বারে বসে থাকা অপরূপা এক তরুণীর নজর হঠাৎ করেই আটকে গেল এইমাত্র পাশে এসে দাঁড়ানো এক পুরুষের প্রতি। এমন সুদর্শন আর বলিষ্ঠ যুবক বড় একটা দেখা যায় না। যুবক বারটেন্ডারকে তার পানীয়ের ফরমাশ দিয়ে শেষে যোগ করল, “আমার পানীয় হবে শেইকেন, নট স্টিরড”। বারটেন্ডার চলে যেতেই যুবক ফিরে তাকাল তরুণীর দিকে, বুঝতে পেরেছে সে তার আগ্রহ। একটু হেসে নিজের পরিচয় দিল যুবক, “মাই নেম ইজ বণ্ড, জেমস বণ্ড।”
এমন দৃশ্য জেমস বণ্ডের সিনেমাতে দেখেননি এমন মানুষ দুর্লভ। অনেক অভিনেতার কাছে জেমস বণ্ডের চরিত্র করা মানে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া। একের পর এক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে জেমস বণ্ড পরিনত হয়েছে লাভজনক এক ফ্র্যাঞ্চাইজে। বহু অভিনেতা মুখিয়ে থাকেন, কখন এই চরিত্রে কাজের সুযোগ আসবে। অনেকে নিজে থেকেই বণ্ডের চরিত্রে সুযোগের দেনদরবার করতে থাকেন। কিন্তু এসব কিছুর শুরু করে দিয়ে গেছেন যিনি, তার নাম শন কনারি। কোটি কোটি বণ্ড ভক্তের হৃদয়ে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ বণ্ড, তার আসন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারেনি।
জন্ম ও শৈশব
আজ থেকে নব্বই বছর আগে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে শহরের অনতিদূরে ফাউইন্টেনব্রিজ এলাকাতে জন্ম নেন শন থমাস কনারি। তার বাবা জ্যাক ছিলেন ট্রাকচালক, মা ইউফেমিয়া কাজ করতেন ধোপার। দরিদ্র কনারি পরিবার থাকতেন দুই রুমের ছোট্ট এক ফ্ল্যাটে, জায়গার অভাবে শিশু কনারিকে মা শুইয়ে রাখতেন ড্রয়ারে। তারা যেখানে থাকতেন সেই এলাকার কাছেই ছিল রাবার কারখানা, সেখান থেকে সবসময় গন্ধ বের হত।এ কারণে সেই এলাকার নামই ছিল “হাজার গন্ধের রাস্তা”।
ছোটবেলায় সবাই কনারিকে ডাকত টমি বলে। পাড়ার ছেলেদের সাথে মিলে তিনি ভাল ফুটবল খেলতেন। তিনি ছিলেন সমবয়সীদের থেকে তুলনামুলকভাবে লম্বা, চওড়া আর শক্তিশালী। খেলার সময় নিজের শক্তি কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে ধাক্কা দিতে কনারি কসুর করতেন না। তাই তার নাম হয়ে যায় বিগ ট্যাম। স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করেন তিনি। তবে লেখাপড়ার থেকে তাকে বেশি টানত খেলাধুলা আর ছবি। প্রায়ই স্কুল পালিয়ে তিনি সিনেমা হলে চলে যেতেন ছবি দেখার জন্য।
এর মধ্যে কনারির ছোট ভাই নীলের জন্ম হলো। গরিব পরিবারে টানাপোড়ন আরো বেড়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে কনারি স্কুল থেকেই ছিটকে পড়েন। পরিবারের স্বার্থে তের ১৯৪৩ সালে একটি গরুর খামারে কাজ নেন। যুদ্ধ শেষ হলে ১৯৪৬ সালে তিনি যোগ দেন ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীতে। এখানে থাকাকালীন তিনি তার শরীরে দুটি উল্কি আঁকালেন। একটিতে লেখা ছিল মা আর বাবা, আরেকটি উল্কিতে লেখা ফরএভার স্কটল্যান্ড।নিজের স্কটিশ পরিচয় নিয়ে কনারি সবসময়ই গর্ববোধ করতেন।
নতুন জীবন
নৌবাহিনীতে থেকে তিন বছর পর পেটের সমস্যার জন্য কনারিকে ছেড়ে দেয়া হলো। বাড়ি ফিরে কনারি উপার্জনের তাগিদে নানা কাজ করার চেষ্টা করলেন। তিনি দুধ বিক্রি, কয়লার কাজ, নির্মাণশ্রমিক, এমনকি একবার কফিন পরিষ্কারের কাজও করেছিলেন। তবে সব সময় তিনি ব্যয়াম করে নিজেকে সুগঠিত শরীরের অধিকারী করে ফেলেছিলেন। তাই এডিনবার্গ আর্ট স্কুলে পুরুষ মডেলের কাজও মিলত।
১৯৫৩ সালে কনারি লন্ডনে এলেন মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। নিজেকে মিস্টার স্কটল্যান্ড পরিচয় দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন কনারি। ছয় ফুট দুই ইঞ্চির দেহ নিয়ে লম্বা ক্যাটাগরিতে কনারি হলেন তৃতীয়। দর্শক সারিতে ছিলেন একজন কাস্টিং ডিরেক্টর, যিনি কনারির মতো কাউকে খুঁজছিলেন। কনারিকে তিনি এক্সট্রা হিসেবে মঞ্চে কাজের সুযোগ করে দেন।
১৯৫৪ সাল কনারির জন্য ছিল পয়া। রজার আর হ্যামারস্টেইনের নামকরা স্টেজ মিউজিক্যাল সাউথ প্যাসিফিকে ছোট এক চরিত্রে জায়গা পেলেন তিনি। কনারি নিজ মুখেই পড়ে স্বীকার করেছেন- তিনি না পারতেন গাইতে, না পারতেন নাচতে। তার কাজ ছিল অনেকটা আই ক্যান্ডির মতো, মঞ্চে নিজেকে প্রদর্শন করা। তবে আস্তে আস্তে অভিনয়ের অনেক কিছু তিনি শিখে নেন, এবং একপর্যায়ে মিউজিক্যালের প্রধান চরিত্রে নির্বাচিত হন।
শন কনারি আর ম্যাট বাসবি
কনারি ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন। মঞ্চে পুরোপুরি মনোনিবেশ করার আগে স্থানীয় ফুটবল ক্লাবেও তিনি মোটামুটি নিয়মিত খেলতেন। সাউথ প্যাসিফিকে’র দলের সাথে ঘুরে বেড়ানোর সময় একবার স্থানীয় এক খেলাতে নেমে পড়েন কনারি। তিনি জানতেন না দর্শকসারিতে আছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তী ম্যানেজার স্যার ম্যাট বাসবি। কনারির মধ্যে ফুটবলার প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখে বাসবি তাকে সাপ্তাহিক ২৫ পাউন্ডে ইউনাইটেডের পক্ষে খেলার প্রস্তাব দেন। তখনকার সময়ে এটা ছিল ভাল পরিমাণ অর্থ। কনারিও কিছুটা প্রলুব্ধ হন। কিন্তু তার মনে হলো তিরিশের পরেই একজন ফুটবলারের দাম ফুরিয়ে যায়, তাহলে বাকি সময় কী করবেন তিনি! ফলে বাসবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে অভিনয়েই মনোযোগ দিলেন।
পর্দায় কনারি
মঞ্চে সাফল্যের সাথে সাথে কনারির কিছুটা নাম-যশও হলো। ফলে সুযোগ মিলল টেলিভিশনে। ১৯৫৭ সালে বিবিসি’র “রিকুয়েম ফর এ হেভিওয়েটে” ক্ষয়ে যাওয়া এক বক্সারের ভূমিকাতে তার অনবদ্য অভিনয় সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। বড় পর্দায় কনারির অভিষেক “লাইলাক’স ইন দ্য স্প্রিং” ছবিতে ছোট একটি চরিত্রের মাধ্যমে।
১৯৫৮ সালে কনারি তৎকালীন নামকরা অভিনেত্রী লানা টার্নারের সাথে “অ্যানাদার টাইম অ্যানাদার প্লেস” ছবিতে অন্যতম একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। টার্নারের তৎকালীন প্রেমিক জনি স্টম্পেনাটো দাঙ্গাবাজ হিসেবে কুখ্যাত ছিল। ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলো স্বভাবসুলভভাবে টার্নার আর কনারির প্রেম নিয়ে রমরমা খবর ছাপলে স্টম্পেনাটো পিস্তল হাতে ছবির সেটে এসে হাজির হয়। কোথায় সেই ছোকরা যে বামন হয়ে চাঁদে হাত দিতে চায়? কনারি উল্টো স্টম্পেনাটোকে ঘায়েল করে তার পিস্তল কেড়ে নেনে, এর মধ্যেই বাকি কলাকুশলীরা ছুটে এসে স্টম্পেনাটোকে আটকায়।
এরপর ১৯৫৯ সালে ডিজনির একটি ছবিতে (ডার্বি ওগিল অ্যান্ড দ্য লিটল পিপল) কনারি দেখা দেন। ১৯৬১ সালে “অন দ্য ফিডল” নামের এক কমেডি ছবিতে তিনি প্রধান চরিত্রের সুযোগ পেয়ে যান। পরের বছরেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধভিত্তিক ছবি “দ্য লঙ্গেস্ট ডে”-তে কনারির অভিনয় প্রশংশিত হয়।
বণ্ড… জেমস বণ্ড
ইয়ান ফ্লেমিংয়ের জেমস বণ্ড সিরিজ তখন পাঠকমহলে তুমুল আলোড়ন তুলেছে। ০০৭ সাংকেতিক নামের দুঃসাহসী ব্রিটিশ স্পাইকে এবার বড় পর্দায় নিয়ে আসার চিন্তা করলেন। এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা ছিলেন ইয়ন প্রোডাকশনসের কর্তা প্রযোজক হ্যারি স্যাল্টজম্যান আর আলবার্ট ব্রকলি। অনেক অভিনেতাকে তারা পরখ করলেন, কিন্তু কাউকেই মনে ধরল না। এমন সময় ব্রকলির স্ত্রী ডানা স্বামীকে উদ্বুদ্ধ করেন কনারিকে বণ্ডের চরিত্র দিতে। ফ্লেমিং নিজে প্রথমে কনারিকে নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। কিন্তু তার বান্ধবি তাকে বললেন, ফ্লেমিং রমণীমোহন স্পাইয়ের যে ছবি এঁকেছেন, কনারিই পারবেন তাকে পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে।
১৯৬২ সালে মুক্তি পেল বণ্ড সিরিজের প্রথম ছবি “ডক্টর নো”। দুঃসাহসী সিক্রেট এজেন্টের ভূমিকায় দর্শকের সামনে আত্মপ্রকাশ করলেন শন কনারি, যে কিনা নারীদের মাঝেও তুমুল জনপ্রিয়। নিজের অমোঘ আকর্ষণ কাজে লাগিয়ে সুন্দরী তরুণীদের মন জয় করার সব কলাকৌশল তার নখদর্পণে। বণ্ড গার্ল উরসুলা অ্যান্ড্রেসকে নিয়ে কনারি তুমুল ঝড় তুললেন বক্স অফিসে। সমালোচকরা দুয়ো দুয়ো দিলেও সাধারণ দর্শকের কী আসে যায়! তার দু’হাত বাড়িয়ে গ্রহণ করল এই স্পাইকে। সেলুলয়েডে যাত্রা শুরু হলো ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র সিরিজের। স্যাল্টজম্যান আর ব্রকলি কনারিকে দিয়ে পরের বছরেই বের করলেন “ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ”। ১৯৬৪ সালে এল গোল্ডফিঙ্গার, ১৯৬৫-তে থান্ডারবল আর ১৯৬৭ সালে “ইউ অনলি লিভ টোয়াইস”। প্রথম ছবির পরেই ফ্লেমিং কনারির গুণমুগ্ধ হয়ে যান, ফলে ইউ অনলি লিভ টোয়াইস বইতে তিনি বণ্ডের বাবাকে স্কটিশ দেখান।
কনারি কিন্তু বণ্ড করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। তিনি জাত অভিনেতা, কিন্তু বণ্ডের চরিত্রে নতুনত্ব নেই, নিজের অভিনয় প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেনও না। ফলে পঞ্চম ছবির পর তিনি সিরিজকে বিদায় বলে দেন। অনেক অনুরোধের পর ১৯৭১ সালে তিনি বণ্ডের ছবি “ডায়ামন্ডস আর ফরএভার” করলেন। এরপর ১৯৮৩ সালে তিন তার সপ্তম ও সর্বশেষ বণ্ড ছবিতে অভিনয় করেন, “নেভার সে নেভার এগেইন”। এখানে তাকে কিছুটা বয়স্ক সিক্রেট এজেন্টের ভূমিকা নিতে দেখা যায়। এই ছবিটি কিন্তু ইয়ন প্রোডাকশনসের বাইরে থেকে করা হয়েছিল। ফলে ব্রকলি আর স্যাল্টজম্যান এখানে জড়িত ছিলেন না।
অন্যান্য ছবি
বণ্ড থাকাকালীন এবং তারপরে কনারি অনেক ছবিতেই নিজের অভিনয় ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯৬৪-তে টিপ্পি হেড্রেনের বিপরীতে আলফ্রেড হিচককের ছবি মার্নি, ১৯৭৪ সালে আগাথা ক্রিস্টির উপন্যাস অবলম্বনে তারকাবহুল ছবি মার্ডার অন দ্য অরিয়েন্ট এক্সপ্রেসসহ আরো বহু ছবি। ১৯৮৬ সালে দ্য নেইম অফ দ্য রোজ ছবির জন্য তিনি জেতেন ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি ফিল্ম পুরস্কার। ১৯৮৭ সালে তার হাতে উঠল বহু আরাধ্য অস্কার পুরস্কার, দ্য আনটাচেবল ছবিতে এক পোড় খাওয়া পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রের জন্য।
১৯৮৯ সালে কনারি দেখা দিলেন স্টিভেন স্পিলবার্গ আর জর্জ লুকাসের ইন্ডিয়ান জোন্স ছবির তৃতীয় সংস্করণে, মূল ভুমিকার অভিনেতা আরেক কিংবদন্তী হ্যারিসন ফোর্ডের পিতার চরিত্রে।
৯০’এর দশকে কনারির কয়েকটি ছবির মধ্যে ১৯৯০ সালের দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবরে তিনি দলত্যাগী এক সোভিয়েত সাবমেরিন ক্যাপ্টেন, নিকোলাস কেজের সাথে দ্য রকে কনারি আমেরিকাতে বন্দি এক ব্রিটিশ এজেন্ট, আর ক্যাথেরিন জিটা জোন্সের বিপরীতে এন্ট্র্যাপমেন্ট ছবিতে চতুর এক চোরের ভূমিকা নেন। এই ছবিগুলো বেশ সফলতা লাভ করে।
২০০৩ সালে পর্দায় কনারি শেষবারের মতো দেখা দেন হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের বিখ্যাত চরিত্র অ্যালান কোয়াটারমেইন রূপে, লীগ অফ এক্সট্রা অর্ডিনারি জেন্টলম্যান ছবিতে। এরপর পুরোপুরি অবসর নেন তিনি। গুটিয়ে যান বাহামা দ্বীপে নিজের বাড়িতে। কিছু চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিলেও সশরীরে আর পর্দায় দেখা দেননি।
পুরস্কার
অস্কার, ব্রিটিশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ছাড়াও ১৯৯৯ সালে কনারি কেনেডি সেন্টার থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০০০ সালে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ শন কনারিকে নাইটহুডে ভূষিত করলে তিনি পরিণত হন স্যার শন কনারিতে।
পরিবার
কনারি দুবার বিয়ে করেছিলেন। প্রথম স্ত্রী ছিলেন অভিনেত্রী ডায়ান সিলেন্ট। তার সাথে কনারির সন্তান জ্যাসনের জন্ম হয়। ১৯৭৩ সালে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে তিনি দু’বছর পর মরোক্কান বংশোদ্ভূত মিশেলিন ররব্রুঙ্ককে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্ক তার মৃত্যু পর্যন্ত টিকে ছিল।
মৃত্যু
শক্তিমান এই অভিনেতা মারা যান ৩১ অক্টোবর, ২০২০ সালে। তার বাহামাসের বাড়িতে ঘুমের মধ্যে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল নব্বই বছর।
রাজনৈতিক মতাদর্শ
কনারি স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির সদস্য ছিলেন। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতায় তিনি ছিলেন বরাবরই উচ্চকণ্ঠ। স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজিওনের সাথেও তার পরিচয় ছিল। ২০০৪ সালে সানডে হেরাল্ডের এক জরিপে কনাই “সর্বশ্রেষ্ঠ জীবিত স্কটিশ” উপাধি লাভ করেন। ২০১১ সালে তিনি নির্বাচিত হন স্কটল্যান্ডের জাতীয় সম্পদ হিসেবে। স্কটিশ স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন তার নাইটহুড লাভকে পিছিয়ে দিয়েছিল।
শন কনারি বলার মতো বহু চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সত্যি বলতে কী- বণ্ডের চরিত্রের প্রতি তার তুমুল অনীহা ছিল, তিনি শুধু হলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এই ছবিতে কাজ করেছিলেন। কিন্তু মানুষ তাকে মনে রেখেছে বণ্ডের জন্যই। যে কেউ বণ্ডের চরিত্রে অভিনয় করতে এলেই তাকে কনারির মানদণ্ডেই মাপা হয়। সর্বশ্রেষ্ঠ বণ্ড কে এই নিয়ে তর্ক আছে, তবে বেশিরভাগ জরিপে কনারির ধারে-কাছে কেউ নেই। অতি সম্প্রতি করা রেডিওটাইমসডটকমের জরিপে প্রায় ১৪,০০০ ভক্তের মধ্যে থেকেও কনারির নামই শ্রেষ্ঠ বণ্ড হিসেবে উঠে এসেছে। তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কনারির বন্ধু স্কটল্যান্ডের প্রাক্তন ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স স্যামণ্ড টুইটারে লেখেন
“পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্কট, হলিউডের সুবর্ণ সময়ের শেষ তারকা, এবং আসল জেমস বণ্ড”
একটু বাড়িয়ে বলা মনে হতে পারে, তবে পুরোপুরি কি?