অ্যাডিলেইডে বিগ ব্যাশের সপ্তম আসরে হোবার্ট হ্যারিকেন্সকে ২৫ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশের শিরোপা ঘরে তুলে নিয়েছে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকারস।
বিগ ব্যাশের ইতিহাসে এবারই প্রথম ফাইনালে ওঠে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকারস। অন্যদিকে, হোবার্ট হ্যারিকেন্স এই দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে দুবারই রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকে। ফাইনালে ঘরের মাঠের অধিনায়ক ট্রাভিস হেড টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। এই মৌসুমে টসে জিতে সবকটি ম্যাচে আগে ব্যাট করে জয়ের মুখ দেখেছিলো অ্যাডিলেইড। তাই ফাইনালে হেড দ্বিতীয়বার না ভেবেই আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
অ্যাডিলেইডের দুই ওপেনার অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করে পাঁচ ওভারে ৪১ রান সংগ্রহ করেন। ইনফর্ম ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি ১৬ বলে ১৮ রান করে ফিরে গেলেও আরেক ওপেনার জ্যাক ওয়েদারাল্ড ছিলেন অপ্রতিরোধ্য।
২৩ বছর বয়সী ওয়েদারাল্ডের টুর্নামেন্টের শুরুটা ছিলো যাচ্ছেতাই। প্রথম সাত ইনিংসে করেন মাত্র ৮৭ রান। হঠাৎ করেই জ্বলে উঠলেন তিনি। ফাইনাল ম্যাচের আগে চার ম্যাচের তিনটিতে অর্ধশতক হাঁকানোর পর ফাইনালে বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন। জ্যাক ওয়েদারাল্ড প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে বিগ ব্যাশের ফাইনালে শতক হাঁকান।
১৮.২ ওভারে ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানের বলে বেইলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার সময় তার নামের পাশে ৭০ বলে নয়টি চার এবং আটটি ছয়ের সাহায্যে ১১৫ রানের ইনিংস জ্বলজ্বল করছিল। তিনি যখন আউট হন, তখন দলীয় সংগ্রহ দুই উইকেটে ১৮১ রান।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জ্যাক ওয়েদারাল্ড ও ট্রাভিস হেড ১৪০ রান যোগ করেন, যার মধ্যে বড় অবদান রাখেন ওয়েদারাল্ড। ট্রাভিস হেড ২৯ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। শেষদিকে কলিন ইনগ্রাম ছয় বলে এক চার ও এক ছয়ে ১৪ রান করলে নির্ধারিত ২০ওভারে অ্যাডেলেইড স্ট্রাইকারস দুই উইকেটে ২০২ রান করে। বিগ ব্যাশের ইতিহাসে প্রথম দল হিসাবে ফাইনালে দু’শরও বেশি রান সংগ্রহ করে অ্যাডিলেইড। হোবার্ট হ্যারিকেন্সের হয়ে জোফরা আর্চার এবং ক্রিস্টিয়ান একটি করে উইকেট শিকার করেন।
২০৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই টিম পেইনের উইকেট হারায় হোবার্ট। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডার্চি শর্ট দলে ফেরার পর অনেকেই অনুমান করছিলেন তার সাথে ইনিংসের গোড়াপত্তন করবেন ম্যাথু ওয়েড। সেমিফাইনালে শর্টের অনুপস্থিতিতে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ৭১ রান করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন ওয়েড। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক জর্জ বেইলির সাথে ৮১ রানের জুটি গড়েন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ডার্চি শর্ট। বেইলি ৩৩ বলে ৪৪ রান এবং শর্ট ৪৪ বলে ৬৮ রান করে পিটার সিডলের শিকারে পরিণত হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় হোবার্ট।
শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে পাঁচ উইকেটে ১৭৭ রানে থেমে যায় হোবার্টের ইনিংস। অভিজ্ঞ পেসার পিটার সিডল চার ওভারে ১৫টি ডট বল দিয়ে মাত্র ১৭ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট শিকার করে দলকে ২৫ রানের জয় এনে দেন। জ্যাক ওয়েদারাল্ড তার ১১৫ রানের ইনিংসের কল্যাণে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন। গতকাল আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে অভিষেক ঘটা ডার্চি শর্ট ১১ ম্যাচে একটি শতক এবং চারটি অর্ধশতকের সাহায্যে ৫৭.২০ ব্যাটিং গড়ে ৫৭২ রান করে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জেতেন।
ফিচার ইমেজ- Getty Images/ Cricket Australia