জিনেট ভান তাসেল: পূর্ব বাংলার আকাশ জয় করেন যিনি

১৮৯০ এর দশক, ঢাউশ সাইজের গ্যাস বেলুনের মাধ্যমে আকাশে চরে বেড়ানোর প্রচলন ইউরোপ-আমেরিকায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকলেও ব্রিটিশ শাসিত ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য তা ছিল অনেকটাই অচিন্ত্যনীয়। তখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসাও সম্ভব হয়নি যে স্বচক্ষে দেখার সুযোগ না হলেও জনসাধারণ দূরদর্শনের মাধ্যমে দেখতে পারে।

১৮৯২ সালের মার্চ মাস, পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকা শহরে বেশ কিছুদিন যাবত কানাঘুষা চলছিল- কোনো একজন ভিনদেশী তরুণী বেলুনে ভর করে সশরীরে আকাশে উড়ে দেখাবেন। কোনো প্রকার দূরদর্শনের সুযোগবিহীন সেকালে মানুষের বেলুনে ভর করে শূন্যে বিচরণের প্রদর্শনী জনমনে যে প্রবল আগ্রহ, উৎসাহ ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছিল তা আন্দাজ করাই যায়। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১৮৯২ সালের ১৬ মার্চ ঢাকার আকাশ জয় করেন এক অনিন্দ্যসুন্দরী তরুণী, নাম জিনেট ভান তাসেল।

জিনেট ভান তাসেল, নামটি ঢাকার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক দুঃসাহসী অভিযাত্রার কারণে। ঢাকার ইতিহাসে স্মরণীয় সেই দিনটির বিস্তর বিবরণ পাওয়া যায় সিলেটের খ্যাতিমান গীত-রচয়িতা হাছন রাজার ছেলে গণিউর রাজার ঢাকা ভ্রমণ কাহিনীতে। উল্লেখ্য, গণিউর রাজা ব্যতীত অন্য কারো লেখনীতে এই ঘটনা প্রকাশ পায়নি। তিনি এই ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি তার আত্মজীবনীতে মোট পাঁচবার ঢাকা ভ্রমণের কথা উল্লেখ করেছেন। ১৮৯২ সালে তিনি প্রথম ঢাকা ভ্রমণ করেন। সেবার তিনি ঢাকার আকাশে এক ভিনদেশী তরুণীকে উড়তে দেখেন। 

তৎকালীন ঢাকার আমোদপ্রিয় নবাব পরিবার নানা ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে নগরবাসীর জন্য ব্যাপক বিনোদনের ব্যবস্থা করতেন। গনিউর রাজা তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, শুধুমাত্র এক বিকেল বেলুনে উড্ডয়নের জন্য ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে নবাব খাজা আহসানুল্লাহ একটি ভিনদেশী বেলুন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। অবশেষে চুক্তি চুড়ান্ত হবার পর টানা কয়েকদিন ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নগরবাসীকে সেই ব্যতিক্রমী ও চমকপ্রদ প্রদর্শনী দেখার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

নবাব খাজা আহসানউল্লাহ; Image Source : Banglapedia

 

বেলুনে উড্ডয়নের পূর্বনির্ধারিত সেই দিনে উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে সয়লাব ছিল বুড়িগঙ্গার দুই তীর, নদীসংলগ্ন দালানগুলোর ওপরের অংশ, আহসান মঞ্জিলের প্রাঙ্গণ ও ছাদ। সেই সাথে অতি উৎসাহী শত শত জনতা অবস্থান নেয় মাঝ নদী ও নৌকায়। গণিউর রাজার বর্ণনামতে, আহসান মঞ্জিল সংলগ্ন বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ তীর থেকে সেই বিদেশিনী বিশালাকায় এক বেলুনের নীচে ঝোলানো ছোট কাঠের পাটাতনে চড়ে আকাশে ওড়েন। 

নবাবের নির্দেশানুযায়ী, বিদেশিনীর অবতরণের পূর্বনির্ধারিত স্থল ছিলো আহসান মঞ্জিলের ছাদ। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, নবাব বাড়ির পর্দানশিন রমণীদের ঐ ভিন্নধর্মী বিনোদন উপভোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না রাখা। কিন্তু বেলুন উড্ডয়নের আদর্শ বলতে ঠিক যেমনটি বোঝায়, দিনটি তেমন ছিল না। দক্ষিণ দিক থেকে বাতাসের বেগ বেশি থাকায় ঠিক নবাব বাড়ির ছাদে অবতরণ সম্ভব হবে, এমন নিশ্চয়তা বেলুন কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু আমোদপ্রিয় ও নাছোড়বান্দা নবাব অতিরিক্ত সাড়ে চার হাজার টাকা প্রদান করতে চাইলে সহযোগীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিদেশিনী পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বিপজ্জনক অবতরণের জন্য সম্মতি প্রদান করেন। 

আহসান মঞ্জিল; Image Source: Wikimedia Commons

বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ পাড়েই বেলুন ফুলানোর ব্যবস্থা করা হয়। গণিউর রাজার বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, সেটা হয়তো হট এয়ার বেলুনের মতো কোনো বেলুন ছিল। হট এয়ার বেলুনের ক্ষেত্রে একটি বার্নারের সাহায্যে জ্বালানি পুড়িয়ে ধোঁয়া তৈরি করে বেলুনে ধোঁয়া আটকে রাখা হয় এবং বার্নার জ্বলতে থাকার একপর্যায়ে বেলুন ওপরের দিকে ফুলে ওঠে। হট এয়ার বেলুনের ন্যায় কেরোসিন ব্যবহার করে লাকড়ি জ্বালিয়ে বেলুনে ধোঁয়া প্রবেশ করানোর মাধ্যমে ধীরে ধীরে রাবার নির্মিত চুপসানো সেই বেলুন ফুলে জনসম্মুখেই হয়ে উঠেছিল বিশালাকৃতির। 

অনেকটা বন্দুকের আওয়াজের ন্যায় একটি বিকট ধ্বনির সাথে সাথে বেলুনের দড়ি কেটে দেওয়া হলে জনতার ব্যাপক উৎসাহজনক ধ্বনি ও করতালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বেলুনের উর্ধ্বমুখী যাত্রা। বেশ আত্মবিশ্বাস ও সাহসিকতার সাথে বেলুনে ভর করে সফলভাবে শূন্যে উড্ডয়ন করেন সেই বিদেশিনী। গনিউর রাজার ভাষ্যমতে, সাধারণত যে উচ্চতায় চিল শকুন দৃষ্টিগোচর হয় তারও ওপরে উঠে গিয়েছিল বেলুন, বিদেশিনীকে নিয়ে ধেয়ে চলছিল দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহিত উর্ধ্বমুখী বাতাসের সাথে উত্তর দিকেই। 

আকাশচারী জিনেট ভান তাসেল; Image Source : amradhaka

পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী আহসান মঞ্জিলের ছাদে অবতরণের কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার দরুন বেলুনের উচ্চতা কমিয়ে নবাব বাড়ির ছাদে অবতরণের পূর্বেই বেলুন জিনেটকে ভাসিয়ে নিয়ে চলছিল আরও উত্তরে। গনিউর রাজার বর্ণনায়, তরুণী তখন মাথার ওপর ছাতা মেলে ধরে লাফিয়ে পড়েন। আসলে প্যারাসুটিংয়ে দক্ষ দুঃসাহসী বিদেশিনী নবাব বাড়ির ছাদ উদ্দেশ্য করে প্যারাসুট নিয়ে বেলুন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু বাতাসের দরুন হিসেবে গোলমালের কারণে বাতাস প্যারাসুটসহ তাকে ভাসিয়ে নিয়ে চললো আহসান মঞ্জিল থেকে আরও দুই-তিন মাইল উত্তর-পশ্চিমে। আর নিচের কৌতূহলী আমজনতা বেলুনের গতিপথ অনুসরণ করে পিছু পিছু ছুটে চলছিল। অবশেষে একটি ঝাউ গাছের সাথে প্যারাসুট আটকে গিয়ে তিনি অসহায়ভাবে ঝুলতে থাকেন। জনমানবহীন সেই স্থানটি ছিল নবাব পরিবারের জঙ্গলময় বাগানের একটি অংশ।

উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলে উদ্ধারকারী দলে সকলের আগে পৌঁছে যান এক ইংরেজ পুলিশ অফিসার, সাথে ক’জন স্থানীয় পুলিশ কনস্টেবল। সেই অফিসারের তত্ত্বাবধানে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। গনিউর রাজা লিখেছেন, বাঁশের সাহায্যে তাকে নামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি নামতে ভয় পাচ্ছিলেন। তার মা ও ভাই ঘটনাস্থলে না‌ আসা পর্যন্ত তিনি নেমে আসতে প্রস্তুত ছিলেন না। অবশেষে পুলিশ অফিসারের অব্যাহত আহ্বানে নিরুপায় তরুণী বাঁশ ধরে নেমে আসতে শুরু করেন ঠিকই, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, নামার সময় মাঝপথে দুর্ঘটনায় শিকার হন। বাঁশ ভেঙে অরক্ষিত ভূমিতে পড়ে তিনি প্রাণ হারান।

প্রচন্ড জ্বরে কাতর ও প্রায় অচেতন এই তরুণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণত্যাগ করেন। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও ঢাকার অধিবাসীদের অবস্থান ছিলো পরস্পরের মুখোমুখি। নবাব তাকে সমাহিত করার সময় উপস্থিত ছিলেন না, সম্ভবত তিনি ইংরেজ প্রশাসনের ব্যর্থতা়কে নিয়ে ওঠা বিতর্ক এড়াতে চেয়েছিলেন।

এই অনন্যসাধারণ ঘটনা সেসময় দুনিয়ার বিভিন্ন পত্রিকার খবর হয়। এরপর যত দিন গড়াতে লাগল, স্মৃতির পাতায় ধুলো জমে লোকচক্ষুর সম্পূর্ণ আড়ালে চলে গেল জিনেটের দুঃসাহসিক সেই পরিভ্রমণ।

সেকালের পত্রিকায় প্রকাশিত জিনেটের মৃত্যুর খবর; Image Source: Prothom Alo

গণিউর রাজার ঢাকা ভ্রমণ কাহিনীতে আকাশচরীর নাম, পরিচয়, কোন মূলক থেকে আগত, মৃত্যুর তারিখ ইত্যাদির কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তার ঢাকা ভ্রমণ কাহিনী এবং ১৯৮৯ সালের ১লা আগস্ট ঘটনাক্রমে ঢাকার নবাব পরিবারের সন্তান খাজা হালিমের নিকট পাওয়া একটি পুরোনো আলোকচিত্রের সূত্র ধরে সামাজিক ইতিহাস গবেষক শামীম আমিনুর রহমান পরবর্তীকালে অনুসন্ধান ও পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে আসেন, ঢাকার প্রথম আকাশচারী জিনেট ভান তাসেল। তার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসে স্মৃতির ধুলোয় চাপা পড়া অনেক অজানা তথ্য। জানা যায় আকাশচরীর নাম, পরিচয়সহ তার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্যাদি।

সেন্ট টমাস গির্জায় রক্ষিত পুরোনো নিবন্ধিত মৃত্যুতালিকা থেকে জানা যায় আকাশচরীর নাম জিনেট ভান তাসেল। মৃত্যুর তারিখ ১৮ মার্চ ১৮৯২। মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত দুর্ঘটনা। গণিউর রাজা জিনেটের বয়স ১৫/১৬ বলে উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে মৃত্যুতালিকায় তার বয়স উল্লেখ ছিল ২৪ বছর এবং পেশায় ছিলেন একজন আকাশচারী (অ্যারোনট)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাণ্ডুলিপি বিভাগে রক্ষিত সেকালের প্রকাশিত পুরাতন পত্রপত্রিকা ঘেটে জানা গেছে, জিনেট জন্মেছিলেন আমেরিকার সিনসিনাটির ওহাইওতে। তিনি ধর্মবিশ্বাসে ছিলেন একজন প্রেসবাইটেরিয়ান খ্রিষ্টান। পত্রিকাতে আরও বলা ছিল, তার বাবা ছিলেন একজন স্থপতি এবং তিনি সেসময়ের বিখ্যাত শিকাগো মেলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। জিনেট পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ ছিলেন তারই মতো আরেক অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী পার্ক এ ভান তাসেলের সঙ্গে। বেলুন প্রদর্শনী ছিল ভান তাসেল পরিবারের পারিবারিক ব্যবসা। নবাব আহসানউল্লাহ কলকাতায় গিয়ে ভান তাসেল দম্পতিকে ঢাকায় এসে এক বিকেলে বেলুনে উড্ডয়নের জন্য ১০ মার্চ ১৮৯২ সালে চুক্তি করেন।

জিনেট প্রথম ওড়েন ১৯৮৮ সালের ৪ জুলাই, নিজ দেশ আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে, বেলুনে চড়ে উঠেছিলেন এক মাইল উঁচুতে। সেটাই ছিল লস অ্যাঞ্জেলসে প্রথম কোনো নারীর আকাশজয়ের কাহিনী। এরপর এই পেশায় দিনে দিনে কাটিয়েছেন আরও চারটি বছর। ঢাকার আগে তিনি বেলুনে ওড়েন তিনশ বার এবং ঢাকা ছিল তাঁর ৪১ তম প্যারাস্যুট অবতরণস্থল। ঢাকার পরবর্তী গন্তব্যস্থল নির্ধারিত ছিল ভারতের কর্পূরথেলা। তবে তা আর সম্ভব হয়নি। জিনেটকে সমাহিত করা হয় নারিন্দার বিখ্যাত খ্রিষ্টান গোরস্থানে।

তখনকার পত্রপত্রিকা পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, ভিনদেশী জিনেট ঢাকাবাসীর অন্তরে কতটা জায়গা করে নিয়েছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইংরেজ প্রশাসন এবং ঢাকার অধিবাসীদের অবস্থান ছিল মুখোমুখি। একদিকে ঢাকার অধিবাসীরা জিনেটের মৃত্যুর জন্য প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করছিল। আর অন্যদিকে ইংরেজি পত্রিকাগুলো প্রশাসনকে সমর্থন করে প্রচার করছিল, ঢাকাবাসীরা গুজব ছড়াচ্ছে। জিনেটকে রক্ষায় প্রশাসনের তেমন কিছুই করার ছিল না। কিছুদিন পর জিনেটের স্বামী পার্ক এ ভান তাসেল ঢাকা ত্যাগ করলে সকল তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটে। 

জিনেটের শেষ আশ্রয় হয়েছিল এই ভিনদেশের মাটিতে। শামীম আমিনুর রহমানের সক্রিয় অনুসন্ধানে খোঁজ মেলে নজরদারির অভাবে এত বছর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে থাকা, এপিটাফবিহীন জিনেট ভান তাসেলের সমাধির।

জরাজীর্ণ অবস্থায় জীনেট ভান তাসেলের সমাধিসৌধ; Image Source : Prothom Alo

গবেষক শামীম আমিনুর রহমান অনেক ঘাটাঘাটি করে জানতে পারেন, পত্রপত্রিকায় যে নাম প্রকাশিত হয়েছিল তা ছিলো জিনেটের বিবাহ-পরবর্তী নাম, তার বিবাহ পূর্ববর্তী নাম ছিল জিনেট রুমারি। তার বাবা, জর্জ জন রুমারি স্থপতি ছিলেন না, ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি। তার মায়ের নাম জেন টিংলে। জিনেটরা সংখ্যায় ছিলেন আট ভাই-বোন। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান। জিনেট মার্কিনমুলুক থেকে আসলেও তার আদি পরিবার সম্ভবত যুক্তরাজ্যের সাসেক্স থেকে আমেরিকায় পাড়ি জমায়। তাই বিভিন্ন সূত্রে তাকে ইউরোপীয় উল্লেখ করা হয়। 

জিনেটের নানা ছিন্ন কাহিনী একত্রিত করে শামীম আমিনুর রহমান ২০০০ সালে প্রকাশিত তার বই ‘ঢাকার প্রথম আকাশচারী: ভানতাসেল‘ এর মাধ্যমে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যাওয়া জিনেটকে পুনরায় লোকসম্মুখে নিয়ে আসেন। চলে গেছেন জিনেট, কিন্তু রেখে গেছেন তার দুঃসাহসিক অভিযাত্রার স্মৃতি। জিনেট স্মরণে মৃত্যুর ১২৮ বছর পর বাংলার প্রথম আকাশচারীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ট্র্যাভেল চলচ্চিত্র ‘ইন সার্চ অব জিনেট ভান তাসেল’; নির্মাতা বিশ্ব প্রত্মতাত্ত্বিক পর্যটক ও গবেষক এলিজা বিনতে এলাহী। গত ৮ মার্চ ঢাকাস্থ মাইডাস সেন্টারে প্রথম প্রদর্শিত হয় এ চলচ্চিত্র।

শামীম আমিনুর রহমানের প্রকাশিত বই; Image Source: cosmicculture.science

৪১ তম প্যারাসুট অবতরণের সমাপ্তির পাতায় আঁচড় টানতে গিয়ে পৃথিবীর জল-মাটি-হাওয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হবে এমনটি হয়তো কখনও ভাবেননি জিনেট। গণিউর রাজা তার আত্মজীবনীতে জিনেট ভান তাসেলের দুঃসাহসী অভিযাত্রার কথা উল্লেখ না করলে ১২৮ বছর আগে পূর্ববঙ্গের আকাশজয় করা প্রথম মানবীর নামটি হয়তো আমরা জানতে পারতাম না বা জানার জন্য আরও কতকাল অপেক্ষা করতে হতো কে জানে!

 

Related Articles

Exit mobile version