প্রথম পর্ব: দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার: রাজপুত্রের উত্থান
৩৩৪ খ্রিস্টপূর্বের বসন্ত। আলেকজান্ডার তার বাহিনী নিয়ে হেলসপন্ট পার হলেন, দার্দানেলিস নামে পরিচিত এই চিকন সুতার মতো জলপথ ইউরোপ থেকে এশিয়াকে আলাদা করেছে, যুক্ত করেছে ভূমধ্যসাগর আর মর্মর সাগরকে। মর্মর সাগরের অন্য প্রান্তে থাকা বসফরাস আর এই দার্দানেলিসই ইউরোপ থেকে সরাসরি এশিয়া মাইনরে ঢোকার একমাত্র পথ। আলেকজান্ডার তার ৪৮ হাজার সৈন্য আর পাঁচ হাজার ঘোড়সওয়ার নিয়ে পা রাখলেন এশিয়া মাইনরে। বিশাল পারস্য সাম্রাজ্যের সামনে এই সেনাদলের আকার খুবই সামান্য, কিন্তু রাজা ফিলিপ এদেরকে বেশ ভালোভাবেই যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশল শিখিয়ে গিয়েছেন। শৃঙ্খলাবদ্ধ এই সৈন্যদলের কাছে তাদের নতুন রাজাও বেশ সম্মানের পাত্র। আর তার নেতৃত্বে তারা যেকোনো বাধাই গুড়িয়ে দিতে প্রত্যয়ী, হোক সেটা এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য।
আলেকজান্ডারের সাথে রয়েছে তার প্রিয় বন্ধু হেফাস্টিওন, অ্যারিস্টটলের স্কুল থেকেই যার সাথে বেড়ে উঠেছে সে। আর রয়েছে পারমেনিয়ন, রাজা ফিলিপের সবচেয়ে কাছের সেনাপতি, আলেকজান্ডারের অনুপস্থিতিতে তিনিই হাল ধরবেন মেসিডন বাহিনীর। আর সেই দুরন্ত কালো বুকেফ্যালাস তো রয়েছেই। হেলেসপন্টে আসার পর আলেকজান্ডার ভাড়া করা সওদাগরদের জাহাজ নিয়েই প্রণালীর ওপাশে পার হলেন তার ছোটখাটো বাহিনী নিয়ে। দেড়শ বছর আগে অবশ্য জারজিস এই প্রণালী পার হয়েছিলেন নৌকার সেতু বানিয়ে, কিন্তু আলেকজান্ডারের বাহিনী সে তুলনায় খুবই ছোট, আলেকজান্ডারের প্রয়োজন গতি, তাই সওদাগরদের জাহাজই বেছে নেওয়া হলো। তার আগে সমুদ্র দেবতা পসাইডনের উদ্দেশ্যে বলি দিতেও ভুললেন না।
এশিয়া মাইনরে নৌকা ভিড়তেই আলেকজান্ডার একটা বর্শা নিয়ে গেঁথে দিলেন এশিয়ার মাটিতে, যেন ঘোষণা করলেন এশিয়ার রাজা এখন থেকে তিনিই। তারপর সেখান থেকে হেফাস্টিওনকে সাথে নিয়ে ট্রয় নগরীতে গেলেন, সেই ট্রয় নগরী যার কথা লিখে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন হোমার। ট্রোজান যুদ্ধের কাহিনী আগাগোড়াই আলেকজান্ডারের জানা রয়েছে, এমনকি ইলিয়াডও সবসময় সাথে রাখেন। অ্যাকিলিস আর প্যাট্রোক্লাসের স্মরণে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল রেখে সম্মান জানিয়ে চলে আসলেন দুজন।
ট্রয়ের পর আলেকজান্ডার উত্তর-পূর্ব দিকে যাত্রা শুরু করলেন। হেলসপন্ট থেকে প্রায় ১০০ মাইল উত্তরে জড়ো হয়েছে আকেমেনিড সাম্রাজ্যের (তৎকালীন পারস্য সাম্রাজ্য) সাত্রাপ নামে পরিচিত স্থানীয় রাজারা। ভারত থেকে মিশর পর্যন্ত ছড়ানো এই বিশাল সাম্রাজ্যের বাহিনীতে তাই রয়েছে বিভিন্ন দেশ আর গোত্রের সেনারা। কেউ বা এসেছে ব্যাকট্রিয়া (বর্তমান ইরানের হিন্দ-কুশ অঞ্চলের উত্তর) থেকে, কেউ এসেছে মিশর থেকে, এমনকি সুদূর আফগানিস্তান থেকে আসাও সৈন্যরা রয়েছে পার্সিয়ানদের বাহিনীতে। ফলে মেসিডন বাহিনীর মতো একতার ঘাটতি অনেকটাই ছিল তাদের।
গ্রানিকাসে পৌঁছানোর পর আলেকজান্ডারের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পারমেনিয়ন পরামর্শ দিলেন গ্রানিকাস নদী পার হয়ে পরদিন ভোরে পার্সিয়ান বাহিনীর উপর আক্রমণ করবেন। কিন্তু আলেকজান্ডার সে কথা উড়িয়ে দিয়ে পারস্যবাহিনীকে প্রস্তুতির সুযোগ না দিয়েই অতর্কিত হামলা চালালেন। মাঝখানে ফ্যালানক্স বাহিনী, আর দুই পাশ থেকে আলেকজান্ডার আর পারমেনিয়নের নেতৃত্বে কিং’স কম্প্যানিয়নরা হামলে পড়লো পার্সিয়ানদের উপর। পার্সিয়ানদের ছোটখাট অস্ত্রের তুলনায় আলেকজান্ডারের বাহিনীর বিশাল বর্শাগুলো তাদের কাজ আরো সহজ করে দিয়েছিল।
আলেকজান্ডার মূল বাহিনীর ডানদিকে থাকায় পার্সিয়ানরা তাকে আক্রমণ করতে ওদিকে সরে গিয়েছিল। এর ফলে মাঝখানে ফাঁকা হয়ে যাওয়া জায়গায় ঢুকে পড়ে ফ্যালানক্স বাহিনী কচুকাটা করতে থাকে পার্সিয়ানদেরকে। বাম দিকে থাকা পারমেনিয়নের ঘোড়সওয়াররাও ফাঁকা পেয়ে পিছন দিকে চলে গিয়ে ঘিরে ধরে তাদেরকে। আলেকজান্ডারের এই কৌশলে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই আশা হারিয়ে ফেলে পারস্যবাহিনী, ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে পুরো বাহিনী, আহত যোদ্ধা আর নিহতদেরকে ফেলে রেখেই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায় অনেকেই। আলেকজান্ডার আর তার দেহরক্ষী বাহিনীর হাতেই মারা পড়ে বেশ কিছু গণ্যমান্য পার্সিয়ান। ৩ হাজার সৈন্য আর ১ হাজার ঘোড়সওয়ারের বিনিময়ে আলেকজান্ডার সর্বসাকুল্যে হারিয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ জন। আটক হওয়া ২ হাজার সেনাকে ক্রীতদাস হিসেবে পাঠিয়ে দেওয়া হলো গ্রিসে।
গ্রানিকাসের যুদ্ধ জেনোফোনের আমল থেকে গ্রিক আর পার্সিয়ানদের জন্য প্রথম বড় কোনো যুদ্ধ ছিল। আর প্রথম যুদ্ধেই নিজেদেরকে প্রমাণ করে মেসিডন বাহিনী, বুঝিয়ে দেয় শীঘ্রই আরো বড় কিছু পতনের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। পার্সিয়ানদেরকে ধাওয়া করার বদলে আলেকজান্ডার এশিয়া মাইনরে পার্সিয়ানদের শহরগুলোতে তার বাহিনী নিয়ে ঢুকে পড়েন। সার্ডিস এফিসাস কিংবা মিলেটাসের মতো শহরগুলো খুব সহজেই ভেঙে পড়ে আলেকজান্ডারের বাহিনীর সামনে। তবে হেলিকার্নাসাস অবরোধের সময় আলেকজান্ডারকে সামান্য বেগ পেতে হয়েছিল। পরে আলেকজান্ডারের ইঞ্জিনিয়াররা কাঠের বিশাল টাওয়ার বানিয়ে তার মধ্যে যোদ্ধাদেরকে ঢুকিয়ে দেয়ালের কাছে গিয়ে আক্রমণ শুরু করে এবং হেলিকার্নাসাসেরও পতন ঘটে।
আলেকজান্ডারকে কোনো বাধা দিতে সাহসই করেনি এমন কিছু নগরের তালিকায় ছিল গর্ডিয়ামের নাম। এই নগরের এক বিখ্যাত জিনিস ছিল গর্ডিয়ান নট (গিট)। এই গর্ডিয়ান নট নিয়ে এরকম একটি প্রবাদ ছিল যে, যে ব্যক্তি এই গিট খুলতে পারবে, সেই হবে এশিয়ার রাজা। অত্যন্ত জটিলভাবে প্যাঁচানো এই নট খোলার জন্য বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করলেন আলেকজান্ডার, কিন্তু কোনো লাভ হলো না। তারপর কিছুক্ষণ চিন্তা করে নিজের তরবারি দিয়ে এক কোপে সম্পূর্ণ নটটাই আলাদা করে ফেললেন তিনি। প্রবাদ অনুযায়ী তার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গেল, তিনিই হবেন এশিয়ার রাজা। এদিকে তার সেনারাও যারা এই গর্ডিয়ান নটের প্রবাদে বিশ্বাস করতো, তারাও বিশ্বাস করা শুরু করলো আলেকজান্ডারের সাথে থাকলে তাদের সাফল্য অবধারিত। পুরো বাহিনীর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল কয়েকগুণ। লিসিয়া, ফাসেলিস আর আঙ্কারার পর আলেকজান্ডার এবার নজর ফেরালেন এশিয়া মাইনরের পূর্বাঞ্চলের দিকে। ইতিমধ্যেই মাইনরের অর্ধেকটারও বেশি নিজের অধিকারে নিয়ে এসেছেন তিনি। এদিকে আলেকজান্ডারকে প্রতিরোধ করার জন্য আরো একটি বিশাল বাহিনী প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে তুরস্কের পূর্ব সীমানায়।
পারস্যের রাজাদের রাজা তৃতীয় দারিউস নিজের সৌন্দর্য আর সম্পদের জন্য এমনিতেই বিখ্যাত ছিলেন, যদিও এই আরামপ্রিয়তা আর যুদ্ধ একইসাথে সম্ভব না। কিন্তু নিজের রাজ্য বাঁচাতে হলে যুদ্ধের বিকল্প নেই। অগত্যা তাকে সৈন্যদেরকে নিয়ে প্রস্তুতিতে নামতে হলো। পারস্যের প্রান্তীয় অঞ্চলের রাজারাও একটু অবাধ্য। যদি তারা খবর পায় বাইরে থাকা আসা কেউ পারস্যের উপর হামলা চালিয়েছে, তাহলে তারাও বিদ্রোহ করে বসবে। অবশেষে প্রায় ২ লক্ষ সৈন্য নিয়ে আলেকজান্ডারকে থামাতে তুরস্কের দিকে এগিয়ে গেলেন দারিউস, আলেকজান্ডারের বাহিনীর তুলনায় এর আকার প্রায় ৫ গুণ। ব্যাবিলন থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে যাত্রা শুরু করলেন দারিউস আর ভূমধ্যসাগরের উত্তর-পূর্ব কোনায় পৌঁছিয়ে গেলেন আলেকজান্ডারের আগেই। মেসিডন বাহিনীও দারিউসের আসার সংবাদ আগেই পেয়েছিল। খবর শোনামাত্রই আলেকজান্ডার দ্রুতগতিতে বাহিনীকে চলার নির্দেশ দিলেন যাতে পার্সিয়ানদের আগেই সিলিসিয়ান গেট পার হওয়া যায়।
দুই পর্বতের মাঝখান দিয়ে যাওয়া সরু এই রাস্তা দিয়ে মাত্র ৪ জন সৈন্য পাশাপাশি দাঁড়াতে পারে, যার ফলে শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য এটি একটি খুবই ভালো জায়গা। কিন্তু আলেকজান্ডার সিলিসিয়ান গেটে না থেমে আরো দক্ষিণ-পূর্বে যেতে থাকলেন এবং শেষমেশ পৌঁছালেন দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের বিশাল সমভূমিতে। এদিকে আলেকজান্ডারের গতিবিধি নজরে রেখে দারিউসও এগিয়ে যেতে থাকলেন তাদের উত্তর-পশ্চিমে। এদিকে এভাবে এগিয়ে যেতে থাকায় দুই বাহিনীই একে অপরকে অতিক্রম করে আরো সামনে চলে গিয়েছে। তারপর খবর পাওয়ামাত্র দলের মুখ ঘুরিয়ে অবশেষে ইসাসের প্রান্তরে মুখোমুখি হয় দুই বাহিনী।
ভূমধ্যসাগরের একেবারে গা ঘেঁষে থাকা ইসাসে প্রতিপক্ষের সৈন্য কম থাকা সত্ত্বেও দারিউস আলেকজান্ডারকেই প্রথমে আক্রমণ চালানোর সুযোগ দিলেন। দারিউসের এই সিদ্ধান্তে আলেকজান্ডারও বুঝতে পারলেন দারিউস কাপুরুষ বৈ কিছু নয়, এবং যুদ্ধ সম্পর্কেও অজ্ঞ। ইসাসের প্রান্তরের সরু একটা জায়গা বেছে নিলেন আলেকজান্ডার, ফলে পার্সিয়ানদের বিশাল সংখ্যা তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। বরং আলেকজান্ডারের ছোট আকারের বাহিনীই আরো সুবিধা পাবে। পার্সিয়ান বাহিনী তাদের ডানদিকে বেশি সৈন্য রেখে আক্রমণ শুরু করলো, আলেকজান্ডার এডেরকে ঠেকিয়ে রাখার মতো যথেষ্ট সৈন্য নিজের বাম পাশে রেখে নিজেদের ডানপাশে রাখলেন বেশি। এই ডানপাশের ফ্যালানক্সরাই ক্রমাগত বাহিনীর মাঝখানে ঢোকার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। তারপর হঠাৎ করেই আলেকজান্ডার তার বুকেফ্যালাসের পিঠে করে কম্প্যানিয়নদেরকে সাথে নিয়ে ঝটিকা আক্রমণে পার্সিয়ানদের রক্ষণব্যূহ ভেদ করে অনেকখানি ভেতরে ঢুকে পড়লেন। এদিকে আলেকজান্ডারের এই আকস্মিক আক্রমণে খেই হারিয়ে ফেলে দারিউস যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই পালিয়ে গেলেন। দারিউসের পালানো দেখে পার্সিয়ানরা দলে দলে আত্মসমর্পণ করা শুরু করলো। পার্সিয়ানদের ডান পাশে থাকা সৈন্যরা যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা যুদ্ধ করে চলছিলো, তারাও শেষমেশ হাল ছেড়ে দিলো। এভাবে প্রায় ৫ গুণ বড় সৈন্যদল নিয়েও হারতে হলো দারিউসকে। তার দেহরক্ষী আর ছোট বাহিনী নিয়ে দারিউস পূর্বদিকে যতটা দূর যাওয়া যায়, ততদূর চলে গেলেন।
এদিকে রাতের বেলা আলেকজান্ডার খবর পেলেন পার্সিয়ানদের রাজাদের রাজার তাঁবু পাওয়া গিয়েছে। শুধু সোনা, রূপা কিংবা বিলাসদ্রব্যই নয়, দারিউস পিছনে ফেলে রেখে গিয়েছে তার স্ত্রী স্তাতেইরা, মা সিসিগ্যাম্বিস আর নিজের ছেলেকেও! তাদের সাথে দেখা করতে আলেকজান্ডার আর হেফাস্টিওন হাজির হলেন। হেফাস্টিওনকে দেখে সিসিগ্যাম্বিস মনে করেছিলেন তিনিই আলেকজান্ডার এবং হেফাস্টিওনকেই মাথা নিচু করে সম্মান জানালেন। এদিকে সিসিগ্যাম্বিসের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে হেফাস্টিওন আলেকজান্ডারকে দেখিয়ে বুঝালেন, ‘আলেকজান্ডার আমি নই, ইনি’। এদিকে বিব্রত সিসিগ্যাম্বিসকে দেখে আলেকজান্ডার সামনে এগিয়ে বললেন, ‘সমস্যা নেই, মা। এ-ও আরেক আলেকজান্ডার।’ আলেকজান্ডারকে নিয়ে তৈরি গালগল্পে আলেকজান্ডারকে অনেক বড় করে দেখানো হলেও ইতিহাসবিদদের মতে, এই ঘটনা সত্যি বলেই প্রতীয়মান হয়। কারণ আলেকজান্ডার নিজের সেনাপতি কিংবা সৈন্যদেরকে যথেষ্ট ভালোবাসতেন। আর এটিই ছিল তার নেতৃত্বের অন্যতম বড় গুণ। নিজের ছেলের রাজ্য দখলকারী হওয়া সত্বেও সিসিগ্যাম্বিস আলেকজান্ডারের মহত্ত্ব বুঝতে পারেন, এবং আলেকজান্ডার তার প্রিয়পাত্র হয়ে যায়। আলেকজান্ডারও দারিউসের পরিবারের সাথে যথেষ্ট সম্মান আর শ্রদ্ধাশীল আচরণ করে।
ইসাসের যুদ্ধের কিছুদিন পার হয়ে যাওয়ার পর আলেকজান্ডারের কাছে দারিউসের পক্ষ থেকে একটি চিঠি আসলো। দারিউস তার পরিবারকে তার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে, সাথে তার সাম্রাজ্য আক্রমণ করার জন্যও আলেকজান্ডারের কাছে কৈফিয়ত চেয়েছে। আলেকজান্ডার প্রত্যুত্তরে বললেন, দারিউসের পূর্বপুরুষ দারিউস প্রথম আর জারজিস তার দেশের উপর আক্রমণ চালিয়েছে আর তার বাবা রাজা ফিলিপ হত্যার পেছনেও দারিউসের হাত থাকতে পারে। আলেকজান্ডার লিখলেন,
আমার কাছে অর্থাৎ, এশিয়ার প্রভুর কাছে এসো। যদি মনে হয়, আমার কাছে এসে কোনো ধরনের অসম্মানের মুখোমুখি হবে, তবে আগে নিজের কিছু বন্ধুদেরকে পাঠাতে পারো এবং তাদেরকে আমি সেরকমই সম্মান দেবো, তারা যেটার প্রাপ্য। এসো, এবং আমার কাছ থেকে তোমার মা, তোমার স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে যাও, এবং সাথে আরো যা যা পছন্দ হয় সেগুলোও। এবং ভবিষ্যতে যখন আমার সাথে যোগাযোগ করবে, তখন আমাকে এশিয়ার রাজা হিসেবে সম্বোধন করবে। আমাকে নিজের সমান হিসেবে মনে করবে না। তোমার যা কিছু রয়েছে, সবকিছুই এখন আমার। তো, যদি তোমার কিছু প্রয়োজন হয়, সেটা লিখে অনুমতি চেয়ে নিবে, অন্যথায় তোমাকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হবে। আর যদি নিজের সিংহাসন ফিরে পেতে লড়াই করতে চাও, তবে সামনে এসো আর পালিয়ে যেও না। যেখানেই পালাও না কেন, আমি তোমাকে খুঁজে বের করবোই।
তৃতীয় পর্ব: দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার: মিশরের নতুন দেবতা