তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় একদিন টিভিতে চ্যানেলের পর চ্যানেল পরিবর্তন করছি, এইচবিওতে এসে থেমে গেলাম। একজন মানুষ, অদ্ভুত হাসি হাসি চেহারা, সবুজ রঙের কী যেন একটি বস্তু নিয়ে দারুণ দারুণ সব কাজ করে বেড়াচ্ছে। সেই সবুজ বস্তুটি আলতো করে বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের হাতে মাখিয়ে দেয়ার পর, তাদের হাতে অশরীরী এক শক্তি এসে জড়ো হচ্ছো, বল ছুঁড়লে সেটি চলে যাচ্ছে অনেকদূর পর্যন্ত। অনেক মজা লাগলো ব্যাপারটি দেখে।
আবারো দিন গুণতে লাগলাম, মনে মনে খোঁজ করতে লাগলাম লোকটিকে। যখনই টিভির সামনে বসি, এইচবিও-স্টার মুভিজে ঢুঁ মারতে শুরু করলাম। নিরাশ হতে হয়নি, মাঝে মাঝে ভাগ্য সহায় হতো, সেই মুভিটি আবারো দেখার সুযোগ পেতাম। তবে ভাগ্য অতটা প্রসন্নও হয়নি, প্রতিবার দেখতে হতো মাঝখান থেকে। তাও আমি খুশি, অনেক বেশি খুশি। ওই মুভিতে লোকটির এতকিছু আবিস্কার দেখে ধরেই নিয়েছিলাম, সে হয়তো বিশাল বড় মাপের বিজ্ঞানী, সারাক্ষণ হাস্যকর ভুল করে বেড়ায়, কিন্তু সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরি করে।
এভাবেই যেতে থাকলো, একসময় জানতে পেলাম মুভিটির নাম ‘Flubber‘। সবসময় বলতে শুরু করলাম, “আমার প্রিয় মুভির নাম ‘Flubber’।” অষ্টম শ্রেণি কিংবা নবম শ্রেণিতে আমি লোকটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারি। এক বন্ধু আমাকে ‘Good Will Hunting‘ মুভিটি দেখার পরামর্শ দেয়। সেটি দেখে আমি থ’ হয়ে বসে ছিলাম ঘণ্টাখানেক, কী অসাধারণ! Matt Demon-কে চিনি আমি, আর সাথে উনার সেই সাইকিয়াট্রিস্ট? ফিরে যাই ছোটবেলায়, ‘Flubber’ নিয়ে বসি আবারো, আবারো দু’চোখ ভরে দেখি, আমার সুন্দর শৈশবের সেই অদ্ভুত মানুষটি।
সেই মানুষটি নাম, রবিন উইলিয়ামস। আজ ২১শে জুলাই, তার জন্মদিন। ১৯৫১ সালের আজকের দিনেই জন্মেছিলেন তিনি। অভিনেতারা বাস্তবে এক জীবন যাপন করেন, পর্দার মাঝে এসে হয়ে যান ভিন্ন, ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে সাজিয়ে নেন। কিন্তু রবিন উইলিয়ামস পর্দার চেয়ে বাস্তবেই সবথেকে বড় অভিনেতা ছিলেন। সারাজীবনই কোনো না কোনো অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনেও সমানে করে গেছেন অভিনয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেটের শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন রবিন উইলিয়ামস। স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হিসেবে সত্তরের দশকেই বেশ নাম কুড়িয়ে নেন তিনি, ১৯৭৮ সালে এসে সুযোগ পেয়ে যান সম্পূর্ণ নিজের এক কমেডি শো করার- Mork & Mindy। তিনি অভিনয় জগতে পরিচিতই ছিলেন এক বিশেষ দক্ষতার জন্য- কোনো রকম পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে স্বাভাবিকভাবে অভিনয় কিংবা স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করে যেতে পারতেন, যেন কমেডিয়ানের ভূমিকায় থাকতে থাকতেই মনে মনে রচনা করে চলেছেন অজস্র সুন্দর বাক্য।
উইলিয়ামস পড়াশোনা করেছেন ক্লেয়ারমন্ট মেন্স কলেজে আর কলেজ অব মেরিনে। এরপর পড়াশোনার জন্য যান নিউ ইয়র্কে, জুইলিয়ার্ড স্কুলে শুরু করেন পরবর্তী জীবন। এই স্কুলের জীবনটিই হয়তো বাকি জীবনে তার প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় ক্রিস্টোফার রিভের, তারা দু’জন ছিলেন রুমমেট। নামে হয়তো রিভকে অনেকেই চিনতে পারছেন না, কিন্তু বিশ্বাস করুন, আপনারা সবাই তাকে চেনেন। আমাদের অনেকের শৈশবের সুপারম্যান এই রিভ!
উইলিয়ামস নিজের ব্যাপারে একবার বলেছিলেন, ছোটবেলায় তিনি অনেক চুপচাপ ছিলেন, সহজে কারো সাথে কথা বলতে পারতেন না। স্কুলের নাটক সমিতিতে যোগদানের পর তিনি এ সমস্যাটি ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠেন। মার্কিন দর্শকদের নিকট পরিচিতির আগে উইলিয়ামস বেশ কিছু টিভি শোতে কাজ করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন বেশ ক’টি প্রণয়ে। অভিনেত্রী ভ্যালেরির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকা অবস্থাতেই তার অন্য নারীর সাথে জড়িয়ে পড়াটা ক্যারিয়ার দাঁড়ানোর আগেই তার জীবনে নানা জটিলতা সৃষ্টি করে ফেলে।
Mork & Monty-তে থাকা অবস্থাতেই তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। দুই দশক সময় ধরে চলে এই মাদকাসক্তি, যুগপৎভাবেই তিনি চালিয়ে যান পর্দায় অভিনয়। ১৯৮০-তে রবার্ট অল্টম্যান পরিচালিত ‘Popeye’-এ বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে উইলিয়ামসের, সেই বিখ্যাত স্পীনাচখোর নাবিকের ভূমিকায়।
১৯৮৯ সালেই ‘Dead Poets Society’-তে অভিনয় করে বাজিমাৎ করে দেন উইলিয়ামস। তিনি এক শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেন সেই চলচ্চিত্রে। শিক্ষক বললেই কেমন এক মোটা চশমাওয়ালা, ভারিক্কি চালের মানুষের চেহারা স্মৃতিতে ভেসে উঠে। কিন্তু এই চলচ্চিত্রে তিনি ছিলেন এক ভিন্ন মাপের শিক্ষক। তথাকথিত বইয়ের মাঝে সীমাবদ্ধ বিদ্যা থেকে বেরিয়ে তিনি ছাত্রদের শেখাতে শুরু করেন মুক্তচিন্তার গুরুত্ব।
ব্যক্তিগত সমস্যাকে সাথে নিয়েই উইলিয়ামস চালিয়ে যান তার অভিনয় জীবন। রবার্ট ডি নিরোর সাথেও অভিনয় করেন তিনি, ‘Awakenings’-এ তাকে দেখা যায় তাদের দুজনকে। তত দিনে ভ্যালেরির সাথে তার বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে গেছে। বিচ্ছেদের পরের বছরই অবশ্য মার্শা গার্সেস নামের এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি।
১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘The Fisher King’-এর জন্য তিনি তৃতীয় বারের মতো অস্কার মনোনয়ন পান। এ তো কেবল শুরু, কেননা বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকটিই ছিলো উইলিয়ামসের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। একই বছর তিনি যৌবনে পদার্পণ করা পিটার প্যানের চরিত্রে অভিনয় করেন ‘Hook’ চলচ্চিত্রে। পরবর্তী বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘Aladdin’-এ তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাওয়া যায় ‘জিনি’র কণ্ঠে।
সেই দশকের মাঝামাঝিতে মুক্তি পায় দুই সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র। ‘৯৬-তে ‘The Birdcage’ ও ‘৯৭-তে ‘Good Will Hunting’। ‘Good Will Hunting’-এ অভিনয় করেন তিনি এক সাইকিয়াট্রিস্টের ভূমিকায়। তিনবার অস্কার নমিনেশনের পর অবশেষে অস্কার তার হাতে ধরা দেয় এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই, সেরা সহকারী চরিত্রের জন্য অস্কার জিতে নেন উইলিয়ামস। একই বছর তিনি ‘Flubber’-এ অভিনয় করেন।
পরবর্তী বছরগুলোয় একের পর এক চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে থাকে তার। ‘৯৮-তে ‘Patch Adams’, ‘৯৯-তে ‘Jacob the liar’। একই বছর তার পছন্দের লেখক আইজ্যাক আজিমভের গল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘Bicentennial Man’-এ এক রোবটের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি; রোবটটির ভূমিকা ছিলো মনুষ্য আবেগ তৈরি করা। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম বছরটায় তিনি আবারো চরিত্রের আড়ালে সংলাপ প্রদান শুরু করেন। তার সংলাপে মুক্তি পায় ‘A.I.: Artificial Intelligence’।
উইলিয়ামসের অভিনয় জীবনের চরিত্রগুলো সবই ছিল অদ্ভুত, যদিও অনেকেই তাকে চেনেন কমেডিয়ান রূপেই। কিন্তু সবগুলো মুভি যদি একনাগাড়ে দেখে ফেলেন, তখন মনে হবে প্রতিটিতে তার চরিত্রের ধারা সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে। এই ব্যাপারগুলোর জন্যই দ্রুত পরিচিতি পান তিনি। ‘One Hour Photo’ চলচ্চিত্রটিতে তিনি অভিনয় করেন এক রহস্যময় ফটো ডেভেলপারের চরিত্রে। একই বছর ক্রিস্টোফার নোলানের ‘Insomnia’-তেও তাকে খুজে পাওয়া যায় এক ঔপন্যাসিকরূপে। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘The Night Listener’ এ তাকে দেখা যায় এক রেডিও জকি হিসেবে।
২০০৬ সালে উইলিয়ামসের সুবোধের উদয় হয়, তিনি আপন মনে চিন্তা করেন, কী করে চলেছেন জীবনের সাথে! গুণী ব্যক্তিবর্গ সম্ভবত এমনই হয়ে থাকেন, জীবনের কোনো এক মুহূর্ত তাদের যেন হুট করে সবকিছু শিখিয়ে-পড়িয়ে পাল্টে দেয়। উইলিয়ামস মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে ভর্তি হন, নিয়মিত চিকিৎসা নিতে শুরু করেন তিনি। কয়েক মাসের মাঝেই তিনি চিকিৎসার পাশাপাশি আবারো কর্মক্ষম হয়ে পড়েন, পরবর্তী বছরেই মুক্তি পায় কমেডি মুভি ‘License to Wed’।
বেন স্টিলারের সাথে একই বছর উইলিয়ামস অভিনীত টেডি রুজভেল্টের ভূমিকায় মুক্তি পায় ‘The Night at the Museum’-এর প্রথম কিস্তি। এর মাধ্যমে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন সুপরিচিত কমেডিয়ান চরিত্রে। উইলিয়ামস যখন ধীরে ধীরে মাদকাসক্তি কাটিয়ে উঠছেন, সে সময়টায় তাকে আবারো দেখা যায় নাইট অ্যাট দ্য মিউজিয়ামের দ্বিতীয় কিস্তিতে, টেডি রুজভেল্ট চরিত্রে। ডিজনী নির্মিত চলচ্চিত্র ‘Old Dogs’-এও অভিনয় করেন তিনি।
২০০৮ এর সেপ্টেম্বরে উইলিয়ামস একটি ট্যুর শুরু করলেন, পরিকল্পনা তিনি বিভিন্ন শহরে ঘুরে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করবেন এই ট্যুরে। একই বছরে গার্সেস এর সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে যায়।
উইলিয়ামস তার সমস্ত শক্তিই যেন উজাড় করে দিতেন প্রতিটি স্ট্যান্ড-আপ শো তে কিংবা ছোট-বড় পর্দায়। মনের না হয় বয়োবৃদ্ধি হয় না, তাই বলে কি আর শরীর থেমে থাকে! এত পরিশ্রম শরীরে সহ্য না হলেও তিনি কঠোর শ্রম দিতে লাগলেন নিজের অভিনয়ে। ২০০৯ সালে তার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলো। সে সময়ে তিনি কমেডি শো করে বেড়াচ্ছেন নানান শহরে। অসুস্থতার দরুণ পরবর্তী সকল শো বাতিল করতে বাধ্য হলেন তিনি।
২০১৩-তে তিনি আবারো অভিনয় করেন রবার্ট ডি নিরোর সাথে, ‘The Big Wedding’ চলচ্চিত্রে। ‘The Butler’ চলচ্চিত্রেও তাকে দেখা যায় সহকারী অভিনেতারূপে। রেলগাড়ির ইঞ্জিনের মতো একই সাথে তিনি জীবনের সবগুলো বগি টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন, টিভি-শোতে গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স করছেন, অ্যানিমেশন ফিল্মে নিয়মিত কণ্ঠস্বর দিচ্ছেন। ২০১১-তে মুক্তি পায় তার কণ্ঠস্বরে ‘Happy Feet 2’ অ্যানিমেশন মুভিটি। এই বছরেই তিনি সেই অ্যানিমেশনের গ্রাফিক ডিজাইনার সুশান স্নাইডারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
একদিন হঠাৎ ২০১৪ সালের ১১ই আগস্ট ৬৩ বছরের বৃদ্ধ উইলিয়ামসকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলো তার ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়িতে।
পুলিশ পরদিন রিপোর্ট করে যে, ফরেনসিক বিভাগের বরাতে জানা গেছে, গলায় দঁড়ি দিয়ে ফাঁসির মাধ্যমে তিনি আত্মহত্যা করেন। একইসাথে ঘটনাস্থলে একটি ছোট ছুরি পাওয়া যায়, যার দ্বারা সৃষ্ট অনেকগুলো ক্ষতচিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় তার বাম হাতের কব্জিতে। এছাড়া ময়নাতদন্তে পাকস্থলীতে কোনোরূপ বিষক্রিয়া কিংবা মাদকের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
১৩ই আগস্টে এক বিবৃতিতে সুশান স্নাইডার বলেন, উইলিয়ামসের পারকিনসন্স ডিজিজ ছিল যা উইলিয়ামস কাউকে জানাতে দেন নি, গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পারকিনসন্স ডিজিজ একটি স্নায়বিক সমস্যা, যার দরুণ একজন মানুষ ধীরে ধীরে চলনক্ষমতা হারাতে শুরু করে, কথা ভুলে যেতে শুরু করে। সুশান আরো বলেন, শেষদিকে তার মাঝে সবসময় প্রচন্ড অবসাদগ্রস্থতা দেখা যেত।
কিন্তু পরবর্তীতে সুশান আরো এক বিবৃতিতে বলেন যে, উইলিয়ামসের রোগ শনাক্তকরণেই ভুল ছিলো। তিনি আসলে ‘Lewy Body Dementia’ তে ভুগছিলেন। এই রোগটি এখনো অজানা রয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে। পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি, তাই Dementia-র সাথে এর পার্থক্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
ডিমেনশিয়া অতীতের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতি কিংবা কোনোকিছু করার পদ্ধতি স্মৃতি থেকে মুছে ফেলে। যেমন- আপেল কীভাবে খেতে হয়, সেটা আমরা শৈশবে দেখে শিখেছি। ডিমেনশিয়া আপনাকে সেটি ভুলিয়ে দেবে, একটি আপেল কীভাবে খেতে হবে তা আপনি মনে করতে পারবেন না আর। পারকিনসন্স ডিজিজে এ ধরনের ডিমেনশিয়া দেখা দিয়ে থাকে। পারকিনসন্স ডিজিজে মূলত মস্তিষ্কের সুষুম্না কান্ড আঘাত প্রাপ্ত হয়।
যার দরুণ ধীরে ধীরে Dementia-র লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। কিন্তু Lewy Body Dementia তে মস্তিষ্কে একধরণের প্রোটিন উৎপন্ন হয়ে জমা হতে শুরু করে, ফলে মস্তিষ্কের সাধারণ কার্যাবলীতে ব্যঘাত ঘটে, এবং Dementia-র ন্যায় প্রায় একইরকম লক্ষণ প্রকাশ করতে শুরু করে। যেহেতু Lewy Body Dementia অতটা পরিচিত হয়ে উঠেনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে, সেহেতু লক্ষণ বিচারে ধারণা করা হয় রোগীটি হয়তো পারকিনসন্স ডিজিজে ভুগছেন।
সে বছরেই নাইট অ্যাট দ্য মিউজিয়ামের তৃতীয় এবং সর্বশেষ কিস্তি মুক্তি পায় যাতে উইলিয়ামস অভিনয় করেছিলেন আগের ভূমিকাতেই। তিনি একবার Harry Potter সিরিজের চলচ্চিত্রে ‘রুবিয়াস হ্যাগ্রিড’ চরিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু জন্মগতভাবে ব্রিটিশ না হওয়াতে বাদ পড়ে যান তিনি। ২০১৫ সালের জুলাইতে উইলিয়ামসের সর্বশেষ চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। এতে তিনি অভিনয় করেন এক আবেগহীন স্বামীর ভূমিকায়; যার নাম নোলান ম্যাক।
উইলিয়ামসের প্রতিটি চলচ্চিত্রই অসংখ্য প্রশংসার দাবীদার, প্রতিটি চলচ্চিত্রই তার মেধা, মনন আর অভিনয়ের প্রতি একাগ্রতার প্রমাণ রাখে। তার নীরব দৃশ্যগুলোও যেন মনে হয়, লাখো শব্দ আওড়ে যাচ্ছে। উইলিয়ামসের দর্শকেরা সারাজীবন তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে, জীবনে শত কষ্ট সত্ত্বেও যিনি হাসি এনে দিয়েছেন কোটি মানুষের মুখে।