ম্যাকেনজি বেজোস; এই নামটি গত কয়েকদিনে হয়তো অসংখ্যবার শুনে ফেলেছেন আপনি। পেশায় তিনি একজন ঔপন্যাসিক। এখন পর্যন্ত তার দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৬ সালে তিনি আমেরিকান বুক অ্যাওয়ার্ড সম্মাননায় ভূষিত হন। এছাড়া ২০১৪ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অ্যান্টি-বুলিং সংগঠন ‘বাইস্ট্যান্ডার রেভোলিউশন’। তবে এই সবকিছুকে ছাপিয়ে এতদিন তার সবচেয়ে বড় পরিচয় যেটি ছিল, তা হলো: তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জেফ বেজোসের সহধর্মিনী। তবে এখন আর তা নন তিনি। গত বুধবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জেফের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন।
আর এর ফলে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তার নতুন একটি পরিচয় সৃষ্টির, যেটি সদ্য-হারানো পরিচয়টির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ফ্র্যাঙ্কোইস বেটেনকোর্ট মায়ার্সকে পেছনে ফেলে তিনি হতে চলেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী। প্রায় ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক হয়ে তিনি এমনকি পেছনে ফেলে দেবেন এলন মাস্ক, মার্ক জাকারবার্গদেরও। কীভাবে এত বিপুল সম্পদের মালিক হবেন তিনি? বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে ওয়াশিংটন স্টেটের প্রচলিত আইন অনুসারে জেফের ১৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্ধেক লাভ করবেন।
তার মানে ২৫ বছরের সম্পর্কের ভাঙন একদিক থেকে ম্যাকেনজির জন্য শাপে বরই হতে চলেছে। আর তাই বিশ্বজুড়ে তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টার শেষ নেই কোনো। সবার ভাবখানা এমন যেন, নিজের সংগঠনের নামকরণের মতো ম্যাকেনজি বাস্তবিকই একজন ‘বাইস্ট্যান্ডার’, জেফের উন্নতি তিনি পাশে দাঁড়িয়ে কেবল দেখেই গেছেন, নিজের কোনো ভূমিকাই সেখানে ছিল না, এবং এখন ‘কোনোকিছু না করেই’ তিনি হয়ে যেতে চলেছেন বিপুল সম্পদের মালিক।
কিন্তু আসলেই কি তা-ই? জেফ যে আজ বিশ্বের সেরা ধনী, এতে কি ম্যাকেনজির কোনো অবদানই নেই? তিনি কি এখন কেবলই লাভের গুড় খেতে চলেছেন? আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টাকে তেমনই মনে হতে পারে অনেকের কাছে। কিন্তু গোটা বিষয়টি আরেকটু বিশদে জানলে ম্যাকেনজির ব্যাপারে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হলেও হতে পারে!
একজন ‘বুকওয়ার্ম’
ম্যাকেনজির জন্ম ১৯৭০ সালের ৭ এপ্রিল, ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফ্রান্সিসকোতে। তার বাবা পেশায় ছিলেন একজন ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার, আর মা গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন প্রচন্ড লাজুক ও অন্তর্মুখী স্বভাবের। সমবয়সী বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলার বদলে ঘরে বসে থাকাটাই তার কাছে মনে হতো বেশি আকর্ষণীয়। সেই সাথে বইয়ের ভীষণ পোকা ছিলেন তিনি। এবং একই রকম ভালোবাসা ছিল তার লেখালেখির প্রতিও। মাত্র ছয় বছর বয়সেই তিনি লিখে ফেলেন ‘দ্য বুকওয়ার্ম’ নামের একটি উপন্যাস। ১৪২ পাতার সেই উপন্যাসটি অবশ্য কখনোই আলোর মুখ দেখেনি, কেননা এক বন্যায় ভেসে গিয়েছিল তার লেখার খাতাটি।
হাই স্কুল শেষ করার পর ম্যাকেনজি ভর্তি হন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখন টনি মরিসনের সান্নিধ্যে থেকে ফিকশন ও ক্রিয়েটিভ রাইটিং বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ হয়। টনির মতে, ম্যাকেনজি ছিলেন তার দেখা সেরা ছাত্রীদের মধ্যে একজন।
চাকরি, প্রেম, বিয়ে
গ্র্যাজুয়েশন শেষে ম্যাকেনজি চাকরি নেন নিউ ইয়র্কের একটি ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে। সেটির নাম ছিল ডি. ই. শ। সেখানে যখন চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে যান তিনি, তখনই তার প্রথম দেখা হয় জেফের সাথে। জেফও ছিলেন প্রিন্সটন থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা, ম্যাকেনজির ছয় বছরের সিনিয়র, এবং ঐ কোম্পানিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট।
ইন্টারভিউতে বেশ ভালোভাবেই উৎরে যান ম্যাকেনজি। তার কাজের ঠিকানা হয় জেফের অফিসের একদম সামনের রুমেই। দুই রুমের মাঝখানে ছিল একটি করিডোর। সেই করিডোরই ম্যাকেনজি ও জেফের প্রেমের প্রথম সাক্ষী। তবে অধিকাংশ প্রেমকাহিনীতেই যেমন দেখা যায় ছেলেটিকে প্রথম অগ্রসর হতে, এখানে কিন্তু তা হয়নি। প্রথম আগ্রহটি দেখিয়েছিলেন ম্যাকেনজিই। অবশ্য জেফের প্রতি তার ভালোবাসা ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’ কিন্তু ছিল না। ছিল ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট লিসেন’!
কীরকম? নিজের রুমে বসে কাজ করতে করতে ম্যাকেনজি শুনতে পেতেন ওপাশের রুমে বসে হা হা করে ‘দানবীয়’ হাসি হাসছেন জেফ। সেই হাসিরই প্রেমে পড়ে যান তিনি। এবং একদিন সাহস করে জেফকে দিয়ে বসেন লাঞ্চে যাওয়ার প্রস্তাব। জেফও সানন্দে রাজি হয়ে যান। কারণ একে তো ম্যাকেনজি ছিলেন ‘আকর্ষণীয়া ও সুন্দরী’, পাশাপাশি তিনি ছিলেন প্রচন্ড বুদ্ধিমতীও। মূলত ম্যাকেনজির বুদ্ধিমত্তাই জেফকে আকৃষ্ট করেছিল সবচেয়ে বেশি। ম্যাকেনজিকে ইন্টারভিউ টেবিলে সামনাসামনি দেখার আগেই তিনি সিভি ঘেঁটে জেনে গিয়েছিলেন তার স্যাট স্কোর, এবং তখন থেকেই তিনি জানেন এই মেয়েটি ‘অন্যরকম’।
সেই অন্যরকম মেয়েটির সাথে কিছুদিন ডেট করেই তিনি বুঝে যান, এর সাথে ঘর বাঁধা যায়। তাই মাত্র তিন মাস পরই এনগেজমেন্ট সেরে ফেলেন তারা। এরও তিন মাস বাদে বিয়েটাও করে ফেলেন। সেটা ১৯৯৩ সাল।
অনিশ্চিতের পথে যাত্রা ও অ্যামাজনের জন্ম
এর বছরখানেক পর জেফ ম্যাকেনজিকে বলেন, বর্তমানে যে কাজ তিনি করছেন তাতে আর মন বসছে না তার। নতুন কিছু করতে চান তিনি অনলাইনে, এবং এর জন্য নিউ ইয়র্ক ছেড়ে পাড়ি জমাতে চান ওয়াশিংটনের সিয়াটলে। কিন্তু সেক্ষেত্রে তিনি নিজের কাজে তো ইস্তফা দেবেনই, পাশাপাশি ম্যাকেনজিকেও ছেড়ে দিতে হবে চাকরি। সিদ্ধান্তটি খুবই কঠিন ছিল ম্যাকেনজির জন্য। অথচ তার সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করছিল জেফের ভাগ্য। অনেক ভেবেচিন্তে নিজের ক্যারিয়ার ‘জলাঞ্জলি’ দেয়ারই মনস্থির করলেন তিনি। নিউ ইয়র্কে নিশ্চিন্ত জীবন ছেড়েছুঁড়ে রওনা দিলেন অনির্দিষ্টের পানে।
নিউ ইয়র্ক থেকে সিয়াটল ২,৮০০ মাইলের দূরত্ব। এই দূরত্ব বেজোস দম্পতি অতিক্রম করলেন গাড়িতে করে। গাড়িটা কিন্তু চালালেন ম্যাকেনজিই, কারণ ঐ সময়ে পাশে বসে তার স্বামী অ্যামাজনের নীলনকশা আঁকছেন।
এতক্ষণে তাহলে সবাই নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন, সেই নিউ ইয়র্ক টু সিয়াটল ক্রস-কান্ট্রি ভ্রমণের মতো বরাবরই কিন্তু স্টিয়ারিং ছিল ম্যাকেনজির হাতেই। এই ম্যাকেনজিই নিজে থেকে জেফের দিকে অগ্রসর হয়েছেন, এই ম্যাকেনজিই জেফকে নতুন কিছু করার ব্যাপারে মানসিক সমর্থন যুগিয়েছেন, এই ম্যাকেনজিই জেফকে নিয়ে গেছেন সিয়াটল। অর্থাৎ জেফ যদি ইঞ্জিন হয়েও থাকেন, স্টিয়ারিংয়ের নিয়ন্ত্রণ সবসময়ই ছিল ম্যাকেনজির হাতে। ম্যাকেনজির দিক-নির্দেশনাই উৎসাহ যুগিয়েছে জেফকে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখা অব্যহত রাখতে।
সিয়াটলে গিয়ে এক রুমের ছোট্ট একটি ফ্ল্যাটে ওঠেন জেফ ও ম্যাকেনজি। ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই অ্যামাজনের গোড়াপত্তন করেন জেফ। তখন অ্যামাজন ছিল নিছকই একটি অনলাইন বুকস্টোর। সেটির অ্যাকাউন্টেন্ট পদটা ম্যাকেনজিকে দেন জেফ। এভাবে ম্যাকেনজি পরিণত হন অ্যামাজনের প্রথম কয়েকজন কর্মীর একজনে।
বই প্রকাশের স্বপ্নপূরণ
স্বামীর স্টার্ট-আপে সহযোগিতা করলেও ম্যাকেনজি কিন্তু কখনোই ভুলে যাননি তার আজীবনের স্বপ্ন, আর তা হলো একজন প্রতিষ্ঠিত লেখিকা হওয়া। তবে লেখালেখির জন্য সময় খুব কমই পেতেন তিনি। সারাদিন তাকে ব্যয় করতে হতো অ্যামাজনের কাজেই। সেজন্য ছুটির দিনগুলোকে কাজে লাগাতেন তিনি। জেফের সাথে কোথাও বেড়াতে গিয়ে, ভোরবেলা উঠে একটু লেখালেখির ফুসরত পেতেন তিনি। ঘুম থেকে উঠে জেফ দেখতেন, হোটেলের বাথরুমে বসে একমনে লিখে চলেছেন তার স্ত্রী! এভাবে প্রথম বইটি লেখা শেষ করে প্রকাশ করতে দশ বছর লেগে যায় ম্যাকেনজির। ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম বই ‘দ্য টেস্টিং অফ লুথার অ্যালব্রাইট’। সাইকোলজিক্যাল ফিকশন ঘরানার এই বইয়ের জন্যই আমেরিকান বুক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন তিনি।
একবার এক ইন্টারভিউতে জেফ বলেছিলেন, লেখালেখির মাঝে ডুবে থাকতে পারলেই তার স্ত্রী সবচেয়ে খুশি থাকতেন। যেসব দিন সকালে তাড়াতাড়ি উঠে কিছু লিখতে পারতেন তিনি, সেসব দিন বেজোস পরিবারে শান্তি বিরাজ করত। দারুণ ফুর্তিতে থাকতেন ম্যাকেনজি, রান্নাঘরে গিয়ে সকালের নাশতা তৈরি করার সময় নাকি আক্ষরিক অর্থেই নাচতে থাকতেন তিনি!
প্রথম বই প্রকাশিত হওয়ার প্রায় আট বছর পর, ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় ম্যাকেনজির দ্বিতীয় বই ‘ট্র্যাপস’। কিন্তু এরপরই লেখালেখি থেকে হাত গুটিয়ে নেন তিনি। সময় দিতে থাকেন বাচ্চাদের মানুষ করায়। তিন ছেলের জননী তিনি। এছাড়াও তারা একটি মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন চীন থেকে। ম্যাকেনজির ভাষ্যমতে, সন্তানদের মানুষ করাই তার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাধান্যের বিষয়। তাছাড়া নিজের সংগঠনের কাজেও ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয় তাকে। ফলে নতুন আর কোনো বইয়ের কাজে হাত দেয়া সম্ভব হয়নি।
একজন ‘লটারি বিজয়িনী’
জেফের সম্পদের অর্ধেক পেতে চলায় অনেকেই হয়ত ম্যাকেনজিকে ভাগ্যবতী বলছেন, সুযোগের সদ্ব্যবহারকারী বলছেন। তবে তিনি সেই ২০১৩ সালেই ভোগকে দেয়া এক ইন্টারভিউয়ে নিজেকে ‘লটারি বিজয়িনী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন, যার মূল কারণ অবশ্যই জেফের অঢেল সম্পদ। কিন্তু পাশাপাশি তিনি আরও বলেছিলেন, “শুধু লটারি জয়ই আমাকে সংজ্ঞায়িত করে না। আমি অসাধারণ বাবা-মা পেয়েছিলাম, যারা আমার শিক্ষাকে সবার আগে রেখেছিলেন, এবং নিঃসন্দেহ ছিলেন যে আমি একদিন লেখিকা হতে পারব। এছাড়া আমি জীবনসঙ্গী হিসেবে এমন একজনকে পেয়েছি, যাকে আমি সত্যিই ভালোবাসি। এই বিষয়গুলোও আমাকে সংজ্ঞায়িত করে।“
অন্তর্মুখিতা
তবে জেফকে ভালোবাসলেও, জেফের সাথে কিন্তু ম্যাকেনজির সাদৃশ্যের চেয়ে বৈসাদৃশ্যই বেশি ছিল। সবচেয়ে বড় তাদের চারিত্রিক পার্থক্য। সেই ছোটবেলা থেকেই যে তিনি প্রচন্ড লাজুক ছিলেন, সেই স্বভাব ছাড়তে পারেননি ৪৮ বছর বয়সে এসেও। মানুষের সাথে মেশায় তার বড্ড অনীহা। অথচ জেফ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসেন তিনি, ভালোবাসেন সামাজিকতা রক্ষা করতে। কোনো পার্টিতে গিয়ে ম্যাকেনজি বুঝতেই পারেন না তার কী করা উচিৎ, কিন্তু জেফ ঠিকই সকলের সাথে আড্ডা জমিয়ে দিতে পারেন।
অন্তর্মুখী স্বভাবের কারণেই, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিটির স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও, পাদপ্রদীপের আলো থেকে জেনে-বুঝে দূরে থেকেছেন ম্যাকেনজি। মানুষের কাছে স্বামীর পরিচয়কে বড় করে না তুলে, চেয়েছেন নিজের লেখিকা সত্তা ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডকেই বড় করে দেখাতে। সেজন্য তাকে নিয়ে গণমাধ্যমও এতদিন বলতে গেলে নীরবই ছিল। কেবল ২০১৩ সালে ভোগে দেয়া ইন্টারভিউটি তার ব্যাপারে মানুষের মনে আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিল। এছাড়া ওই একই বছর তিনি আলোচনার ঝড় তোলেন অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে অ্যামাজন নিয়ে ব্র্যাড স্টোনের লেখা ‘দ্য এভরিথিং স্টোর’ বইটির ওয়ান-স্টার রিভিউ দিয়ে। সার্বিকভাবে বইটি প্রশংসিত হলেও, ম্যাকেনজি তার রিভিউতে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছিলেন সেই বই ও বইয়ের লেখককে। তিনি লিখেছিলেন, বইটিতে বাস্তব ঘটনার সঠিকতা বজায় রাখা হয়নি, এবং অনেক ক্ষেত্রেই বইটি নন-ফিকশনের সীমা পার করে গিয়েছে।
সামাজিক কর্মকান্ড
তবে খুব বেশি ‘সামাজিক’ না হলেও, সমাজ নিয়ে কিন্তু ম্যাকেনজির চিন্তার শেষ নেই। নিজে চার সন্তানের মা হিসেবে তিনি ভালো করেই জানেন, বুলিং কতটা ভয়াবহ একটি সামাজিক ব্যধি। এটিকে তার কাছে খুবই বাস্তবসম্মত একটি সমস্যা বলে মনে হতো বলেই, ২০১৪ সালে তিনি তার নিজের সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। এখন যেহেতু তিনি এককভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হতে যাচ্ছেন, এবং সমাজ-সংস্কারের ব্যাপারে তার অনেক নিজস্ব ধারণা ও পরিকল্পনাও রয়েছে, তাই আমরা ধারণা করতেই পারি, এবার হয়তো তিনি স্বামীর ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে নিজের একটি বৃহত্তর পরিচিতি গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করবেন।
শেষ কথা
সাধারণত হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিত্বদের সহধর্মিণীকে নিয়ে গণমাধ্যমে যে পরিমাণ আলোচনা-সমালোচনা হয়, এতদিন ম্যাকেনজিকে নিয়ে তার দশ ভাগের একভাগও হয়নি। এর প্রধান কারণ তার অন্তর্মুখী স্বভাব। অথচ এতক্ষণ ম্যাকেনজি সম্পর্কে জেনে এটুকু ধারণা আপনাদের নিশ্চয়ই হয়ে গিয়েছে যে, অন্য অনেক তারকা বা হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিত্বের স্ত্রীর চেয়েই তিনি অনেক বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন। এতদিন গণমাধ্যম তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলেও, এখন যেহেতু তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী নারীতে পরিণত হওয়ার পথে, তাই এখন তাকে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই!
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/