্ত রক্ষা করা। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সিরিয়ার সেনাবাহিনী মূল আফরিন শহরে প্রবেশ করবে না, তারা শুধুমাত্র সিরিয়া এবং তুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিযুক্ত হবে।
লন্ডনভিত্তিক সিরিয়ার পরিস্থিতি নজরদারি সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও এই চুক্তির সংবাদ জানিয়েছে। তাদের মতে, এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য, সিরিয়ার সীমান্তে তুরস্কের সেনা অভিযানকে প্রতিহত করা। তবে তারা জানিয়েছে, চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রশাসনিক জটিলতা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। তবে সিরিয়ার সরকার অথবা কুর্দিশ প্রটেকশন ইউনিট, ওয়াইপিজির পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ সমঝোতার ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
With Turkey’s Rush to War Against Syrian Kurds, What Is the Endgame in Afrin? – @aronlund provides 3 scenarios: 1. TR wins 2. TR gets bogged down 3. Assad moves in to stave off TR. Lund suggests 3 may combine & civilians get crushed, which seems possible. https://t.co/TND1zKsSsy
— Joshua Landis (@joshua_landis) February 18, 2018
কুর্দিদের সাথে আসাদ সরকারের এ সমঝোতার ফলে সিরিয়ার জটিল পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। যদিও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এখনও পর্যন্ত বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনীর সাথে কুর্দি প্রধান ওয়াইপিজি সেনাদের সরাসরি বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষ হয়নি, কিন্তু নিজেদের দখলে থাকা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে কয়েকবার তারা ছোটখাট সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া বাশার আল-আসাদ এর আগে একাধিক বার সমগ্র সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিজের অধীনে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।
কুর্দিদের সাথে এ সমঝোতার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের সম্পর্কেও নতুন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সিরিয়াতে আইএস বিরোধী যুদ্ধে কুর্দিরা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র। যুক্তরাষ্ট্র কুর্দিদেরকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র দিয়েছে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। কিন্তু আফরিনে কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের সামরিক অভিযান শুরুর পর মৌখিকভাবে প্রতিবাদ করলেও যুক্তরাষ্ট্র কুর্দিদেরকে সরাসরি কোনো সাহায্য দেয়নি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বিদ্রোহীদেরকে ক্ষমতায় বসাতে ইচ্ছুক। এরকম পরিস্থিতিতে কুর্দিদের সাথে আসাদের সেনাবাহিনীর সমঝোতার অর্থ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে শত্রু এবং মিত্রের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা।
Reports of the Syrian government bailing out the Kurds is interesting from a U.S. perspective because Washington sees the Kurds as a counterweight to the Syrian government and Iranian influence generally.
— Max Abrahms (@MaxAbrahms) February 18, 2018
জিয়া কুর্দ জানিয়েছেন, এই সমঝোতার ব্যাপারে সকল পক্ষ একমত না। অনেকেই এর বিরোধিতা করছে এবং ফলে তারা নিশ্চিত না, বাস্তবে এটা কতদূর পর্যন্ত ফলপ্রসু হবে। তাছাড়া রাশিয়াও এই সমঝোতার বিরোধিতা করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেহেতু এই সমঝোতা রাশিয়ার সাথে তুরস্কের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে।
ফিচার ইমেজ- reuters.com