একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানকে যতটা নিরাপত্তা ঝুঁকির মাঝে থাকতে হয়, ততটা বোধহয় থাকতে হয় না আর কাউকেই। আর সেই ব্যক্তিটি যদি হন POTUS অর্থাৎ President of The United States, তাহলে তো কথাই নেই। সব সময় তার চারদিকে অদৃশ্য আততায়ীরা যেন ওঁত পেতে থাকে, সুযোগ পেলেই হামলে পড়বে তার উপর। আর তাই তাকে রক্ষায় সিক্রেট এজেন্টদেরও সতর্ক থাকতে হয় রাত-দিন ২৪ ঘন্টাই। ইতিহাসের গল্পে আমাদের আজকের বিষয় আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের খুন করার দুর্ধর্ষ সেসব প্রচেষ্টা নিয়েই।
খুন হয়ে যাওয়া প্রেসিডেন্টগণ
আব্রাহাম লিঙ্কন
যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন দায়িত্ব পালন করেছিলেন ১৮৬১ সালের মার্চ থেকে ১৮৬৫ সালের এপ্রিল মাসে তার মৃত্যুর আগপর্যন্ত।
১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিলের কথা। সেদিন রাতে ওয়াশিংটন ডিসির ফোর্ড’স থিয়েটারে ‘Our American Cousin’ নাটকটি দেখতে স্ত্রী মেরি টোড লিঙ্কন এবং দুজন অতিথিকে নিয়ে গিয়েছিলেন আব্রাহাম লিঙ্কন। নাটকটি চলাকালেই রাত সোয়া দশটা নাগাদ ০.৪৪ ক্যালিবারের ডেরিঞ্জার পিস্তল দিয়ে লিঙ্কনের মাথার পেছন দিকে গুলি করে বসেন অভিনেতা ও কনফেডারেট সমর্থক জন উইল্কিস বুথ। সেখানে উপস্থিত মেজর হেনরি র্যাথবোন তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বুথ তার বুকে ছুরিকাঘাত করে এবং আরেক হাতে ছোরা দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যান সেদিনের মতো।
অচেতন আব্রাহাম লিঙ্কনকে সেখান থেকে দ্রুতই রাস্তার অপর পাশের পিটারসেন হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় ৯ ঘন্টা কোমায় থাকার পর পরদিন সকাল ৭টা ২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বুথের অবস্থান শনাক্ত করেছিলো ইউনিয়নের সৈন্যরাই এবং অবশেষে ১৮৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল সার্জেন্ট বোস্টন কর্বেটের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।
জেমস এ. গারফিল্ড
জেমস আব্রাহাম গারফিল্ড ছিলেন আমেরিকার বিশতম প্রেসিডেন্ট। ১৮৮১ সালের ৪ মার্চ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসীন হন তিনি। কিন্তু এ সৌভাগ্য তার কপালে বেশি দিন লেখা ছিলো না। দায়িত্ব গ্রহণের ৪ মাসেরও কম সময়ের মাথায় জুলাই মাসের ২ তারিখ সকাল সাড়ে নয়টায় চার্লস জুলিয়াস গুইটাও এর গুলিতে মারাত্মক আহত হন তিনি। গুইটাও তার .৪৪২ ওয়েব্লি ব্রিটিশ বুলডগ রিভলভার দিয়ে গারফিল্ডের ডান হাতে ও পিঠে একটি করে গুলি করেন। গারফিল্ড তখন বাল্টিমোর ও পটোম্যাক রেইলরোড স্টেশনে এসে নামছিলেন।
অবশেষে সেপ্টেম্বরের ১৯ তারিখ সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে এ আঘাত থেকে সৃষ্ট ইনফেকশনে ভুগেই মারা যান জেমস এ. গারফিল্ড।
গারফিল্ডকে গুলি করার পরপরই গুইটাওকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা বিচার শেষে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৮৮২ সালের ৩০ জুন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
উইলিয়াম ম্যাককিনলে
উইলিয়াম ম্যাককিনলে ছিলেন আমেরিকার পঁচিশতম প্রেসিডেন্ট। ১৮৯৭ সালের ৪ মার্চ তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
১৯০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের কথা, সময় তখন বিকাল ৪টা ৭ মিনিট। ম্যাককিনলে নিউ ইয়র্কের বাফেলোর টেম্পল অফ মিউজিকে প্যান-আমেরিকান এক্সপোজিশনে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেই হাতের ব্যান্ডেজের আড়ালে লুকনো ০.৩২ ক্যালিবারের রিভলভার দিয়ে লিওন জলগস্জ নামের এক আমেরিকান তাকে দুবার গুলি করেন। প্রথম বুলেটটি ম্যাককিনলের জ্যাকেটের কোনো বোতাম বা অ্যাওয়ার্ড মেডেলে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসে এবং তার হাতার মাঝে আটকে যায়। দ্বিতীয় বুলেটটি অবশ্য লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হয়। এটি প্রেসিডেন্টের পাকস্থলী ভেদ করে চলে যায়। অবশেষে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া দুটোর দিকে মারা যান তিনি।
উপস্থিত জনতা জলগস্জকে এমন গণধোলাই দিয়েছিলো যে, আর অল্প হলেই প্রাণবায়ু বেরিয়ে যেতো তার। অবশেষে ১৯০১ সালের ২৯ অক্টোবর অবোর্ন জেলখানায় বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে জলগস্জের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
জন এফ. কেনেডি
জন ফিটজেরাল্ড জ্যাক কেনেডি, সংক্ষেপে জেএফকে, ছিলেন আমেরিকার পয়ত্রিশতম প্রেসিডেন্ট। ১৯৬১ সালের জানুয়ারিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।
১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের কথা, দিনটি ছিলো শুক্রবার। সেদিন টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে এক মোটর শোভাযাত্রায় স্ত্রী জ্যাকুইলিন কেনেডিকে নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন জেএফকে। তাদের গাড়িটি ডিলে প্লাজা অতিক্রমের সময় দুটো বুলেট সরাসরি প্রেসিডেন্ট কেনেডির গলা ও মাথায় আঘাত হানে। প্রায় ৩০ মিনিট পর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনার পর ডিলে প্লাজায় অবস্থিত টেক্সাস স্কুল বুক ডিপোজিটরির কর্মচারী ও যুক্তরাষ্ট্রেরই সাবেক নৌসেনা লী হার্ভে অসওয়াল্ডকে গ্রেফতার করা হয়, কারণ ডিপোজিটরির ৭ম তলায় তার বন্দুকের গুলির কেসিং পাওয়া গিয়েছিলো।
১৯৬৩ সালের ২৪ নভেম্বর দুপুর ১১টা ২১ মিনিটে যখন অসওয়াল্ডকে হাতকড়া পরিয়ে ডালাস কোর্ট জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো, তখন জ্যাক রুবি নামক এক ব্যক্তি তাকে গুলি করেন। দুপুর ১টা ৭ মিনিটে মারা যান অসওয়াল্ড। অসওয়াল্ডকে খুনের দায়ে কারাদন্ড দেয়া হয় রুবিকে এবং জেলেই তিনি ১৯৬৭ সালে মারা যান।
ব্যর্থ হত্যাচেষ্টা
অ্যান্ড্রু জ্যাকসন
১৮৩৫ সালের ৩০ জানুয়ারি আমেরিকার সপ্তম প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসনকে দুটি পিস্তল দিয়ে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেছিলেন রিচার্ড লরেন্স নামক এক রঙের মিস্ত্রী। কিন্তু সৌভাগ্যবশত দুটি গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
আব্রাহাম লিঙ্কন
১৮৬৪ সালের আগস্ট মাসে অল্পের জন্য এক স্নাইপারের ছোঁড়া বুলেটের আঘাত থেকে বেঁচে যান আব্রাহাম লিঙ্কন। বুলেটটি তার হ্যাট ভেদ করে চলে গিয়েছিলো।
উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফ্ট
১৯০৯ সালে আমেরিকার সাতাশতম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফ্ট ও পোরফিরিও ডিয়াজ সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে সম্মত হলেন। এটি আয়োজিত হবে টেক্সাসের এল পাসো এবং মেক্সিকোর সিউদাদ হুয়ারেজে। কোনো আমেরিকান ও মেক্সিকান প্রেসিডেন্টের মাঝে এটিই ছিলো প্রথম মিটিং। সেই সাথে সেবারই প্রথম কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্ট সীমান্ত অতিক্রম করে মেক্সিকোতে প্রবেশ করেছিলেন। ডিয়াজ সেবার অষ্টমবারের মতো প্রেসিডেন্ট পদের জন্য দাঁড়াচ্ছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন টাফ্ট এসে যাতে তার প্রতি নিজের সমর্থনের কথাটি জানিয়ে যান। অন্যদিকে টাফ্টও এতে রাজি হয়ে যান। কারণ তখন আমেরিকার কয়েক বিলিয়ন ডলার মেক্সিকোর বিভিন্ন ব্যবসায় খাটানো ছিলো। সেদিন নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী দুই প্রেসিডেন্টের থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে দাঁড়ানো এক ব্যক্তিকে হাতের তালুতে পিস্তল লুকিয়ে রাখা অবস্থায় গ্রেফতার করে।
থিওডোর রুজভেল্ট
আমেরিকার ছাব্বিশতম এ প্রেসিডেন্ট ১৯১২ সালের ১৪ অক্টোবর উইস্কন্সিনে এক ক্যাম্পেইনে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। সেখানে নিউ ইয়র্ক থেকে আসা জন এফ. শ্রাঙ্ক নামক এক ব্যক্তি তাকে গুলি করে বসেন। তার বুক পকেটে দুই ভাঁজ করে রাখা পঞ্চাশ পৃষ্ঠার নির্বাচনী বক্তৃতা ও ধাতব একটি কেস সেবার তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলো।
হার্বার্ট হুভার
হার্বার্ট হুভার ছিলেন আমেরিকার একত্রিশতম প্রেসিডেন্ট। ১৯২৮ সালে এক সফরে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা যাচ্ছিলেন তিনি। ১৯ নভেম্বর সেভেরিনো ডি জিওয়ান্নির নেতৃত্বে এক দল লোক হুভারের ট্রেনটি উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট
১৯৩৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার বত্রিশতম প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টকে উদ্দেশ্য করে পাঁচটি গুলি ছুঁড়েন জিউসেপ্পে জাঙ্গারা। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন।
হ্যারি এস. ট্রুম্যান
১৯৫০ সালের ১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের তেত্রিশতম প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস. ট্রুম্যানকে হত্যার চেষ্টা চালায় পুয়ের্তো রিকোর দুজন প্রো-ইন্ডিপেন্ডেন্স এক্টিভিস্ট অস্কার কোলাযো এবং গ্রিসেলিও টরেসলা।
জন এফ. কেনেডি
ফ্লোরিডার পাম বিচে ছুটি কাটানোর সময় ১৯৬০ সালের ১১ ডিসেম্বর রিচার্ড পল পাভ্লিক নামে ৭৩ বছর বয়সী এক কৃষক ডিনামাইট দিয়ে কেনেডির গাড়ি উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। ক্যাথলিকদের প্রতি ঘৃণা থেকেই তার এ সিদ্ধান্ত।
রিচার্ড নিক্সন
১৯৭২ সালের ১৩ এপ্রিল আর্থার ব্রেমার নিক্সনকে এক অনুষ্ঠানে গুলি করে হত্যার চিন্তা করেও কড়া নিরাপত্তার জন্য পরিকল্পনাটি বাদ দিতে বাধ্য হন। ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্যামুয়েল বাইক হোয়াইট হাউজে একটি বাণিজ্যিক বিমান বিধ্বস্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
জেরাল্ড ফোর্ড
আমেরিকার আটত্রিশতম এ প্রেসিডেন্টের উপর আবার স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দুবার আঘাত এসেছিলো। প্রথমবার ১৯৭৫ সালে ৫ সেপ্টেম্বর। সেবার লীনেট ফ্রমে নামক এক নারী কোল্ট M1911 ০.৪৫ ক্যালিবারের পিস্তল দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয় দুর্ঘটনাটি ঘটে মাত্র ১৭ দিন পর, ২২ সেপ্টেম্বর। সেদিন সারা জেন মূর ফোর্ডকে মাত্র ৪০ ফুট দূর থেকে গুলি করতে গেলে পাশেই দাঁড়ানো অলিভার সিপ্ল তার হাতটি টেনে ধরেন এবং গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যায়।
রোনাল্ড রিগ্যান
তিনি ছিলেন আমেরিকার চল্লিশতম প্রেসিডেন্ট। ১৯৮১ সালের ৩০ মার্চ হিল্টন ওয়াশিংটন হোটেলে এক বক্তৃতা শেষে নিজের লিমুজিনে ফেরার পথে রিগ্যান ও আরো তিন ব্যক্তি জন হিঙ্কলে জুনিয়রের গুলিতে আহত হন। এতে রিগ্যানের পাঁজরের একটি হাড় ভেঙে যায়, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ভালোই অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ হয়। পুরো দু’সপ্তাহ হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিলো তাকে।
জর্জ বুশ সিনিয়র
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে অবসর নেয়ার মাস তিনেক পর বুশ কুয়েত ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলেন এক সফরে। সেখানে ১৪ জন লোক, ধারণা করা হয় যারা সাদ্দাম হোসেনের পক্ষে কাজ করছিলো, গাড়ি বোমা বিষ্ফোরণে বুশকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এর পেছনে ইরাকী গোয়েন্দা সংস্থার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আমেরিকার পক্ষ থেকে বাগদাদে ইরাকী গোয়েন্দা সংস্থার এক ভবনে ক্রুজ মিসাইলের হামলা চালানো হয়।
বিল ক্লিনটন
বিল ক্লিনটনের উপর হামলা হয়েছে বেশ কয়েকবার। ১৯৯৪ সালের ২১ জানুয়ারি রোনাল্ড জিন বার্বার নামক এক অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারি অফিসার তাকে জগিংরত অবস্থায় হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ফ্রাঙ্ক ইউজিন কর্ডার একটি চুরি করা সিঙ্গেল ইঞ্জিন সেস্না এয়ারক্রাফট হোয়াইট হাউজে বিধ্বস্ত ঘটাতে গিয়ে ব্যর্থ হন। পরের মাসের ২৯ তারিখ ফ্রান্সিস্কো মার্টিন দুরান হোয়াইট হাউজের বেষ্টনীর বাইরে থেকে সেমি-অটোমেটিক রাইফেল থেকে ২৯ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছিলেন ক্লিনটনকে হত্যার উদ্দেশ্যে। বলা বাহুল্য, এ যাত্রায়ও প্রাণে বেঁচে যান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। ১৯৯৬ সালে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনোমিক কো-অপারেশনের ফোরামে সফরে গিয়েছিলেন বিল ক্লিনটন। সেখানেও তার গাড়ি বহরের যাত্রাপথে থাকা একটি ব্রিজের নিচে বোম পুঁতে রাখা হয়েছিলো। সৌভাগ্যক্রমে তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা সেটি আগেই টের পেয়ে গাড়ির রাস্তা পরিবর্তন করায় সেবারও বেঁচে যান তিনি।
জর্জ বুশ জুনিয়র
এ ঘটনাটি ঘটেছিলো আজ থেকে প্রায় ১ যুগ আগে। ২০০৫ সালের ১০ মে জর্জ বুশ জুনিয়র জর্জিয়ার ফ্রিডম স্কয়ারে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এমন সময় ভ্লাদিমির আরুত্যুনিয়ান সোভিয়েত ইউনিয়নে তৈরী RGD-5 মডেলের হ্যান্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে মারেন মঞ্চের দিকে! কিন্তু সৌভাগ্য বলতে হবে বুশের। গ্রেনেডটির চারপাশে শক্ত করে রুমাল পেঁচানো থাকায় সেফটি লিভারটি খুলে যায় নি। ফলে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকেই বেঁচে যান জুনিয়র বুশ, মনোযোগ দেন আরো অগণিত মানুষ মারার দিকে।
বারাক ওবামা
আমেরিকার চুয়াল্লিশতম প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপর প্রথম আক্রমণের পরিকল্পনার কথা জানা যায় ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে। সেবার Alliance of Civilizations সম্মেলনে টার্কির ইস্তাম্বুলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই আল-জাজিরা টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয়ে আসা সিরিয়ান বংশোদ্ভুত এক লোক নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে আটক হন। পরে জানা যায় তার সাংবাদিক পরিচয়টি আসলে ভুয়া। সাথে থাকা ছুরি দিয়ে ওবামাকে খুন করাই ছিলো তার মূল লক্ষ্য। পরবর্তী ঘটনা ২০১১ সালের নভেম্বর মাসের। অস্কার রামিরো ওর্তেগা হার্নান্দেজ নামে এক লোক নিজেকে যিশুখ্রিষ্ট বলে বিশ্বাস করতো, আর ওবামাকে ভাবতো খ্রিষ্টানবিরোধী। তাই ওবামাকে শেষ করতে সেমি-অটোমেটিক রাইফেল থেকে হোয়াইট হাউজের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়েন তিনি। বলা বাহুল্য, একটি জানালার সামান্য ক্ষতি হওয়া ছাড়া আর তেমন কিছুই হয় নি। ওবামার উপর সর্বশেষ আক্রমণটি এসেছিলো ২০১৩ সালের এপ্রিলে। রাইসিন বিষ মেশানো একটি চিঠি সেবার পাঠানো হয়েছিলো ওবামার উদ্দেশ্যে।