বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ২০০৬ সালের আজকের দিনে ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের আক্ষেপ ঘুচেছিল বাংলাদেশের। ২০০৬ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে চার উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়লাভ করে স্বাগতিকরা। এর আগে টানা ১৫টি ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন টসে জিতে সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে প্রথমে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান। শুরুতেই সৈয়দ রাসেলের বলে মাত্র দুই রান করে সাজঘরে ফেরেন শ্রীলঙ্কার ওপেনার জেহান মুবারক। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুমার সাঙ্গাকারার সাথে ৬৭ রান যোগ করে দলকে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখান সনাৎ জয়াসুরিয়া।
২৩ রান করা সাঙ্গাকারা রাসেলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরার পর একাই লড়াই চালিয়ে যান জয়াসুরিয়া। সৈয়দ রাসেল, রফিক এবং মাশরাফিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একপর্যায়ে ১৬৮ রান তুলতেই সাত উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। এই ১৬৮ রানের মধ্যে জয়াসুরিয়া একাই করেন ৯৬ রান। তিনি ১১০ বলে আটটি চার এবং একটি ছয়ের মারে ৯৬ রান করে রফিকের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। শেষদিকে মারুফের ২১ ও বান্দারার ১৮ রানের উপর ভর করে বাংলাদেশকে ২১৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের দুই পেসার সৈয়দ রাসেল ও মাশরাফি ছিলেন বেশ মিতব্যয়ী। রাসেল ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান দিয়ে দুই উইকেট এবং মাশরাফি ৩১ রান দিয়ে এক উইকেট শিকার করেন। এছাড়া রফিক এবং কাপালি দুটি করে উইকেট শিকার করে শ্রীলঙ্কাকে ২১২ রানে আটকে রাখতে সহায়তা করে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পূর্বের ১৫টি ওয়ানডেতে পরাজিত হওয়া বাংলাদেশ বগুড়ায় ২১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখেশুনেই করেছিলো। দুই ওপেনার জাভেদ ওমর ও শাহরিয়ার নাফিস উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ৩৮ রান যোগ করেন। নাফিস ১৭ রান করে আউট হওয়ার পরপর মাত্র ছয় রান করে রাজিন সালেহও সাজঘরের পথ ধরেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৬ রান যোগ করে শক্তিশালী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান আশরাফুল ও জাভেদ ওমর। জাভেদ ওমর ৪০ রান করে ফিরে গেলেও বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেননি অধিনায়ক বাশার এবং আশরাফুল। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৬৩ রান।
মাত্র এক রানের ব্যবধানে ৫১ রান করা আশরাফুল ও ৩৩ রান করা বাশার ফিরে গেলে চিন্তার ভাঁজ পড়ে দর্শকদের কপালে। সেখান থেকে কোনOরকম বিপর্যয় ঘটতে না দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন আফতাব আহমেদ। তিনি ২১ বলে দুটি চার এবং একটি ছয়ের মারে অপরাজিত ৩২* রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের চার উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন। ব্যাট হাতে ঝড়ো ৩২* রানের পাশাপাশি বল হাতে এক উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন আফতাব আহমেদ।
সেইসময় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের এই জয় দেশের সর্বস্তরের মানুষ উৎসব উদ্দীপনার সাথে উদযাপন করেন।
ফিচার ইমেজ- AFP