দিয়ে গেনু বসন্তের এই গানখানি–
বরষ ফুরায়ে যাবে, ভুলে যাবে জানি॥
তবু তো ফাল্গুনরাতে এ গানের বেদনাতে
আঁখি তব ছলোছলো, এই বহু মানি॥
কবিগুরুর এ গানের মতোই কালের ফেরে প্রকৃতির সতেজ রং আর নবসাজের দিকপাল হয়ে আসা ঋতুরাজ বসন্তও একসময় বিদায় নেয়। সঙ্গে নিয়ে আসে নতুন বছর ও নতুনত্বের সওগাত। ফাল্গুন ও চৈত্র এই দু’মাসব্যাপী চলা বসন্তের রাজত্ব এসে শেষ হয় চৈত্রের অন্তিম দিনে- সেই সঙ্গে বয়ে নিয়ে আসে নতুন বাংলা বছরের সূচনালগ্নের আগাম সুবাস। পুরনো বছর ও জীর্ণতাকে বিদায় এবং নতুন বছর ও আশাকে বরণ করার উৎসব চৈত্র-সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ। নববর্ষের আগের দিন তথা পুরনো বছরের শেষ দিনে পালিত হওয়া এই উৎসব বাঙালির আদি সংস্কৃতি ও লোকাচারের অংশ। আজকের এই লেখনীর বিস্তারও তাই চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরেই।
বাংলা বছরের হিসেব চলে সূর্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। এ দিন সূর্য মীন প্রতীকের মধ্যে প্রবেশ করে, দিনগুলো বড় হতে থাকে। ক্রান্তি শব্দের অর্থ কিনারা, সংক্রান্তি বলতে বুঝায় সঞ্চার বা গমন করা- অর্থাৎ এক কিনারা থেকে অন্য কিনারায় গমন করা। চৈত্র সংক্রান্তি বলতে বুঝায় পুরনো বছরের কিনারা থেকে নতুন বছরে আরোহন। কালের ফেরে সূর্য তার সঞ্চারপথে বারবার ঘুরে আসে এবং সেই সাথে পুনরায় ফিরে আসে ঋতু ও মাস। তাই পুরনো বছরের কিনারা থেকে নব বছরের সূচনালগ্নে উপনীত হওয়াকেই চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবে পালন করা হয়। এ দিনকে সূর্য সংক্রান্তিও বলা হয়, কেননা এ দিন সূর্য এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে গমন করে।
এই দিনটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ববহ। সনাতনী পঞ্জিকানুসারে এই দিনটিকে বলা হয় মহাবিষুব সংক্রান্তি। তবে এর মূল উৎস সনাতনী ধর্মমতের সাথে সম্পর্কিত হলেও কালের ফেরে এটি রূপ নিয়েছে বাঙালির জাতীয় উৎসবের একটিতে। পুরাতন ও জীর্ণতাকে ঝেড়ে ফেলে নতুনত্বের বরণ এবং নতুন আশা, আকাঙ্খা, হাসি ও রঙের মণিকোঠায় পরিণত হয়েছে চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণের সম্মিলিত উৎসব। চৈত্র সংক্রান্তি পালিত হয় ১৩ই এপ্রিল তথা বর্ষবরণের আগের দিন।
আদি সনাতনী পুরাণ মতে, বাংলা চৈত্র মাসের নামকরণ করা হয়েছে চিত্রা নক্ষত্র থেকে। এই চিত্রা নক্ষত্রের নাম প্রজাপতি দক্ষকন্যা চিত্রার নামানুসারে হয়েছে। অপরপক্ষে বৈশাখ নামটি তার অপর কন্যা বিশাখার নামানুসারে হয়েছে। তবে পৌরাণিক তথ্যমতে, বৈশাখ আগে বাংলা সৌরবছরের প্রথম মাস ছিলো না, বরং দ্বিতীয় (বৈদিক যুগ) অথবা মধ্যম (তৈত্তিরীয় ও পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণ) কিংবা চতুর্থ মাস (ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ) ছিল। তবে এগুলো তখনো বাংলা সনের অন্তর্গত ছিলো না, বরং ভারতীয় সৌরবৎসর গণনা পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে সম্রাট আকবর বাংলাকে সুবা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পর এদেশের ফসল কাটার মৌসুম অনুযায়ী খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে বিজ্ঞ জ্যোতিষী ফতেহউল্লাহ্ সিরাজীকে দায়িত্ব দেন নতুন সালের প্রবর্তন করার। সিরাজী চান্দ্রমাস, সম্রাটের সিংহাসনে আরোহণের বছর এবং প্রচলিত সৌরবছর গণনা পদ্ধতির সমন্বয়ে সন গণনার নতুন রীতি প্রবর্তন করেন যেখানে সৌরমাসগুলোর নাম ঠিক রেখে সেগুলোকে পুনর্বিন্যাস করেন তিনি। সেই অনুসারে বৈশাখ সবার প্রথমে চলে আসে আর চৈত্র দিয়ে শেষ হয় বছর।
সনাতনী ধর্মমতে এ দিনটি খুবই পুণ্যময় এবং এদিনে শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে স্নান, দান, ব্রত ও উপবাস করা পূণ্যের কাজ। পিতৃপুরুষের তর্পণ এবং নদীতে পুণ্যস্নানও করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। স্নান ও সূর্য দেবতার পূজার পাশাপাশি উচ্চারণ করতে হয় গায়ত্রী মন্ত্র। চৈত্রমাসে প্রচুর গরম থাকায় এর শেষ দিনে নৈবেদ্য ও ভক্তির মাধ্যমে সূর্যদেবকে সন্তুষ্ট করার প্রয়াস করা হয়। মূলত এ দেশের আদি কৃষকসমাজ সূর্যের প্রচন্ড দাবদাহ প্রশমন ও বৃষ্টির আগমনের আশায় এই উৎসব পালনের চল করে।
আদি সনাতনী চল অনুসারে চৈত্র সংক্রান্তির অন্যতম বিষয়বস্তু হলো চড়ক পূজা, শিবের গাজন, নীলপূজা, মেলা ইত্যাদি। চড়ক মূলত গাজন উৎসবের একটি অন্যতম প্রধান অংশ। এই সময় গ্রামের এক শিবতলা থেকে অন্য শিবতলা অবধি শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়া হয়, শিব ও গৌরী সেজে দুজন নৃত্য করে এবং অন্যান্য অনেকেই গণ, প্রেত, নন্দী, ভৃঙ্গি প্রভৃতি সেজে তাদের সাথে নৃত্যরত অবস্থায় যাত্রা করে। এ সময় শিবকে নিয়ে নানান লোকজ ছড়া গাওয়া হয় যার মাধ্যমে তার নিদ্রাভঙ্গ, বিয়ে, গৃহস্থ জীবনের আলোকপাত করা হয়।
পূজোতে নৈবেদ্য হিসেবে গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন- তরমুজ, পানিফল, শসা, খেজুর প্রভৃতি ব্যবহার হয়। এছাড়াও বাংলাদেশে নানান মেলাতে আদিকালে শূলফোঁড়া, বাণফোঁড়া, বরশি গাঁথাবস্থায় আগুনে হাঁটা, চড়কগাছে ঘোরা, ঝুলন্তাবস্থায় কলাকৌশল দেখানোর মতো পীড়াদায়ক ও কষ্টসাধ্য বিষয় প্রদর্শনের চল ছিল। তবে আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া লাগায় এসবের চল এখন খুবই কমে গেছে।
চৈত্র সংক্রান্তি সনাতনীদের উৎসব হলেও অনেক ক্ষেত্রেই মুসলিম সম্প্রদায়ও এ দিনে পালন করেছে নিজস্ব নিয়মাচার। প্রচণ্ড গরম ও দাবদাহ থেকে মুক্তির জন্য খোলা মাঠ বা নদীর চরে জমায়েত হয়ে জামায়াতের সহিত বিশেষ নামাজ আদায়ের চল ছিল। এর উদ্দেশ্য মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট এই গরম থেকে নিষ্ক্রান্তির জন্য রহমত প্রার্থনা। প্রত্যেক বাড়ি থেকে নগদ টাকা অথবা চাল-গুড় প্রভৃতি নিয়ে বড় তাল কিংবা বটগাছের তলে দুধ, সেদ্ধ চাল ও তালের গুড় দিয়ে তৈরি হত শিরনি। এরপর তা বিলিয়ে দেয়া হত সর্বত্র। লোকমুখে একে তালতলার শিরনি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
বর্তমানে এই উৎসব তার ধর্মীয় গন্ডী পেরিয়ে ভিন্ন আঙ্গিকে প্রবেশ করেছে এবং এপার ও ওপার বাংলার মানুষের নিকট অন্যতম পার্বণ ও উৎসবের উপলক্ষ্য হিসেবে হাজির হয়েছে। পুরাতনকে ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যমে নতুনভাবে সব শুরু করার এবং পূর্বের মঙ্গলময়তা ও সৌভাগ্যকে সামনে টেনে নিয়ে যাবার প্রণোদনা থেকেই বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ।
ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এদিনে দোকানপাট পরিষ্কার ও ধোয়া-মোছা করে অশুচি, জঞ্জাল ও অপবিত্রতাকে বিদায় জানায় এবং পরের দিন তথা নতুন বছরে সব নতুন করে শুরু করার প্রস্তুতি নেয়। নতুন বছরে নতুন হিসেবনিকেশ খোলার রীতি যা ‘হালখাতা’ নামে পরিচিত, তার প্রস্তুতিও শুরু হয় চৈত্র সংক্রান্তিতে। ধূপ-ধুনো এবং গোলাপ পানির সুবাসে মুখরিত হয় দোকান। ব্যবসায়িক সম্প্রদায় মূলত এ দিনটিকে বিদায় উৎসব হিসেবে পালন করে। পুরাতন বছরের বকেয়া টাকা উত্তোলনের দিন এটি কারণ পরদিন নতুন বছরে খোলা হবে নতুন খাতা, চলবে নতুন হিসেব।
প্রাচীনকালে চৈত্র সংক্রান্তিতে গৃহস্থরা তাদের নাতি-নাতনী ও মেয়ে জামাইকে সাদরে নিমন্ত্রণ ও আপ্যায়ন করত। পরিবারের সকলকে নতুন কাপড় দেবার এবং উন্নতমানের ভোজন আয়োজনের চল ছিল। এছাড়াও বর্তমানে চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে নানান অনুষ্ঠান, মেলা, লাঠিখেলা, গান, নৃত্য, আবৃত্তি, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রা, সঙযাত্রা, যাত্রা-পালা, মৃত্-কারু-পট শিল্প প্রদর্শনী প্রভৃতির আয়োজন করা হয়। বর্ষবিদায়ের বর্ণিল উৎসবে মেতে ওঠে পুরো বাংলাদেশ। পুরনো ঢাকায় ছোট ছোট শিশুরা ওঝা সেজে হাতে ঝাড়ু নিয়ে ভূত তাড়ানোর খেলায় মেতে ওঠে। বিভিন্ন স্থানে বসে বারোয়ারি মেলার আসর। দেশের ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, দিনাজপুরের ফুলছড়িঘাট, কুমিল্লার লাঙ্গলকোট, ঢাকার সাভার, ধামরাই প্রভৃতি এলাকায় চৈত্র সংক্রান্তির মেলা বসে।
নানান স্থানীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে এসব মেলা। বাঁশ, বেত, মাটি, ধাতু, প্লাস্টিক, রাবার প্রভৃতির তৈরি জিনিস বেচাকেনা হয় মেলায়। বিভিন্ন ফলমূল, মিষ্টান্ন ও খাবার যেমন- ছাতু, বাতাসা, মিষ্টি, চিড়ে-মুড়ি, মুড়কি, খই, নিমকি, পিঠে-পুলি নানা ধরনের শাক-পাতা, নিমপাতা ইত্যাদি পাওয়া যায়। এছাড়াও থাকে বায়োস্কোপ, সার্কাস, যাত্রাপালা, গান-বাজনা, পুতুলনাচ, নাগরদোলা, ঘুড়ি ওড়ানোর মতো নানান বিনোদনের খোরাক।
বাঙালি যেখানে পালন করে চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ সেখানে পিছিয়ে নেই নৃগোষ্ঠীরাও। তারা পালন করে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান- বৈসাবি। বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে মারমা, ত্রিপুরা, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের পালন করা উৎসব- বৈসুক (ত্রিপুরা), সাংগ্রাই(মারমা), বিঝু বা বিজু (চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা) এর আদ্যক্ষর সমূহ থেকে বৈসাবি নামটি এসেছে। এই উত্সবে তারা পরিবারের সকলকে নতুন কাপড় কিনে দিয়ে থাকে, মন্দির ও ঘর ফুল দিয়ে সাজায়। পিঠে ও পাঁচন (হরেক রকম সবজি মিশিয়ে তৈরি ব্যাঞ্জন) তৈরি হয়। বিভিন্ন ধরনের পিঠা যেমন- কলাপিঠা, সান্যাপিঠা, বিনিপিঠা, বিনিভাত, পায়েস, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি ও পানীয় তৈরি হয় ঘরে ঘরে। তারা দেবতার নিকট পরবর্তী বছরে ভাল জুম চাষ ও বন্য হিংস্র পশুপাখিদের থেকে রক্ষা পাবার জন্য প্রার্থনা করে। এছাড়াও নানান খেলাধুলায় মেতে ওঠে তারা।
মারমাদের সাংগ্রাই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি অংশ হলো জলোৎসব। জলের দু’দিকে অবস্থান নেয়া তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি ছিটিয়ে এই উৎসব পালন করে। চাকমাদের বিজু উৎসব দু’ভাগে বিভক্ত- ফুলবিজু ও মূলবিজু। মূলবিজুর দিন সব বাড়িতে টক ও মিষ্টি পাঁচন রান্না করা হয়। কেননা তারা বিশ্বাস করে তিতা ও মিষ্টি খেয়ে বছর শেষ করাটা ভাল এবং এতে বিগত বছরের দুঃখ-কষ্ট, বেদনা দূর হয়ে যাবে, আসবে আনন্দ।
চৈত্র শেষের রঙে নিজেকে রাঙাতে বাদ যায় না রাজধানী ঢাকাও। বর্ণিল ও বাহারি সাজে সেজে পুষ্পকন্যার ন্যায় সজীব হয়ে ওঠে এই মহানগরী। বাংলা বছরের শেষ উপলক্ষ্যে যেমন নানান সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের পসরা বসে, তেমনি দেখা যায় মেলা, পিঠে-পুলি ও আনন্দ আসরের। পাশাপাশি চলতে থাকে পরদিন নতুন বছরকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাবার জোর প্রস্তুতি। সুরের ধারা সহ নানান সাংস্কৃতিক সংস্থা সাক্ষর রাখে নিজস্ব পরিবেশনার। নকশা-আল্পনার লালিমায়, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও হালখাতার আগমনী আনন্দ সুবাসে সর্বত্র সাজ সাজ রব পড়ে যায়। আর এভাবেই পুরনোকে আনন্দের সাথে বিদেয় দিয়ে আমরা পা রাখি এক অবারিত নতুনের জগতে, নতুন আশা, উদ্যম আর প্রেরণার গালিচায়।
এভাবেই দুই বাংলার বাঙালি ও নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মধ্যে নিজস্ব আঙ্গিকে ঠাঁই করে নিয়েছে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব। হাসিমুখে পুরাতনকে বিদেয় করে দিয়ে নতুন দিনের আগমনী বার্তায় মিশে যেতে প্রতি বছর উন্মুখ হয়ে ওঠে গ্রাম ও নগরবাসী। জাতি ও ধর্মগত ভেদ ভুলে আনন্দের শামিয়ানাতলে একীভূত হয়ে যায় নানান শেকড়ের মানুষ। মানুষ, আনন্দ, রং, উৎসব আর হৃদ্যতার অপূর্ব পরিস্ফুটন দেখা যায় বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের এই আনন্দযজ্ঞে।
চাহি না রহিতে বসে ফুরাইলে বেলা,
তখনি চলিয়া যাব শেষ হবে খেলা।
আসিবে ফাল্গুন পুনঃ, তখন আবার শুনো
নব পথিকেরই গানে নূতনের বাণী॥
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তথ্যসূত্র
১) goo.gl/nUlkGG
২) goo.gl/4MW8IY
৩) goo.gl/fHfZ1x
৪) goo.gl/hC9j4T
৫) goo.gl/9YFm3H
৬) goo.gl/VDWnoX
৭) goo.gl/bYbhRU
৮) goo.gl/a7SdcE
৯) goo.gl/mdApbN