‘সর্বকালের সেরা’ – দুই শব্দের এই কথাটি আকারে ছোট হলেও ওজনে অনেক ভারী। যতটা ভারী, ঠিক ততটা বিতর্কিতও বটে। কারণ, সর্বকালের সেরা হিসেবে একজনকে খুঁজে নেয়া সহজ কোনো কথা নয়। মতের অমিলে অনেকের কাছেই একই বিষয়ের সর্বকালের সেরা একেকজন। এই যেমন, ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরা পেলে, ম্যারাডোনা, মেসি নাকি রোনালদো, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে, চলবেও। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যান কে? উত্তরে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের নামটা অধিক উচ্চারিত হলেও শচীন টেন্ডুলকার-ব্রায়ান লারাদের নামটাও অনুচ্চারিত থাকবে না। সর্বকালের সেরা স্পিনারের প্রশ্নে তর্ক-বিতর্ক চলমান শেন ওয়ার্ন আর মুত্তিয়া মুরালিধরনকে নিয়ে। তেমনি সর্বকালের সেরা ক্রিকেট অধিনায়কদের নিয়ে যে বিতর্ক, সে বিতর্কের অন্যতম অংশ সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ।
টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহর সাফল্য আকাশচুম্বী। মার্চ ৫, ১৯৯৯ থেকে জানুয়ারি ৬, ২০০৪ পর্যন্ত স্টিভ অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৫৭ টেস্টে, যার মধ্যে ৪১ ম্যাচেই জয়ী দলের নাম অস্ট্রেলিয়া। ৭ ড্র’র সাথে হার আছে মাত্র ৯টি ম্যাচে। শতকরা ৭১.৯২ শতাংশ টেস্টেই জয় তাকে রেখেছে সর্বকালের সেরা টেস্ট অধিনায়কের তালিকায় সবার উপরে। উইনিং পারসেন্টেজের হিসাবে ক্রিকেটের এই সংস্করণে তার পরের অবস্থানটা তারই উত্তরসূরী অজি দলের অধিনায়ক হওয়া রিকি পন্টিংয়ের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আরেক সংস্করণ একদিনের ক্রিকেটের হিসাবে গেলে ১০৬ ম্যাচে ৬৭ জয়, ৩৫ হার আর ৩ ড্র আছে অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহর নামের পাশে। জয়ী ম্যাচের হিসেবটা ৬৫.২৩ শতাংশ। একদিনের ক্রিকেটে ওয়াহ অধিনায়কত্ব করেছেন ১৯৯৭ থেকে ২০০২ পর্যন্ত। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন ওয়াহ। টেস্ট এবং ওডিআই ফরমেটকে একত্র করলে মোট ম্যাচের ৬৬.২৫ শতাংশ ম্যাচই জিতেছেন স্টিভ রজার ওয়াহ।
শুধু দলনেতা হিসেবেই সেরা ওয়াহ, তেমনটা না। দলনেতার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে তার নিজের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও সেরা সময় কাটিয়েছেন ওয়াহ। অধিনায়ক হিসেবে খেলা ৫৭ টেস্টে ৫২.৩০ গড়ে মোট রান করেছেন ৩,৭১৪। শতক আর অর্ধশতক যথাক্রমে ১৫টি ও ১০টি, যেখানে ক্যারিয়ারের বাকি ১১১ টেস্ট ম্যাচে স্টিভের গড় ৫০.৪৪ ও শতক ১৭টি। এ সময় অবশ্য তার অর্ধশতকের সংখ্যাটা ৪০। এই ৪০ ইনিংসের মধ্যে আবার ১১ বার আউট হয়েছেন ৮০ থেকে ৯৯ রানের মধ্যে, সাথে ৯৪ আর ৯৯ রানের দু’টি অপরাজিত ইনিংসও আছে ওয়াহ’র। নিজে অধিনায়ক থাকা অবস্থায় ৮০ বা তার উপর রান করে স্টিভ প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন মাত্র ২ বার।
অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহর পরিসংখ্যান থেকে এবার দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেয়া যাক তার জীবনে। স্টিভ রজার ওয়াহ ১৯৬৫ সালের ২রা জুন জন্মগ্রহণ করেন অস্ট্রেলিয়ার ক্যান্টারবুরিতে। তার জন্মের ৪ মিনিট পর পৃথিবীতে আসেন তার যমজ ভাই, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের আরেক কিংবদন্তি মার্ক এডওয়ার্ড ওয়াহ। তাদের অন্য দুই ভাই ডিন ওয়াহ ও ড্যানি ওয়াহও ক্রিকেটার ছিলেন, খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট।
স্টিভ ও মার্ক ওয়াহ দু’জনই ১৯৮৩-৮৪ ক্রিকেটবর্ষেই অনূর্ধ্ব-১৯ রাজ্য দলের সদস্য হন। একই সময় তারা ওয়েলস কম্বাইন্ড হাই স্কুল ক্রিকেট দলের সদস্যও ছিলেন। এরপর অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়েও খেলেন ওয়াহ। ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে ভারত সিরিজে জাতীয় দলে অভিষিক্ত হন ‘ওয়াহ ব্রাদার্স’-এর বড় ভাই স্টিভ ওয়াহ। মার্কের অভিষেক হয়েছে তারও ৫ বছর পর।
স্টিভ ওয়াহ তার অভিষেক সিরিজের ৪ ইনিংসে রান করেন যথাক্রমে ১৩, ৫, ৮ এবং ০। ঘরের মাটিতে এরকম ব্যর্থতার পরও দলের সাথে নিউ জিল্যান্ড সিরিজে ঠিকই যান স্টিভ। সেই সিরিজে মোট ৫ ইনিংসে ব্যাট করেন। শুরুর ইনিংসে ১১ রানের পর পরের ইনিংসে ১৭২ বল মোকাবেলা করে ৭৪ রান সংগ্রহ করে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙেন। এই ম্যাচে ওয়াহ ৫৬ রান খরচায় ৪টি উইকেটও নেন। তবে পরের ৩ ইনিংসে আবার ব্যর্থ, ওই ৩ ইনিংসে মোট সংগ্রহ ২ রান।
৯ই জানুয়ারি ১৯৮৬, ভারত-অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে ওডিআই অভিষেক ঘটে ওয়াহর। অভিষেক ম্যাচে বৃষ্টির কারণে ব্যাট হাতে নামা না হলেও বল হাতে ২ ওভার বল করে উইকেট নিয়েছিলেন নিউ জিল্যান্ড দলপতির। ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই খেলেন ৪০ রানের ইনিংস, সাথে ১০ ওভার বল করে আজহারউদ্দীনের উইকেটের সাথে আরও একটি উইকেট পুরে নেন পকেটে। তখন থেকেই নিয়মিত দলে হয়ে ওঠেন স্টিভ।
অভিষেক থেকে শুরু করে ১৯৯১ পর্যন্ত স্টিভ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ৪২টি। ১৩ অর্ধশতকের সাথে এই সময়ে ৩ শতক আর ৩৮.২৪ গড়ে করেছিলেন ২,০৬৫ রান। উল্লেখ্য, ওয়াহর ক্যারিয়ার শেষে টেস্ট গড় ছিল ৫১.০৬। পুরো ১৯৯০ সালে কোনো ফরম্যাটেই কোনো শতক বা অর্ধশতক করতে পারেনি স্টিভ, দল থেকে বাদও পড়ে। আর তার জায়গাতেই দলে জায়গা পায় তার ৪ মিনিটের ছোট ভাই মার্ক এডওয়ার্ড ওয়াহ। অভিষেক ম্যাচেই মার্ক খেলে বসেন ১৩৮ রানের ইনিংস। মার্ক ৪ টেস্ট খেলার পর ৫ এপ্রিল পোর্ট অব স্পেইনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরেন স্টিভ ওয়াহ। ‘ওয়াহ ব্রাদার্স’ একসাথে খেলে প্রথম টেস্ট, যদিও একসাথে আন্তর্জাতিক পরিসরে ওয়ানডে ম্যাচ ১৯৮৮ সালেই খেলে ফেলেছিলেন দুই ভাই।
১৯৮৫তে অভিষেক হলেও স্টিভ টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার তিন অঙ্কের দেখা পান ১৯৮৯ সালে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। একমাত্র ২০০ রানের ইনিংস খেলেন ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও ছিল স্টিভ।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ১৬৮ টেস্ট খেলা ওয়াহ (রিকি পন্টিংও সমান ১৬৮ টেস্ট খেলেছেন) ১৯৯৩ থেকে তার অবসরের আগ পর্যন্ত টেস্ট খেলেছেন ১২২টি। এই সময়ে খেলা অন্য যেকোনো ব্যাটসম্যানের সাথে তুলনা করলে তার গড় ছিল ৩য় সর্বোচ্চ। শচীন টেন্ডুলকারের ৬১.৫০ আর রাহুল দ্রাবিড়ের ৫৭.৪২-এর পরই স্টিভ ওয়াহর অবস্থান।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সব থেকে সফল অজি ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি একজন। গড়ের দিক থেকে ব্র্যাডম্যানের পরই অবস্থান তার, শতকের দিক থেকেও। শর্ত — অন্তত ২,০০০ রান করেছে এমন ব্যাটসম্যান হতে হবে। এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার অর্ধশতকও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো অস্ট্রেলিয়ানের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বিশ্ব ক্রিকেটে টেস্টের ৫ নাম্বার পজিশনের দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যানও ওয়াহ; আজহারউদ্দিন, অ্যালান বোর্ডারের থেকেও এগিয়ে আছেন গড়ে। তার উপরে আছেন শুধু চন্দরপল।
তবে টেস্ট ক্রিকেটের ৪র্থ ইনিংসে ব্যাট হাতে সব থেকে খারাপের দিক থেকে দ্বিতীয় বাজে পরিসংখ্যানের মালিকও স্টিভ ওয়াহ। অন্তত ৫০০ রান করেছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে ৩১ ম্যাচে তার ২৫.৫৪ গড়ে সংগ্রহ ৬১৩ রান মাত্র। দু’টি অর্ধশতক ছাড়া নেই আর কোনো বলার মতো সাফল্য। তার থেকে খারাপ অবস্থা এই মুহূর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের, তার গড় ২১.১২ (২৪ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত)।
স্টিভ ওয়াহর ওয়ানডে ক্যারিয়ারকে ২ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ১৯৯২ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং তার পর থেকে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত। প্রথম পর্বে ওয়াহ ১৩৪ ম্যাচ খেলে ৩০.৪৮ গড়ে করেন ২,৬২২ রান। আর পরের ১৯১ ম্যাচে ৩৪.৩৫ গড়ে করেন ৪,৯৪৭ রান। পুরো ক্যারিয়ারে খেলা ৩২৫ ওডিআই একসাথে করলে গড়টা ৩২.৯০।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অন্তত ৫০০ রানের সাথে ২৫ উইকেটের মালিক, এমন অলরাউন্ডার আছে মাত্র ৫ জন, যাদের একজন এই স্টিভ ওয়াহ। দু’দিক থেকেই সেরার বিবেচনায় সবার উপরে আছেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। সাকিব আল হাসানের ৩৪ উইকেটের থেকে বেশি উইকেট নেই কারো, সমান ৩৪ উইকেট আছে পাকিস্তানের কিংবদন্তি ইমরান খানের। আর তার করা ১,১৪৬ রানের থেকে বেশি রান আছে শুধু লংকান গ্রেট জয়সুরিয়ার, তবে তিনি সাকিবের থেকে ম্যাচ খেলেছেন ৯টি বেশি।
১৩ এপ্রিল ১৯৯৭, ওডিআই ক্রিকেট দিয়ে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন স্টিভ। অধিনায়ক স্টিভের গল্প শুরুতেই বলা হয়েছে। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়কদের একজন তিনি নিঃসন্দেহে। আর টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্যের দিক থেকে তাকে এ যুগে টপকানো হয়তো একেবারে অসম্ভবই।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১০,৯২৭ রান নিয়ে টেস্টে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক স্টিভ। ১১,১৭৪ রান নিয়ে অ্যালান বোর্ডারের অবস্থান দুইয়ে, আর ১৩ হাজারের অধিক রান নিয়ে রিকি পন্টিং আছেন প্রথম স্থানে। এই রান করতে স্টিভ ওয়াহ খেলেছেন ১৬৮ ম্যাচ, যা অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। এই ১৬৮ টেস্টে স্টিভের শতকের সংখ্যা ৩২টি, আর অর্ধশতক ৫০টি। সব ধরনের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোট সংগ্রহ ২৪,০৫২ রান, শতক আর অর্ধশতকের সংখ্যা যথাক্রমে ৭৯ আর ৯৭টি। ৩২৫ ওডিআই ম্যাচে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৪০ রানের ইনিংসসহ সাকুল্যে ৩ শতক আর ৪৫ অর্ধশতকে মোট করেছেন ৭,৫৬৯ রান।
পার্টটাইম বোলার হিসেবে মাঝে মধ্যে হাতও ঘুরাতেন ওয়াহ। ১৬৮ টেস্টে ৯২ উইকেট আর ৩২৫ একদিনের ক্রিকেটে ১৯৫ উইকেটের মালিক স্টিভ ওয়াহ। টেস্ট আর ওডিআই বোলিং গড় ৩৭.৪৪ আর ৩৪.৬৭, ইকোনমি যথাক্রমে ২.৬৪ আর ৪.৫৬।
ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক ও সফলতম ব্যাটসম্যান মার্ক ওয়াহ শেষ একদিনের ম্যাচ খেলেন ২০০২ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি। শেষ ম্যাচে খেলেন ৫২ বলে ৪২ রানের ইনিংস। ঘোষণা দিলেন, ২রা জানুয়ারি ২০০৪ থেকে শুরু হওয়া ভারত টেস্টের মধ্য দিয়েই ইতি টানবেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের। শুরু আর শেষের স্মৃতি ভারতের বিপক্ষেই।
ওয়াহকে বিদায় দিতে প্রস্তুত সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। ওয়াহ’র বিদায়ী টেস্টে টস জিতে নিলেন ভারতীয় দলপতি সৌরভ গাঙ্গুলী। ২০০২ এর অক্টোবরে শেষবার টেস্ট শতক করা শচীন সে ম্যাচে হঠাৎ করেই জ্বলে উঠলেন আবার, খেললেন ২৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস। সাথে লক্ষ্মণের ১৭৮ রানে ভারত দাঁড় করালো ৭ উইকেটে ৭০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ। জবাবে ৪৭৪ রানেই অলআউট অস্ট্রেলিয়া, ওয়াহর ব্যাট থেকে এসেছিল মাত্র ৪০ রান।
ম্যাচের ৩ দিন পার হয়ে গেছে, অজিদের ফলোঅন ব্যাটিংয়ে না পাঠিয়ে ৪৩.২ ওভার ব্যাটিং করে ৪.৮৬ রানরেটে ২১১/২ করে ইনিংস ঘোষণা করলো ভারত। ৪৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামে স্টিভ ওয়াহর দল। ৪র্থ দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১০/০। হাতে ছিল শুধু পঞ্চম দিন। খেলা সিডনিতে হলেও ভারতীয় স্পিনারদের বিপক্ষে ম্যাচের পঞ্চম ইনিংসে টিকে থাকা কঠিন কাজই।
দলীয় ১৭০ রানে জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন আর মার্টিনের উইকেট হারিয়ে ম্যাচে টিকে থাকা তখন অস্ট্রেলিয়ার জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। অধিনায়কত্ব এবং ব্যাটিং দুটোই শেষবারের মতো করতে ক্রিজে আসলেন স্টিভ ওয়াহ। আর ১৬ রান যুক্ত করতেই ফিরে গেলেন রিকি পন্টিং। ম্যাচটা তখন কঠিনই হয়ে দাঁড়ায় অজিদের জন্য। তবে নিজের শেষ ম্যাচে এসেও আলো জ্বালালেন, দলকে বাঁচালেন স্টিভ ওয়াহ, নিজের শেষটাকেও নিয়ে গেলেন অদ্রিশিখর উচ্চতায়।
১৯৬ থেকে ৩৩৮ পর্যন্ত নিয়ে গেলেন দলীয় সংগ্রহকে। যোগ্য সঙ্গ দিলেন সাইমন ক্যাটিচ। ১৫৯ বল খেলে ৮০ রান করে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন স্টিভ রজার ওয়াহ, ততক্ষণে দিনের খেলা প্রায় শেষ। দলকে হার থেকে উদ্ধার করেই বিদায় নিলেন বাইশ গজ থেকে। তবে দর্শক হৃদয়কে যতটা ঋদ্ধ করে গেছেন, মাঠের ক্রিকেটে না থাকলেও ক্রিকেট বিশ্বের মনের ভেতর ঠিকই রয়ে যাবেন সর্বকালের সেরা টেস্ট অধিনায়কদের একজন স্টিভ রজার ওয়াহ। নিজের বিদায়কেও স্মরণীয় করে জানান দিয়ে গেলেন, ‘কিংবদন্তিরা ফুরিয়ে যায় না।’