পাকিস্তান সরকার গত মঙ্গলবার আত্মঘাতী বোমা হামলা নিষিদ্ধ বলে প্রায় ১৮০০ পাকিস্তানি মুসলিম উলামার ফতোয়াসম্পন্ন একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছে। অনেক বছর ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি মৌলবাদীদের সহিংসতায় জর্জরিত। ইসলামিক নিয়ম প্রতিষ্ঠায় তাদের যুদ্ধ পবিত্র বলে প্রচারের লক্ষ্যে, তারা প্রায়ই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের ব্যবহার করে থাকে।
আত্মঘাতী হামলাকে সবসময়ই ধর্মীয় গোঁড়ামি ও নৈতিকতা বিবর্জিত বলে অভিহিত করা হয়, বিশেষত যখন এর কারণে সাধারণ জনগণ হতাহত হয়। কিন্তু বিদ্রোহীরা সবসময়ই এটিকে সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে সন্ত্রাসবাদের কারণে প্রায় লক্ষাধিক প্রাণহানি ঘটে। তাই এটি দমনের লক্ষ্যে আত্মঘাতী বোমা হামলাকে উলামারা নিষিদ্ধ বা হারাম বলে ঘোষণা করেছেন।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন বইতে লিখেন,
“ফতোয়াটি সহনীয় মাত্রার স্থায়ী ইসলামিক সমাজ গঠনের শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করে।”
তিনি আরো যোগ করেন,
“ইসলামের স্বর্ণালী নিয়ম-নীতির সাথে একাত্ম থাকার জন্য একটি জাতীয় আখ্যান তৈরি করতে এই ফতোয়া থেকে নির্দেশনে নিতে পারি।”
পাকিস্তানী সরকার ও সামরিক বাহিনীর দেশি-বিদেশী সমালোচকেরা রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বিদ্রোহীদের স্বাচ্ছন্দ্যময় অবস্থার অবতারণা করছে বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে।
ফতোয়াটি বেশ কিছু বিশিষ্ট উলামা কর্তৃক অনুমোদিত। তারা উদারপন্থী ও পশ্চিমাদের স্পষ্ট সমালোচক এবং আফগান তালিবানকে সমর্থন করার কারণে বিতর্কিত।
স্বাক্ষরকৃত উলামাদের একজন হচ্ছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ‘আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত’ এর পরিচিত মুখ মুহাম্মদ আহমেদ লুধিয়ানভি। তিনি পাকিস্তানি আইন-প্রণয়নকারীদের সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজনদের তালিকাভুক্ত। আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত এর কথিত প্রধান নেতা আওরঙ্গজেব ফারুকীও স্বাক্ষরপ্রদানের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। আর এক স্বাক্ষরকারী হামিদ-উল-হক, অনেকের কাছে বিবেচিত ‘আফগান তালিবানের জনক’ এর পুত্র।
পাকিস্তান সরকার তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আনা আফগানিস্তান ও ভারতের মৌলবাদী প্রতিনিধিদের সহযোগিতার অভিযোগ বারংবার অস্বীকার করে আসছে। তাদের মতে, আফগান তালিবানের মতো অনেক ইসলামিক মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সফলতা এসেছে।
ফিচার ইমেজ: foxnews.com