ইমাম কুরতুবি ‘আল জামিয়ি লি আহকামুল কোরান’ গ্রন্থে কা’বাকে পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত বলে দাবি করেছেন। দুয়েকটা মারফু হাদিসের প্রসঙ্গ টেনে বেশ কিছু পণ্ডিতও দাঁড়িয়েছেন পক্ষে। বিষয়টা আবেগের; খোদার ঘর কেন বিশ্বজগতের কেন্দ্রে হবে না! কোরান সরাসরি কথা না বললেও সমর্থকদের ভেতরে এই মতবাদ গড়ে উঠার পেছনে আছে মানুষের চিরকালের পবিত্রতম অভ্যাস। আর তাই প্রত্যেকটা ধর্ম এবং সংস্কৃতিই একটা কেন্দ্রের ধারণা নিয়ে কথা বলে বা বলতে চায়। যে ধারণায় দাঁড়িয়ে উত্থান ঘটে সভ্যতার।
ধার্মিকের চোখে পৃথিবীর সমস্ত স্থান সমান না। জ্যামিতি আর ভূগোলের ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃতির কোনো একটা স্থান হয়ে উঠে আরো বেশি সত্য; আরো বেশি অর্থপূর্ণ। অস্তিত্বশীল জগতের মাঝে আরো বেশি অস্তিত্বশীল। যেন নশ্বর ইহজগতের দরজায় পরকালীন চিরন্তন জীবনের অনুভূতি। কোনো স্থান পবিত্র হয়ে উঠার পেছনে এই ধারণাটা বীজের মতো। যার পরিণত রূপ, নির্ধারিত স্থানকে বিশ্বজগতের কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা। প্রশ্নটা সত্য বা মিথ্যার না; প্রশ্নটা অস্তিত্বের অতল অনুভূতির। আর তাই বিশ্বজগতের কেন্দ্র মনে করা হয়েছে কখনো কোনো পাহাড়, কখনো উপসনালয়, শাসকের প্রাসাদ কিংবা কখনো কোনো শহরকে।
যখন পাহাড়
ভারতীয় বিশ্বাস অনুসারে মেরু পর্বত পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত। সেখান থেকেই চালিত হয় পৃথিবী। উরাল-আলতাইক ভাষাগোষ্ঠীর কাছে সুমেরু সমান তাৎপর্যপূর্ণ। জরথুস্ত্রবাদের কিতাব আবেস্তার ভাষ্যে বিশ্বজগতের কেন্দ্র আলবুর্জের হরবেরাজাইতি পর্বত। হরবেরাজাইতি শব্দের অর্থ ‘উঁচু ঘাটি’। এটা এমন জায়গা; যাকে কেন্দ্র করে গ্রহ-নক্ষত্র আবর্তিত হয়। লাওসের বৌদ্ধ মতাবলম্বীদের কাছে সিয়ামের উত্তরে জিননালো পর্বত মহাজগতের কেন্দ্রের মর্যাদা পেয়েছে। নর্স পুরাণে এডা কাব্যের হিমিনবিয়র্গ মানে স্বর্গীয় পর্বত। বাইফ্রস্ট বেয়ে সেখানে যেতে হয়। ফিনল্যান্ড, জাপান কিংবা সাইবেরিয়ার মতো অঞ্চলেও রয়েছে কেন্দ্র ধারণা।
মালয় উপদ্বীপে মহাবিশ্বের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল বতু রিবন। প্রাচীন ফিলিস্তিনে তাব্বুর পর্বতকে মনে করা হতো কেন্দ্র। আসলে তাব্বুর শব্দের অর্থই নাভি। সেন্ট পিটারের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘ফিলিস্তিন সবচেয়ে উঁচু ভূমি। কারণ তা মহাজাগতিক পাহাড়ের শীর্ষবিন্দুর খুব নিকটে অবস্থিত’। ইহুদি গ্রন্থে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলের মাটি কখনোই প্লাবনে ডুবেনি এবং ডুববে না। খ্রিষ্টিয় বিশ্বাসে সেই তকমা পেয়েছে গলগসা। বিশ্বাস অনুসারে, সেখানে যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে। গলগসার মাটি থেকেই তৈরি করা হয়েছিল আদমকে, মৃত্যুর পরে সেখানেই দেয়া হয়েছে কবর। এভাবে ক্রুশবিদ্ধ যীশুর রক্ত গিয়ে পড়েছে কবরস্থ আদমের কঙ্কালে। মহান ত্যাগের মধ্য দিয়ে মানবজাতির কাঁধ থেকে নেমে গেছে আদি পাপের বোঝা।
কখনো উপসনালয়
প্রাচীন মেসোপটেমীয় নিজেদের অবস্থানকে পৃথিবীর কেন্দ্রে ধরে পূর্ব-পশ্চিম নামকরণ করেছে। তাদের ব্যবহৃত শব্দ আসু (পূর্ব) থেকেই বর্তমান এশিয়া এবং এরেবু (পশ্চিম) থেকেই বর্তমান ইউরোপ নামের উদ্ভব বলে পণ্ডিতদের ধারণা। ব্যবিলনের মন্দির এবং খোদ নামটাই নির্দেশনা দেয় ইহকালীন আর পরকালীন যোগাযোগের। ব্যবিলন শব্দের জন্ম বাব-ইলানি থেকে; অর্থ দেবতাদের দুয়ার। কারণ এর মধ্য দিয়েই দেবতারা মর্ত্যে নেমে আসতেন। আর এ কারণেই তা পৃথিবীর কেন্দ্র। ইন্দোনেশিয়ার জাভাতে নির্মিত মন্দির বরোবদুরকে গণ্য করা হতো মহাবিশ্বের ক্ষুদ্র প্রতিকৃতি। বস্তুত মাইক্রোকসমিক ধারণা প্রায় প্রতি উপাসনালয় ঘিরেই থাকে।
পাহাড় আর কৃত্রিম স্থাপনা- দুটোই স্বাভাবিক দুনিয়া থেকে উঁচুতে অবস্থিত। প্রাকৃতিক হোমোজেনিটির ঊর্ধ্বে গিয়ে হেটারোজেনাস পরিচিতি তৈরি করে। স্বাভাবিক প্রকৃতি থেকে নগরীও তাই বিশ্বজগতের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ইহুদি বিশ্বাস অনুসারে ডেভিড প্রতিষ্ঠিত ‘যায়ন’ কখনোই পানিতে তলায়নি; কারণ তা পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত।
গ্রিক শব্দ ওমফ্যালাস অর্থ নাভি। মন্দির স্থাপনের জন্য দেবরাজ জিউস পৃথিবীর কেন্দ্র খুঁজে বের করতে চাইলেন। তার জন্য দুই হাতে দুই ঈগল নিয়ে দুই দিকে সমান গতিতে ছুটতে দিলেন। সমান পথা অতিক্রম করে পাখিদ্বয় ডেলফির মন্দিরের স্থানে মিলিত হলো। জিউস সেখানে একটি পাথর স্থাপন করলেন। প্রাচীন গ্রীস এবং ভূমধ্যসাগরীয় সভ্যতার কাছে ডেলফির পাথর ছিল শক্তিশালী প্রতীক।
এক্সিস মুন্ডি
পৃথিবীর এমন স্থানকে এক্সিস মুন্ডি বলা হয়; যেখানে বিশ্বাস মতে স্বর্গ ও দুনিয়া মিলিত হয়েছে। মানুষ আর দেবতাদের বসাবাসের চৌকাঠ। বিষয়টা সহজভাবে বুঝার জন্য স্ট্রেঞ্জার থিংস টিভি সিরিজ থেকে সেই গবেষণাগারের পোর্টালের কথা মনে করা যায়; যা যুক্ত করেছে দুইটা পৃথিবীকে। সম্প্রতি বহুল আলোচিত ডার্ক টিভি সিরিজের গুহার কথাও প্রাসঙ্গিক হতে পারে। অবশ্য প্রাচীন শামানদের কাছে এই বিশ্বাস ছিল আরো বেশি শক্তিশালী। এক্সিস মুণ্ডি তাদের কাছে একটা রাস্তার মতো। ব্যক্তি শামান তার চর্চার সময় সেই রাস্তায় ভ্রমণ করতে পারেন স্থান আর সময়ের সীমাবদ্ধাতা উপেক্ষা করেই। ফলে এসব চর্চাকারী পেতো চিকিৎসক, জ্ঞানী এবং আত্মার সাথে যোগাযোগকারী হিসেবে খেতাব।
ব্যবিলনের দুইটা শহর নিপপুর এবং লারসা। সেখানকার উপসনালয়গুলোকে বলা হতো দুর-আন-কি; অর্থ স্বর্গ ও পৃথিবীর বন্ধনী। পবিত্র শহর কিংবা উপসানলয় প্রতীকায়িত করে স্বর্গ, মর্ত্য আর নরকের মিলনবিন্দুকে। এজন্যই ব্যবিলন শহর দাঁড়িয়ে আছে ‘বাব আপসি’ বা ‘দেবতা আপসুর দরজা’-র উপর। হিব্রুদের মধ্যে জেরুজালেমের টেম্পলকে তেহমের উপর অবস্থিত বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তেহমের ধারণা অনেকটা আপসুর মতোই। রোমান বিশ্বাসে ছিলো মুন্ডুস; যেখানে স্বর্গ, মর্ত্য আর পাতাল একই রেখায় মিলিত হয়েছে।
স্বর্গীয় বৃক্ষ
অনেক সময়েই বিশ্বজগতের কেন্দ্র হিসাবে আবির্ভূত হয় গাছ। মহাজাগতিক মহাবৃক্ষ প্রতিকায়িত করেছে তিনটা বিশেষ অংশকে। শাখাগুলো আকাশে, শরীরটা মাটিতে আর শিকরগুলো পাতালে। যেন একইসাথে একীভূত হয়েছে স্বর্গ, মর্ত্য এবং নরক। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলো সংস্কৃতিগতভাবেই গাছকে পবিত্র জ্ঞান করে। ভারতে বটগাছের আলাদা তাৎপর্য আছে। গৌতম বুদ্ধের বোধিবৃক্ষের কথা অনেকেরই জানা।
সবচেয়ে স্পষ্ট নর্স পুরাণের মহাজাগতিক বৃক্ষ ইগদ্রাসিল। দেবতা, মানুষ আর দানবদের নিয়ে নয়টা জগৎকে ধারণ করে থাকে ইগদ্রাসিল। আসগার্দ, মিদগার্দ, মুসপেলহেইম, সোয়াতালফেইম, এলফহেইম, নিফলহেইম, ইয়োতুনহেইম, ভানিরহেইম এবং হেল। লিথুয়ানিয়ান পুরাণে জিয়েভারাসও কাছাকাছি ধারণা দেয়। চীনা কিয়েন মু এমন একটা গাছ; যেখানে স্বর্গ, মর্ত্য এবং নরক মিলিত হয়েছে। আব্রাহামিক ধর্মে স্বর্গের ঠিক মাঝখানে ‘জ্ঞানবৃক্ষ’ বা নিষিদ্ধ গাছটি অবস্থিত ছিল বলে মত পাওয়া যায়। ক্রিসমাস ট্রি নামে যে ঐতিহ্য বহুল প্রচলিত; তার গোড়া প্রাচীন জার্মানির মহাজগতের কেন্দ্র ধারণার উপরেই প্রোথিত।
সৃষ্টির শুরু
মহাজাগতিক পর্বতের শীর্ষরেখার তাৎপর্য তাকে কেবল সৃষ্টিজগতের কেন্দ্রে পরিণত করেনি। এটা সেই বিন্দু যেখান থেকে সৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ যেন সমগ্র সৃষ্টির ভ্রূণের মতো। ঈশ্বর প্রথম বিশ্বজগতের নাভি সৃষ্টি করলেন; তারপর সেখান থেকে সব বিস্তৃত হতে থাকলো। এইজন্যই গ্রীসে ডেলফির মন্দির ওমফ্যালাস বা নাভি বলে স্বীকৃতি হয়। তুর্ক-আলতায়িক জাতিগোষ্ঠীর কাছে সুমেরু থেকে সৃষ্টির সূচনা বলে ঘোষিত।
ইহুদি ভাষ্য অনুসারে, পৃথিবী সৃষ্টির শুরু হয়েছে যায়ন থেকে। তারপর আস্তে আস্তে প্রসারিত হয়েছে সৃষ্টি। মানুষের সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বজগতের কেন্দ্রে। খ্রিষ্টিয় বিশ্বাসে আদম সৃষ্টির সাথেও গলগসা জড়িত। কোরানের কোনো ভাষ্য না থাকলেও মুসলিম পণ্ডিতদের অনেকে কা’বা থেকে পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা বলে মত প্রকাশ করেন। আদি পিতা আদমের জন্মের সাথে সংশ্লিষ্ট করেন কা’বাকে। মেসোপটেমীয় সভ্যতায় দুর-আন-কি ছিল মানুষ সৃষ্টির অবস্থান। পারসিক বিশ্বাসে আহুরা মাজদা বিশ্বজগতের কেন্দ্রেই তৈরি করেছিলেন আদিম মানুষ গাজোমার্দকে।
মানবদেহ
মানবদেহ নিজেই একটা ক্ষুদ্র ব্রহ্মাণ্ড। তার বড় আলোচনা দেখা যায় ইহুদি অতীন্দ্রিয়বাদী গোষ্ঠী কাব্বালাহর সেফাইরতের ধারণায়। মানবদেহ সেখানে স্বর্গ আর পৃথিবীর মধ্যে একটা পিলারের মতো। ভারতে হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মের চক্র ধারণা অনেকটাই কাছাকাছি। ভারতীয় যোগ কিংবা চীনা থাই চি এর চর্চাটা হয় মূলত মানবদেহকে এক্সিস মুন্ডি ধরে। বুদ্ধ হলেন মানব শরীরে মহাজগতের কেন্দ্র। ধ্যানমগ্ন মানুষ তাই স্বয়ং মন্দির কিংবা পবিত্র পাহাড়। জ্যোতিষবিজ্ঞান নক্ষত্রের সাথে মানবদেহের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করছে যুগ যুগ ধরে।
পৃথিবীর তাবৎ ধর্মই শরীরকে পবিত্র গণ্য করে। উপাসনা সেখানে স্বর্গ আর দুনিয়াকে সংযোগের প্রক্রিয়া। একটা মানুষকে ক্রুশে ঝুলানোর মাধ্যমে আনুভূমিক এবং উল্লম্ব যে রেখা মিলিত হয়; তা নির্দেশ করে পার্থিবতা আর পারলৌকিকতার মিলন। এখানেই খ্রিষ্টধর্মের ক্রুশের মর্তবা। মানুষকে কেন্দ্র ধরে আঁকা সবথেকে জনপ্রিয় চিত্রকর্ম লিউনার্দো দ্য ভিঞ্চির দ্য ভিট্রোভিয়ান ম্যান।
তাৎপর্য সন্ধান
বিশ্বজগতের এতো কেন্দ্র দেখে আপাত চোখে হাস্যকর মনে হতে পারে। কিন্তু ধর্মের এই মতবাদের দার্শনিক ভিত্তি আছে। যখন রাষ্ট্র কিংবা আইনের জন্ম হয়নি; সভ্যতার সেই প্রাচীনতম অবস্থাতেও ছিল ধর্মবিশ্বাস। পরিবার যেমন ব্যক্তিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সামষ্টিক ধারণার যোগান দেয়। ধর্ম তেমন পরিবারের বাইরে গিয়ে একটা সভ্য সমাজ ব্যবস্থার পথ নির্দেশ করে। আর সেই সমাজব্যবস্থা একটা কিছুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে হয়। ধর্মীয় উপাসনালয় সমাজে সেই কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করে। যেখান থেকে অঙ্কিত হয় সমাজের ভবিষ্যৎ।
বিষয়টা আরো সহজভাবে ভাবা যায়। একটা দেশের রাজধানী তার কেন্দ্র। এজন্য দেশটাকে বৃত্তাকার এবং রাজধানীকে পরিধি থেকে সমদূরবর্তী বিন্দুতে অবস্থিত হওয়া জরুরি না। কেন্দ্র থেকে চর্চিত হয় সাংস্কৃতিক নীতি নির্ধারণীর কাজ। অর্থাৎ ফ্যাকচুয়াল সত্য বা মিথ্যার চেয়ে মানুষের অস্তিত্বগত উপলব্ধি এখানে মুখ্য। যে উপলব্ধি দুর্নিবার আর বেপরোয়া মানুষকে সমাজের সামষ্টিক উদ্দেশ্যের সাথে তাল মেলাতে প্রস্তুত করে। পার্থিব সত্যের চেয়ে তা আরো বেশি সত্য।
সবিশেষ
জন্ম আর মৃত্যুর সীমাবদ্ধ সময় দিয়ে বাঁধা হাত পা। তারপরেও অমরত্বের প্রতি মানুষের চিরকালীন ক্ষুধা। যুগে যুগে তাই সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে পরমাত্মার সাথে। পবিত্র হয়ে উঠেছে কোনো একটা স্থান; কোনো একটা সময়। সেই এককের উপর দাঁড়িয়ে পরিমাপ করা হয়েছে বিশ্বজগতের সমগ্রটাই। আবিষ্কার করেছে, মানুষ স্বর্গের সন্তান; সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। এক্সিস মুন্ডির মাধ্যমে তাই প্রাণীসত্তার উপরে দেবসত্তা জয়যুক্ত হয়েছে। বিশ্বজগতের কেন্দ্রধারণা বেদুইন মানুষকে পরিণত করেছে সভ্য করার শক্তিতে।
রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত আলোচনায় পণ্ডিতরা সামাজিক চুক্তি মতবাদ সামনে আনেন। অথচ তার আগে পার হয়ে গেছে মানবজাতির লম্বা ইতিহাস। অতিক্রান্ত হয়েছে সমাজবদ্ধ থাকার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। সেই কাজটা করেছে অস্তিত্বচেতনা। ধর্মবিশ্বাস সেই অস্তিত্বচেতনার সাথেই যুক্ত। যখনই সভ্যতা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে; যখনই দেখা দেবে বিশৃঙ্খলা। তখনই মানুষের চিরায়ত চেতনা ব্যক্তিকে সমষ্টির দিকে নিয়ে যাবে। তৈরি হবে নতুন এক্সিস মুন্ডি; নতুন ‘সেন্টার অব দ্য ইউনিভার্স’।