ঢাকায় সরদারি প্রথা
ঢাকার ইতিহাস নিয়ে যাদের জানাশোনা আছে, সরদারি প্রথা সম্পর্কে তারা নিশ্চয়ই অবগত। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে ঢাকা নগরীতে মুসলমান পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ব্রিটিশ শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিকাশ লাভ করে, যা সরদারি প্রথা হিসেবে পরিচিত ছিল। ঢাকার নবাবদের মাধ্যমে এই প্রথা গড়ে উঠেছিল, যা সরকারি স্বীকৃতিও পেয়েছিল। এ প্রথা অনুযায়ী ঢাকা নগরীর প্রতিটি মহল্লা বা পঞ্চায়েত পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। এবং এই পরিষদের নেতা হিসেবে যিনি নির্বাচিত হতেন, তাকেই সরদার বলে গণ্য করা হতো।
সরদারি প্রথার মূল উদ্দেশ্য ছিল মহল্লার অধিবাসীদের কর্তৃক মহল্লার সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বিরোধ নিষ্পত্তি, নির্দেশ কিংবা পরামর্শ প্রদান, সর্বোপরি ঢাকা নগরীর মুসলমানদের আনুগত্য অর্জন ও নবাবের আধিপত্য নিশ্চিতকরণ। ঠিক কবে থেকে এ প্রথা চালু হয় তা জানা না গেলেও, ১৮৭৬ সালে তৎকালীন নবাব আবদুল গণির আমলে সরদারি প্রথা জোরদার হয়ে ওঠে। পরে নবাব সলিমুল্লাহর হাত ধরে এ প্রথা পুনর্গঠিত হয়। তিনি ঢাকার বিদ্যমান ১২টি পঞ্চায়েতের সাথে আরো ২২টি পঞ্চায়েতের সমন্বয়ে একটি অভিন্ন সরদারি প্রথা গড়ে তোলেন, এবং নবাব পরিবারের অন্যতম সদস্য খাজা মোহাম্মদ আজমকে ১৯০৭ সালে সরদারদের সরদার নিযুক্ত করেন। ওই সময়ে ঢাকা নগরীতে অন্তত ১৩৩টি পঞ্চায়েতে সমসংখ্যক সরদার ছিলেন।
প্রায় ৮০ বছর ধরে ঢাকায় সরদারি প্রথা কার্যকর ছিল। কিন্তু ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর নবাবি প্রথার বিলুপ্তির পথ তৈরি হয়ে যায়। শেষমেষ ১৯৫০ সালে ঢাকায় নবাবি প্রথার অবসান ঘটলে, একই পরিণতি বরণ করে নিতে হয় সরদারি প্রথাকেও। তবে এরপরও বেশ কয়েকবছর এই সামাজিক প্রভাব বিদ্যমান ছিল। তাছাড়া এই প্রথা বিলোপের আগে যে কয়জন ব্যক্তির সরদার হিসেবে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল, তাদের মধ্যে মির্জা কাদের সরদার, জুম্মন সরদার, মোতি সরদার, মওলা বকশ সরদার, পিয়ারু সরদার, লতিফ খান সরদার ও মাজেদ সরকার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
পিয়ারু সরদার
শিরোনাম দেখে ইতিমধ্যেই পাঠক বুঝে গেছেন, সরদারি প্রথা বা সকল সরদারের ব্যাপারে আলোকপাত আমাদের এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য নয়। আমরা কথা বলব নির্দিষ্ট একজন সরদারকে নিয়ে, যিনি হলেন পিয়ারু সরদার। তার জন্ম ১৮৯৩ সালে। ১৯৪৪ সালে পিতা মুন্নু সরদারের মৃত্যুর পর স্বাভাবিক রেওয়াজ অনুযায়ী তাকে পাগড়ি পরিয়ে সরদার উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৬১ সালে ৬৮ বছর বয়সে ইন্তেকালের আগপর্যন্ত তিনি সরদারি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন হোসনি দালান, বকশিবাজার, নাজিমউদ্দিন রোড, উর্দু রোড, নূরকাতা লেন, আজিমপুর, পলাশীসহ বিভিন্ন মহল্লার সরদার। দানশীল ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে তার খ্যাতি দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। একবার তিনি ঢাকা পৌর করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেণ, এবং বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে কমিশনার নির্বাচিত হন।
ঠিকাদারি
সরদারির পাশাপাশি ব্রিটিশ আমলের শেষদিকে এসে পিয়ারু সরদার ঠিকাদারি ব্যবসাতেও মনোনিবেশ করেন। পাকিস্তান আমলে তিনি পরিণত হন একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারে। তার তত্ত্বাবধায়নেই নির্মিত হয়েছিল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন এবং রমনা পার্ক। এছাড়াও রানী এলিজাবেথের জন্য তিনি নির্মাণ করেছিলেন পার্কের বিশাল মঞ্চটি, যা আজ শতায়ু মঞ্চ নামে পরিচিত।
মন্ত্রিপাড়ার বেশ কিছু ভবন নির্মাণের সাথেও জড়িত ছিলেন পিয়ারু সরদার। কেউ কেউ মনে করেন, ঢাকা স্টেডিয়াম নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন যে কয়জন ঠিকাদার, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের আদমজি জুটমিল, মোহাম্মদপুরের রিফিউজি কলোনি, আসাদগেট, ঢাকা মেডিকেল কলেজের নার্সিং হোস্টেল প্রভৃতি নির্মাণকাজেরও ঠিকাদার ছিলেন তিনিই।
কথিত আছে, ঢাকায় রানী এলিজাবেথের আগমনের প্রাক্কালে শহরটিকে তিলোত্তমা করে সাজানোর উদ্দেশ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে লাটভবন (বর্তমান বঙ্গভবন) পর্যন্ত নতুন রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। আপাত অসম্ভব সেই কাজটিও সম্ভব হয়েছিল পিয়ারু সরদারে কর্মতৎপরতায়ই। অনেকেই জেনে অবাক হবেন, এখনও যে ঢাকার ঈদগাহের নামাজের প্যান্ডেল নির্মিত হয়, সেটির পেছনে রয়েছে পিয়ারু সরদার অ্যান্ড কোং-এর অবদান।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অবদান
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করবার দাবিতে বুকের রক্ত ঢেকে রাজপথ রাঙিয়েছিলেন সালাম, রফিক, শফিউর, বরকত, জব্বারসহ নাম-না-জানা আরো অনেকেই। কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারির আগে-পরে এমন অনেকেই আছেন যারা হয়তো সরাসরি ভাষা আন্দোলনে প্রাণ দেননি, সর্বসম্মুখেও আসেননি, কিন্তু অন্তরালে থেকে এই আন্দোলনকে পৃষ্ঠপোষকতা করে গেছেন, যথাসম্ভব অবদানের মাধ্যমে আন্দোলনকে বেগবান করেছেন। সেরকমই একজন ছিলেন পিয়ারু সরদার।
১৯৫২ সালে ভাষার দাবিতে গোটা ঢাকা শহর যখন উত্তাল হয়ে ছিল, তখন পিয়ারু সরদার ছিলেন নগরীর ২২ পঞ্চায়েত প্রধানের মধ্যে একজন। তার বাড়ির অদূরেই ছিল রেললাইন, আর তার অপরপাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের আমতলা। তার বাড়ির ছাদে উঠলেই টের পাওয়া যেত, আমতলায় কী হচ্ছে না হচ্ছে। আর যেহেতু তখনকার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্রছাত্রীদের কর্মসূচির কেন্দ্রস্থল ছিল আমতলা, তাই তার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে চলমান আন্দোলনের হাল-হকিকতও বুঝে নেয়া যেত বেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রসমাজের আন্দোলন একসময় বিস্তার লাভ করে পিয়ারু সরদারের হোসনি দালান ও বকশিবাজার এলাকা পর্যন্তও। এই এলাকাগুলো আরো পরিণত হয় আন্দোলনরত ছাত্রদের আশ্রয়স্থলে। যখনই পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালাত, তারা চট করে রেললাইন পার হয়ে ঢুকে পড়ত হোসনি দালান মহল্লায়। পুলিশ তাদের পিছু নিয়ে ওই মহল্লায় ঢুকেও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করত, যা গোটা এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ত। এমতাবস্থায় ছাত্রদের পানি সরবরাহ করে তাদের চোখের জ্বালা কমানোর উদ্দেশ্যে বাসায় বালতি করে পানির জোগাড় রাখতেন স্বয়ং পিয়ারু সরদার। তার দেখাদেখি এই কাজ করত মহল্লার আরো অনেকেই। এভাবে প্রগতিশীল ছাত্রসমাজের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল পিয়ারু সরদারের মহল্লাবাসীরও।
২১ ফেব্রুয়ারি যখন ছাত্রসমাজ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে এবং আন্দোলনে মুখর হয়ে ওঠে, তখন তাদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। অনেকে তো নিহত হনই, এছাড়াও গুরুতর আহত হন বা বন্দি হন আরো শত শত আন্দোলনকারী। সব মিলিয়ে দেশ যখন এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল, তখন নিজ দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে এগিয়ে আসেন পিয়ারু সরদার।
প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ
২১ ফেব্রুয়ারির পরদিনই ছাত্ররা মনস্থির করেন যে তারা ভাষা শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করবেন। ঠিক যে জায়গাটায় পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালিয়েছিল, সেখানেই ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ নামখচিত একটি স্মৃতির মিনার নির্মিত হবে। এ লক্ষ্যে সেদিনই বদরুল আলম তৈরি করেন মিনারটির নকশা। কিন্তু মিনার তৈরি করতে হয় নগদ অর্থ লাগবে, নয়তো লাগবে কাঁচামাল। ছাত্রদের কাছে সে সময়ে কিছুই ছিল না। তাহলে উপায়? ছাত্রদের মাথায় তখন প্রথম যে নামটি এলো, সেটি হলো পিয়ারু সরদার।
ঐ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ভবনের সম্প্রসারণের কাজ চলছিল, যার ঠিকাদারি করছিলেন পিয়ারু সরদার। সেখানে কাজের জন্য যে পরিমাণ বালু ও ইট মজুদ ছিল, তা দিয়ে অনায়াসেই কাজ চলে যেত, কিন্তু সবচেয়ে জরুরি যে সিমেন্ট, তা রাখা ছিল তালাবদ্ধ গুদামে। গুদামের চাবি ছিল কেবল পিয়ারু সরদারের কাছেই। ছাত্ররা ধরেই নিয়েছিল, পিয়ারু সরদারের কাছে সিমেন্টের আবদার করা হলেও তা রাখবেন না তিনি। কিংবা বলা ভালো, রাখা সম্ভব নয় তার পক্ষে, কেননা সরকারি সিমেন্ট তিনি ‘সরকারবিরোধী’ কাজে দান করে দিয়েছেন, এ কথা জানাজানি হলে আর রক্ষে ছিল না।
তারপরও ঢাকা মেডিকেল কলেজের দুই ছাত্র দুরু দুরু বুকে হাজির হলেন পিয়ারু সরদারের কাছে, পেশ করলেন নিজেদের দাবি। তাদের কথা শুনে সহসাই কোনো জবাব দিলেন না তিনি। নিঃশব্দে বাড়ির ভিতর ঢুকে গেলেন। যখন ফিরে এলেন, তখন তার হাতে একটি চাবি। ছাত্রদের হাতে চাবিটি তুলে দিতে দিতে শুধু বললেন, “কাজ শেষ করে পরদিন অবশ্যই চাবিটি ফেরত দিয়ে যেয়ো।”
এভাবেই বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও, সেসবের পরোয়া না করে ছাত্রদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন পিয়ারু সরদার। তার কল্যাণেই জোগাড় হয়ে যায় মিনার নির্মাণের ইট, বালু, সিমেন্ট। তখনো ঢাকায় কারফিউ জারি ছিল। সেই কারফিউয়ের ভেতরই যথাসম্ভব নীরবে, শত শত স্বেচ্ছাসেবীর পরিশ্রমে ২৩ ফেব্রুয়ারি সারারাত জেগে নির্মিত হয় ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রথম শহীদ মিনার। ৬ ফুট চওড়া ও ১০ ফুট উচ্চতার সেই মিনারটি ছিল শক্ত ভিতের উপর নির্মিত। মিনারের গায়ে সেঁটে দেয়া হয়েছিল দুটি পোস্টার, মধ্যভাগে লেখা হয়েছিল ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক’ আর নীচের দিকে লেখা হয়েছিল ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’।
২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে শহীদ শফিউর রহমানের পিতা এসে সেই শহীদ মিনারের স্মৃতিফলক উন্মোচন করলে, সেখানে ঢল নামে আবেগাপ্লুত হাজারো মানুষের। সবাই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে থাকে ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের। মেয়েরা ফুলের পাশাপাশি নিজেদের শরীর থেকে গহনা খুলে নিবেদন করতে থাকে শহীদ মিনারের পাদদেশে। এছাড়া অনেকে নগদ টাকাও রাখে।
দুঃখের বিষয়, এত পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্মিত শহীদ মিনারটির স্থায়িত্বকাল খুব বেশিদিন ছিল না। ২৬ ফেব্রুয়ারিই পাকিস্তানি শোষকদের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয় শহীদ মিনারটি। পরে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর আবারো নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। এবারের শহীদ মিনারটির আকার ছিল আরো বড়। এবং সেটি নির্মিত হয়েছিল খোদ পিয়ারু সরদার ও তার নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়নে। অবশ্য ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী আবারও কামান দেগে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল শহীদ মিনারটি।
শেষ কথা
বলাই বাহুল্য, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও তৎপরবর্তী সময় কতটা অবদান ছিল পিয়ারু সরদারের। তবে তার অবদান শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। পাকিস্তান আমলের প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির তিনি ছিলেন একজন বিশাল বড় পৃষ্ঠপোষক। ৬০’র দশকের শুরুতে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় অফিস ছিল ৩১/১ হোসনি দালান রোডে। ছাত্র ইউনিয়নের অফিসের জন্য এই এলাকাটি শুধু এজন্যই বেছে নেয়া হয়নি যে এর অবস্থান ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও মেডিকেল কলেজ থেকে খুব কাছে, পাশাপাশি এজন্যও যে এখানে অফিস নির্মাণ করলে পাওয়া যেত পিয়ারু সরদারের প্রটেকশন লাভের সুবিধা। এই এলাকায় তার প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল এতটাই যে, আয়ুব-মোনায়েমের পেটোয়া বাহিনী বা প্রতিক্রিয়াশীলরাও সাহস পেত না এখানে এসে দাপট দেখানোর।
মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন যেন বিস্মৃতির অন্তরালে হারিয়ে ছিলেন পিয়ারু সরদার। ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করতে এতটা অবদান রাখার পরও তাকে স্মরণ করা হতো কালেভদ্রে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকে তো তার নাম জানেই না। কারণ অনেকদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাননি তিনি। তবে দেরিতে হলেও, ২০১৫ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, তার মতো একজন অসামান্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষের জন্য শুধু এটুকু সম্মাননাই যথেষ্ট নয়। আমরা আশা করতে পারি, ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যমে আরো বেশি আলোচনা হবে। কেননা মৃত্যুর পর এসব মামুলি সম্মাননা দেয়ার থেকে, তার আদর্শ ও চেতনার সাথে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেয়া অনেক বেশি জরুরি।
শেষ করা যাক পিয়ারু সরদার স্মরণে প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচিত এই পংক্তিগুলোর মাধ্যমে,
অশ্রুমেশা আমাদের সেই প্রথম শহিদ মিনার
যদিও আজ দাঁড়িয়ে নেই আর,
বর্তমানের মিনারেই তো রয়েছে স্মৃতি তার
আর স্মৃতিতে আজও আছেন পিয়ারু সরদার!পুরান ঢাকার নতুন দিনের যে মানুষটিকে পাই
ভুলেছি তাঁকে ? –পিয়ারু ভাই, আপনাকে ভুলি নাই!
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/