মেয়েটা চোর হতে চায়নি, চেয়েছিল ব্যালেরিনা হতে। চুরির স্বাদ সে প্রথম পায় তের বছর বয়সে। একটা সাধারণ দোকানে বেশ কিছু হাতঘড়ি পরে দেখছিল। কিন্তু কোনো ঘড়িই পছন্দ হলো না। ভাবল, এগুলো থাক। পরে, আরো দেখে-শুনে কেনা যাবে। দরজার কাছে পৌঁছে খেয়াল হলো, শেষ হাতঘড়িটা আর খোলা হয়নি। সেই ঘড়িটি অবশ্য সে ফেরত দিয়ে এসেছিল। কিন্তু সেদিনই সে প্রথম বুঝতে পারে, চুরি করাটা তার বাঁহাতের খেল। তিনি ডরিস পাইন। চুরি করাটা যার নেশা হয়ে গিয়েছিল এবং শেষ বয়সে এসে নিজেকে যে আখ্যায়িত করেছে ডায়মন্ড ডরিস নামে।
১
১০ অক্টোবর, ১৯৩০। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার খনিজ শহর, স্ল্যাব ফর্ক।
এক আফ্রিকান-আমেরিকান কয়লা-শ্রমিকের ঘরে ওর জন্ম। ৬ ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট মেয়েটা শিশুকাল থেকেই মাকে অত্যাচারিত হতে দেখেছে বাবার হাতে। কলেজ পেরুনোর আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হলো। পরিবারকে সাহায্য করার জন্য চাকরি নিতে হলো নার্সের, দায়িত্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখাশোনা করা।
বয়স পনেরও পেরোয়নি, কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটা নিল ডরিস পাইন। যা-ই হোক, যেভাবেই হোক, নিজের খরচটা নিজেকেই যোগাতে হবে ওকে। নিজে আয় না করলে ‘স্বামী’ কীভাবে সুযোগ নেয়, কীভাবে অত্যাচার করে সে ব্যাপারে ওর বেশ ভাল ধারণা হয়ে গেছে ততদিনে।
কিন্তু নার্সের কাজ করে আর কত টাকাই পাওয়া যায়! তাছাড়া, ইতোমধ্যেই একটা বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে ওর। এর মধ্যে দিয়ে তের বছর বয়সেই ডরিস পাইন নিজের দুটো বিশেষত্ব আবিষ্কার করেছে। এক, যে কাউকে খুব সহজেই নিজের মতো করে একটা কিছু বুঝিয়ে দিতে পারে সে চাইলেই। দুই, ওর চেহারা এত বিশেষত্বহীন যে কেউ ওকে আলাদা করে মনে রাখে না।
এই দুটো বিশেষত্বকে পুঁজি করেই ২৩ বছর বয়সে, ১৯৫২ সালে প্রথম চুরি করে ডরিস। বেশ কিছু হীরের আংটি ট্রায়াল দিয়ে দেখে সে। একাধিক আংটিকে একই সময় বিভিন্ন আঙুলে পরে দেখে। আঙুল বদল হয় দ্রুত। হাতের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে মুখও নড়ে। তারপর, সেলসম্যানকে বোকা বানিয়ে ২০,০০০ ডলারের একটি আংটি হাতে করে সে বেরিয়ে আসে পিটার্সবার্গের একটা অলঙ্কার-দোকান থেকে।
সেবার এত দুশ্চিন্তা হচ্ছিল যে, সারাটা রাত সে স্থানীয় গ্রেহাউন্ড স্টেশনের গণশৌচাগারে কাটিয়ে দিয়েছিল সে। সকালে উঠে ভেবেছিল, এভাবে সম্ভব না! আংটি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দোকানের দিকে দ্রুত পা বাড়ায় সে। কিন্তু গিয়ে হাজির হয় অলঙ্কার বিক্রি হয়, এরকম এক রিসেল স্টোরে। আংটিটা বিক্রি করে দেয় তৎকালীন ৭,০০০ ডলারে। যার বর্তমান অর্থমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৬৫,০০০ ডলার!
এভাবেই হাতে-খড়ি হয় ডায়মন্ড ডরিসের। জন্ম নেয় এক জাত-হীরেচোর।
২
১৯৫০ এর দশকে হীরের অলঙ্কার চুরিকেই একমাত্র পেশা হিসাবে বেছে নেয় ডরিস। ছেড়ে দেয় নার্সের চাকরি। পুরো উত্তর আমেরিকা ঘুরে দেখে সে। লস অ্যাঞ্জেলস থেকে মন্ট্রিয়েল, কানাডা- প্রতিটি এলাকা সময় নিয়ে খুঁটিয়ে দেখে, পরিকল্পনা করে, অনুশীলন করে হাত পাকিয়ে নেয় যথাসম্ভব। এ সময়ই নিজের কর্মপদ্ধতিটাকে একটা নির্দিষ্ট ছাঁচ দেয় ডরিস। সে বুঝতে পারে, পাঁচটার বেশি অলঙ্কার যদি কোনোভাবে সেলসম্যানকে দিয়ে বের করানো যায় পরে দেখার জন্য, তাহলেই হয়েছে! ডরিস পাইনের ভাষ্যমতে,
পুলিশকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট করতে বিব্রতবোধ করত তারা। কারণ, এসব জানালে পুলিশ রিপোর্টে দোকানীর দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কথা উঠে আসত। এ রিপোর্ট আবার চলে যেত ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কাছে। ফলে, ভবিষ্যতে আরো বড় কোনো চুরি হলে ইনস্যুরেন্সের ঝামেলায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যেত। এ কারণে আমাকে অনেক অনুশীলন করতে হয়েছে। যাতে চুরির পর ওদের নিজেদেরকেই দায়ী মনে হয়।
এভাবে প্রায় দেড় দশক সফলভাবে চুরি চালিয়ে যাওয়ার পর, ১৯৬৬ সালে প্রথম আইনের নজরে পড়ে যায় ডরিস। তবে সে যাত্রা বেঁচে যায় সে, ‘বেইব’-এর কল্যাণে।
১৯৫৭ সালের কথা। ক্রিমিনাল আন্ডারগ্রাউন্ডের সাথে যুক্ত এক ইসরায়েলির সাথে পরিচয় হয় ডরিসের। লোকটাকে সবাই ‘বেইব’ নামে ডাকত। প্রেম হয়ে যাওয়ার পর ডরিস জানতে পারে, তার আসল নাম হ্যারল্ড রবার্ট ব্রনফিল্ড। যথেষ্ট নামডাক ছিল মানুষটার। পরিচয় ছিল শক্তিশালী বেশ কয়েকজন আইনজীবীর সাথে। অর্থাৎ, যেকোনো বিপদে ডরিসকে বাঁচানোর সামর্থ্য ছিল হ্যারল্ডের।
৩০ নভেম্বর, ১৯৬৬। বুধবার। ফিডেলিটি ফিলাডেলফিয়া ট্রাস্ট বিল্ডিংয়ের এক হীরের দোকান থেকে দুটো হীরের আংটি চুরি করে ডরিস ও হ্যারল্ড। এ সময় হ্যারল্ড নিজেকে ডরিসের আইনজীবী হিসাবে পরিচয় দেয়। জানায়, তার বিধবা মক্কেল স্বামীর কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে বিশাল অঙ্কের টাকা পেয়েছে। এ টাকা দিয়ে মহিলা এখন বেশ কিছু দামি আংটি কিনে রাখতে চায়। শুধু ডিসপ্লেতে সাজানো আংটিগুলোই না, আরো দামি যেসব আংটি ডিসপ্লেতে নেই- সেরকম কিছু দেখানো সম্ভব কি না, জানতে চায় হ্যারল্ড। দোকানি ভেতরে যায় দামি আংটি আনার জন্য। এসে দেখে, বিধবা ও তার উকিল চলে গেছে। নেই হয়ে গেছে দুটো আংটিও।
ওদেরকে ভুলেনি সেই দোকানি। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী পুলিশ ডরিস ও হ্যারল্ডকে শনাক্ত করে ফেলে। বের হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। সূত্র ধরে পুলিশ একসময় ঠিকই খুঁজে বের করে ফেলে তাদের দু’জনকে। শেষপর্যন্ত হ্যারল্ডের এক ঝানু আইনজীবীর পরামর্শে দোষ স্বীকার করে নেয় ডরিস। সেবার তাই আর জেলে যেতে হয়নি তাকে। কিন্তু বড় একটা মাশুল ঠিকই দিতে হয়েছিল। পত্রিকায় ছবি ছাপা হয়েছিল ডরিস পাইনের। ফলে বড় শহরগুলোতে চুরি করা একরকম অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। জটিলতা আরো বেড়ে যায় দু’ বছর পর, ১৯৬৮ সালে। মারা যায় বেইব, হ্যারল্ড ব্রনফোল্ড।
ডরিস বুঝতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রে তার আর জায়গা নেই। সিদ্ধান্ত নেয়, ইউরোপ যাবে সে। এভাবেই আন্তর্জাতিক এক অপরাধীতে পরিণত হয় ডরিস পাইন।
৩
বেশ কিছু বড়সড় চুরি করে পার পেয়ে গেছে ডরিস। নিজের এবং মায়ের জন্য কিনেছে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি। ১৯৬৬ সালে ক্লিভল্যান্ডে চার বেডরুমের একটা বাড়ি ছিল তার। সে সময়ের অর্থমূল্য অনুযায়ী এ বাড়ির দাম ছিল ২০,০০০ ডলার!
কিন্তু পার পেয়ে যাওয়া চুরিগুলো নয়, বরং ধরা পড়ে যাওয়া চুরিগুলোই বিখ্যাত করে তোলে ডরিস পাইনকে। এর শুরুটা হয় ১৯৭৪ সালে, ফ্রান্সের মন্টে কার্লোতে। বিখ্যাত ফরাসি কোম্পানি কার্টায়ারের সাড়ে দশ ক্যারেটের হীরে বসানো একটি অলঙ্কার চুরি করে সে। ছকবাঁধা নিয়মে দোকানিকে ধাঁধায় ফেলে বেরিয়ে আসে অর্ধ মিলিয়ন ডলারের অলঙ্কারটি নিয়ে। কিন্তু পালাতে পারেনি। মন্টে কার্লো থেকে ফিরতি বিমানে ওঠার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। ডরিসের ভাষ্যমতে, তার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল চুরি করার পর জামা পাল্টাতে ভুলে যাওয়া।
নয় মাস হাজতবাসের পর ছাড়া পায় ডরিস পাইন। ছাড়া পাওয়ার কারণ- পুলিশ নয় মাসেও চুরি যাওয়া অলঙ্কারটি খুঁজে পায়নি!
পরেরবার সে ধরা পড়ে ১৯৮০ সালে। স্থান জুরিখ। পরিকল্পনা করে, সব ঠিকঠাক করে জুরিখে পা দেয়ার পর নিজের জন্য ঠিক করে রাখা সবচেয়ে বড় অলিখিত নিয়মটি ভাঙে পাইন। ক্যাব ড্রাইভারের সাথে কথায় কথায় গিয়ে হাজির হয় একটি ক্লাবে, মদ গিলে চুর হয়ে যায়। পুলিশ যখন তাকে গ্রেপ্তার করে, তখন সে ক্লাবে মাতাল অবস্থায় নাচছে! সেবার গ্রেপ্তার করে ফ্রান্স দূতাবাসে নিয়ে যাওয়ার সময় বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে, সুযোগ বুঝে পালিয়ে আসে ডরিস। তারপর টের পায়, পকেটে একটা দামি রোলেক্স ঘড়ি পড়ে আছে! কখন যে চুরি করেছে, নিজেও জানে না। শেষপর্যন্ত অবশ্য পুলিশ ঠিকই গ্রেপ্তার করেছিল তাকে। কিন্তু অল্প কিছুদিন জেলে থাকার পর ছাড়া পেয়ে যায়।
একইভাবে ১৯৯৯ সালে ৫৭,০০০ ডলার দামের একটি আংটি চুরি করে ধরা খায় ডরিস পাইন। ১২ বছরের জেল হলেও, ছাড়া পেয়ে যায় মাত্র পাঁচ বছর পরে। ২০১০ সালে আবারো ১,৩০০ ডলারের একটি ব্লুবেরি ট্রেঞ্চ কোট চুরির দায়ে ধরা পড়ে সে। ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর ২২,৫০০ ডলার মূল্যের একটি হীরের আংটি চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে আবারো। সে সময় তার বয়স ছিল ৮৩ বছর!
মামলার রায় হয় ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল। দু’ বছরের কারাদণ্ড এবং দু’ বছর প্যারোল (অর্থাৎ, নির্দিষ্ট প্রয়োজনে পুলিশি প্রহরায় মুক্তি প্রদান ও কাজ শেষ আবার জেলে ফিরিয়ে আনা) দেওয়া হয় তাকে। নির্দেশ দেয়া হয় অলঙ্কারের দোকান থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু এমনই তার ভাগ্য, মাত্র দুই মাসের মাথায় ওভারক্রাউডিং, মানে জেলে বন্দীর সংখ্যা অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ায় ছাড়া পেয়ে যায় সে।
হীরের অলঙ্কার চুরি যার নেশা, অলঙ্কারের দোকান থেকে সে দূরে থাকবে, এমনটা আশা করা বোকামি। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তাই পরের দাঁও মারে ডরিস, ৩৩,০০০ ডলারের একটা আংটি চুরি করে। প্রমাণের অভাবে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে দুর্দান্ত এই অপরাধী আবারো গ্রেপ্তার হয় সে বছরের অক্টোবরের ২৩ তারিখ। চুরির মাল, মাত্র ৬৯০ ডলার মূল্যের কানের দুল!
৪
ডরিস পাইন নিজের চুরির ব্যাপারে একাধিকবার খোলাখুলিভাবে আলোচনা করেছে। আস্ত একটা বই-ই লিখেছে সে নিজেকে নিয়ে। ‘ডায়মন্ড ডরিস: দ্য ট্রু স্টোরি অভ দ্য ওয়ার্ল্ড’স মোস্ট নটোরিয়াস জুয়েল থিফ’ নামের বইটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়। প্রকাশক ছিলেন বিখ্যাত হার্পার কলিন্স। বইতে ডরিসের সহকারী লেখক ছিলেন জেলডা লকহার্ট। এই বইতেই বিস্তারিত জানা যায় ডরিসের জীবন-কথা।
জানা যায়, চুরি করে পার যেয়ে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ডরিসের ব্যক্তিত্ব। ডরিসের এক ভিক্টিম, রাজু মেহতা বলছিলেন,
কাপড়-চোপড়, ব্যক্তিত্ব, সবমিলিয়ে মানুষটা এত ক্লাসি! কী চমৎকারভাবে আমার সাথে কথা বলছিল। তারপর, আস্তে করে আমার সামনে দিয়ে চুরির মাল নিয়ে বেরিয়ে গেল। এজন্য তার প্রশংসা করতেই হবে। নিজের কাজে সে দুর্দান্ত!
এর আগে, ২০১৩ সালে ডরিস পাইনকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মও বানানো হয়েছে। দ্য লাইফ অ্যান্ড ক্রাইম অভ ডরিস পাইন। এতে ডরিস পাইনের একাধিক সাক্ষাৎকার আছে। শেষ সাক্ষাৎকারটি যখন নেওয়া হয়, ডরিস তখন জেলে!
ডরিস পাইন যে চুরিগুলো করে পার পেয়ে গেছে, সেসবের ব্যাপারেও অনেক কিছু জানা যায় এসব সাক্ষাৎকার ও ডায়মন্ড ডরিস বই থেকে। বইটির একদম শেষে ডরিস লিখেছে,
এর কোনোটা কি কেবলই আমার কল্পনা? বানিয়ে বা বাড়িয়ে-চাড়িয়ে বলা? চমৎকার হীরের মতোই পালিশ করে পাঠকের সামনে হাজির করা, যাতে পাঠক গল্প পড়তে পড়তে হেসে ফেলেন? মুগ্ধ বিস্ময়ে আমার গল্পের ঘোরে ডুবে যান?
সে সিদ্ধান্ত নাহয় আপনার জন্যেই তোলা থাকুক।
হ্যাঁ, প্রিয় পাঠক, এই গল্প কতটা সত্য, তা নির্ধারণের ভার থাকুক আপনার হাতেই। তবে মনে রাখতে হবে, ডরিসের গল্প যতই রোমাঞ্চকর হোক, শেষ পর্যন্ত এটা একজন চোরের গল্প। ওশেন’স ইলেভেন-এর মতো বাস্তব চুরির গল্প শুনতে ভাল লাগলেও, গল্পের পেছনের ভিক্টিমদের কথা কিন্তু এখানে নেই। নেই তাদের দুর্দশার কথা। ডরিসের ভাষ্যমতে, এই বইটা সে লিখেছে নিজের মানসিক ভার হালকা করার জন্য, সত্যটা সবাইকে জানানোর জন্য। তাতে করে কিন্তু তার ভিক্টিমদের কোনো লাভ হয়নি। বরং, বইটা তাকে আরো, আরো বেশি বিখ্যাত করে তুলেছে!
শেষের আগে
ডরিস পাইনের বয়স এখন ৯০। সর্বশেষ, ২০১৭ সালে ওয়ালমার্ট থেকে ৮৬ ডলার মূল্যের জিনিস চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে সে। তার ভাষ্যমতে, বয়সের কারণে জিনিসগুলোর কথা সে ভুলে গিয়েছিল। তবে যে গার্ড তাকে ধরেছিল, তার ভাষ্যমতে, কিছু জিনিস ডরিস কার্টে তুলে রাখে। বাকিগুলো পার্সে ঢুকিয়ে ফেলে। পরে, কার্টের জিনিসগুলোর টাকা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গার্ড তাকে ধরতে বাধ্য হয়। পার্স চেক করতেই বেরিয়ে আসে চুরির জিনিস।
ডরিস পাইনের গল্প পড়তে পড়তে একটা বাংলা প্রবাদের কথা মনে পড়ে যায়। ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে! ডরিস পাইন স্বর্গে বা নরকে গিয়ে কী করবে, তা বলার কোনো উপায় নেই। কিন্তু পৃথিবীতে যতদিন আছে, চুরির নেশা যে তার রক্তে বারবার ডাক দিয়ে যাবে, তা আর বলতে!