Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সাইরাস (পর্ব-৫): কোরআন শরীফে বর্ণিত যুলকারাইন?

কোরআন শরীফ সরাসরি সাইরাসের নাম উল্লেখ করেনি। তবে তাফসির বিশারদদের অনেকেই সূরা কাহাফে বর্ণিত যুলকারনাইনকে সাইরাস বলে প্রমাণ করতে চান। কোরআনের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বক্তব্যকে সংক্ষিপ্ত করার প্রবণতা। চরিত্রকে লক্ষ্যবস্তু না বানিয়ে বিষয়কে লক্ষ্য বানানোর ফলে পাঠকের সামনে কেবল সংবাদটাই মুখ্য হয়ে ওঠে। আলোচনার মোটিফ উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয় না তখন। এ জন্য ‘যুলকারনাইন আসলে কে’?- এই প্রশ্নের সমাধান না করেও বিবরণ থেকে মূল শিক্ষাটা বের করে আনা যায়। পরিচয় পাওয়া যায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী এবং মজলুমের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুত শাসকের। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা বলছেন,

“উহারা তোমাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলো, আমি তোমাদের নিকট তাহার বিষয় বর্ণনা করিব। আমি তো তাহাকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দিয়াছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের উপায় উপকরণ দান করিয়াছিলাম। অতঃপর সে এক পথ অবলম্বন করিলো। চলিতে চলিতে সে যখন সূর্যের অস্তাগমন স্থানে পৌঁছিলো তখন সে সূর্যকে এক পংকিল জলাশয়ে অস্তগমন করিতে দেখিল এবং সে তথায় এক সম্প্রদায়কে দেখিতে পাইলো। আমি বলিলাম, হে যুলকারনাইন, তুমি ইহাদিগকে শাস্তি দিতে পারো অথবা ইহাদের ব্যাপার সদয়ভাবেই গ্রহণ করিতে পারো। সে বলিল, যে কেহ সীমালঙ্ঘন করিবে, আমি তাহাকে শাস্তি দিবো। অতঃপর সে তাহার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তিত হইবে এবং তিনি তাহাকে কঠিন শাস্তি দেবেন। তবে যে ইমান আনে এবং সৎকর্ম করে, তাহার জন্য প্রতিদানস্বরূপ আছে কল্যাণ এবং তাহার প্রতি ব্যবহারে আমি নম্র কথা বলিব। আবার সে এক পথ ধরিল। চলিতে চলিতে যখন সে সূর্যোদয়ের স্থলে পৌঁছিল তখন সে দেখিল উহা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হইতেছে, যাহাদের জন্য সূর্যতাপ হইতে কোনো অন্তরাল আমি সৃষ্টি করি নাই। প্রকৃত ঘটনা ইহাই, তাহার নিকট যাহা কিছু ছিলো আমি সম্যক অবগত আছি।

আবার সে এক পথ ধরিল। চলিতে চলিতে সে যখন দুই পর্বত প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থলে পৌছিলো তখন তথায় সে এক সম্প্রদায় পাইলো, যাহারা কোনো কথা বুঝিবার মতো ছিলো না। উহারা বলিলো, হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করিতেছে। আমরা কি আপনাকে খরচ দিবো যে আপনি উহাদের এবং আমাদের মাঝে প্রাচীর গড়িয়া দিবেন? সে বলিল, আমার প্রতিপালক আমাকে এই বিষয়ে যে ক্ষমতা দিয়াছেন, তাহাই উৎকৃষ্ট। সুতরাং তোমরা আমাকে শ্রম দ্বারা সাহায্য করো, আমি তোমাদের এবং উহাদের মধ্যস্থলে এক মযবুত প্রাচীর গড়িয়া দিবো। তোমরা আমার নিকট লৌহপিণ্ডসমূহ আনয়ন কর। অতঃপর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হইয়া যখন লৌহস্তূপ দুই পর্বতের সমান হইলো তখন সে বলিলো, তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। যখন উহা অগ্নিবৎ উত্তপ্ত হইলো; তখন সে বলিলো, তোমরা গলিত তাম্র আনয়ন কর। আমি উহা ঢালিয়া দেই ইহার উপর।”

(আল-কুরআনুল কারীম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক অনূদিত, সূরা কাহাফ, পৃষ্ঠা ৪৭২-৭৪)

যুলকারনাইনের মতোই সাইরাস অভিযান চালিয়েছেন প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যে; Image Source: Factinate.com

কোরআনের পূর্বতন তাফসিরকারগণ যুলকারনাইন বলতে আলেকজান্ডারকে ইঙ্গিত করেছেন। কিন্তু সূরা কাহাফে তার যে গুণাবলি এবং বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হচ্ছে, তার সাথে আলেকজান্ডারের মিল খুবই কম।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ তার তারজুমানুল কোরআনে এই ব্যাপারে নতুন ডিসকোর্স তৈরি করেছেন। অবশ্য স্যার সৈয়দ আহমদ খান আগে তার বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থে ইশারা করেছিলেন। মাওলানা আজাদ জোর দিয়েছেন আকিমেনিড সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সাইরাসের প্রতি। মধ্যযুগের মুসলিম পণ্ডিত মাকরিজি (১৩৮০-১৪৬০) তার ‘আল খিতাত’ গ্রন্থে যুলকারনাইনকে ইয়ামেনের শাসক বলে চিহ্নিত করেছিলেন। সেই সাথে দাবি করেছেন- যারা যুলকারনাইনকে রোমান, পারসিক বা আলেকজান্ডার হবার কথা বলে, তার ভুল। অর্থাৎ মাকরিজির যুগেও কেউ কেউ যুলকারনাইনকে পারসিক বলে মনে করতো। যা-ই হোক, পরবর্তীতে মাওলানা মওদুদী তার তাফহীমুল কুরআনেও সম্ভাব্যতা উপস্থাপন করেছেন। এগিয়ে এসেছেন আল্লামা তাবতাবায়ী, আয়াতুল্লাহ মাকারেম সিরাজি এবং ড. ফারেদুন বাদেরিই। তাদের অভিমত প্রত্যাখ্যান করে আলেকজান্ডারের সমর্থক যে নেই, তা না। 

মূল আলোচনায় যাবার আগে সূরা কাহাফ অবতীর্ণ হবার প্রেক্ষাপট সামনে আনা প্রয়োজন। মক্কার মুশরিকরা প্রায়ই নানা বিষয় নিয়ে হাজির হতো নবি করিম (সা.) এর সামনে। যখন নিজেরা পেরে উঠতো না, পরামর্শ নিত খায়বারের ইহুদিদের। ইহুদিরা সমবেত হয়ে তিনটি প্রশ্ন তৈরি করে দেয় মুশরিকদের। প্রথমটি আত্মা সম্পর্কে, দ্বিতীয়টি আসহাবে কাহাফ সম্পর্কে এবং তৃতীয়টি যুলকারনাইন সম্পর্কে। প্রশ্নগুলো ইহুদি এবং খ্রিষ্টান ইতিহাসের সাথে জড়িত। যদি রাসুল (সা.) এর দাবি অনুযায়ী তিনি ইবরাহিমি সিলসিলার নবি হয়ে থাকেন, তবে তার কাছে এই প্রশ্নগুলোরও উত্তর থাকবে। প্রশ্নগুলো মূলত এজন্যই করা হয়েছে। এই অবস্থায় সুরা কাহাফ নাজিল হলো। (তাফসিরে ইবনে কাছীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৯১)

কোরআনে যুলকারনাইন উপস্থাপিত হয়েছে ন্যায়বিচারের মূর্তপ্রতীক হিসাবে; Image Source: Wikipedia

এই সূরা নাযিলের মধ্য দিয়ে কেবল মুশরিকদের প্রশ্নের উত্তরই দেয়া হলো না; সামনে আনা হলো আরো প্রাসঙ্গিক আলোচনা। কোরআন কারিম যেভাবে গোটা বক্তব্যকে উপস্থাপন করেছে, তাতে চারটি বিষয় মোটামুটি স্পষ্ট।

১) যুলকারনাইন বা দুই শিংওয়ালা একটা উপাধি। সত্যিকার ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্নকর্তারা অর্থাৎ ইহুদিরা আগে থেকেই পরিচিত। এজন্য ইহুদি ইতিহাস ও গ্রন্থের দিকে তাকানো প্রয়োজন। তারা আসলে যুলকারনাইন বলে কোন ব্যক্তি বা রাষ্ট্রকে জানতো?

২) যুলকারনাইন নিঃসন্দেহে অনেক প্রভাবশালী বিজেতা এবং শাসক হবেন। পূর্ব থেকে পশ্চিম এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে যার অভিযান প্রেরিত হয়েছে। কোরআন আগমনের পূর্বে এই রকম ব্যক্তি মাত্র কয়েকজন। তাই অনিবার্যভাবে তাদের মধ্যেই খুঁজে দেখতে হবে বৈশিষ্ট্য।

৩) তাকে এমন শাসক হতে হবে, যিনি ইয়াজুজ মাজুজের হাত থেকে কোনো জাতিকে বাঁচানোর জন্য পার্বত্য গিরিপথে মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করেন। সেই সাথে অবশ্য ইয়াজুজ মাজুজ কারা এবং প্রাচীরটি ঠিক কোথায়- এই ধরনের প্রশ্নও দেখা দেয়।

৪) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাকে আনুগত্যশীল এবং ন্যায়পরায়ণ শাসক হতে হবে। কোরআনে তার এই গুণের প্রতিই জোর আরোপ করেছে বেশি। (তাফহীমুল কোরআন, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৮২)

পরম শত্রুরাও সাইরাসের ন্যায়বিচারের প্রশংসা করে গেছেন; Image Source: watchjerusalem.co.il

প্রথম বৈশিষ্ট্যটি সহজেই সাইরাসের সাথে মেলে। বাইবেলে বুক অব দানিয়েলে নবি দানিয়েলের স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে। যেখানে তিনি মিদিয়া ও পারস্যের যুক্ত সাম্রাজ্যকে দুই শিংওয়ালা মেষের আকারে দেখেন। ইহুদি ধর্মতত্ত্বে এই যুলকারনাইন বা দুই শিংওয়ালা তকমাটা অপরিচিত ছিল না। কারণ সাইরাসের মাধ্যমেই তাদের সত্তর বছরের বন্দী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। পদানত হয় ব্যাবিলন। নির্মিত হয় ইবরাহিমি ইবাদতখানা। চতুর্থ পর্বে এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কোরআনের ভাষ্য যুলকারনাইন অস্তাচলে এবং উদয়াচলে অভিযান চালিয়েছেন। পশ্চিমে কালো পানিতে সূর্য ডুবতে দেখেছেন আর পূর্বে দেখেছেন উন্মুক্ত সূর্যের নিচে থাকা জাতিকে। লিডিয়া বিজয়ের মাধ্যমে ইজিয়ান সাগর অব্দি পৌঁছে যায় সাইরাসের বিজয় পতাকা; অর্থাৎ এশিয়ার শেষপ্রান্ত। পূর্বদিকে অভিযান ছিলো ব্যাক্ট্রিয়া অব্দি; তৎকালীন সভ্য সমাজের ভূগোলে তা পৃথিবীর পূর্বপ্রান্তই বটে। মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ চারণভূমিতে বসবাসকারী যাযাবরদের প্রসঙ্গ আসে এখানে। ‘সূর্যের তাপ থেকে বাঁচার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি’ মানে বিস্তীর্ণ মরু এবং তৃণভূমিতে বসবাস করা মানুষগুলো তখন ইমারত দূরে থাক, তাঁবুই নির্মাণ করতে পারতো না। উত্তরে কাস্পিয়ান সাগর এবং দক্ষিণে আরব (জেনোফোনের মতে ইথিওপিয়া) পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলে সাইরাসের অভিযান। প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে আলোচনা উঠলে সাইরাসই সর্বপ্রথম অত বড় সাম্রাজ্যের অধিকারী হয়েছিল।  

তৃতীয় ক্ষেত্রে এই কথা প্রায় প্রতিষ্ঠিত যে, ইয়াজুজ এবং মাজুজ বলতে রাশিয়া এবং উত্তর চীনের সিদিয়া, হুন, তাতার এবং মোঙ্গলদের বোঝানো হয়েছে। তবে ইয়াজুজ মাজুজ কি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী নাকি জুলুম এবং শোষণের দীক্ষায় দীক্ষিত বিশেষ শ্রেণি, সেটাও বিবেচ্য। যেটাই হোক, তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ককেশাসের দরবন্দ এবং দারিয়েলের মাঝখানে প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল। কোরআন শরীফের ভাষ্যমতে, সেখানকার মানুষ অন্য ভাষা বুঝতো না। তৎকালীন ভান নদীকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠিত উরারতু সভ্যতা সম্পর্কে কিছুটা জানা যায়। তাদের ভাষা ছিল একেবারেই আলাদা। ইন্দো-ইউরোপীয় কিংবা সেমেটিক ভাষাগোষ্ঠীর সাথে কোনোরকম সাদৃশ্যবিহীন। ফলে ককেশাসের ওই জাতিই ইয়াজুজ মাজুজের ভুক্তভুগী জাতি হওয়া সম্ভব। সাইরাস যে এখানে অভিযান চালিয়েছেন, এই বিষয়েও ঐতিহাসিকদের অভিমত আছে। তবে ইতিহাসের এই অংশে আরো আলো ফেলা জরুরি। (Robert Rollinger- এর থিসিস, The Median Empire, The end of the Urartu and Cyrus the Great’s Campaign in 547 BC)

ইয়াজুজ মাজুজের বাঁধটা কৃষ্ণসাগর এবং কাস্পিয়ান সাগরের মাঝে অবস্থিত; Image Source: wbaseem.wordpress.com

সবিশেষ ন্যায়পরায়ণতা প্রসঙ্গ। পবিত্র কোরআনে বর্ণনার মোটিফ দেখেই এই কথা স্পষ্ট যে, যুলকারনাইন একজন ন্যায়পরায়ণ সম্রাট। ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন সম্রাটদের মধ্যে কেবল সাইরাসের মধ্যেই এই গুণাবলি বিশদভাবে পরিলক্ষিত হয়। সাইরাস সিলিন্ডার, দারিয়ুসের বেহিস্তুন লিপি, নেবুনিদাসের বিবরণী, গ্রিক লেখকদের রচনা এবং বাইবেল থেকেও তার প্রজ্ঞা এবং নৈতিকতার প্রশংসা অন্য সকল সম্রাটকে ছাপিয়ে যায়। তার বিনয়, উদারতা, ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা এবং খোদাভীতি বিস্মিত হবার মতো। চরম শত্রুরাও তার ন্যায়বিচারের প্রশংসা করেছে। সাইরাসের আগে আসিরিয়া এবং ব্যাবিলন এবং পরের গ্রিক, রোমান কোনো সম্রাট এতটা উচ্চতায় আসীন হতে পারেনি। খোদ আলেকজান্ডারও সাইরাসের সংযমের কাছে হার মেনে যান।

সেই সাথে সবচেয়ে বড় নোকতা যোগ করেছেন মাওলানা আজাদ। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ছিলেন বহু-ঈশ্বরবাদী; অন্যদিকে সাইরাস একেশ্বরবাদী। (Tarjumanul Quran, Maulana Abul Kalam Azad, Vol 2, Page 464)

আলেকজান্ডারের সময়ে প্রাচীন গ্রিসের ধর্মজীবন মোটামুটি স্পষ্ট, যাকে অনায়াসে বহুঈশ্বরবাদ তকমা দেয়া যায়। গ্রিসে দেবতাদেরকে ক্ষুদ্র শক্তিসম্পন্ন সসীম ব্যক্তি হিসেবে কল্পনা করা হতো। পরমেশ্বর বা মহাসত্তার রূপে কল্পনা করা হয়নি। পৃথক পৃথক দেবতার ব্যক্তিসত্তা অতিক্রমকারী কোনো সর্বব্যাপী পরমসত্তার ধারণা পাওয়া যায় না। এজন্যই তা বহুঈশ্বরবাদ। কিন্তু সাইরাসের জীবন থেকে একত্ববাদের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। অধিকাংশ মতানুসারেই সাইরাস জরাথুস্ত্রবাদে বিশ্বাসী, যা একত্ববাদী ধর্ম। প্রসঙ্গক্রমে বলা যেতে পারে, বৈদিক বিশ্বাসও এক্ষেত্রে গ্রিক বহুঈশ্বরবাদ থেকে ব্যতিক্রম। ম্যাক্সমুলার এই বৈশিষ্ট্যকে ‘হেনোথেইজম’ বলে আখ্যা দেন। অর্থাৎ যখন যে দেবতার উপাসনা করা হয়, পরমেশ্বর রূপেই করা হয়। যেমন- বৈদিক বাণী, ‘একং সৎবিপ্রা বহুধা বদন্তি অগ্নিং যম মাতারিশ্বানমাহু’। অর্থাৎ এক পরম সত্তাকেই বিপ্রগণ অগ্নি, যম, মাতরিশ্বা প্রভৃতি নামে অভিহিত করে থাকেন।

সাইরাস ইসলামি চিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন আধুনিককালে; Image source:ancient-origins.net  

কোরআন শরীফ যেহেতু স্পষ্ট করে দেয়নি, তাই যুলকারনাইনকে নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রে তাফসিরকারকদের মধ্যে কিছুটা বিরোধ আছে। আধুনিক চিন্তকরা এই চিন্তায় নতুন মাত্রা যোগ করে চলছেন। সাইরাস হাজির হয়েছেন মুসলিম ধর্মতত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ ডিসকোর্স হিসাবে। যুলকারনাইন হিসাবে সামনে টানা অন্যান্য অনেক ঐতিহাসিক চরিত্রের চেয়ে এগিয়ে সাইরাস। তার চেয়ে বড় কথা, এই গোটা আলোচনা ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে মুসলিম চিন্তায় সাইরাসের গুরুত্ব অনুধাবনের। 

আরো পড়ুন

সাইরাস (পর্ব-১): মানব ইতিহাসে অভিনব অধ্যায়ের শুরু

সাইরাস (পর্ব-২): ভবিষ্যত থেকে আসা দুঃসংবাদ

সাইরাস (পর্ব-৩): শিকড়ে ফেরার উপাখ্যান

সাইরাস (পর্ব-৪): ইবরাহিমি ঐতিহ্যে প্রতিশ্রুত মেসায়াহ

This Bengali article is about Cyrus the Great, the most influential Character after the dawn of human history and founder of the Achaemenid Empire. 

References:

1) Discovering Cyrus: The Persian Conqueror Astride the Ancient World, Reza Zarghamee, Mage Publishers, Washington DC, 2013

2) Stephen Dando-Collins, Cyrus the Great: Conqueror, Liberator, Anointed One, Nashville, Turner Publishing Company, 2020

3) Jacob Abbot, Cyrus the Great, Harper and Brothers Publishers, New York, 2009

4) Paul Johnson, A History of the Jews, Harper Perennial, New York, 1988

5) The Holy Bible, New International Version, Zondervan Publishing House, Michigan, 1985

6) Maulana Abul Kalam Azad, Tarjumanul Quran, Vol-2, Islami Academy, Urdu Bazaar, Lahore

7) আল-কুরআনুল করীম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ঢাকা, ২০০৭

8) সাইয়েদ আবুল আ’লা মুওদূদী, তাফহীমুল কুরআন, ৭ম খণ্ড, অনুবাদ-মাওলানা আবদুল মান্নান তালিব, আধুনিক প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৯

Featured Image: destinationiran.com

Related Articles