দ্বিতীয় পর্ব থেকে আমরা জেনেছি, ম্যালেরিয়া কীভাবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। ম্যালেরিয়া সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন রোনাল্ড রস। কারণ, তিনি চাইছিলেন ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। ড. প্যাট্রিক ম্যানসনের পরামর্শমতো দীর্ঘ সময় ধরে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েও বিশেষ কোনো সুরাহা করতে না পারায় এ পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রেখে তিনি ম্যালেরিয়া পরজীবীর জীবনচক্রে মনোনিবেশ করেছেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখতে চাইছিলেন, মশার দেহে গিয়ে সেই অর্ধচন্দ্রাকার ম্যালেরিয়া পরজীবীর পরিণতি কী হয়।
দীর্ঘসময় গবেষণার পর ১৮৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই পরজীবীগুলোর সঠিক পরিণতি দেখতে পান রোনাল্ড। অণুবীক্ষণযন্ত্রের নিচে তিনি দেখতে পান, দুটো পরজীবী পাশাপাশি অবস্থান করে আছে। একটি পরজীবী আকৃতি বদলে ফ্ল্যাজেলাযুক্ত (আণুবীক্ষণিক জীবের চলন অঙ্গ) কতগুলো নতুন পরজীবী তৈরি করেছে, অপরটি গোলাকার রয়ে গেছে, একাধিক পরজীবীতে বিভক্ত হয়নি। তিনি আরো দেখতে পান যে, একটি ফ্ল্যাজেলাময় পরজীবী গোলাকার পরজীবীটির ভেতরে ধীরে ধীরে প্রবেশ করে যাচ্ছে। তিনি ভাবেন, ফ্ল্যাজেলাময় পরজীবীটি অপর পরজীবীর ভেতরে প্রবেশ নয়, বরং বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। কেন?
এর কিছু সপ্তাহ পরেই আমেরিকার জন্স হপকিন্স মেডিকেল স্কুলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র উইলিয়াম জর্জ ম্যাককালাম এর সঠিক ব্যাখ্যা দেন। ল্যাভেরন, রোনাল্ড সহ অনেকেই এমন আকৃতির দেখে পেয়েছেন, এ মর্মে তিনি গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে বসে পরজীবীগুলোর এহেন আচরণের জবাব খুঁজতে শুরু করেন অণুবীক্ষণযন্ত্রের নিচে। তিনি বলেন যে, আকৃতি পরিবর্তনের মাধ্যমে পরজীবীগুলো যৌন প্রজননের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠছে, ফ্ল্যাজেলাময় পরজীবীটি হলো পুং জননকোষ বা শুক্রাণু, আর গোলাকার পরজীবী হলো স্ত্রী জননকোষ বা ডিম্বাণু। শুক্রাণু ও ডিম্বাণু একীভূত হয়ে এরা তৈরি করছে জাইগোট, যা পরে আরো বহু পরজীবীর জন্ম দিতে সক্ষম।
ম্যাককালামের এই আবিষ্কারের ব্যাপারে জানতে পেরে রোনাল্ডের প্রচণ্ড রাগ হয় নিজের উপর। প্রতিবার ভুল ধারণাগুলোই তৈরি হয় তার মাথায়। কাজকর্ম ছেড়ে আবারো হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। ১৮৯৭ সালে, তিনি তামিলনাড়ুর এক পাহাড়ি অঞ্চলে বেড়াতে যান, সেখানে গিয়ে নিজেই ম্যালেরিয়া বাঁধিয়ে বসেন।
একদিন ঘরের ভেতর তার নজর পড়ে দেয়ালে বসে থাকা একটি মশার উপর। মশাটি দেয়ালে অদ্ভুত ভঙ্গিতে বসে রয়েছে, এর ডানাগুলোও সাধারণ মশার মতো নয়, ছোপ ছোপ দাগযুক্ত। তিনি ভাবেন যে, ফাইলেরিয়া পরজীবী যেমন ‘কিউলেক্স ফ্যাটিগান্স’ প্রজাতিটি দ্বারা বাহিত হয়, তেমনিভাবে ম্যালেরিয়া পরজীবীটিও নির্দিষ্ট কোনো প্রজাতির মশা দ্বারা বাহিত হয় কি না। তখন তিনি বুঝতে পারেন, এতদিন তিনি ভুল প্রজাতির মশা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।
দ্রুত তিনি কর্মস্থল সিকান্দারবাদে ফিরে আসেন। ফিরেই আক্রান্ত হন কলেরায়। সুস্থ হয়েই উঠেপড়ে লাগেন আবারো মশা নিয়ে। এবার খুবই ধৈর্য সহকারে যেখানে যতরকম মশা পেতেন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীকে কামড়ানোর পর পানিভর্তি বোতলে আলাদা আলাদা সংগ্রহ করে রাখেন। রোনাল্ড অপেক্ষা করতেন মশাগুলোর মৃত্যুর জন্য। মারা গেলেই তাদের তুলে নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে পরীক্ষা করতেন, এমনকি ডানা, হাত, পা কিছুই বাদ যেত না। গবেষণায় তিনি এতটাই মগ্ন হয়ে যেতেন যে কোনদিক দিয়ে সময় যাচ্ছে, রাত হচ্ছে- কিছুই টের পেতেন না। গ্রীষ্মের তীব্র গরমে দরদর করে ঘামতে ঘামতে চালিয়ে যেতেন গবেষণা। পাখা ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছিলেন, পাখার বাতাসে কাটাকুটি করা মশাগুলো উড়ে যেত তাই। এ বিষয়ে তিনি তার জীবনীগ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,
“আমার অণুবীক্ষণ যন্ত্রের স্ক্রুগুলোতে কপাল আর হাতের ঘাম লেগে লেগে মরিচা ধরে গিয়েছিল।”
একদিন রোনাল্ড রসের সহকর্মীরা পানিভর্তি এক বোতলে করে বেশকিছু মশার লার্ভা ধরে আনেন। মশাগুলো পূর্ণাঙ্গ হয়ে উঠলে তিনি দেখতে পান, এই সেই ছোপ ছোপ দাগওয়ালা মশাগুলো, যেগুলোর দেখা তিনি পেয়েছিলেন পাহাড়ি অঞ্চলে। তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন, বহুদিন পর এই মশাগুলো হাতে পেয়েছেন! এগুলোই হয়তো আদর্শ ম্যালেরিয়াবাহী প্রজাতি।
এক ম্যালেরিয়া রোগীকে তিনি মশাগুলো দিয়ে কামড়ানোর জন্য রাজি করান, দশবার কামড়ের বদলে তাকে দশ আনা পারিশ্রমিকও প্রদান করেন। এই মশাগুলোর অঙ্গ ব্যবচ্ছেদ করতে শুরু করেন তিনি। একের পর এক মশার পুরো দেহ ব্যবচ্ছেদ করেও কিছুই খুঁজে পান না। কিন্তু একটা জায়গায় এসে বিস্মিত হন, মশাগুলোর পাকস্থলীর গায়ে অদ্ভুত রঙের কিছু কোষের দেখা পান, এই কোষগুলো অন্য প্রজাতির মশার পাকস্থলীতে চোখে পড়েনি। আবার ম্যালেরিয়া পরজীবীর জননকোষগুলোর সাথেও মেলানো যাচ্ছে না। এই বিশেষ কোষগুলোর উপস্থিতি নিয়ে রচনা করেন একটি গবেষণাপত্র, যা ১৮৯৭ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ জার্নালে প্রকাশিত হয়।
নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে এই অদ্ভুত কোষগুলোর প্রকৃতি উদঘাটনে উঠেপড়ে লাগেন রোনাল্ড। কিন্তু বাঁধ সাধে সামরিক কর্তৃপক্ষ। তাকে মুম্বাই ডেকে নেয়া হয় এবং বদলি করে দেয়া হয় রাজস্থানের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে মানুষ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয় না বললেই চলে। বদলি হয়ে সেখানে গিয়ে তিনি কিছু কবুতরের মাঝে ম্যালেরিয়া পরজীবীর দেখা পান। তা নিয়েই গবেষণা করতে শুরু করেন। কয়েকমাস পর উপরমহলে ড. ম্যানসনের মাধ্যমে নানাবিদ তদবির করিয়ে রোনাল্ড বদলি হয়ে যান কলকাতায়।
সেখানে গিয়ে নিজ খরচে একটি পুরনো অব্যবহৃত গবেষণাগারের ব্যবস্থা করেন ম্যালেরিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য। এমনকি তিনি কয়েকজন সহকর্মীরও সন্ধান করতে শুরু করেন, যাদের বেতন নিজের পকেট থেকেই দেবেন সিদ্ধান্ত নেন। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে তিনি মোহাম্মদ বক্স ও পূর্বণা নামের দু’জনকে বাছাই করেন। পূর্বণা কিছুদিন পরেই কাজ ছেড়ে চলে যান, কিন্তু কোনো এক বিশেষ কারণে মোহাম্মদ বক্স গবেষণাগারের কাজে খুবই মনোযোগী হয়ে ওঠেন। নিষ্ঠার সাথে রোনাল্ডের আদেশমতো সবকিছু করতে থাকেন, এমনকি রাতের বেলা গবেষণাগারেই ঘুমাতে শুরু করেন মোহাম্মদ বক্স।
রোনাল্ডের কথামতো নানা জায়গা থেকে বক্স মশা ধরে আনতে থাকেন, আর সেই মশাগুলোর ব্যবচ্ছেদ করে রোনাল্ড খুঁজতে থাকে বিশেষ জাতের কোষগুলোকে। মোহাম্মদ বক্সকে একদিন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত বেশ কয়জন রোগীকে যোগাড় করে আনতে বলেন রোনাল্ড, সেসব রোগীকে অর্থ দেওয়া হবে। বক্স জ্বরে আক্রান্ত দেখে দেখে কয়েকজনকে নিয়ে আসেন, কিন্তু তারা যখন জানতে পারে, আঙুলে সূঁচ ঢুকিয়ে রক্ত নেয়া হবে, অর্থের মায়া ছেড়ে গবেষণাগার ছেড়ে পালিয়ে বাঁচে।
রোনাল্ড আর কী করেন, ম্যালেরিয়া আক্রান্ত মানুষের অভাবে পাখি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। নানা পরীক্ষা করে জানতে পারেন যে, পাখিকে আক্রান্তকারী ম্যালেরিয়া পরজীবীর বাহক হলো কিউলেক্স প্রজাতির মশা। আর মানুষে আক্রমণকারী পরজীবীগুলোর বাহক শুধুমাত্র ছোপ দাগযুক্ত মশাগুলো (অ্যানোফিলিস), যা পাখির দেহে বিদ্যমান ম্যালেরিয়া পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয় না।
ম্যালেরিয়া পরজীবী মিশ্রিত পানি পানের ফলে একজন সুস্থ মানুষ ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হন; ড. প্যাট্রিক ম্যানসনের এই ধারণাটি আবারো পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করেন রোনাল্ড। সম্পূর্ণ সুস্থ একটি চড়ুই পাখিতে এই পরীক্ষা চালিয়ে দেখেন, পাখিটি দিব্যি সুস্থ রয়েছে, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়নি। এবার তিনি নিশ্চিত, ম্যালেরিয়া পানি দ্বারা সংক্রমিত হয় না।
ম্যালেরিয়া আক্রান্ত মশার অঙ্গ ব্যবচ্ছেদ করে অবশেষে তিনি খোঁজ পান, মশার পাকস্থলীগাত্রে থাকা বিশেষ পরজীবী কোষগুলো ধীরে ধীরে গিয়ে জমা হয় মশার লালাগ্রন্থিতে। কিন্তু এখানে তারা আর আগের আকৃতিতে নেই, আকৃতি বদলে মাকু আকৃতি ধারণ করেছে। এবার তিনি বুঝতে পারেন, মশা কামড়ানোর সময় নির্ঘাৎ লালাগ্রন্থি হতে লালারসের সাথে মিশ্রিত হয়ে পরজীবীগুলো প্রবেশ করে পাখি বা মানুষের শরীরে।
রোনাল্ডের ঠোঁটে হাসির রেখা খেলে যায়, তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি আবিষ্কার করে ফেলেছেন ম্যালেরিয়া সংক্রমণের সঠিক প্রক্রিয়াটি। মোহাম্মদ বক্সের সহযোগিতায় নানাভাবে তিনি এই ধারণাটি আরো চড়ুই পাখির মাঝে পরীক্ষা করে ফলাফলগুলো লিপিবদ্ধ করতে শুরু করেন।
কিন্তু তিনি গবেষণার এই ফলাফলগুলো প্রকাশ করতে পারছিলেন না। সামরিক কর্তৃপক্ষের কড়া নির্দেশ ছিল, বাইরের জগতে এই গবেষণার কথা জানানো যাবে না। ড. ম্যানসন ছাড়া আর কারো সাথে এসব নিয়ে তিনি আলোচনা করতেন না। তাই রোনাল্ড নতুন ফলাফলগুলো ম্যানসনকে পত্রযোগে জানালে, ম্যানসনও বুঝতে পারেন, অবশেষে রোনাল্ড কৃতকার্য হতে পেরেছেন। কিন্তু আবারো সামরিক কর্তৃপক্ষের বাধা, ইন্ডিয়ান মেডিকেল সার্ভিস হতে নির্দেশ এল রোনাল্ডের কাছে; তিনি যেন ম্যালেরিয়ার সমস্ত গবেষণা ত্যাগ করে দ্রুত আসামে গিয়ে কালাজ্বরের উপর গবেষণা শুরু করেন।
কর্তৃপক্ষের এমন বিরূপ মনোভাবের পরিচয় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে রোনাল্ড ভারতীয় সামরিক বাহিনীর চাকরি ছেড়ে চলে আসেন ইংল্যান্ডে। আসার আগে স্থানীয় সরকারকে এ ব্যাপারে অবহিত করেন যে, কীভাবে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। এমনকি ছোপ ছোপ দাগযুক্ত মশাগুলোর ব্যাপারেও জানাতে ভুল করেননি তিনি।
ইংল্যান্ডে বসেই তিনি আরো বিস্তারিত গবেষণা শুরু করলেন, ম্যালেরিয়া বাহক মশার আরো প্রজাতি রয়েছে কি না, তা খুঁজতে লাগলেন। সেইসাথে এ নিয়েও প্রচারণা শুরু করলেন, কীভাবে মশা নিধন কার্যক্রম চালানো যায়। বিভিন্ন শহর, এমনকি গ্রিস, স্পেন থেকেও তার কাছে মশা নিধনের পরামর্শ চেয়ে পত্র আসতে লাগলো। রোনাল্ড সানন্দে এলাকাগুলোতে মশা নিধনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। গণিতে তুখোড় রোনাল্ড, গণিতের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এ তথ্যও উপস্থাপন করলেন যে, ম্যালেরিয়া প্রতিকার করতে সরকার প্রধানের যে পরিমাণ অর্থব্যয় হয়, সে তুলনায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে সামান্যই অর্থব্যয় হবে।
১৯০১ সালে রোনাল্ড ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অব সার্জন এবং রয়্যাল সোস্যাইটির একজন সম্মানিত ফেলো নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে তিনি রয়্যাল সোসাইটির একজন সহ-সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত বিস্তর গবেষণা, কীভাবে প্রাণীদেহে ম্যালেরিয়া প্রবেশ করে তার ব্যাখ্যা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের সফল উপায় আবিষ্কারের কৃতিত্বস্বরূপ ১৯০২ সালে তাকে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯১০ সালে তাকে ক্যারোলাইন ইন্সটিটিউটের পক্ষ হতে সম্মানসূচক এম.ডি ডিগ্রিও প্রদান করা হয়। ১৯১১ সালে রোনাল্ড রস নাইটহুড প্রাপ্ত হন।
১৮৮৯ সালে রোনাল্ড বিয়ে করেছিলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও অটুট ছিল তার সংসার জীবন। দীর্ঘ সংসারজীবন কাটিয়ে তার স্ত্রী চার সন্তানের জননী রোজা মৃত্যুবরণ করেন ১৯৩১ সালে। পরের বছরেই অসুস্থ রোনাল্ডও মৃত্যুবরণ করেন সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখে, রস ইন্সটিটিউটের পরিচালক পদে আসীন থাকা অবস্থায়।
দীর্ঘ পথ অতিক্রম শেষে অবশেষে রোনাল্ডের নিবিড় ঘুম। যে চিকিৎসাশাস্ত্র পড়তেই চাননি তিনি, সে চিকিৎসাশাস্ত্রে খুঁজে পেয়েছেন পরম সম্মান ও খ্যাতি। নেহাত নিয়তির বলে নয়, একের পর এক ব্যর্থতা, উপরমহলের বিরূপ দৃষ্টি, হতাশা; সবকিছু থেকে তিনি বারবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিলেন বলেই সফলকাম হতে পেরেছেন। খ্যাতির লোভ করেননি, খ্যাতিমান হতে পারবেন না জেনেও, তিনি কবিতা লিখতেন; উপন্যাস আর নাটক রচনার মাধ্যমে সাহিত্যচর্চা করেছেন সারাজীবনই। কারো পড়ার জন্য নয়, বরং নিজের ভালোলাগা থেকেই রচনা করে গেছেন বহু সাহিত্যকর্ম। কাজকর্মে হতাশ হয়ে পড়লেই কবিতা লিখতেন, ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করতেন। বহুমুখী প্রতিভাধর অধ্যবসায়ী স্যার রোনাল্ড রসের জীবনটি বড়ই বৈচিত্র্যময়, যার প্রতিটি মুহূর্ত তিনি কাজে লাগাবার চেষ্টা করেছেন।
এই সিরিজের পূর্ববর্তী পর্বগুলো পড়তে ক্লিক করুন নিচের লিঙ্কে:
১. স্যার রোনাল্ড রস(১ম পর্ব): বহুমুখী প্রতিভাধর একজন চিকিৎসক
২. স্যার রোনাল্ড রস (২য় পর্ব): ম্যালেরিয়া গবেষণায় বারংবার ব্যর্থতা