তথ্য-প্রযুক্তির এই অবাধ স্বাধীনতার যুগে বিশ্বজুড়ে ঘটে গেছে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব। হাতে থাকা মুঠোফোন আর দ্রুতগতির ইন্টারনেটের সুবাদে বিশ্বের প্রায় সকল প্রান্তের মানুষই আজ অবগত থাকতে পারছেন বাকি দুনিয়ার অবস্থা সম্পর্কে, তাল মিলিয়ে চলছেন একবিংশ শতাব্দীর দ্রুত পরিবর্তনশীল দুনিয়ার সাথে, এবং সেই সাথে নিজেকে ক্রমাগত আপডেট এবং আপগ্রেড করার মাধ্যমে অবদান রেখে চলেছেন সমাজের নানা স্তরে, নানা আঙ্গিকে, নানা মাত্রায়।
উপরে উল্লেখ করা তথ্য-বিপ্লবের সাথে সবচেয়ে বেশি জড়িয়ে আছে তরুণ জনগোষ্ঠী। কারণ, তারাই পরিবর্তনকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, জড়িয়ে ধরতে জানে উষ্ণ আলিঙ্গনে। এই পরিবর্তনশীল সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় দুটো শব্দ হলো ‘উদ্যোগ’ ও ‘উদ্যোক্তা’, ইংরেজিতে যাকে আমরা যথাক্রমে ‘অন্ট্রাপ্রেনারশিপ’ ও ‘অন্ট্রাপ্রেনার’ হিসেবেই জানি। সমাজের অন্য আট-দশজনের মতো “পাছে লোকে কিছু বলে” ভয়ে ভীত না হয়ে এই তরুণেরা এগিয়ে চলে নিজেদের উদ্যোগকে দাঁড়া করাবার দৃঢ় প্রত্যয়ে। শত ঝড়, সহস্র আঘাতও তাদেরকে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য থেকে সামান্যতম বিচ্যুত করতে পারে না। হয়তো সময়ের দাবিতে তাদের কৌশলে পরিবর্তন আসে, পরিবর্তন আসে তাদের জনবলেও, কিন্তু লক্ষ্য নড়চড় হয় না একচুলও।
একবিংশ শতকে বিশ্বের বাকি দেশগুলোর সাথে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও। বিভিন্ন খাতে উন্নতির উর্ধ্বমুখী গ্রাফ সাক্ষ্য দেয় যে, দেশটি সঠিক পথ ধরেই চলেছে। তবে এই গ্রাফকে খুব বেশি দিন ধরে রাখা যাবে না যদি দেশটির মূল চালিকাশক্তি তরুণেরা এগিয়ে না আসে। তরুণদের মাথায়ই ঘোরাঘুরি করে নিত্যনতুন সব আইডিয়া, যেগুলোর বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই করে তাদের অনেকেই এমন সব কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে, যাতে যুক্ত হবার কথা প্রবীণেরা অনেক সময় চিন্তাই করতে পারে না। তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের এই যুগে হাতের মুঠোফোনটির কল্যাণে আমরা প্রতিনিয়তই জানতে পারছি বাইরের দুনিয়া কতটা অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। এই দ্রুতগতির সাথে আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ তাল মেলাতে পারবে তখনই, যখন এদেশের তরুণ জনশক্তি তাদের সৃজনশীল চিন্তাচেতনা, উদ্যমী কর্মস্পৃহা নিয়ে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে এগিয়ে আসবে।
দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর মাঝে নিজস্ব উদ্যোগ গড়ে তোলার জ্ঞানের সঠিক বার্তা হাতে-কলমে পৌঁছে দিতে, উদ্যোক্তাদের জন্য দেশে বিনিয়োগবান্ধব সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে যাত্রা শুরু করেছে ইয়াং সাস্টেইনেবল ইম্প্যাক্ট (ওয়াইএসআই) বাংলাদেশ নামক প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে এর কার্যক্রম ঢাকা থেকে পরিচালিত হলেও এর সদর দপ্তর, ওয়াইএসআই গ্লোবাল, নরওয়ের রাজধানী অসলোতে অবস্থিত।
২০১৫ সালে নয় তরুণ শিক্ষার্থীর হাত ধরে নরওয়ের বুকে জন্ম নেয় এই সংস্থাটি। শুরুতে ‘গ্রীনটেক’ নাম থাকলেও অল্প কিছুদিন পরে তা পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান নাম ধারণ করে। বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব থেকেই উদ্ভাবনী মানসিকতাসম্পন্ন এবং এ বিষয় নিয়ে কাজ করা তরুণেরা আবেদন করেন ওয়াইএসআই গ্লোবালের ইনকিউবেশন প্রোগ্রামে যোগদানের জন্য। সেখানে হাজার হাজার আবেদনকারীর ভেতর থেকে শীর্ষ ২১ জনকে বাছাই করে তাদের নিয়েই শুরু হয় প্রোগ্রামের মূল আয়োজন। এখানে নির্বাচিত তরুণেরা কাজ করে থাকেন জাতিসংঘ প্রণীত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কিত সমস্যা চিহ্নিত করে সেসবের বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে বের করা এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে তাদের উদ্ভাবিত সেবা/পণ্যের মাধ্যমে সেই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাওয়া।
বিশ্বজুড়ে নিজেদের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী ও বিস্তৃত করার উদ্দেশ্যে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (সদর দপ্তর সিঙ্গাপুরে) নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে ওয়াইএসআই গ্লোবাল। এর মধ্য দিয়েই মূলত বাংলাদেশে পদার্পণ করে সংস্থাটি।
বাংলাদেশে ওয়াইএসআই মূলত দু’ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে: ১) বিভিন্ন সেমিনার ও ওয়ার্কশপ, যার মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সঠিক ক্যারিয়ার গঠন ও উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত সেমিনারও আয়োজন করে ওয়াইএসআই বাংলাদেশ। ২) প্রি-এক্সেলারেশন প্রোগ্রাম ‘মেগাপ্রেনার্স’, যেখানে দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলোকে বাস্তবে রুপদান, বিনিয়োগ নিশ্চিতকরণ এবং ভবিষ্যতে পরিসর বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে কাজ করা হয়।
গত সপ্তাহে রাজধানীর ইএমকে সেন্টারে আয়োজিত হয়ে গেলো এই মেগাপ্রেনার্স প্রোগ্রামেরই ২য় আসর, যেখানে মিলনমেলা বসেছিল দেশের আইডিয়াবাজ তরুণ, বিভিন্ন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানির প্রতিনিধি, একক বিনিয়োগকারী ও অন্যান্য ক্ষেত্রে খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গের।
দীর্ঘ সাড়ে চার মাসব্যাপী এই আয়োজনের শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। ১৬ থেকে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশী তরুণদের জন্য আবেদনের সুযোগ ছাড়া হয়েছিল অনলাইনে। সেখানে জমা পড়ে ৮৭৪ জন সৃজনশীল তরুণের আবেদন, যা ছিল আয়োজনটির প্রথম আসরের প্রায় দ্বিগুণ। এরপর তিনটি ধাপে প্রতিযোগীদের বিভিন্ন বিষয়ে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত ২১ জনকে নির্বাচন করা হয়। এই ২১ জনকে নিয়েই শুরু হয় ‘মেগাপ্রেনার্স ২.০’ এর মূল পর্ব। বলে রাখা ভালো, মেগাপ্রেনার বলতে ওয়াইএসআই বাংলাদেশ সেসব তরুণকেই বোঝাচ্ছে, যারা আমাদের বাংলাদেশের মেগা সিটি ঢাকার বিভিন্ন সমস্যার টেকসই সমাধান নিয়ে হাজির হচ্ছেন। পরবর্তী সাড়ে চার মাস ধরে তরুণ এই উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ভেতর দিয়ে যেতে হয়, যার মাঝে ছিল নিজের পছন্দের ক্ষেত্র মোতাবেক দল গঠন, দলের সদস্যদের সঠিকভাবে বুঝতে পারা, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সম্পর্কিত ঢাকা শহরের একটি সমস্যা চিহ্নিতকরণ, সমস্যার সম্ভাব্য কয়েকটি সমাধান খুঁজে বের করা, সমাধানের বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা, মার্কেট রিসার্চ, প্রোটোটাইপ তৈরি প্রভৃতি।
এসকল কাজেই প্রতিযোগীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে গিয়েছেন ওয়াইএসআই বাংলাদেশের নিবেদিতপ্রাণ টিম কোঅর্ডিনেটরগণ, যাদের এই আত্মনিবেদন ছাড়া এত বড় পরিসরে এই আয়োজনটি সফলভাবে সম্পন্ন করা চিন্তাই করা যেত না। এর পাশাপাশি ওয়াইএসআই গ্লোবাল এবং অন্যান্য শাখার সদস্যরাও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সেশন নিয়েছেন এই প্রতিযোগীদের। উদ্দেশ্য একটিই, এই প্রতিযোগীরা যেন নিজেদের উদ্যোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের সমাজকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারেন। এই পুরো সময়টা জুড়ে প্রোগ্রামটি পরিচালিত হয়েছে অনলাইন ও অফলাইন দুই উপায়েই। অফলাইনে প্রোগ্রামগুলো আয়োজনে ভেন্যু স্পন্সর হিসেবে ছিল ইএমকে সেন্টার।
সাড়ে চার মাসের এই যাত্রার শেষ সপ্তাহটিই ছিল কর্মোদ্দীপনায় ভরপুর। এই সময় প্রতিযোগীদের জন্য ছ’দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়। এই সময়টিতে প্রতিযোগীরা সারাদিন কাজ করেছে তাদের উদ্যোগ নিয়ে, আর রাতটা কাটিয়েছে ক্যাম্পে একসাথে নিজেদের মাঝে আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে। ১৮ থেকে ২২ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত চলা এই ক্যাম্পেইনের প্রতিদিনই প্রতিযোগীদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে, যাতে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার মাধ্যমে তারা সামনের দিনগুলোতে তাদের উদ্যোগকে যথাসম্ভব সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বটি আয়োজন করা হয় গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকার ইএমকে সেন্টারে। ততদিনে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে প্রতিযোগীর সংখ্যা নামিয়ে আনা হয়েছিল মাত্র ন’জনে, যাতে করে সেরা প্রতিযোগীদের হাত ধরে সর্বোৎকৃষ্ট ফলাফল নিশ্চিত করা যায়। এই ন’জনের হাত ধরে গঠিত তিনটি দল থেকে গঠন করা হয়েছে তিনটি কোম্পানিও, যাতে করে তারা নিষ্ঠার সাথে তাদের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারেন, সেই সাথে যেন নিশ্চিত হয় আইনগত বৈধতার বিষয়টিও।
২৩ তারিখের সেই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিড্সেল ব্লেকেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সানশাইন এডুকেশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সাফিয়া গাজী রহমান এবং ইএমকে সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আসিফ উদ্দীন আহমেদ। এছাড়াও বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য লিগ্যাল সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা ও অংশীদার আনিতা গাজী রহমান, ইএমকে সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আসিফ উদ্দীন আহমেদ এবং বিডি ভেঞ্চার্স লিমিটেডের ইনভেস্টমেন্ট অ্যানালিস্ট কাজী আয়েশা আক্তার।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় ওয়াইএসআই গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দিদ্রিক স্টর্মের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। এরপর ওয়াইএসআই বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন সাহা উপস্থিত সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন চমৎকার এই আয়োজনটি সফলভাবে এত দূর যারা নিয়ে এসেছেন সেই টিম কোঅর্ডিনেটরদের প্রতি। এরপরই বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর সামনে তিনটি দল তাদের কার্যক্রম, ভবিষ্যত সম্ভাবনা, কী পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দরকার সবকিছুই বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে। উপস্থাপনার শেষে প্রতিটি দলের জন্যই ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব।
এ পর্বের শেষে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন সিডসেল ব্লেকেন। বক্তব্যে তিনি এমন আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি সামনের দিনগুলোতে এখানে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরপরই মঞ্চে আসেন সাফিয়া গাজী রহমান। তার মুখেও অনুরণিত হয় একই ধ্বনি। এর পাশাপাশি তিনি আয়োজকদের উদ্দেশ্যে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত তরুণদের জন্যও এমন প্রোগ্রাম আয়োজনের, যাতে করে সেখানকার তরুণেরা নিজেদের প্রতিভার সঠিক চর্চার স্থানটি খুঁজে পায়। এরপর মঞ্চে আসেন আসিফ উদ্দীন আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যে এই তরুণ উদ্যোক্তাদের কাজগুলো সামনের দিনগুলোতে যেন যথাসম্ভব নির্ভুলভাবে পরিচালিত হয় সেই ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এরপরই আসে ফলাফল ঘোষণার পালা। বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর দেয়া নাম্বারের ভিত্তিতে ৩য় স্থান লাভ করে খোঁজ টেকনোলজিস লিমিটেড, যারা বর্তমানে কাজ করছে ঢাকার গণপরিবহনের স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে। ২য় স্থান অর্জন করে অ্যাগ্রোবাইট লিমিটেড, যারা কাজ করছে একটি ডিজিটাল কৃষি বিষয়ক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। ১ম স্থান অধিকার করে নেয় সারসিনা ইকো লিমিটেড, যারা দূষণের হাত থেকে ভূ-পৃষ্ঠ রক্ষার্থে কাজ করছে পচনশীল পলিজাত দ্রব্য নিয়ে। বিজয়ীদের হাতে সর্বমোট ছ’লক্ষ টাকার ডামি চেক তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণ। এরই মধ্য দিয়ে ইতি ঘটে বর্ণিল এই আয়োজনের।
এভাবেই এগিয়ে যাক আমাদের দেশের তরুণ উদ্যোক্তা সমাজ, রচিত হোক তরুণ উদ্যোক্তাদের সফলতার নানা গল্প। তাদের দিকেই যে তাকিয়ে আছে পুরো বাংলাদেশ!