Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ছবিতে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কোনো কোনো দেশ আক্রান্ত হবে প্রত্যক্ষভাবে, কোনো কোনো দেশ আক্রান্ত হবে পরোক্ষভাবে, আবার কোনো কোনো দেশ ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়ে আছে। সরাসরি ক্ষতির শিকার হবে যেসব দেশ তাদের মধ্যে প্রথম কাতারে আছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই এই দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক দিকগুলো দেখতে শুরু করেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অবশ্যম্ভাবী একটি ফল হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি। অবস্থা এমন হয়েছে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি মাত্র ৩.২ ফুট বৃদ্ধি পায় তাহলে পানির নীচে তলিয়ে যাবে বাংলাদেশের পাঁচ ভাগের এক ভাগ জায়গা। ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে মানুষের বসবাস। এর মাঝে এক পঞ্চমাংশ যদি সমুদ্রে বিলীন হয়ে যায় তাহলে ঘর হারানো এত বিপুল পরিমাণ মানুষের ঠাই কোথায় হবে? সোজা কথায় তারা নিজের দেশেই হবে শরণার্থী। শুধু বাংলাদেশেই নয়, এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে প্রায় ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) মানুষ নিজেদের বাসস্থান হারানোর ঝুঁকিতে আছেন।

বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলো এখনো তলিয়ে না গেলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তারা ঠিকই পাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি এই দুইয়ে মিলে তৈরি হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এমন সব দুর্যোগ যা আগে থেকে অনুমান করা যায় না। এরকম দুর্যোগের মাঝে ক্ষতি করেছিল ২০০৭ সালের সাইক্লোন সিডর। ঘণ্টায় ১৫৫ মাইল বেগে ধেয়ে আসা ঝড়ে সমুদ্রের আশেপাশের অঞ্চলে পানির ঢেউ উঠেছিল ১৬.৪ ফুট উঁচুতে। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাতে আক্রান্ত হয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল হাজার হাজার ঘরবাড়ি।

হাফিংটন পোস্ট গ্রিস-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী প্রবাল রশিদ-এর সাথে কথা বলেছিল জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে। তার তোলা ছবিতে জলজ্যান্ত হয়ে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা। সেই ছবিগুলো তুলে ধরা হলো এখানে। সেখানে প্রবাল রশিদের ছোট একটি সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছিল। গ্রিক ভাষা থেকে সেটি অনুবাদ করে প্রকাশ করা হয় মূল হাফিংটন পোস্ট (ইংলিশ)-এ। সেখান থেকে বাংলাভাষীদের জন্য সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ বাংলায় দেওয়া হলো। ছবিগুলোর নীচে সেটি পাবেন। উল্লেখ্য হাফিংটন পোস্ট একটি বিশ্ববিখ্যাত আমেরিকান অনলাইন সংবাদমাধ্যম।

Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France
Image Courtesy: Probal Rashid/ Huffington Post France

জলবায়ু শরণার্থী সম্বন্ধে কী কী জানা উচিত সকলের?

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ছবি তোলার ব্যাপারটি মাথায় আসে ২০১১ সালে। তখন আমি বন্যা আক্রান্ত মানুষদের নিয়ে রিপোর্ট করার জন্য সাতক্ষীরায় গিয়েছিলাম। এই এলাকার লোকজনেরা সেই ২০০৭ সালে সাইক্লোন সিডরের আঘাতের পর থেকে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েই যাচ্ছে। প্রতি বছরই মৌসুমী বায়ুর সময় তাদেরকে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে থাকতে হয়।

২০১২ সালে আমি আবারো সেই এলাকা পরিদর্শনে যাই। তখন উপলব্ধি করি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি করা খুবই জরুরী। সেখানে কিছু কিছু এলাকা আছে যার পুরোটাই পানিতে আবদ্ধ। চারপাশে পানি আর পানি কিন্তু এদের এক ফোটাও পানের উপযুক্ত নয়। পানির প্রশ্নে সবচেয়ে তীব্র সময় যায় গ্রীষ্ম ও শীতকালে। সে সময় বৃষ্টি হয় খুব কম। আগে থেকে যারা পানি সংগ্রহ করে রাখতে পারে তারা ভাগ্যবান আর যারা পারে না তাদেরকে অনেক দূর থেকে পানযোগ্য পানি সংগ্রহ করে আনতে হয়। জীবন ধারণ করতে স্বাভাবিক যে কর্মকাণ্ড মানুষ করে এসেছে যুগের পর যুগ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে গত কয়েক বছরে।

আমার তোলা ছবিগুলোর মধ্যে একটি ছবি ১৫ বছর বয়সী রানী বেগমের। ১২ বছরেই তার বিয়ে হয়েছিল এবং এখন তার একটি কন্যা সন্তান আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে এই এলাকার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বাভাবিকতা। দারিদ্রতা সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে বাল্য বিবাহের করাল গ্রাসে।

ঢাকায় বেশ কিছু গৃহহীন মানুষের দেখা পাওয়া যায়। এরা বন্যা, নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি দুর্যোগের শিকার হয়ে নিজেদের ঘর হারিয়েছে। এখন ঢাকায় এসেছে ভালো একটি ভবিষ্যতের আশায়। বর্তমানে থাকছে ময়লার স্তূপের আশেপাশে কিংবা রাস্তার ধারে।

এই সমস্যার সমাধানে কী করা উচিত বলে মনে করেন?

আমাদের লক্ষ্য যদি হয় বায়ুতে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য তাপধারী গ্যাস নির্গমন কমানোর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো তাহলে আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ব্যবস্থা নিতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা কানাডার মতো দেশের নাগরিকরা যারা প্রত্যেকে গড়ে প্রতি বছরে ১০ হাজার পাউন্ড কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের পেছনে দায়ী, তারা যদি ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হয় তাহলে সেটা হবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। আমরা প্রত্যেকে যদি নিয়ন্ত্রিত ও পরিমিত পরিমাণে তেল, গ্যাস ও কয়লার ব্যবহার কমিয়ে দিই তাহলে সেটা হবে পরিবেশের জন্য তাৎক্ষণিক সহযোগিতা। অন্যান্যদের জন্যও হবে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তোলা আপনার আলোকচিত্রগুলো কী বার্তা বহন করে?

আমি মনে করি আমার ছবিগুলো শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিদ্যমান সমস্যাকেই তুলে ধরছে না, পাশাপাশি সমগ্র পৃথিবীর জন্য ভবিষ্যতে কী আসতে পারে তার অশনি সংকেতও প্রদান করে। ছবিগুলো যেন বলছে খুব বেশি দেরি হবার আগেই আমাদের সকলকে সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত।

আলোকচিত্র কি হাজার অক্ষরের চেয়েও বেশি শক্তিশালী?

হ্যাঁ, এমনটাই হওয়া উচিত। যখন কেউ ইন্টারনেটে একটি ছবি প্রকাশ করে তখন সমগ্র পৃথিবী আলোড়িত হয়ে যেতে পারে। আপনি নিজেকেই একটি উদাহরণ হিসেবে দেখতে পারেন। আপনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না, কিন্তু চেনেন আমার আলোকচিত্রের মাধ্যমে। কিছু কিছু ছবি এত বেশি তীব্রতায় কেঁদে উঠে যে পুরো পৃথিবী থমকে যায় তাকে দেখার জন্য।

আরো দেখুন- জলবায়ু পরিবর্তন: এক করুণ বাস্তবতা

Featured Image: Probal Rashid

Related Articles