Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, এইচটিটিপি এবং একজন টিম বার্নারস লি

কম্পিউটার কিংবা  ইন্টারনেটের ইতিহাস নিয়ে যাদের টুকটাক জ্ঞান আছে , তাদের কাছে টিম বার্নারস লি নামটি অতি পরিচিত একটি নাম। আজকের বিশ্বে সারফেস ওয়েব, ডিপ বা ডার্ক ওয়েবের মতো ব্যাপারগুলো যে জটিল এবং সুবিস্তৃত এক জাল সৃষ্টি করেছে, তার পেছনে এই ব্যক্তির অবদানই সর্বাগ্রে থাকবে। কারণ ‘WWW’ বা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের আবিষ্কারক তো তিনিই। ‘ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ’ তথা সার্নে থাকাকালীন এ সাফল্য পান লি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের এই অধ্যাপকই প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়াম’। তথ্য বিনিময়কে অত্যন্ত সহজ এবং সুলভ করে তোলা এইচটিটিপি বা ‘হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল’ও তারই অবদান।

টিম বার্নারস লি; Source: cnet.com

টিম বার্নারস লি’র শুরুটা অন্যান্য বিজ্ঞানী বা উদ্ভাবকদের মতো দারিদ্রপীড়িত ছিল না। এমনকি তার জীবনের গতিপথটাও যেন ঠিক করাই ছিল। কারণ তার বাবা বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী কনওয়ে বার্নারস লি এবং মা মেরি লি। এই লি দম্পতি একসাথেই কাজ করেছিলেন বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক কম্পিউটার ‘ফেরান্তি মার্ক-১’ নির্মাণে। স্বাভাবিকভাবে পিতামাতা উভয়েরই কম্পিউটার বিষয়ক কাজ লি পরিবারে কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য এক ধরনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল। সে পরিবেশে বড় হয়ে টিম বার্নারস লি কি পিতামাতার দেখানো পথে না হেঁটে পারেন? কিন্তু এত বড় সাফল্য কেবল বংশগত ইতিহাস আর ঐতিহ্য দিয়েই হয় না। প্রয়োজন দুর্দান্ত মেধাশক্তির যা নিঃসন্দেহে লি’র ছিল।

মাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইনস কলেজে ভর্তি হন লি। মেধার স্বাক্ষর রেখে পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতক পাস করেন। কারিগরি বিষয়ে ভালো দক্ষতা থাকায় স্নাতক শেষ করেই চাকরি পেয়ে যান তিনি। ডোরসেটের নামকরা ‘প্লেসি টেলিকম’ কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে ম্যাসেজ ডিসট্রিবিউশন এবং ম্যাসেজ রিলে নির্ধারণের কাজ করতেন তিনি। খুব দ্রুতই নিজেকে দক্ষ প্রমাণ করে বার কোড বিষয়ক প্রযুক্তির দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নেন। কিন্তু ২ বছরেই তিন বার প্রমোশন পেয়ে চাকরিটা যেন পানসে মনে হতে শুরু করে তার নিকট। তাই প্লেসি টেলিকমের চাকরি ছেড়ে দেন নতুন চ্যালেঞ্জের খোঁজে।

প্লেসি টেলিকম; Source: plessey.rckt.co.za

টিম বার্নারস লি’র নতুন গন্তব্য হয় ডোরসেটের ফার্নডাউন শহরের ‘ডি. জি. ন্যাশ’ কোম্পানিতে, যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তারই দুই বন্ধু ডেনিস ন্যাশ এবং জন পুল। বন্ধুদের কোম্পানিতে চাকরি করতে এসে অনেক স্বাধীনতা পান লি। তাই আনুষ্ঠানিক কাজে নিজেকে ব্যস্ত না রেখে তিনি কোম্পানির উন্নয়নের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে শুরু করেন। তার হাত ধরে ডি. জি. ন্যাশ কোম্পানি পায় প্রিন্টারের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় টাইপ সেটিং সফটওয়্যার এবং ‘মাল্টিটাস্কিং অপারেটিং সিস্টেম’। তবে স্বাধীনতাটা সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে অন্য ক্ষেত্রে। বন্ধুদের কোম্পানির জন্য কাজ করবার পাশাপাশি তিনি সার্নে একজন স্বতন্ত্র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। তার ক্যারিয়ারের উত্থান শুরু মূলত এখান থেকেই।

সার্ন; Source: diepresse.com

সার্ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সম্মানজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। এখানে কাজ করেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা হাজারো বিজ্ঞানী, গবেষক। লি দেখলেন গবেষণা কাজের জন্য উন্নত প্রযুক্তির অভাব না থাকলেও গবেষকদের মাঝে যোগাযোগের জন্য যথাযথ প্রযুক্তি অপ্রতুল সার্নে। অথচ গবেষকদের মাঝে আন্তঃযোগাযোগ যেকোনো গবেষণার সাফল্যের জন্য অতীব জরুরী। সার্নের এই দুর্বল দিকটি নিয়েই কাজ শুরু করলেন লি আর আর তৈরি করে ফেললেন ‘হাইপারটেক্সট’ নামক একটি প্রজেক্টের পরিকল্পনা। এই হাইপারটেক্সট গবেষকদের জন্য সকল প্রকার তথ্য বিনিময় এবং আপডেট করা সহজ করে দেয়।

এনকোয়ারের একটি প্রাথমিক ম্যানুয়াল; Source: www.w3.org

তবে তার চিন্তা ভাবনা এতটা উন্নত এবং আধুনিক ছিল যে ৮০’র দশকের মানুষের জন্য তা বুঝতে পারা এবং ব্যবহার করা কিছুটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্যা সমাধানকল্পে তিনি ‘ENQUIRE’ নামক একটি প্রোটোটাইপ সিস্টেম তৈরি করেন যা হাইপারটেক্সট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। বর্তমানে আমরা কম্পিউটার কিংবা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে যেসব সহায়তাকারী সফটওয়্যার বা ফাংশন (হাউ ইট ওয়ার্কস) খুঁজে পাই তার ধারণা কিন্তু লি’র এনকোয়ার থেকেই এসেছে। এই নামটি তিনি নিয়েছিলেন নিজের একটি পছন্দের বইয়ের শিরোনাম ‘এনকোয়ার এভরিথিং উইদিন আপন’ থেকে।

১৯৮০ সালের শেষ দিকে সার্নের পাট চুকিয়ে চলে আসেন লি। একস্থানে বেশিদিন কাজ করা তার অভ্যাস নয়। সার্ন ছেড়ে যোগ দিলেন বোর্নমাউথের ‘জন পুল’স ইমেজ কম্পিউটার সিস্টেম লিমিটেড’ নামক কোম্পানিতে। এখানে ৩ বছর কাজ করে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, গ্রাফিক্স এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা লাভ করেন লি। ১৯৮৩ সালে ভিন্টন কার্ফ প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইমেইল আবিষ্কার করেন, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা একে অপরের সাথে ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে সহজেই তথ্য আদান প্রদান করতে পারবেন।

ইমেইলের এই অগ্রগতি দেখে লি’র মাথায় খেলে গেল অন্য বুদ্ধি। তিনি চিন্তা করলেন এনকোয়ারের আদলে এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করবেন যা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সবার কাছে থাকবে। কিন্তু এই কাজ করার জন্য তার প্রয়োজন ছিল শক্তিশালী ইন্টারনেট ব্যবস্থার, যা সেসময় কেবল সার্নেরই ছিল। ১৯৮৪ সালে তাই পুনরায় সার্নে যোগ দিলেন লি। তবে এবার সাধারণ কোনো ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নয়, একজন সম্মানিত ফেলো হিসেবে!

লি’র প্রথম ওয়েবসাইট এবং হাইপারটেক্সটের ডায়াগ্রাম; Source: mprove.de

সার্নে নিজের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করেই টিম বার্নারস লি ভাবতে লাগলেন কীভাবে হাইপারটেক্সটের সাথে ইন্টারনেটের সমন্বয় করা যায়। ইমেইলের যোগযোগ ক্ষমতা তার কাছে খুবই সীমিত মনে হতো। কারণ ইমেইল একই সময়ে একজন ব্যক্তির সাথে কেবল একজনের যোগাযোগ করাতে পারে। কিন্তু লি খুঁজছিলেন এমন কোনো উপায় যা দ্বারা সমগ্র বিশ্বই এমন একটি ব্যবস্থার আওতায় আসবে যা থেকে সবাই অবাধে তথ্য গ্রহণ করতে পারবে। এই সূত্র ধরে গবেষণা করে তিনি ‘ইনফরমেশন ম্যানেজম্যান্ট: আ প্রপোজাল’ নামক একটি প্রস্তাবনা সার্নের নিকট উপস্থান করেন। ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে তিনি এ প্রস্তাবনা প্রকাশ করেন যা ইমেইলের সহায়তা ছাড়াই বিশ্বব্যাপী তথ্য বিনিময় করতে পারবে। বিশ্বব্যাপী জালের মতো এই ব্যবস্থা ছড়িয়ে থাকবে বলে লি এর একটি জুতসই নাম দেন, ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’।

শুধু ওয়েবই নয়, বিশ্বের প্রথম ওয়েব ব্রাউজারও টিম বার্নারস লি’র কীর্তি। তার পরিকল্পনা অনুসারেই সার্নে তৈরি হয় পৃথিবীর প্রথম ওয়েবসাইট যা আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত হয় ১৯৯১ সালে। এটি একই সাথে একটি ওয়েবসাইট এবং ওয়েব সার্ভার হিসেবে কাজ করতো। এর অ্যাড্রেস ছিল info.cern.ch। এই ওয়েবসাইটটি একটি নেক্সট কম্পিউটার দ্বারা পরিচালনা করা হতো। প্রাথমিকভাবে এই ওয়েবসাইটে সার্নের বিভিন্ন গবেষণার তথ্যাদি এবং লি’র হাইপারটেক্সট বা এইচটিটিপি সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রকাশ করা হয়। এইচটিটিপি কীভাবে কাজ করে এবং ওয়েব পেইজ কীভাবে তৈরি করা যায়, এসব তথ্য এই ওয়েবসাইটে দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল নতুন এই প্রযুক্তিকে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া। ওয়েবসাইটের ভিজিটররা যেন নিজেদের মতো নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারে, সেটিই ছিল বিশ্বের প্রথম ওয়েবসাইটের মুখ্য উদ্দেশ্য।

পৃথিবীর প্রথম ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস; Source: specblo.com

সেই যে সার্নে তৈরি হলো ইতিহাসের প্রথম ওয়েবসাইট, বিশ্বব্যাপী মানুষ পরিচিত হলো এইচটিটিপি নামক এক অভূতপূর্ব প্রাযুক্তিক বিস্ময়ের সাথে, তারপর থেকেই শুরু হলো ইন্টারনেটের বিস্ফোরণ। সার্নের ওয়েবসাইট প্রকাশের মাত্র ৩ বছরের মাথায় ওয়েব জগতে যুক্ত হয় ৫০টি স্বতন্ত্র ওয়েব সার্ভার আর ২০ লক্ষাধিক ব্যবহারকারী। তবে এই অগ্রগতি কেবল শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। লি একে সাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়াম’ তথা W3C।

বোস্টনে ‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র কম্পিউটার ল্যাবে লি’র হাত ধরে সৃষ্টি হওয়া এ প্রতিষ্ঠান আজ ওয়েব বিষয়ক মান নিয়ন্ত্রণ এবং আইনপ্রয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সর্বোচ্চ সংস্থা। ওয়েবের মানোন্নয়ন এবং মান নির্ধারণের জন্য প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থায় শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত একনিষ্ঠভাবে ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন লি। ২০০৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ব্রিটিশ সরকারের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে data.gov.uk নামক ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এর দায়িত্ব দেয়া হয় লি’র কাঁধে।

লি এবং অধ্যাপক নাইজেল শ্যাডবোল্ট মিলে ব্রিটিশ সরকারের জন্য তৈরি করেন বিশাল এক তথ্য ভাণ্ডার। একই বছর লি ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। সাম্প্রতিককালে ‘নেট নিউট্রালিটি’ নিয়ে সোচ্চার কণ্ঠগুলোর মধ্যে লি অগ্রগণ্য। তার মতে, নেট নিউট্রালিটি হচ্ছে মানুষের নেটওয়ার্কে প্রবেশাধিকার যা আধুনিক যুগের মানুষের ষষ্ঠ মৌলিক অধিকারের মতো। ২০১২ সালে তথ্যপ্রাপ্তি বাধাহীন করতে ‘ওপেন ডাটা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন লি এবং শ্যাডবোল্ট। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লি। তাছাড়া ‘অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফরডেবল ইন্টারনেট’ এর একজন অংশীদার টিম বার্নারস লি।

লি এবং তার বর্তমান স্ত্রী রোজমেরি; Source: qeprize.org

টিমোথি জন বার্নারস লি, যাকে আমরা টিম বার্নারস লি বলে চিনি, ১৯৫৫ সালের ৮ জুন জন্মগ্রহণ করেন। পিতামাতা উভয়েই কম্পিউটার বিজ্ঞানী হওয়ায় শৈশব থেকেই কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির সাথে পরিচিতি তার। ‘শিন মাউন্ট প্রাইমারি স্কুল’ এবং ‘ইমানুয়েল স্কুলে’ যথাক্রমে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

১৯৯০ সাল কম্পিউটার প্রোগ্রামার ন্যান্সি করিসনকে বিয়ে করেন লি। ২০১১ সালে এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হলে রোজমেরি লেইথকে বিয়ে করেন লি। মাঝে ২০০১ সালে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হন এবং ২০০৪ সালে ভূষিত হন সম্মানজনক ‘নাইট’ উপাধিতে। ২০০৯ সালে তিনি ‘ইউএস ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স’ এর ‘ফরেন অ্যাসোসিয়েট’ নির্বাচিত হন। সেই ৮০’র দশক থেকে আজ অবধি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন ৬২ বছর বয়সী এই বিজ্ঞানী। আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞান তার কাছে অনেক কিছুর জন্যই ঋণী।

ফিচার ছবি: supplychain247.com

Related Articles