সাহিত্যিকরা হয়তো সকল মানুষের মনের ভাষা জানেন, নাহলে এমনভাবে সকলের হৃদয়ের গহীনে গেঁথে যান কীভাবে? তাদের একেকটি সাহিত্যকর্ম যেন কারো না কারো জীবনের বাস্তব গল্প। অস্ট্রেলিয়ান সাহিত্যেও এমন একজন কিংবদন্তি লেখকের আবির্ভাব হয়েছিল, যিনি মানুষের মনের কথা, সমাজের কথা ও অতীতের কথা নিজ ভঙ্গিমায় লিখে গেছেন অনবরত। তিনি হলেন অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র নোবেলজয়ী সাহিত্যিক প্যাট্রিক ভিক্টর মার্টিন্ডেল হোয়াইট।
১৯১২ সালের ২৮ মে লন্ডনের নাইটসব্রিজ এলাকায় তার জন্ম। ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করলেও তার বাবা-মা ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তার জন্মের সময় বিশেষ কারণবশত তারা ইংল্যান্ডে ছিলেন। জন্মের ৬ মাস পর তারা অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন। তারা সিডনিতে থাকতেন। তার বাবা ভিক্টর হোয়াইট এবং মা রূথ উইসকোম। উভয়ের পূর্বপুরুষই ইংল্যান্ডের কৃষক পরিবারের সদস্য ছিল। অর্থাৎ প্যাট্রিক হোয়াইট ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় নাগরিক ছিলেন। প্যাট্রিক হোয়াইট নিজে তার বংশের পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে বলেন,
আমার বাবা ও মা উভয়ের পরিবার পেশাগতভাবে কৃষিকাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। তারা ইংল্যান্ডের সমারসেটে নিজ জমিতে কৃষিকাজ করতেন। ১৮২৬ সালে আমার প্রপিতামহ অস্ট্রেলিয়ার সাউথ ওয়েলসে এসে বসবাস শুরু করেন। স্থানীয় রাজার কাছ থেকে আপার হান্টার নামক উপত্যকায় চাষাবাদের জন্য একটি জমি নেন। আমার পূর্বপুরুষদের কেউই পর্যাপ্ত সম্পদের অধিকারী ছিলেন না।
ছোটবেলায় তিনি বেশ রোগা ছিলেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল তার। আত্মীয় স্বজনরা ধারণা করেছিলেন, তিনি হয়তো বাঁচবেনই না। কিন্তু ধীরে ধীরে সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে তিনি সামনে এগিয়ে যেতে থাকেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। তিনি সেই স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
আমি আমার বাল্যকাল থেকেই পড়তে ও লিখতে শুরু করি। আমার বয়স যখন নয় বছর, তখনই কবিতা ও নাটক রচনা করি।
৫ বছর বয়সে সিডনির একটি কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হওয়ার মধ্য দিয়ে তার ছাত্রজীবন শুরু হয়। দশ বছর বয়সে তিনি সাউথ ওয়েলসের টিউডর হাউস স্কুলে ভর্তি হন। স্কুলটি ছিল বেসরকারি, পাশাপাশি স্কুলের অত্যধিক নিয়মকানুন প্যাট্রিককে বিরক্ত করে তোলে। এমন সময় তার পরিবারে অর্থনৈতিক সঙ্কটও দেখা দেয়। স্কুলের বেতন পরিশোধ করতে না পারায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক তখন তাকে পাবলিক স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। বাধ্য হয়ে তার বাবা-মা তাকে পাবলিক স্কুলে ভর্তি করান।
তবে পাবলিক স্কুলে তার বেশিদিন পড়তে হয়নি। তের বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ড গিয়ে শেলটেনহ্যাম স্কুলে ভর্তি হন। বিশেষত, তার মায়ের কারণে তিনি ইংল্যান্ডে পড়ালেখা করার সুযোগ পান। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন,
আমার বয়স যখন ১৩ বছর, তখন আমি অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করি এবং ইংল্যান্ডের একটি স্কুলে ভর্তি হই। আমার মায়ের মনে হয়েছিল, এখানে পড়ালেখা করাই আমার জন্য ভালো হবে। কিন্তু আমার পিতা ছিলেন একজন জাতীয়তাবাদী অস্ট্রেলিয়ান। তিনি এটি পছন্দ করেননি। যদিও তাদের উভয়ের উপর আমার খুবই শ্রদ্ধা রয়েছে, তবুও বিষয়টি উল্লেখ করলাম মাত্র। এখানে ভর্তি হওয়ার পর আমার মনে হলো, আমি জেলখানায় আটকা পড়েছি। এ সময় আমার মা-বোনও ইংল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া চলে আসেন।
প্যাট্রিক হোয়াইট এখানে চার বছর পড়ালেখা করেন। স্কুলজীবন শেষে তিনি কিছুদিনের জন্য অস্ট্রেলিয়া ফিরে যান। এ সময় তিনি বাবার ভেড়া-প্রজনন খামারে বেশ কিছু দিন কাজও করেন। কিছুদিন পর তিনি আবার ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকে তিনি ফ্রেঞ্চ ও জার্মান সাহিত্যের উপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। সাহিত্য নিয়ে পড়ালেখা করতে গিয়ে তার মধ্যে সাহিত্য সাধনার আগ্রহ পূর্ণতা লাভ করে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন,
আমি কিংস স্কুলের প্রতিটি মিনিট উপভোগ করেছি। বিশেষত ফ্রেঞ্চ ও জার্মান সাহিত্য পড়া ছিল দারুণ আনন্দের। প্রতি ছুটিতে আমি আমার ভাষা দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য ফ্রান্স অথবা জার্মানি ভ্রমণ করতাম। এ সময় আমি পুরোদমে লেখালেখি শুরু করি। তখন অনেক নিম্নমানের নাটক ও বিরক্তকর কবিতাও লিখতে থাকি। কিন্তু থেমে থাকিনি।
পড়ালেখা শেষ করে প্যাট্রিক হোয়াইট দেশে ফিরে যান এবং সাহিত্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তিনি আবার লন্ডনে ফিরে যান এবং ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন। কিন্তু মাথার ভেতর সাহিত্যের পোকা গেঁথে থাকায় বিমানবাহিনীর চাকরিতে তার মন বসছিল না। তবুও যুদ্ধের ময়দানে অবস্থান করতে হয়েছিল তার। যুদ্ধ শেষে ১৯৪৫ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসেন।
১৯৩৯ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘হ্যাপি ভ্যালি’ প্রকাশিত হয়। নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি সাধারণ কৃষি খামারভিত্তিক পরিবার উত্থান-পতনের গল্পকে কেন্দ্র করে রচিত হয় উপন্যাসটি। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছে স্ট্যান পার্কার, তাকে আবর্তিত করেই এগোয় উপন্যাসের প্রতিটি ঘটনা। একটি সংকীর্ণ জায়গা থেকে কীভাবে একটি বৃহত্তর সমাজ গড়ে ওঠে, তা ফুটে উঠেছে উপন্যাসের গল্পে। মানুষের বড় হওয়ার পেছনে ইতিবাচক গুণাবলী এবং ব্যর্থতার পেছনে নেতিবাচক গুণাবলী কীভাবে কাজ করে তা-ও সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে বইটিতে।
যে বছর বইটি বের হয়, সে বছরই বইটি তুমুল পাঠকপ্রিয়তা পায়। অস্ট্রেলিয়ার মানুষ ভালো উপন্যাসের অভাবে সাহিত্যবিমুখ হয়ে পড়েছিল। দীর্ঘদিন পর তিনি আবার পাঠকদের সাহিত্যের আলোয় ফিরিয়ে আনেন। এ বিষয়টি সুন্দরভাবে তুলে ধরতে গিয়ে সাহিত্য সমালোচক ডেভিড মার লিখেছেন,
৭০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ান সাহিত্যে প্যাট্রিক হোয়াইট আবার আমাদের আশার আলো দেখালেন। হ্যাপি ভ্যালির তরুণ লেখক তার মেধা ও মনন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান সাহিত্য জগতে আগমন করেছেন। প্রথম উপন্যাস প্রকাশ করেই তিনি আমাদের এ জানান দিলেন। লন্ডন ও নিউ ইয়র্কের সমালোচনা স্বত্বেও তিনি তাতে কর্ণপাত করলেন না। জাঁদরেল লেখক হলেই এমনটি সম্ভব।
১৯৪১ সালে তার পরবর্তী উপন্যাস ‘দ্য লিভং এন্ড দ্য ডেড’ প্রকাশিত হয়। উপন্যসটি নির্মিত হয় লন্ডনের একটি পরিবারকে কেন্দ্র করে। লন্ডনের স্টান্ডিসেস গ্রামে এক ছাদের নিচে বসবাস করতেন মা ক্যাথরিন, ছেলে ইলিয়ট ও কন্যা ইডেন। একপর্যায়ে তাদের সবার মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে যায়। যে যার কাজে বেরিয়ে পড়ে। এ সময় পৃথিবীতে দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। একসময় যুদ্ধও আসন্ন হয়ে পড়ে। সেই করুণ কাহিনীর নির্মম বর্ণনা ফুটে উঠেছে উপন্যাসটিতে।
১৯৪৮ সালে তিনি ‘দ্য আন্টি’স স্টোরি’ নামের একটি উপন্যাস প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি দেখান, থিওডোরা নামের একজন মধ্য য়সী নারী মা মারা যাওয়ার পর একাকীত্বের কারণে ফ্রান্স ভ্রমণে বের হন। সেখান থেকে আমেরিকা গমন করেন। যাত্রা পথে তিনি নানা বিড়ম্বনার শিকার হন। সেসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপন্যাসটি রচনা করেন হোয়াইট। এরপর তিনি ধারাবাহিকভাবে আরও ১০টি উপন্যাস রচনা করেন। এসব উপন্যাসে সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার মানুষ ও সামাজিক জীবনবোধের পটভূমিতে রচিত হয়েছে। সেসব গ্রন্থের মূল্যায়ন করতে গিয়ে ব্রিটেনিকা লিখেছে,
হোয়াইটের পরবর্তী উপন্যাসগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার স্বতন্ত্র বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে তিনি লেখালেখির প্রয়োজনে কখনো দেশ ও কালের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকেননি। হোয়াইট দেখিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া একটি আত্মনির্ভরশীল ও অপার সম্ভাবনার দেশ। আবার অস্ট্রেলিয়ার সভ্যতা বিরোধী কর্মকাণ্ডও তুলে ধরেছেন নির্দ্বিধায়।
দেশের সমাজব্যবস্থা, আবহাওয়া, সাধারণ মানুষের বদ্ধমূল ধারণা ও বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে রচনা করেছেন দ্য ট্রি অফ ম্যান (১৯৫৫), ভস (১৯৫৭), রাইটার্স ইন দ্য চ্যারিয়টস (১৯৬১), দ্য সলিড ম্যান্ডেলা (১৯৬৬) এবং দ্য ট্যুইনবর্ন অ্যাফেয়ার (১৯৭৯) উপন্যাসসমূহ। এর মধ্যে ভস বইটির জন্য তিনি ‘ডাব্লিউ উইথ স্মিথ’ ও ‘মাইলস ফ্রাঙ্কলিন’ পুরস্কার লাভ করেন। বইটিতে মানবজীবনের একটি দার্শনিক ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ বর্ণনা ফুটে উঠেছে, যার মূল কথা হলো, দুঃখের পরই মানুষের জীবনে সুখ আসে; তাই কষ্ট করে হলেও দুঃখের সময় যদি মানুষ হতাশামুক্ত থাকতে পারে তাহলেই মানুষ উন্নতির জন্য সত্যিকারের পথ খুঁজে পায়।
১৯৭৩ সালে সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। এই পুরস্কারের কারণে তাকে অস্ট্রেলিয়ান সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকও বলা যায়। কেননা, তিনি ছাড়া আর কোনো অস্ট্রেলিয়ান লেখক সাহিত্যে নোবেল পাননি। তাকে নোবেল প্রদানের কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি জানায়,
মহাকাব্যিক লেখালেখি ও মনস্তাত্ত্বিক উপাখ্যান রচনায় তিনি যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, তা আমাদেরকে সাহিত্যের একটি নতুন ধারার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
১৯৮১ সালে তিনি তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘ফ্লো ইন দ্য গ্লাস: এ সেলফ-পোরট্রেইট’ নামক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি সমকামিতা নিয়ে খোলামেলা আলাপ করেন। তিনি নিজেও ছিলেন একজন সমকামী। মিশরে জন্মগ্রহণ করা মোনলি লাসকারিসের সাথে তার দীর্ঘকালের সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার সময় তারা একে অপরের সাথে পরিচিত হন এবং তখন থেকেই তাদের সম্পর্ক এগিয়ে যেতে থাকে। পরবর্তীতে মোনলি লাসকারিস অস্ট্রেলিয়ায় এসে বসবাস করেন। শেষ বয়স পর্যন্ত তিনি বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সরব ভূমিকায় ছিলেন। ১৯৮২ সালে এক জনসভায় তিনি প্রায় ৩০,০০০ মানুষের সামনে পারমাণবিক প্রযুক্তি ও অস্ত্রের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখেন।
১৯৮৬ সালে তিনি তার শেষ উপন্যাস ‘মেমোরিজ অব মেনি ইন ওয়ান’ রচনা করেন। কিন্তু এই উপন্যাস তিনি তার নিজ নামে প্রকাশ না করে ‘অ্যাালেক্স হেনোফোন দিমিরজিয়ান’ ছদ্মনামে প্রকাশ করেন। সেবছরই তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘ভস’ অবলম্বনে একটি গীতিনাট্য তৈরি করা হয়। গীতিনাট্যটি ‘অ্যাডিলেড ফেস্ট্রিভাল অফ আর্ট’-এ পরিবেশন করা হয়, কিন্তু সেই উৎসবে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে দাওয়াত দেয়ায় তিনি সেই উৎসব বয়কট করেন।
শেষ জীবনে তিনি ‘দ্য হ্যাংগিং গার্ডেন’ নামে একটি উপন্যাস রচনা করছিলেন। উপন্যাসটি অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে ১৯৯০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি সিডনিতে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালে তার সেই উপন্যাসটি প্রকাশ করা হয়। তার অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে দ্য ভিভিসেক্টর (১৯৭০), দ্য আই অফ দ্য স্টর্ম (১৯৭৩), দ্য ফ্রিং অফ লাভারস (১৯৭৬) প্রভৃতি।
উপন্যাসের পাশাপাশি তিনি বেশ কিছু নাট্যগ্রন্থ, কবিতা ও গল্পের বইও রচনা করেছেন। নাটকের মধ্যে রয়েছে ব্রেড অ্যান্ড বাটার উইমেন (১৯৩৫), দ্য স্কুল ফর ফ্রেন্ডস (১৯৩৫), রিটার্ন টু আবিসিনিয়া (১৯৪৮), দ্য হাম ফিউনারেল (১৯৬১), দ্য সিজন অ্যাট সারসাপারিলা (১৯৬২), এ চেরি সোউল (১৯৬৩), নাইট অন বাল্ড মাউন্টেইন (১৯৬৪), বিগ টয় (১৯৭৭), সিগনাল ড্রাইভার: এ মোরালিটি প্লে ফর দ্য টাইম (১৯৮২), নেদারউড (১৯৮৩), শেপার্ড অন দ্য রকস (১৯৮৭) ইত্যাদি। প্রকাশিত গল্পের বইয়ের মধ্যে রয়েছে দ্য বার্নট ওয়ানস (১৯৬৪), দ্য ক্যাকটাস (১৯৭৪) ও থ্রি আনইজি পিসেস (১৯৮৭)। কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে থার্টিন পোয়েমস (১৯২৯) এবং প্লাগম্যান অ্যান্ড আদার পোয়েমস (১৯৩৫)।