২০ শতকের শুরুর দিকের ব্রিটিশ কূটনীতিক দলের কিছু ছবির উপর চোখ রাখলে, পরিপাটি ইউনিফর্ম, ভদ্রস্থ স্যুট আর ভারি ভারি সব সম্মানসূচক স্মারকচিহ্নের মাঝে একজন স্বতন্ত্র, সঙ্গীহীন এবং পুরো ছবিতে একমাত্র নারী অবয়বটির দিকে বারবার দৃষ্টি চলে যাবে। না, এ নারী হুমায়ূনের কিংবা বঙ্কিমের উপন্যাসের কোনো অনন্যসুন্দরী নারী নয়। ছিপছিপে গড়ন, একজোড়া মার্বেলের মতো ছোট দুটি চোখ, সরু ঠোঁট আর মাথাভর্তি রাজকীয় সোনালি রঙের চুল। তবে চুলগুলো তার অধিকাংশ সময়ই ঢাকা পরে থাকতো বাগদাদী ফ্যাশনের হ্যাটের নিচে, গায়ে গাউন আর উলের কোট, গলায় একাধিক মালা। দেখলেই কেমন একটা রাশভারি অনুভূতি চলে আসে যেন! বলছিলাম ব্রিটিশ লেখিকা, পর্যটক, রাজনীতিক, কূটনীতিক, প্রত্নতাত্ত্বিক গার্ট্রুড বেলের কথা।
‘পহেলা দর্শনধারী, পিছে গুণ বিচারী”- এই প্রবাদটি যদি গার্ট্রুড বেলের ক্ষেত্রে যাচাই করতে যান, তাহলে খাপে খাপ মিলে যাবে। তার দর্শনেই আপনার মনে যে রাশভারি অনুভূতির সৃষ্টি হবে, তার কাজের গুণে তা পরিপূর্ণতা লাভ করবে। আজকের পৃথিবীতে ইরাক নামে যে স্বাধীন রাষ্ট্র রয়েছে, তা প্রতিষ্ঠার পেছনে এই নারীর অবদান অসীম। মসুল, বাগদাদ আর বাসরা নিয়ে যখন স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব আলোচনা চলছে, তখন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে এই রাষ্ট্র টিকে থাকবে না, এটি অত্যন্ত দুর্বল রাষ্ট্র হবে। তখন বেলই তাদেরকে নিজের অসামান্য ভূগোল দক্ষতার কল্যাণে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে সক্ষম হন যে নবগঠিত রাষ্ট্রটি দুর্বল হবে না মোটেও, যদি এর প্রতি কোনো অবিচার না করা হয়।
ইতিহাস একসাথে একজনকে নায়ক এবং খলনায়ক করে তুলতে পারে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরহ টি. ই. লরেন্স, যিনি ‘লরেন্স অব আরাবিয়া’ নামে পরিচিত। ব্রিটিশদের জন্য তিনি মহানায়ক হলেও আরবদের হৃদয়ে তার জন্য জমা আছে অশেষ ঘৃণা (সৌদি আরব ব্যতীত)। কিন্তু গার্ট্রুড বেল সেখানে কিছুটা ভিন্ন। এখনো বাগদাদের লোকমুখে তার নাম উচ্চারিত হয়, তাকে মানুষ সম্মান করে ডাকে ‘মিস বেল’ বলে। অটোমান সাম্রাজ্য ধ্বংস করার পেছনে তার অবদান আছে বলে একদল তাকে ঘৃণা করলেও, এখনো ইরাকের অধিকাংশ মানুষের কানে মিস বেলের নাম যেতেই তারা এক মুহূর্ত স্থির হয়ে পড়েন, ইতিহাসের পাতা উল্টে চলে যান শত বছর আগে। মিস বেল যে তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অগ্রগামী চরিত্র, তা কি ভোলা সম্ভব?
মজার ব্যাপার হলো, প্রাথমিক সময়ে ইরাক পরিচালনার জন্য এ অঞ্চলের তৎকালীন ব্রিটিশ কমিশনার স্যার পার্সি কক্স এবং গার্ট্রুড বেল মিলে যে রাষ্ট্রনীতি তৈরি করেছিলেন, সেগুলো পরবর্তীকালে ইরাকের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টিও গ্রহণ করেছিল। নীতিগুলো অনেকটা এরকম ছিল যে, কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোকে তুরস্ক এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাফার স্টেট হিসেবে ব্যবহার করা, সুন্নি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোকে শিয়াদের বিরুদ্ধে বিষিয়ে তোলা, নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে শিয়াদেরকে ইরানে ঠেলে দেয়া এবং বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করা। ইরাক এত বেশি ভিন্নমত দ্বারা বিভক্ত ছিল যে এই রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য বলপ্রয়োগ ছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিল না আসলে। বেল তো একবার তার বাবার কাছে চিঠিতে লিখেই দিয়েছিলেন যে মেসোপটেমিয়া মোটেও সভ্য জাতি নয়।
নিজের সময়ের শ্রেষ্ঠ নারী পর্বতারোহী, একজন চমৎকার ভাষাবিদ, স্বভাবকবি আর উৎসাহী প্রত্নতত্ত্ববিদ মার্গারেট লোথিয়ান বেল ১৮৬৮ সালের ১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের ডুরহামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ছিল সে এলাকার অন্যতম ধনী পরিবার, যারা চিন্তাভাবনায়ও যথেষ্ট প্রগতিশীল ছিল। উদার পারিবারিক পরিবেশে বড় হওয়া বেলও তাই প্রগতিশীল মননের অধিকারী হন। ১৮৮৬ সালে যখন তিনি দেশে ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান পড়ালেখা করার জন্য, তখনো নারীশিক্ষা ততটা প্রসার লাভ করেনি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডি মার্গারেট হল থেকে আধুনিক ইতিহাসে ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রি লাভ করেন বেল। আর এর সাথে তার নাম লিখিত হয়ে যায় অক্সফোর্ডের ইতিহাসের পাতায়। তিনিই ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম নারী শিক্ষার্থী, যিনি ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রি অর্জন করেন।
আজকের প্রগতিশীল আমেরিকা শত বছর আগে মোটেও এরকম ছিল না, যার প্রমাণ বেলের বিয়ে। বাবার মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বেল বিয়ে করতে রাজি হলেও তার জন্য পাত্রই খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ? বেল ‘অতিরিক্ত’ শিক্ষিত এবং প্রগতিশীল! তবে বেল এসব থোরাই পরোয়া করতেন! তিনি চলে গেলেন পারস্যে নিজের ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত চাচার নিকট। সেখানে গিয়ে শিখে ফেললেন ফারসি ভাষা এবং প্রেমে পড়লেন ফারসি সাহিত্যের। তার লেখালেখির হাতেখড়ি হয় এই ভ্রমণকে কেন্দ্র করেই। ‘পারসিয়ান পিকচার্স’ তার লেখা প্রথম ভ্রমণ কাহিনী। এই ভ্রমণ আরো একটি কারণে তার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে, আর তা হচ্ছে তার প্রথম প্রেম। পারস্যে এক ব্রিটিশ কূটনীতিকের প্রেমে পড়েন বেল। কিন্তু বাবার অনিচ্ছায় সব কিছু উপেক্ষা করে চলে আসেন তিনি! ভেতরে ভেতরে যত কষ্টই পান না কেন, নিয়মনিষ্ঠভাবে জীবন পরিচালনায় এবং পিতার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকায় তিনি ছিলেন অবিচল।
পরবর্তী দশকটা বেলের কাটলো মোটা দাগে দুটি কাজ করে। শিক্ষা এবং ভ্রমণ। প্রেমপর্ব সফল না হওয়ায় প্রেমের পাটই চুকিয়ে দিয়ে লেগে যান বিস্তর পড়ালেখায়। জেরুজালেমে থাকাকালীন শেখেন আরবি ভাষা, আর ঘুরে বেড়ান প্রত্নতত্ত্ব সমৃদ্ধ সিরিয়ায়। সিরিয়া ভ্রমণের অভিজ্ঞতাই তাকে প্রত্নতত্ত্ববিদ করে তোলে, যা নিয়ে লিখেছেন একটি বইও। ১৯ শতকের শুরুতেই তিনি আল্পস পর্বতমালা ভ্রমণে বের হন। এই ভ্রমণে ঘটে যায় এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা, যা তাকে খ্যাতি এনে দেয়। আল্পসের উত্তর-পূর্ব কোণে ফিনস্টারাহর্ন নামক এক পাহাড়ে আরোহণ করতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়েন বেল। তার সঙ্গীরা ধরেই নিয়েছিলেন যে তিনি মারা গিয়েছেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে, বেঁচে থাকার এক দুর্দান্ত গল্পের সৃষ্টি করে, টানা ৫৩ ঘন্টা কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে দড়িতে ঝুলে থেকে তিনি বেঁচে ফিরেছিলেন!
আল্পস পর্বতে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসে গার্ট্রুড বেল যেন চিরতরে পরিবর্তিত হয়ে গেলেন। আগের চেয়ে অনেক বেশি ভাবগম্ভীর, নিয়ন্ত্রিত এবং সাহসী হয়ে উঠলেন। নির্দ্বিধায় নিজেকে জড়াতে লাগলেন আরব্য রাজনীতির সাথে। এর প্রথম পদক্ষেপ ছিল বিপজ্জনক হাইল শহরে ভ্রমণ, যা সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ ইবনে সৌদের হেডকোয়ার্টার। ব্রিটিশদের নব্য মিত্র হওয়ার বদৌলতে সৌদের সুখ্যাতি ছিল না আরবদের মাঝে। তা জেনেও বেল ঝুঁকি নিয়েছিলেন। এর কিছুকাল পরই শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। অটোমানরা জার্মানির পক্ষে যোগ দিলে চিন্তার ভাঁজ পড়ে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কপালে। তারা কায়রোতে একটি গোপন গুপ্তচর মিশনের সূচনা করে, যার নাম দেয়া হয় ‘আরব ব্যুরো’। টি. ই. লরেন্স সহ আরো অনেক প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদের সাথে এই দলে যোগ দেন বেলও। কমিশনার পার্সি কক্স তাকে নিয়োগ দেন আরবদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তাবাহী হিসেবে।
এদিকে যুদ্ধ যত এগিয়ে চলে, মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে নাটকীয়তা তত জমতে থাকে, আর ব্রিটিশ সরকার ভুগতে থাকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। প্রথমত, ভারতীয় উপমহাদেশে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা চাপ প্রশমিত করতে ভারতের ব্রিটিশ সরকার চেয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের মতো উপনিবেশ করা হোক। তাতে ভারতবাসী ব্রিটিশদের পরাক্রমে ভীত হবে। কিন্তু, ব্রিটিশ সরকার অটোমানদের থামাতে এতটা মরিয়া হয়ে ওঠে যে তারা আরবদের নিকট উচ্চাভিলাষী সব স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে যুদ্ধে টেনে আনে! তাদের এই ভুল ভাঙাতে ভারতের ব্রিটিশ কমিশনার টি.ই উইলসন ইরাকের ধর্মীয় বিভাজনের কথা উল্লেখ করে সতর্ক করেন যে এটি রাষ্ট্র হিসেবে স্থির হতে পারবে না। তার কথায় কর্তৃপক্ষ কিছুটা শংকিত হলেও বেল ছিলেন অতি উৎসাহী। তিনি আরবদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতেন এবং সকলকে বোঝাতে লাগলেন যে ইরাকের যথেষ্ট লোকবল আছে দেশ চালানোর জন্য।
“যখন কারাদাহ এর বাগানগুলোর মধ্য দিয়ে হেঁটে যাই, কিংবা নুরির কোনো রাস্তায়, লোকজন আমাকে দেখেই চিনতে পারে, উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানায়। কারণ ইরাকে ‘খাতুন’ কেবল একজন!”
– নিজের প্রতি ইরাকিদের ভালোবাসার বর্ণনা দিয়ে বাবার কাছে লেখা বেলের একটি চিঠির কয়েক লাইন।
ইরাকে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে শিয়া সম্প্রদায়। ১৯২০ সালের জুন মাসে হঠাৎ একদিন তারা বৃহৎ আকারে বিদ্রোহ করে বসে। সরকার কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রাণ হারায় ৮ হাজার নিরীহ ইরাকি আর শতাধিক ব্রিটিশ সেনা। এই বিদ্রোহ কঠোর হাতে দমন করা হয় এবং দমনকালে হতাহতের সংখ্যা অজানা। এ অবস্থায় কায়রোতে জরুরি বৈঠক ডাকেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। সে বৈঠকের একমাত্র নারী ডেলিগেট ছিলেন বেল, যার প্রভাব ছিল অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। এই বৈঠকেই হাশিমী যুবরাজ ফয়সালকে ইরাকের রাজা ঘোষণা করা হয়। অবশ্য আনুষ্ঠানিক একটি গণভোটেরও আয়োজন করা হয়েছিল যার ৯৬ শতাংশ ভোট যায় ফয়সালের পক্ষে। এর কিছুকালের মধ্যেই বেলকে ভালোবেসে ইরাকিরা ‘খাতুন’ উপাধিতে ভূষিত করে। এ শব্দের অর্থ হচ্ছে সম্মানিত নারী।
বেল নিয়মিত লন্ডনে পরিবারের কাছে চিঠি লিখতেন। ইরাকের প্রতিষ্ঠা এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এর শাসক ঠিক করার পর থেকেই তার চিঠিগুলো ছিল রোগ এবং বিষণ্ণতায় ভরপুর। কুর্দি বিদ্রোহীদের নির্দয়ভাবে বোমাবর্ষণ করে দমিয়ে দেয়াটা তার মনে দাগ কাটে প্রবলভাবে। তাছাড়া যে ইরাকের প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ, সে ইরাকের ভবিষ্যৎ নিয়েই তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। ইরাকিদের প্রতি তার ভালোবাসা এবং শিয়াদের প্রতি সহানুভূতির জন্য লন্ডনে তার শুভাকাঙ্ক্ষী সংখ্যা কমতে থাকে। এরই মাঝে তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু এবং কূটনীতিকভাবে তার উপর ছায়া হয়ে থাকা কমিশনার কক্স বাগদাদ ত্যাগ করে। মনমরা বেল রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে প্রত্নতত্ত্বে সময় দিতে শুরু করলেন আবার। প্রতিষ্ঠা করলেন ‘বাগদাদ প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর’। কিন্তু তাতে তার বিষণ্ণতার ছিটেফোঁটাও কমেনি। একরাশ অতৃপ্তি নিয়ে ১৯২৬ সালের ১২ জুলাই সবাইকে চমকে দিয়ে ধরাধামের যাত্রা সাঙ্গ করে পরপারে পাড়ি জমান বেল। আত্মহত্যার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ঘুমের ওষুধ। বাগদাদেই তাকে সমাহিত করা হয়।
গার্ট্রুড বেলের লেখাগুলোর মধ্যে ‘দ্য আরব ওয়্যার’, ‘জেনারেল ইনফরমেশন ফর দ্য হেডকোয়ার্টার্স ফ্রম গার্ট্রুড বেল’, ‘আরব বুলেটিন’, ‘ডেজার্ট অ্যান্ড দ্য সোন’, ‘পার্সিয়ান পিকচারস’ উল্লেখযোগ্য। তাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘কুইন অব দ্য ডেজার্ট’ নামক একটি চলচ্চিত্র, যাতে অভিনয় করেছেন নিকোল কিডম্যান। নির্মিত হয়েছে ‘বাগদাদ লেটারস’ নামক একটি ডকুমেন্টারিও। এখনও ইরাকের কিছু মানুষ তাকে ভালোবাসে এজন্য যে তিনি এই দেশটি প্রতিষ্ঠার পেছনে সর্বাগ্রে ছিলেন। কিন্তু, তার কিছুটা চেষ্টাই কুর্দি অধ্যুষিত মসুলকে ইরাকের অন্তর্ভুক্ত করা থেকে বিরত রাখতে পারতো, যা তিনি করেননি কিংবা করতে পারেননি। খুব সহজেই অনুমেয় যে মসুল ইরাকের অন্তর্গত না হলে জাতিগত লড়াই থাকতো না বা থাকলেও এতো রক্তক্ষয়ী হতো না। কিন্তু বেল তো অতশত ভাবতে পারেননি। তিনি ভেবেছিলেন অটোমান সাম্রাজ্যের ভাঙনের পর একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনই এই মানুষগুলোকে স্বাধীনতা এবং সুখ দিতে পারে। যদিও আজ ইরাকের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত, তার জন্য কি বেলকে দায়ী করা যায়?
ফিচার ছবি: thedailybeast.com