মধ্যযুগে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন হযরত আমির খসরু। তিনি শুধু সঙ্গীতজ্ঞই ছিলেন না, ছিলেন একাধারে কবি, গায়ক, সুফি, দার্শনিক ও যোদ্ধা। প্রধানত ফার্সি ও হিন্দি ভাষায় তিনি গান ও কবিতা লিখতেন। অসাধারণ গান ও কবিতার মাধ্যমে তিনি ভক্তদের কাছ থেকে উপাধি পেয়েছিলেন ‘তুত-ই-হিন্দ’ বা ‘ভারতের তোতা পাখি’ হিসেবে। তার সম্পর্কে বিশিষ্ট গবেষক এ. জেড. এম. শামসুল আলম লিখেছেন,
আমির খসরুর হিন্দী রচনা সম্পর্কে বলা হয়, তিনি এক লক্ষ শ্লোক রচনা করেছিলেন এবং আরও রচনা করেছিলেন পাহালিস (ধাঁ-ধাঁ, হেয়ালি) এবং দোহা শ্লোক যার কিছু কিছু আধুনিক কাল পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমির খসরু ছিলেন দিল্লির ১১ জন শাসকের সমকালীন ব্যক্তিত্ব এবং ৭ জন সুলতানের দরবারের সংগীতজ্ঞ ও কবি। আমির খুসরু ছিলেন দিল্লির অন্যতম পরাক্রমশালী সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির সভা কবি এবং দরবারের প্রধান সংগীতজ্ঞ।
আমির খসরুকে সেতার ও তবলা বাদ্যযন্ত্রের আবিষ্কারক বলা হয়। তিনি ভারতীয়, ইরানী ও আরবি সঙ্গীতের মধ্যে এমনভাবে সমন্বয় করেছেন যে, তা গানের জগতে উত্তর ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত হিসেবে খ্যাতি পায়। তার হাত ধরেই ভারতীয় উপমহাদেশে গজল সঙ্গীত ও কাব্যের প্রচার-প্রসার শুরু হয়।
আমির খসরুর জন্ম বর্তমান ভারতে অবস্থিত উত্তর প্রদেশের ইহাত জেলার পাতিয়াতলি গ্রামে। তার জন্মতারিখ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায় না, তবে ১২৫৩-৫৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার জন্ম হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তার মূল নাম ছিল আবুল হাসান ইয়ামিন আল-দিন মাহমুদ। বাবা আমির সাইফুদ্দিন মাহমুদ ছিলেন মধ্য এশিয়ার ‘লা চীনা হাজারা গোত্রীয় ও তুর্কি বংশোদ্ভূত’। মঙ্গোলদের আক্রমণের সময় তার বাবা ভারতে চলে আসেন এবং মামলুক রাজবংশের সুলতান শামসুদ্দিন ইলতুতমিশের অধীনে পাতিয়ালা রাজ্যে জায়গিরদারি লাভ করেন।
মা বিবি দৌলত নাজ ছিলেন সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজপুত রাওয়াত আরজের কন্যা। আমির খসরুর বয়স যখন মাত্র ৭ বছর, তখন তিনি বাবাকে হারান। এরপর থেকে তিনি তার নানা ইমাদুল মুলকের নিকট লালিত পালিত হন। মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি কাব্যচর্চা শুরু করেন। ১৬ বছর বয়সে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তুহফাতুস সিগার’ প্রকাশিত হয়।
২০ বছর বয়সে তিনি তার নানীকেও হারান। এ সময় তিনি গিয়াসউদ্দিন বলবনের ভাইয়ের ছেলে মালিক ছাজ্জুর সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে নৈপুণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি কাব্যচর্চার মাধ্যমে রাজদরবারের সবাইকে আকর্ষণ করতে থাকেন। গিয়াসউদ্দিন বলবনের ছেলে নাসিরউদ্দিন বুগরা খান তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে পৃষ্ঠপোষকতা দান করেন। ফলে তিনি কাব্য ও সংগীত চর্চায় গভীর মনোনিবেশ প্রদান করার সুযোগ পান। এ সময় তিনি বুহরা খানকে নিয়ে ‘কিরান উস-সাদাইন’ নামের একটি মসনভি রচনা করেন।
রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যে ১২৯০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি সালতানাতে খিলজি রাজবংশের শাসন প্রতিষ্ঠা হলে উস্তাদ আমির খসরু সুলতান জালালউদ্দিন ফিরোজ খিলজির সচিব পদে নিযুক্ত হন। আমির খসরুর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মুগ্ধ হয়ে সুলতান তাকে ‘আমির খসরু’ উপাধি প্রদান করেন। জালালউদ্দিন ফিরোজ খিলজিকে নিয়ে তিনি তার দ্বিতীয় মসনভি ‘মিফতাহুল ফুতুহ’ রচনা করেন।
জালালউদ্দিন ফিরোজ খিলজি মারা গেলে আলাউদ্দিন খিলজি দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার সময় আমির খসরু শিল্প-সাহিত্যে তার প্রতিভা পুরোপুরি বিকশিত করার সুযোগ পান। এ সময় তিনি সুলতানের বীরত্বগাঁথা নিয়ে ‘খাজিনাউল ফুতুহ’ নামের একটি গ্রন্থ রচনা করেন।
তার লিখিত অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ওয়াসতুল হায়াত (১২৭৯), ঘুররাতুল কামাল (১২৯৪), খামসা-ই-খসরু (১২৯৮), সাকিনা, দুভাল রানি (১৩১৬), বাকিয়া নাকিয়া (১৩১৭), নুহ সিপার (১৩১৮), ইজাজ-ই-খসরু, আফজাল উল-ফাওয়াইদ (১৩১৯), তুঘলক নামা (১৩২০), নিহায়াত উল-কালাম (১৩২৫) ইত্যাদি।
সংগীত সম্রাট আমির খসরু ছিলেন ভারত বিখ্যাত অলি ও দরবেশ হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার অন্যতম শিষ্য। হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া তার প্রিয় শিষ্য আমির খসরুকে এতটাই ভালোবাসতেন যে, তিনি ভক্তদের অসিয়ত করে যান- তার প্রিয় শিষ্য আমির খসরুকে যেন তার পাশেই কবর দেয়া হয়।
মূলত নিজামুদ্দিন আওলিয়া ও আমির খসরু উভয় উভয়ের আধ্যাত্মিক প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে তাদেরকে মাওলানা জালালউদ্দিন রুমি ও শামস-ই-তাবরিজির মধ্যকার প্রেমের সাথে তুলনা করা যায়। ১৩২৫ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে নিজামুদ্দিন আওলিয়া যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন থেকে আমির খসরু তার কবরে গিয়ে বিলাপ শুরু করেন। এভাবে টানা ৬ মাস কবরে বিলাপ করতে করতে অবশেষে আমির খসরুও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অসিয়াত অনুসারে, গুরু-শিষ্য বর্তমানে একই স্থানে শায়িত আছেন।
নিজামুদ্দিন আওলিয়ার সাথে আমির খসরুর সাক্ষাৎ নিয়ে বেশ কিছু উপকথা প্রচলিত আছে। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত ঘটনাটি জানা যাক।
আমির খসরুর বয়স যখন মাত্র ৮ বছর, তখন তার মা তাকে হযরত নিজামুদ্দিন আওলিয়ার দরবারে নিয়ে যান। বালক আমির খসরু মায়ের সাথে দরবারে গেলেন ঠিকই, কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলেন না। এমতাবস্থায় আমির খসরুর মা একাই নিজামুদ্দিন আওলিয়ার কাছে যান। মূলত বালক আমির খসরু তখন নিজামুদ্দিন আওলিয়ার আধ্যাত্মিক শক্তি যাচাই করতে চাচ্ছিলেন। মা ভেতরে চলে গেলে তিনি গুনগুন করে একটি কবিতা পাঠ করছিলেন। যার ভাবার্থ এমন-
তুমি সেই সম্রাট, প্রসাদেরই রাজা
কবুতর গেলে যেথা হয়ে যায় বাজপাখি
গরিব পথচারী এসেছে সে দরজায়
ভেতরে ডাকবে- নাকি ফিরে যাব, জানাবে কি?
দরবেশ নিজামুদ্দিন আওলিয়া আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে ভিতরে বসেই এই কবিতা শুনতে পান। সাথে সাথে নিজামুদ্দিন আওলিয়া বালক আমির খসরুকে অভিবাদন জানাতে দরজায় এগিয়ে আসেন এবং পাল্টা কবিতা আবৃত্তি করতে থাকেন-
হে প্রাণের বন্ধু, ভেতরে এসো
সারাজীবন আমার বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে থেকো
বোকা মানুষ কেউ যদি আসতো
তাহলে না হয় সে খালি হাতে ফিরে যেত।
এই কবিতা শুনে বালক আমির খসরু বুঝতে পারেন, তিনি সঠিক জায়গায় এসে উপনীত হয়েছেন। সেই থেকেই আমির খসরু নিজামুদ্দিন আওলিয়ার প্রিয় শিষ্য ও বিশ্বস্ত বন্ধুতে পরিণত হন।
আমির খসরু একই সঙ্গে তুর্কি, ইরানী এবং ভারতীয় সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী ছিলেন। তৎকালীন ভারতীয় সংগীত ছিল গ্রিক সংস্কৃতি ও সংগীত প্রভাবিত। আবার ভারতীয় মুসলমানদের সঙ্গীতচর্চা ছিল ইরান এবং আরবদের সঙ্গীত দ্বারা প্রভাবিত। ভারতে গ্রিক সঙ্গীতের প্রভাব শুরু হয় আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের ভারত বিজয়ের সময় থেকে। আমির খসরু এসব ধারার সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র মুসলিম ধারা প্রবর্তন করেন।
আমির খসরু একইসাথে ভারতীয় এবং পারস্য কবিতা ও সংগীতে পারদর্শী ছিলেন। পারস্য সংগীতের ‘পরদা’ এবং ভারতীয় ‘রাগ’ সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ছিল। তিনি ভারতীয় এবং পারস্য সংগীতের মিলন করে নতুন সংগীত প্রকরণের সৃষ্টি করেন। অর্থাৎ দুটি পৃথক সংগীত ধারার সমন্বয় সাধিত হয় আমির খসরুর সংগীত প্রতিভায়।
আমির খসরুর সংগীতের একটি বিশেষ ভঙ্গিকে বলা হতো ‘কাওল’। এটি ছিল দুই ভাষায় রচিত সংগীত, যেমন- ফার্সি ও হিন্দি। কাওল সংগীত গাওয়া হতো সুফি দরবেশদের মাহফিলে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। হযরত নিজামুদ্দিন আওলিয়ার দরবারে আমির খসরু সাধারণত কাওয়ালি গজল গাইতেন। এটি ছিল সহজ, বোধগম্য ও জনপ্রিয়। কাওয়ালি শব্দটি এসেছে আরবি ‘কাওল’ বা ‘কাওলুন’ শব্দ থেকে, যার অর্থ কথা, বাক্য। বহুবচনে শব্দটি হয় ‘কাওয়ালি’।
এই কাওয়ালি সংগীত আমির খসরুর নিজের উদ্ভাবিত সংগীত ধারা। ফলে তাকে ‘কাওয়ালির জনক’ বলা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে কাওয়ালি এখনও অত্যন্ত জনপ্রিয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। উপরের ইউটিউব ভিডিওতে আমির খসরুর লিখিত একটি গান পরিবেশন করছেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি কাওয়ালি গায়ক নুসরাত ফাতেহ আলি খান।
‘খেয়াল’ ভারতীয় উপমহাদেশে এখনও বেশ জনপ্রিয় ও পরিচিত সংগীতের একটি ধারা। খেয়ালের পূর্বে ভারতে পরিচিত সঙ্গীত ধারা ছিল ‘ধ্রুপদ’। আমির খসরুর অন্যতম অবদান হলো, তিনি এই মুসলিম সঙ্গীত ধারাকে উপমহাদেশীয় সঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছেন। তার হাত ধরেই ‘খেয়াল’ ধারা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এছাড়াও আমির খসরু কর্তৃক উদ্ভাবিত অসংখ্য সঙ্গীত ধারা উচ্চাঙ্গ সংগীতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে এখনও আমাদের মাঝে বিরাজমান।
‘তারানা’ সংগীত ধারা আমির খসরুর নিজস্ব আবিস্কার। এটি হলো একপ্রকার শ্রুতিমধুর এবং দ্রুতগতির উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। এর শব্দ তরঙ্গ শ্রোতাকে গম্ভীরভাবে আকর্ষণ করে- যদিও শব্দগুলো প্রায় অর্থহীন হয়।
আমির খসরু পারস্য এবং ভারতীয় সংমিশ্রণে কয়েকটি নতুন ‘তান’ ও ‘লয়’ সৃষ্টি করেন। ভারতীয় এবং পারস্যের পারস্পরিক সুরের মিশ্রণে আমির খসরু ‘সূতার’ এবং অপর কয়েকটি ছন্দ আবিষ্কার করেন। পারস্য সংগীতের ১২ পর্দা এবং অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয়সমূহে তার প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য ছিল। তিনি সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় বিশেষ আগ্রহ সহকারে অংশগ্রহণ করতেন। সে সময় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও বিজয় লাভ অত্যন্ত মর্যাদার বিষয় ছিল।
তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ নায়ক গোপালকে তিনি সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কথিত আছে, তেলেঙ্গানা রাজ্যে জন্মগ্রহণ করা এই নায়ক গোপালের প্রভাব-প্রতিপত্তি এত বেশি ছিল যে, তার বারো শত শিষ্য পর্যায়ক্রমে তার পালকি বহন করতেন। আলাউদ্দিন খিলজির দরবারে আয়োজিত এক সংগীত প্রতিযোগিতায় আমির খসরু তাকে পরাজিত করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। এ বিজয় তাকে তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞের মর্যাদা প্রদান করে।
তিনি অসংখ্য নতুন রাগ, তাল ও সঙ্গীত যন্ত্র আবিস্কার করেন। আমির খসরু কর্তৃক আবিষ্কৃত নব রাগগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১. সাহগাড়ি, ২. ইয়ামানি, ৩. ইসশাক, ৪. মুয়াফিক, ৫. গানাম, ৬. জিলাফ, ৭. ফারগানা, ৮. সারপর্দা, ৯. শিরুদাসত, ১০. ঘারা, ১১. মুজির, ১২. সানাম, ১৩. জানগুলাহ, ১৪. খেয়াল, ১৫. আহমান, ১৬. বাজরেখ, ১৭. প্রভার্থ, ১৮. নিগার, ১৯. বাসিখ, ২০.সাহানা, ২১. সুবিলা ইত্যাদি।
আমির খসরু কর্তৃক আবিষ্কৃত নতুন তালগুলোর মধ্যে ছিল- ১. সাওয়ারি, ২. ফিরুদাস্ত, ৩. পাহলোয়ান, ৪. জাট, ৫. পুস্ত, ৬. কাওয়ালি, ৭. আড়াবৌতালি, ৮. জালদ তিতালা, ৯. জুমড়া, ১০. সুলকাকতা, ১১. খামসাহ ইত্যাদি।
বিশেষ ধরনের আরবি, ফার্সি ও ভারতীয় সংগীত ছাড়াও বিবিধ সংগীতশাস্ত্রে আমির খসরু শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। সংগীতের যে যে ক্ষেত্রে তার বিশেষ দক্ষতা ছিল, তা হলো- ১.কাওল, ২.কানবালা, ৩.নাকশ, ৪.গোল, ৫.হাওয়া, ৬.তেরানা, ৭.সাহিলা ইত্যাদি।
আমির খসরু শুধুমাত্র সঙ্গীতের নতুন নতুন স্বর, সুর ও তালের আবিষ্কারক ছিলেন না- তিনি বহু যন্ত্রেরও আবিষ্কারক। সেতারা, তবলা, রতবাব, দোলক ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কারে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এর মধ্যে সেতারা ও তবলা তার নিজেরই আবিষ্কার বলে জানা যায়। বাকি বাদ্যযন্ত্রগুলো আরব ও পারস্য থেকে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে নিয়ে এসেছিলেন।
আমির খসরুকে ভারতের প্রথম জাতীয় কবিও বলা হয়। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র মধ্যযুগীয় কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ, যার গান-কবিতার প্রভাব এখনও স্ব-মহিমায় বর্তমান আছে। উপমহাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংগীত সাধনায় তার অবদান চিরস্মরণীয়।
সূত্র:
১। সোহেল ইমাম খান, গজল কথা, প্রথম প্রকাশ ২০১৬
২। এ. জেড. এম. শামসুল আলম, মুসলিম সংগীত চর্চার সোনালী ইতিহাস, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিঃ, প্রথম প্রকাশ ২০১২
৩। মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ, পারস্য প্রতিভা, প্রথম প্রকাশ ১৯৮৭