খ্রিস্টপূর্ব ৮,০০০ অব্দের দিকে বরফ যুগের সমাপ্তি ঘটে। দ্রুত পরিবর্তন ঘটে পরিবেশের। পরিবর্তন ঘটে শিকার সভ্যতার মানুষদের স্বভাবে। যাযাবর জীবনে ক্লান্ত হয়ে থিতু হতে থাকে নদীর অববাহিকাগুলোতে। পত্তন ঘটতে থাকে স্থায়ী সংস্কৃতির। শুরু হয় কৃষি এবং পশুপালনের যুগ। সভ্যতার ইতিহাসের এটি উত্থান নাকি পতন? শিকার সমাজে স্বল্প শ্রমে বিচিত্র সব খাদ্য সংগ্রহ করা যেত। খাবারের পরে অবসরও থাকত দারুণ। উপরন্তু কোনোপ্রকার নিয়ন্ত্রণকারী নিষেধাজ্ঞা কিংবা আইন ছিল না।
কিন্তু কৃষি সমাজে ব্যস্ততা যেন বছর জুড়ে। ফসল বোনা, তদারকিতে রাখা, কাটা এবং মাড়াই করে ঘরে তুলতে তুলতেই আবার ফসল বোনার মৌসুম এসে যায়। বৈচিত্র্যহীন খাবারের বিরক্তি তো আছেই। তৈরি হয়েছে নানা কিসিমের বিধি-নিষেধ। মানুষ আদতে পশুপাখিকে গৃহপালিত করেছে নাকি তাদের কাছে গৃহপালিত হয়েছে? অনেক সংস্কৃতি তাই শিকার সমাজ থেকে কৃষি সমাজে রূপান্তরকে পূর্বপুরুষের স্বর্গ থেকে পতন হিসেবেই দেখে। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের মধ্যে সেই সময়কে স্মরণ করে উৎসব পালন করতেও দেখা যায়।
সূত্র
ফিলিস্তিন এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। একই সময়ে দুই ধরনের সভ্যতা বিরাজ করেছে সেখানে। হান্টার-গেদারার ফিলিস্তিনের উঁচু ভূমি এবং গুহায় বসবাস করেছে লম্বা সময়। নাতুফিয়ান সংস্কৃতির কথা উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা যায়। নাতুফিয়ান শব্দটি এসেছে ওয়াদি-আল-নাতুফ থেকে; যেখানে শুরু হয়েছে যাযাবর মানুষের স্থায়ী হয়ে উঠার ইতিহাস। শুরু করেছে চাষবাস আর পশুপালন। কবর দেয়াতেও আসতে থাকে ভিন্নতা। সবচেয়ে বড় কথা, এখন মানুষ সমুদ্রে নৌকা নিয়ে অভিযানে নেমে পড়তে পারে। সকল আবিষ্কারই একটা গল্পের জন্ম দেয়। মধ্যপ্রস্তর এবং নব্যপ্রস্তর যুগের আবিষ্কারগুলোও জন্ম দিয়েছে অজস্র উপকথা আর কিংবদন্তি। পরিণত হয়েছে ধর্মবিশ্বাস এবং উপসনার নিয়ামকে।
কৃষিযুগে শিকারিরা ছিল সমাজের ছোট্ট অংশ মাত্র, যারা উৎপাদনব্যবস্থায় ততটা সক্রিয় না। তাদের উপযোগ বন্যপ্রাণী থেকে বসতি পাহারা দেয়ায়। তারাই ধীরে সেনাবাহিনী, যোদ্ধা এবং সমাজের অভিভাবকে পরিণত হয়। বয়ে চলতে থাকে শিকার সভ্যতার ঐতিহ্য। ফসল উৎপাদন এবং শিকারযাত্রা- উভয়ক্ষেত্রেই গড়ে উঠেছিল রক্তবলির রীতি। কিছুটা পার্থক্য যে ছিল না, তা না। উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর তুর্কো-মঙ্গোলরা স্থায়ী বসতিকে ছিন্নভিন্ন করেছে। তাদের উপাস্য ছিল নেকড়ে। নিজেদের তারা মনে করতো নেকড়ের বংশধর।
পাটাতন
ফসল উৎপাদনের স্বার্থেই কৃষকদের পূর্ব প্রস্তুতি রাখা জরুরি। চাঁদের গতিপথ পর্যবেক্ষণ এবং ঋতু সম্পর্কে ধারণা রাখা শুরু হলো। অথচ ফসল মাত্রই অনিশ্চয়তা। ক্রমে ভরসার জায়গা হয়ে উঠতে শুরু করে নারী। কৃষির আবির্ভাব নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতিতেই উপকথা প্রচলিত আছে। নিউ গিনির উপকথায় স্বর্গীয় নারী হাইনুভেলেকে কবর দেয়া হলে সেই দেহ থেকে গজিয়েছে প্রথম ফল গাছ। কাছাকাছি মিথ বিদ্যমান সুলাওয়েসির আদিবাসীদের মধ্যে। কোনো কোনো সংস্কৃতিতে অবশ্য প্রথম খাদ্য এসেছে কোনো দেবতা বা দেবীর শরীরের ঘাম থেকে। অর্থাৎ ফলগাছ এবং খাদ্য পবিত্র। এভাবে বিভিন্ন সংস্কৃতিতেই গড়ে উঠেছে কৃষির উদ্ভব সংক্রান্ত বিশ্বাস। তাকে কেন্দ্র করে পালিত হয়েছে উৎসব এবং উপাসনা। স্মরণ করা হয়েছে কোনো স্বর্গীয় সত্ত্বার প্রতি উৎসর্গের মাধ্যমে।
গৃহপালন এবং কৃষিতে নারীর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। নারী সন্তান জন্মদান করে জীবনের সূত্রপাত ঘটায়। মাটিও নারীর মতো। ফলে ধার্মিকের সৃষ্টিতত্ত্বে নারী রহস্যময় প্রতিপত্তি নিয়ে আবির্ভূত হয়। পরবর্তীতে গ্রিস এবং ভারতের দেবীদের দিকে তাকালেই তা লক্ষ্যণীয়। যৌনতা সেখানে ঋতুর সাথে সম্পর্কিত প্রকৃতির পরিবর্তনের ব্যাখ্যা।
পাশাপাশি উৎপত্তি ঘটেছে মহাজাগতিক বৃক্ষের ধারণা। যার শিকড় পাতালে, ডালপালা দুনিয়ায় এবং ডগা স্বর্গে। অর্থাৎ গাছটি পৃথিবীর কেন্দ্রে স্থিত এবং তিনটি জগতকে ধারণ করে আছে। এখানে নর্স উপকথার ইগদ্রাসিলের কথা স্মরণযোগ্য। ধার্মিকের চোখে স্থায়ী সভ্যতার আবাসভূমিও অন্যান্য জমিনের মতো না; পবিত্র। কারণ সেই স্থান স্বর্গের দেবতাদের সাথে যোগাযোগের পথ তৈরি করে। অন্যদিকে সময় গণনা মানুষকে ঋতুর পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তনের ধারণা দিয়েছে। নতুন বছর কেবল একটা দিন না। পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম দিনে প্রত্যাবর্তন। যেসব প্রিয় মুখ পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে, তাদের ফিরে আসার দিন। ওই সময়টা অবশ্যই অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে পবিত্র। এভাবে বিশেষ সময় এবং বিশেষ স্থান ক্রমশ পবিত্র হয়ে উঠেছে।
নির্মাণ
খ্রিস্টপূর্ব ৬৮৫০ এর দিকের প্রাচীন নগরী জেরিকো। ছিল অতিকায় প্রাসাদ এবং টাওয়ারের অস্তিত্ব। প্রাসাদ ব্যবহৃত হতো ধর্মীয় উৎসব এবং অনুষ্ঠানের জন্য। পাওয়া গেছে মন্দির এবং সম্ভাব্য উর্বরতার কাল্ট। মৃতদের কবর দেয়া হতো ঘরের মেঝের নিচেই। ধ্বংসাবশেষ খনন করে পাওয়া গেছে কঙ্কাল। নিচের অংশ প্লাস্টার করা এবং চোখের দিকটায় শামুক বসিয়ে চিহ্নিত করা। সিরিয়ার তেল রামাদ এবং আনাতোলিয়ার শাতাল হুয়ুকেও কাছাকাছি চিত্র। মৃতের সাথে কবর দেয়া হয়েছে অলংকার, মূল্যবান পাথর, অস্ত্র, কাপড় এবং কাঠের পাত্র। দেবীমূর্তিগুলো হয় যুবতী রূপে কিংবা সন্তান জন্মদানকারী মায়ের রূপে।
সিরিয়া সত্যিকার অর্থেই বিস্ময়কর এক ভূমি। তেল রামাদ, তেল হালাফ এবং তেল আসওয়াদের মতো অনেক প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ সাক্ষ্যদাতা হিসেবে টিকে আছে। তেল হালাফের তথা হালাফিয়ান সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয় খ্রিস্টপূর্ব ৪,৩০০ অব্দের দিকে। সেই সময়েই দক্ষিণ ইরাকে বিস্তার লাভ করতে থাকে তেল উবাইদ সংস্কৃতি। বলে রাখা ভালো, নামের আগে তেল যুক্ত হওয়া তৎকালীন শহরের নামের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। শাব্দিকভাবে তেল শব্দের অর্থ উঁচু ঢিবি বা ছোট পাহাড়। বাইরের আক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য উঁচু অঞ্চলে জনপদ থিতু হবার কারণে হয়তো। বর্তমানেও তেল আবিব শহরটি সেই ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করছে। যা-ই হোক, তেল উবাইদ সংস্কৃতি পরবর্তীতে মেসোপটেমিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। পাওয়া গেছে দেবতা মূর্তি এবং উপাসনা মন্দির। এই মন্দিরগুলোর বিশেষত্ব হলো, তা স্তম্ভবিশিষ্ট।
আধ্যাত্মিকতা
কৃষির সাথে সাথে মানব সভ্যতায় ছড়িয়ে পড়ে উপকথা, আচার এবং বিশ্বাসকেন্দ্রিক জীবনের নতুন প্যাটার্ন। দানিয়ুব নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ষাড় ছিল প্রভাবশালী দৈবশক্তির প্রতীক। দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপেও সম্প্রতি মিলেছে প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সন্ধান। ৬,৫০০-৫,৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ অব্দি বলকান উপদ্বীপ এবং মধ্য আনাতোলিয়া সমৃদ্ধ ছিল। সেখানে প্রাপ্ত সিল, মানুষ ও প্রাণীর মূর্তি, আচার নির্দেশিত পাত্র এবং দৈব চিত্রাবলি সেই সময়ের বিশ্বাসকেই নির্দেশ করে। ধর্ম এবার আরো বেশি সংগঠিত। দক্ষিণ বুখারেস্টের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত মন্দিরের দেয়ালে লাল সবুজের স্পাইরাল এবং হলুদাভ মেঝে তার তার প্রমাণ। খোদ বলকানেই হরেক কিসিমের মন্দির পাওয়া গেছে। মাল্টা আরেক কদম এগিয়ে।
বিচিত্র ধর্মজীবন মোটাচোখে একঘেয়ে লাগতে পারে। তবে মৃতের আত্মা, নারীর রূপে উর্বরতার দেবী কিংবা ষাড়ের রূপে ঝড়ের দেবতাই শেষ কথা না। প্রাপ্ত দলিলের বাইরেও বাকি থাকে দীর্ঘ অনেক গল্প। দিন রাত্রির আবর্তনের রহস্য, শষ্য উৎপাদনের স্বতস্ফুর্ততা এবং জন্ম-মৃত্যুর গতিময়তার সাথে কত আচার যুক্ত ছিল, যার চিহ্ন নেই। মানুষকে পরিণত করেছিল আধ্যাত্মিক প্রাণীতে। মিশরীয় সংস্কৃতি ঘাটলে আদিম ফারাওদের শেষকৃত্যের ঐতিহ্য এখনও খুঁজে পাওয়া যায়। পেত্রার সমাধিতে ‘বৃদ্ধ ব্যক্তি’ অভিধা দেখা গেছে, যা মিশরীয় ফারাওদের ক্ষেত্রেও সাধারণত লক্ষ্যণীয়। রোমানিয়া এবং বলকানে কোলিভা নামে প্রচলিত শেষকৃত্যের শিকড় প্রাচীন গ্রিসের ডেলফিতে। ধর্মগুলোকে যতটা বিচ্ছিন্নভাবে পাঠ করা হয়, মূলত তারা ততটা বিচ্ছিন্ন না।
অপার্থিব
ব্যবহার্যের উপযোগ এবং দক্ষতার কারণেই পাথর থেকে লোহার দিকে ঝুঁকে পড়ে মানুষ। খনির রহস্য বোঝার হাজার বছর আগে রপ্ত করেছে লোহার ব্যবহার। অ্যাজটেক বাহিনীকে পরাজিত করার পর কর্টেজ গোত্রপ্রধানের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তাদের ব্যবহৃত ছুরির উৎস। গোত্রপ্রধান আঙুল দিয়ে আকাশ দেখিয়ে দিয়েছেন। সুমেরীয় শব্দে লোহাকে আনবার বলা হতো, যার লিখিত প্রতীক ছিল আকাশ এবং আগুন। মিশর কিংবা হিট্টাইটদের মাঝেও লোহার ছিল একই মর্তবা। কিন্তু আকাশ কেন- সেই প্রশ্নের সুরাহা হয়নি। যা-ই হোক, লোহা তখন সহজলভ্য না অতো; বিশেষ করে উপাসনা কাজে ব্যবহৃত হতো।
লোহা পবিত্র হয়ে ওঠার পেছনে ধর্মীয় তাৎপর্য ঢের। আকাশের পবিত্রতা ছাড়াও এখানে দুনিয়াবি পবিত্রতাও জড়িত। গুহা বা খনি পৃথিবী মাতার গর্ভের মতো। লোহা সেখানে সন্তানের মতো ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। যেন এক অপার্থিব সম্পর্ক। পৃথিবীর নানা সংস্কৃতিতেই খনি খোড়ার সময় পবিত্রতা অর্জন, উপবাস, ধ্যান, উপাসনার মতো ধর্মীয় চর্চা প্রচলিত ছিল। ভূগর্ভে প্রবেশের সময় তাকে ভিন্ন জগতে যাত্রা বলেই গণ্য করা হতো। মানুষের কর্তৃত্ব নেই এখানে। গড়ে উঠেছে অজস্র লোককথা, জিন, এলফ্, বামন, আত্মা এবং জিনের কেচ্ছা। তৈরি হয়েছে নানা পূর্বশর্ত, ট্যাবু এবং বিশেষ উৎসর্গের ধারণা। এজন্য শামান, ডাক্তার এবং জাদুকরের পাশাপাশি কামারকে শ্রদ্ধা করা হয় নানা সংস্কৃতিতে। কারণ তিনি আগুনের মাধ্যমে ধাতুকে এক রূপ থেকে অন্য রূপে নিতে পারেন।
বিভিন্ন উপকথায় দেখা যায় স্বর্গীয় কামার দেবতাদের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে ড্রাগন কিংবা দানব বধে সাহায্য করেন। কানানাইট উপকথায় কোশার-ওয়া-হাসিস দেবতা বা’লের জন্য চুরি করে আনেন একজোড়া গদা। তা দিয়ে বা’ল হত্যা করে সমুদ্র আর পানির দেবতা ইয়ামকে। মিশরীয় পুরানে প্তাহ চুরি করেন স্বর্গীয় অস্ত্র; যা দিয়ে হোরাস পরাজিত করেন সেথকে। ভারতীয় উপকথায় বিশ্বকর্মা অস্ত্র বানিয়ে দেন; তা দিয়ে ইন্দ্র যুদ্ধ করে বৃত্রের সাথে। গ্রিক পুরাণে হেফায়েস্টাস বজ্র চুরি করে দেন, যা দিয়ে জিউস বিজয় অর্জন করে টাইফুনের উপর। এভাবে সভ্যতার প্রতিটা অগ্রগতি মানব অস্তিত্ব ও বিশ্বাস ব্যবস্থায় নতুন স্রোত নিয়ে হাজির হয়।
তারপর
দালিলিক ঘাটতি থাকার পরেও প্রস্তর যুগের সংস্কৃতির নিদর্শন দেখা যায় পশ্চিম ভূমধ্যসাগর, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ, নীলনদের উপত্যকা, চীন, জাপান এবং আমেরিকাতে। পার্শ্ববর্তী শিকার সংস্কৃতিতেও নব্যপ্রস্তর বিপ্লবের সুফল প্রবাহিত হতে থাকে। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম সহস্রাব্দের দিককার আইবেরিয়ান পেনিনসুলায় মিলেছে মেগালিথিক সমাধি। পূর্বপুরুষের আত্মা, পৃথিবী দেবী এবং নিয়তির ধারণা কাঠামো দিয়েছে ধর্মচিন্তাকে। আফ্রিকায় উপাসনার ধরন ছিল ভিন্ন। প্রাচীন মিশরেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ ছিল মৃত্যু এবং মৃত্যুপরবর্তী জীবনের বিষয়ে।
প্রাচীন চীনের ইয়াং শাও সংস্কৃতিতে পূর্বপুরুষ এবং উর্বরতাই প্রাধান্য পেয়েছে। মনোযোগ ছিলে প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তির দিকে। জাপান যদিও বিচ্ছিন্ন থেকেছে; তথাপি দাগ রেখে গেছে সূর্য এবং পাথর উপাসনার। মালয় দীপপুঞ্জ এবং মধ্য-আমেরিকার অবস্থা স্বতন্ত্র। হয়তো মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকার মতো উর্বরতায় বিভোর না হলেও রেখেছে সমুদ্রমুখীতার ছাপ। এভাবে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়েও এক অদ্ভুত সাংস্কৃতিক ঐক্য রচিত হয়েছে জনপদগুলোতে। যেন দক্ষ এক গাইড মানুষকে পরিণত আর প্রস্তুত করে তোলছেন মহান এক অভিযাত্রার জন্য।