Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ম্যারাথন মঙ্কস: নিরলসভাবে হাঁটাই যাদের সাধনা

বিশ্বাসের কোনো যুক্তি হয় না। বিশ্বাস মানুষকে তার সীমার বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষম। আমরা আমাদের ২৪ ঘণ্টার সময়ে নানা কাজের চাপে যখন ভাবি, “আজ অনেক পরিশ্রম করেছি, আজ আর পারছি না”, তখন আমাদের মনে রাখা উচিত যে কিছু এমন মানুষও আছেন যাদের জীবনে কঠোর শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম শ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই স্বাভাবিক। এমনই কিছু মানুষ হলেন জাপানের হিয়েই পর্বতের সাধকগণ।

কিয়োটোর উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এই পর্বতমালাকে বলা হয় মাউন্ট হিয়েই। ৪০০ এরও বেশি বছর ধরে মাউন্ট হিয়েই পরিচিত হয়ে আসছে ম্যারাথন মঙ্কদের আবাস্থল হিসেবে।

কাইহোগিও

জাপানী কাইহোগিও  শব্দের অর্থ ‘গোল চক্কর দেয়া’। তেন্দাই  তন্ত্রে বিশ্বাসী এই বৌদ্ধ সাধুগণের কাছে আক্ষরিক অর্থে চক্কর দেয়াই প্রার্থনা ও সাধনা। তেন্দাই  তন্ত্র বৌদ্ধ ধর্মের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ তন্ত্রের (ভাগের) একটি। তেন্দাই তন্ত্রমতে, মানুষ নিঃস্বার্থ কাজ, ত্যাগ ও একতার মাধ্যমে পার্থিব জীবনেই নির্বাণ লাভ করতে পারে। মাউন্ট হিয়েইতে ধ্যানমগ্ন থাকা সাধুগণ নানাভাবে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যেটি তাদের অন্যসব তেন্দাই সাধু থেকে আলাদা করে তা তাদের ১ হাজার দিনের ম্যারাথন।

অনড় দেবতা ফুদো মিয়ো

ফুদো মিয়োর মূর্তি Source: pinterest.com

দেবতা ফুদো মিয়োর সান্নিধ্য লাভের জন্য এই সাধুরা এত নিরলস পরিশ্রম করেন। ফুদো মিয়ো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন দেবতা। তাকে অনড় বলা হয়, কারণ তার অনড় বিশ্বাস দিয়ে ফুদো মিয়ো সকল পাপ নির্মূল করেন। তাকে সংস্কৃতে ‘অকাল’ বলা হয়। ফুদো মিয়ো পৃথিবীর পাপ, কলুষ, অত্যাচার-অবিচার দেখে তীব্র ক্রোধ অনুভব করেন, বিধায় তার মূর্তিটি বেশ ভয়াল দেখায়। চোখের ভ্রূগুলো কোঁচকানো, মুখে শ্লেষাক্ত হাসি আর হাতে বর্শা, যা দিয়ে তিনি সকল দুষ্কৃতিকারীর মুণ্ডুপাত করেন।

কিন্তু একইসাথে ফুদো মিয়ো সেই বর্শা দিয়ে মানুষের অন্তরের অজ্ঞতাও নির্মূল করেন। অনেকের মতেই তিনি প্রথমে সনাতন ধর্মের দেবতা ছিলেন, পরে বৌদ্ধ ধর্মে তার আরাধনা শুরু হয়। ফুদো মিয়োর সাথে সনাতন ধর্মের দেবী কালীর অনেক মিল পাওয়া যায়।

যেভাবে শুরু হলো

হাঁটার মাধ্যমে ঈশ্বরকে পাওয়ার এই সাধনা শুরু হয় ৮৩১ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে। প্রচলিত আছে, সোও ওশো নামের ১৫ বছর বয়সী এক যুবক একবার মাউন্ট হিয়েইতে আসে। তার ছিল না কোনো বাড়িঘর বা পরিচয়। এনিন নামের একজন বৌদ্ধ সাধু বালকটিকে খুঁজে পান, তাকে তেন্দাই তন্ত্রে দীক্ষা দেন এবং তার নাম রাখেন সোও। সোও বিশ্বাস করতেন যে নিঃস্বার্থ কাজ ও পরোপকারের মাধ্যমেই ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধনায় বসে না থেকে তাই সোও বেরিয়ে পড়েন দুঃখী ও অসহায় মানুষের সেবা করতে।

তিনি জানতেন কিছু মন্ত্র, যার মাধ্যমে তিনি কঠিন অসুখ সারাতে পারতেন, জন্মদানে সাহায্য করতে পারতেন এবং অশুভ শক্তির বশ থেকে মানুষকে মুক্ত করতে পারতেন। কথিত আছে, একদিন এমনই এক সময় হাঁটতে হাঁটতে তিনি ঝর্ণার মধ্যে দেবতা ফুদো মিয়োকে দেখতে পান। পরম শ্রদ্ধায় বিগলিত হয়ে যখন তিনি ঝাঁপ দেন, তখন একটি কাঠের গুড়ি তার দিকে এগিয়ে আসে। এই কাঠের গুড়ি ধরেই তিনি প্রাণরক্ষা করেন।

তার ত্রাণকর্তা এই কাঠের গুড়ির মধ্যে তিনি ফুদো মিয়োর চিত্র খোদাই করেন। এভাবেই পথ চলতে চলতে মানুষকে সাহায্য করতে করতে তিনি কাঠের গুড়িতে দেবতা ফুদোর চিত্র খোদাই করতেন। সব গুড়ি তিনি জমা করতেন হিয়েই পর্বতে। এভাবেই ১৭৮৭ সালে গড়ে উঠে হিয়েই পর্বতে ফুডো মিয়োর প্রার্থনাস্থল ‘মিয়ো-ইন’

জাপানের মাউন্ট হিয়েই Source: spydersden.wordpress

ম্যারাথন মঙ্কদের সাধনা ও দৈনন্দিন জীবন

সাধু সোওয়ের আদর্শ মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন মাউন্ট হিয়েইর সাধুগণ। ম্যারাথন মঙ্কের খেতাব পাওয়া খুব সহজসাধ্য নয়। এর জন্য তাদেরকে ১২ বছর কঠোর পরিশ্রম ও সাধনা করতে হয়। এই ১২ বছর তারা ব্রহ্মচর্য ব্রত পালন করতেন, কিন্তু তারা আজীবন কুমারত্ব পালন করতেন না। বিধায় বেশিরভাগ গোয়েজা (শিক্ষানবিশ সাধু) হিয়েইর ম্যারাথন মঙ্কদেরই সন্তান। ব্রহ্মচর্য ব্রত ছাড়াও তারা ধ্যান, উপাসনা, মন্ত্রপাঠ করতেন এবং কাইহোগিও পালন করতেন।

কাইহোগিওকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ১০০ দিন, পরবর্তী ৭০০ দিন এবং সর্বশেষ ১০০০ দিন। প্রথম ১০০ দিন শিক্ষানবিশ সাধু বা গোয়েজাগণ তাদের জ্যেষ্ঠ সাধুদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতেন এবং হিয়েইর যে যে অংশ তাদের প্রদিক্ষণ করতে হবে, সে রাস্তাগুলো পরিষ্কার করতেন, যাতে কাঁচ, ব্লেড বা কিছুতে লেগে তাদের পা কেটে না যায়। এই ১০০ দিনের উপর তাদের পরবর্তী জীবন নির্ভর করতো, কারণ এই ১০০ দিনে যদি তাদের মনে হয় যে তারা পরবর্তী ৭০০ এবং ১০০০ দিন এই ম্যারাথন চালিয়ে যেতে পারবেন না, তাহলে তারা সরে আসতে পারতেন।

কিন্তু একবার যদি তারা পরবর্তী ৭০০ ও ১০০০ দিনের ম্যারাথন শেষ করার প্রতিজ্ঞা করে বসেন, তাহলে এক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখান থেকে সরে আসতে পারতেন না। ১০০০ দিনের মধ্যে প্রতিদিন তাদের ম্যারাথন চালিয়ে যেতে হতো। কোনোদিন অপরাগ হলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে আত্মহত্যা করতে হতো।

ম্যারাথনের সময়সূচী  

১ম বছর:   ৩০-৪০ কিলোমিটার  প্রতিদিন ১০০ দিনের জন্য

২য় বছর:   ৩০-৪০ কিলোমিটার  প্রতিদিন ১০০ দিনের জন্য

৩য় বছর:   ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতিদিন ১০০ দিনের জন্য

৪র্থ বছর:    ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতিদিন ২০০ দিনের জন্য

৫ম বছর:  ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতিদিন ২০০ দিনের জন্য

৬ষ্ঠ বছর:  ৬০ কিলোমিটার প্রতিদিন ১০০ দিনের জন্য

৭ম বছর:  ৮৪ কিলোমিটার প্রতিদিন ১০০ দিনের জন্য এবং ৩০ কিলোমিটার প্রতিদিন ১০০ দিনের জন্য

অতএব, মোট ১০০০ দিনের ম্যারাথন শেষ করতে তাদের সাত বছর সময় লাগতো।

চলার ভঙ্গি ও পোশাকআশাক

দীর্ঘ সাত বছর যাবত একই পথে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত না থেমে চলা সোজা কথা নয়। এর জন্য প্রয়োজন চমৎকার একাগ্রতা। তাই এই সন্ন্যাসীরা যে সময়টুকু হাঁটেন না, সে সময় তারা ব্যয় করেন উপাসনা এবং তাদের শরীর ও মনের একাগ্রতা বাড়ানোর কাজে। প্রথমেই তাদের শিখতে হয় তাদের শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করা। হাঁটার তালে তালে শ্বাস নেয়া ও একইসাথে মন্ত্র পাঠ করতে শেখেন তারা। এরপর পালা আসে চোখের বা দৃষ্টির একাগ্রতা বৃদ্ধির। সন্ধ্যাতারা বা দূরের কোনো বস্তুর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাদের। এসময় তাদের কাঁধ, পিঠ ও মাথা সমান্তরালে থাকে। ঠিক এই সোজা ভঙ্গিতেই তাদের পুরো সময় থাকতে হয়, হোক হাঁটা বা অন্য কোনো কাজ।

তাদের পোশাক; Source: www.slideshare.net

প্রতিদিন তারা ঘুমাতে যান রাত ৮-৯টা বাজে এবং ওঠেন রাত ১২ টায়। এই অল্প সময়ের ঘুমই তাদের জন্য অনেক বলে মনে হয়। ১২ টায় উঠে মন্ত্রপাঠ ও উপাসনার পর ১.৩০টার দিকে তারা বেরিয়ে পড়েন হাঁটতে। প্রতিদিন তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করে, তারা কেউই জানেন না, আজ আর তারা আশ্রমে ফিরে আসতে পারবেন কিনা। তাই অন্য বৌদ্ধ সাধুদের মতো গেরুয়া না পরে তারা গায়ে চরান সাদা বস্ত্র, যা মৃত্যুর প্রতীক। এর সাথে থাকে খড় দিয়ে বানানো টুপি আর কয়েক জোড়া খড়ের জুতো। কোমরে বাঁধা থাকে একটি দড়ি ও এর মধ্যে পেঁচানো থাকে একটি ছুরি। এই দুটো বস্তু তাকে প্রতিক্ষণ মনে করিয়ে দেয় যে কোনো কারণে থেমে গেলে তাকে তার জীবন দিতে হবে।

মাথার খড়ের টুপির মধ্যে গোঁজা থাকে কিছু টাকা। যদি ক্লান্তির কারণে বা আত্মহত্যা করে কোনো সাধু রাস্তায় মারা যান, তাহলে সে টাকা দিয়ে যেন তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এভাবেই মাউন্ট হিয়েইতে বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে আছে অসংখ্য অজ্ঞাতনামা কবর।

মাউন্ট হিয়েইর বিভিন্ন জায়গায় থাকা উপাসনালয়গুলো তাদের অবশ্যই প্রদক্ষিণ করতে হয়। এই জন্য তাদের কাঁধের ঝোলা ব্যাগে তারা নেন একটি হ্যান্ডবুক, সূত্রপাঠের বই, কিছু মোমবাতি, ম্যাচ ও আগরবাতি।

ম্যারাথন মঙ্কদের হাঁটা অন্য সবার হাঁটার মতো নয়। তারা যখন হাঁটেন, তখন প্রকৃতির সাথে একাত্মতা অনুভব করেন। তারার দিকে তাকিয়ে, শ্বাসের সাথে সাথে মন্ত্রপাঠ করে ঈশ্বরকে মনে করতে করতে তারা হাঁটেন। কখন রাত মিলিয়ে ভোর হয়, তারা জানেন না। খুব অভিনব কায়দায় বিশ্রাম নেন তারা। হাঁটার মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অংশকে আলাদাভাবে বিশ্রাম দেন। যেমন- হাতকে বিশ্রাম দেয়া, কাঁধকে বিশ্রাম দেয়া। তারা যেকোনো অবস্থায় কাজের ফাঁকে ঘুমিয়ে নিতেও পটু। হয়তো রাস্তা পার হচ্ছেন, ট্রাফিক লাইট সবুজ হতে যতক্ষণ লাগে, ততক্ষণ তারা ঘুমিয়ে নিলেন!

তারা হাঁটার সময় অকাল মন্ত্র বা ফুদো মিয়োর এই মন্ত্রটি পাঠ করেন:

 নোমাকু সানমানদা বাজারাদান সেন্দা/ মাকারোসাদা সোয়াত্যাইয়া উন তারাতা কুনমান (জাপানী)

যার অর্থ হয়- “ধ্বংস করো হে বজ্র প্রভু। মহান ক্রোধের হিংস্র প্রভুর নিকট জানাই আরতি।”

দইরি

কীভাবে তারা এত পটু ও একাগ্র হয়ে ওঠেন? কেন তারা পার্থিব কোনো লোভ দ্বারা বিচলিত হন না? এর প্রধান কারণ, মৃত্যুকে তারা খুব কাছে থেকে দেখেছেন। ম্যারাথনের ৭০০তম দিন পূর্ণ হওয়ার পর তাদের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। আশেপাশের বিভিন্ন আশ্রমে মঙ্কগণ শেষবার একসাথে ভোজন গ্রহণের নিমন্ত্রণ পাঠান। কারণ এরপর সাতদিন তাদের কোনোপ্রকার খাবার ও বিশ্রাম থেকে দূরে থাকতে হবে।

পূর্বে দশদিন সাধুদের দইরি পালন করতে হতো। এছাড়া গ্রীষ্মকালে দইরি পালন করতে গিয়ে অনেক সাধুরই অত্যধিক তাপে অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ শুকিয়ে যেত- অর্থাৎ নির্ঘাত মৃত্যু। তাই বর্তমানে দইরির সময় কমিয়ে সাতদিনে আনা হয়েছে

সাতদিন কোনোপ্রকার খাদ্য, পানীয় বা বিশ্রাম থেকে দূরে থাকার নামই দইরি। পুরোটা সময় সাধুদের মন্ত্রপাঠ করতে হয়। তবে তাদের মতে, না খেয়ে থাকার চেয়ে বেশি কষ্ট হয় সবসময় সোজা অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা। পঞ্চম দিন তারা পর্বতের নিচে খোলা আকাশের নিচে গিয়ে শ্বাস নিতে পারেন, এছাড়া পানি দিয়ে মুখও ধুয়ে নিতে পারেন, তবে শর্ত থাকবে যে এক বিন্দু পানিও যেন তাদের মুখের ভেতর না যায়।

দইরি পালনরত সাধুর সাথে আরও দুজন সাধু থাকবেন নজর রাখার জন্য যে তিনি আবার ঘুমিয়ে পড়েন কিনা। সপ্তম দিনে যখন তাকে বের করে আনা হয়, তখন কিছুক্ষণের জন্য তারা অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর যে মানুষটি জেগে ওঠে, তার পার্থিব জীবনের সাথে আর কোনো সম্পর্ক থাকে না। সবধরনের বিলাসিতার প্রতি তার অনাগ্রহ জন্ম নেয়; তারা হয়ে ওঠেন ‘জীবিত বুদ্ধ’। বলা হয়, এই সাতদিনে তারা সোওয়ের মতোই ফুডো মিয়োর দর্শন লাভ করতেন।

১৮৮৫ সাল থেকে মাত্র ৪৬ জন সাধু ১০০০ দিনের এই ম্যারাথন শেষ করতে পেরেছেন। এর মধ্যে ইওসাই সাকাই নামের একজন মঙ্ক ১৯৭৩-১৯৮০ সালের মধ্যে একবার ও ১৯৮২-১৯৮৭ সালের মধ্যে দ্বিতীয়বার ১০০০ দিনের ম্যারাথন সম্পন্ন করেন। দ্বিতীয়বারে তার বয়স ছিল ৬৪ বছর।

দইরি শেষ করা একজন জাপানী সাধু Source: buddhistdoor.net

আমাদের জীবনে কাইহোগিও’র শিক্ষা

ম্যারাথন মঙ্কদের কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে মূল্যবান শিক্ষা হলো কখনো হার না মানা। জীবনে প্রতিটি কাজ আমরা যদি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে করতে শিখি, তাহলে সাফল্য আসবেই। এছাড়া ম্যারাথন মঙ্কদের সাধনা প্রমাণ করে যে আমরা চাইলে যেকোনো অসুবিধাকে জয় করতে পারি। প্রয়োজন আমাদের মনকে শক্ত করা। এই সাধুরা সাত বছর তাদের মনকে একটি লক্ষ্যের দিকে চালিত করেছেন। নিশ্চয়ই তাদের অনেকবারই হতাশা ঘিরে ধরেছে। কিন্তু তারা হাল ছাড়েননি। মনোবিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে মন যদি আগে হতাশ হয়ে পড়ে, তাহলে ধীরে ধীরে শরীরও হাল ছেড়ে দেয়। ধ্যান বা মেডিটেশনের মাধ্যমে আমরা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ এবং গঠনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি! তাই এখন থেকে কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আগে মনকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করা আমাদের শিখতে হবে।

তথ্যসূত্র:

The Marathon Monks of Mount Hiei, John Stevens (1988)

Featured Image: spydersden.wordpress

 

Related Articles