টাইটানিক, গত শতাব্দীর শুরুতে এক ট্রাজেডির নাম। ১৯১২ সালের এপ্রিলের মধ্যরাতে আটলান্টিকে সলীল সমাধি হয় টাইটানিকের, যাকে নিয়ে তার এক ক্রু গর্ব করে বলেছিল, ঈশ্বরও এ জাহাজ ডোবাতে পারবে না। অথচ প্রথম যাত্রাতেই বরফের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় টাইটানিক। ২,২২৩ জন যাত্রী এবং ক্রুয়ের মধ্যে মাত্র ৭০৬ জন জীবিত ফিরতে সক্ষম হন টাইটানিক থেকে। অন্যদিকে ডানকার্ক ফ্রান্সের সমুদ্র তীরবর্তী এক শহর, যেখানে ১৯৪০ সালের মে মাসে জার্মান বাহিনীর বিরুদ্ধে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ব্রিটিশ এবং ফ্রেঞ্চরা। জার্মানদের হাতে প্রায় ৪ লক্ষ সেনার মৃত্যু যখন প্রায় নিশ্চিত, তখনই অবিশ্বাস্যভাবে উদ্ধার হয় তিন লাখেরও বেশি সেনা। দুটি ঘটনা নিয়েই রয়েছে দুটি বিখ্যাত মুভি, জেমস ক্যামেরনের টাইটানিক এবং ক্রিস্টোফার নোলানের ডানকার্ক।
দুটি ঘটনা ঘটেছে ২৮ বছরের ব্যবধানে, অথচ একজন ব্যক্তি ছিলেন দুই জায়গায়ই উপস্থিত। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এমন একজন সত্যিই রয়েছেন যিনি ছিলেন টাইটানিকের ৭০৬ জন বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের একজন, একই সাথে ডানকার্কের অবিশ্বাস্য উদ্ধারকার্যের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী একজন। বলা হচ্ছে চার্লস হার্বার্ট লাইটওলারের কথা। ১৮৭৪ সালের ৩০ মার্চ ল্যাঙ্কাশায়ারে জন্ম নেয়া এই ব্রিটিশ সাক্ষী ছিলেন গত শতাব্দীর দুটি বিখ্যাত ঘটনার।
ছোটবেলায় তার বাবা পরিবারের সবাইকে রেখে নিউজিল্যান্ডে চলে যান। সে সময় ব্রিটেনের কিশোরদের অল্প বয়স থেকেই কারখানার কাজে ঢুকিয়ে দেয়া হতো। কারখানায় ঢোকা থেকে রক্ষা পেতে মাত্র ১৩ বছর বয়সে চার্লস ‘প্রমিস হিল’ নামের একটি জাহাজে চার বছর মেয়াদী শিক্ষানবিশ হিসেবে যোগ দেন। তার দ্বিতীয় সমুদ্র যাত্রা ছিল ‘হল্ট হিল‘ নামক জাহাজে। রোমাঞ্চকর নাবিক জীবনের শুরুটা এখান থেকেই।
দক্ষিণ আটলান্টিকে ঝড়ের কবলে পড়ে তার জাহাজ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে মেরামতের জন্য জাহাজ নিয়ে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে যেতে হয়। সে সময় রিওতে চলছিল গুটিবসন্তের প্রকোপ, সাথে ছিল ব্রাজিলের রাজতন্ত্রবিরোধী আন্দোলন। এসবের মধ্যেই মেরামত শেষে আবার যাত্রা শুরু করে হল্ট হিল, কিন্তু ভাগ্যে ছিল আবারো ঝড়ের কবলে পড়া। ১৮৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর, এবার ভারত মহাসাগরে। ঝড়ে পড়ে জাহাজ চলাচলে অক্ষম হয়ে পড়ে, ভাসতে ভাসতে চলে যায় এক জনমানবহীন দ্বীপে। পরে তাদের উদ্ধার করে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাওয়া হয় এবং ইংল্যান্ডে ফেরার জন্য চার্লস এবার ডিউক অব অ্যাবেরকর্ন-এর ক্রু হিসেবে যোগ দেন।
ইংল্যান্ডে ফিরে তিনি আবারো ফিরে যান তার প্রথম জাহাজ প্রমিস হিলে। কলকাতা যাবার পথে তিনি সাইক্লোনের মুখোমুখি হন এবং কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই কলকাতার বন্দরে পৌঁছতে সক্ষম হন। এ সময় তিনি কাজ করতেন থার্ড মেট হিসেবে, কলকাতায় তিনি উন্নীত হন সেকেন্ড মেট হিসেবে। নাইট অব সেন্ট মিশেল জাহাজে কয়লা থেকে ধরা আগুন নেভানোর সময় তার সাহসিকতার জন্য তিনি এ পদোন্নতি পান।
মাত্র ২১ বছর বয়সেই ঝড়, সাইক্লোন ও আগুনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চার্লস ১৮৯৫ সালে বাণিজ্যতরীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে আফ্রিকান রয়্যাল মেইল সার্ভিসের জাহাজে কাজ শুরু করেন। পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে ম্যালেরিয়ায় প্রায় মরতে বসা চার্লস ১৮৯৮ সালে তার নাবিক জীবনের ইতি টেনে কানাডায় যান সোনার খোঁজে। কিন্তু সেখানে ব্যর্থ হয়ে ভবঘুরেতে পরিণত হন তিনি। ইংল্যান্ডে ফেরার জন্য কানাডার অ্যালবার্টায় কিছুদিন কাজ করেন গবাদীপশু সরবরাহ করে এমন এক নৌকায়। ১৮৯৯ সালে তিনি যখন ইংল্যান্ডে ফেরেন, তার কাছে কোনো টাকাকড়ি ছিল না। পরের বছর অর্থাৎ ১৯০০ সালে তিনি যোগ দেন হোয়াইট স্টার লাইন কোম্পানিতে। আমাদের গল্পের শুরুটা ঠিক এখান থেকেই।
স্টার লাইনের হয়ে তার প্রথম অভিযান ছিল মেডিকে, চতুর্থ অফিসার হিসেবে। এ জাহাজটি ব্রিটেন-দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া রুটে চলাচল করত। মেডিকে দ্বিতীয় অভিযানের সময় তার পরিচয় হয় সিলভিয়া হওলি উইলসনের সাথে, যিনি সিডনিতে নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। অথচ মোড় কিছুটা পাল্টে ইংল্যান্ডে এই নারীটি ফিরে যান চার্লসের স্ত্রী হয়ে!
স্টার লাইনে চার্লসের বেশিরভাগ সময় কাটতো ‘ম্যাজেস্টিক‘ নামের জাহাজে, যেখানে তিনি কাজ করতেন ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথের অধীনে, যা পরবর্তীতে তার ক্যারিয়ারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ম্যাজেস্টিক থেকে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় ওসেনিক-এ, যা ছিল স্টার লাইনের সে সময়ের গর্ব, সময়ের সবচেয়ে বড় জাহাজ। নতুন শতাব্দীর প্রথম দশকেই চার্লস ম্যাজেস্টিক এবং ওসেনিকের প্রথম অফিসার হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
টাইটানিকের প্রথম অভিযানের দু’সপ্তাহ আগে সমুদ্র ট্রায়ালে টাইটানিকের প্রথম অফিসার হিসেবে কাজ করেন চার্লস। কিন্তু আসল অভিযানের সময় ক্যাপ্টেন স্মিথ ক্রুদের মধ্যে কিছু রদবদল করায় চার্লস হয়ে যান দ্বিতীয় অফিসার। যার দ্বিতীয় অফিসার হবার কথা ছিল, অর্থাৎ ডেভিড ব্লেয়ার, তাকে জাহাজ ছেড়ে চলে যেতে হয়। এই রদবদল টাইটানিকের দুর্ভাগ্যের এক কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ব্লেয়ারের কাছে ছিল বায়নোকুলার রাখার লকারের চাবি, যা তিনি ভুল করে সাথে নিয়ে চলে যান!
১৪ এপ্রিল, ১৯১২; টাইটানিকের দ্বিতীয় অফিসার হিসেবে রাত দশটায় ডিউটি শেষ করেন চার্লস। সেদিন সন্ধ্যা থেকেই আবহাওয়া ঠান্ডা হতে থাকায় ক্যাপ্টেন স্মিথ কিছুটা চিন্তিত হলেও জাহাজের গতি কমানোর নির্দেশ দেননি। বরং আকাশ পরিষ্কার থাকায় স্মিথ এবং অন্যান্য অফিসারদের ধারণা ছিল হিমশৈল থাকলে সহজে দেখা যাবে। হিমশৈলের সাথে টাইটানিকের যখন ধাক্কা লাগে, তখন তিনি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ধাক্কা লাগার সাথে সাথে চার্লস এবং অন্যান্য অফ ডিউটি অফিসাররা ছুটে যান কী হয়েছে দেখতে। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় কোনোকিছু বোঝা না যাওয়ায় সবাই আবার নিজেদের কেবিনে ফিরে যান।
যখন জাহাজের ভাগ্যে কী রয়েছে বোঝা হয়ে গিয়েছিল, তখন চার্লসকে ডেকে পাঠানো হয় এবং তিনি লাইফবোটে যাত্রীদের উঠানোর কাজে নিয়োজিত হন। ‘প্রথমে নারী এবং শিশু’ নীতি বাদ দিয়ে তিনি ‘শুধুমাত্র নারী এবং শিশু’ নীতি গ্রহণ করেন। তিনি প্রচন্ড কড়া ছিলেন, ফলাফলস্বরূপ তার দায়িত্বে থাকা লাইফবোটগুলোতে শুধুমাত্র মহিলা এবং শিশুরাই উঠতে পারে। ‘লাইফবোট ৬’-এ তিনি ২৫ জনকে ওঠাতে সক্ষম হন, এদের মধ্যে মাত্র একজন পুরুষকে তিনি উঠার অনুমতি দেন যিনি একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন জাহাজ বা নৌকা চালানোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তার হাত ধরে প্রায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ সেই ভয়ংকর রাতে লাইফবোটে উঠতে সক্ষম হন, যাদের মধ্যে কয়েকজন অভিজ্ঞ নাবিক ছাড়া সবাই ছিলেন নারী কিংবা শিশু।
টাইটানিক ডুবে যাবার পর তিনি একটি লাইফবোটে উঠতে সক্ষম হন। সারা রাত জীবিত মানুষ খুঁজে পাবার চেষ্টা করেও একজনকেও জীবিত পাননি। পরেরদিন সকালে উদ্ধারকারী জাহাজ টাইটানিকের বেঁচে যাওয়া যাত্রী এবং ক্রুদের উদ্ধার করতে আসে। উদ্ধারকারী আরএমএস কার্পাথিয়ায় জায়গা হয় চার্লস লাইটওলারের। বেঁচে যাওয়া অফিসারদের মধ্যে চার্লস ছিলেন সবচেয়ে সিনিয়র। টাইটানিক সিনেমায় জনি ফিলিপস অভিনয় করেন চার্লস লাইটওলার চরিত্রে।
উদ্ধারের পর আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের তদন্ত শেষে ১৯১৩ সালে তিনি ওসেনিকের প্রথম অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ব্রিটিশ নৌবাহিনী ওসেনিককে নৌবাহিনীতে নিয়োগ দেয়, আরএমএস (রয়্যাল মেইল স্টিমার) ওসেনিক হয়ে যায় এইচএমএস (হিজ ম্যাজেস্টিস শিপ)। প্রথম অফিসার থেকে চার্লস হয়ে যান লেফটেন্যান্ট। ১৯১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ওসেনিক ডুবে যায়, এবারও চার্লস ছিলেন নিজের কেবিনে এবং দায়িত্ব পান লাইফবোটের।
১৯১৫ সালে চার্লস একটি জার্মান জ্যাপেলিন আক্রমণ করেন তার জাহাজ থেকে। তার এ বীরত্বের জন্য তাকে ‘Distinguished Service Cross’ প্রদান করা হয় এবং ‘ফ্যালকন’ নামে একটি টর্পেডো বোটের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯১৮ সালের এপ্রিলে আবারো তার দুর্ভাগ্য আসে, অন্য একটি জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় ফ্যালকন, আগের দু’বারের মতো এবারও তিনি ছিলেন অফ ডিউটিতে।
যুদ্ধ শেষে তিনি রয়্যাল নেভির পূর্ণ কমান্ডার হিসেবে স্বীকৃতি পান, হোয়াইট স্টার লাইনে ফিরে যান চিফ অফিসার হিসেবে, ‘সেল্টিক’ নামের জাহাজে। কিন্তু স্টার লাইন চাইছিল টাইটানিকের সাথে সম্পর্কিত সবকিছু মুছে ফেলতে, ফলে টাইটানিকের বেঁচে যাওয়া ক্রুদের কখনোই জাহাজের বড় দায়িত্বে নিয়োগ দেয়া হত না। এভাবে অপমানের চাকরি না করার সিদ্ধান্ত নেন চার্লস, বিশ বছর স্টার লাইনে চাকরির করার পর ছেড়ে দেন স্টার লাইনের চাকরি। দুর্ভাগ্যে ভরা নাবিক জীবনের ইতি ঘটে সেখানেই।
নাবিক জীবন ছাড়ার পর প্রথমদিকে চার্লসকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। প্রথমদিকে কোনো সাফল্য না পেলেও কয়েক বছর পর সম্পত্তি গুপ্তচর হিসেবে সাফল্য পান। ১৯২৯ সালে তিনি একটি বাষ্পচালিত লঞ্চ কেনেন ৪০ পাউন্ডে (বর্তমান ২,০০০ পাউন্ড) যাকে ডিজেল ইঞ্জিনের ইয়টে রূপান্তরিত করেন চার্লস, নাম দেন সানডাওনার। ত্রিশের দশকে এই ইয়টে করে তিনি পরিবারসহ ইউরোপে ঘুরে বেড়াতেন।
১৯৩৯ সালের জুলাই মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার আগে আগে রয়্যাল নেভি তাকে জার্মান উপকূলে জরিপ চালানোর অনুরোধ করে। তিনি এবং তার স্ত্রী তাদের ইয়ট নিয়ে চলে যান জার্মান উপকূলে, বয়স্ক দম্পত্তির ছদ্মবেশে জরিপ করে ফেরেন ইংল্যান্ডে। এর কিছুদিন পরেই শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪০ সালের মে মাসের শেষের দিকে ডানকার্কে আটকে পড়ে ব্রিটিশ এবং ফ্রেঞ্চ সেনারা। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা জার্মান এয়ার ফোর্সের আক্রমণে ব্যর্থ হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে রয়্যাল নেভি সাহায্য চায় সাধারণ নাগরিকদের কাছে, তাদের নৌকাগুলোকে নেভির নাবিকরা ডানকার্কে নিয়ে যাবে সেনা উদ্ধারে। ৩১ মে চার্লস একটি ফোন কল পান, সানডাওনারকে রামসগেতে নিয়ে যেতে বলা হয়, যেখান থেকে নেভি ক্রুরা ইয়টটিকে ডানকার্কে নিয়ে যাবে।
পহেলা জুন ৬৬ বছর বয়স্ক চার্লস তার ছেলে রজার এবং ১৮ বছর বয়সী সী-স্কাউট জেরাল্ডকে নিয়ে তার সানডাওনারে চড়ে রওনা দেন ডানকার্কের উদ্দেশ্যে। সানডাওনারের ধারণক্ষমতা মাত্র ২১ জন হলেও ডানকার্ক থেকে চার্লস তার ইয়টে উদ্ধার করেন ১২২ জনকে। এমনকি ফেরার পথে জার্মান বিমান তার ইয়ট আক্রমণ করলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতায় সে আক্রমণ ভন্ডুল করে দেন। নিজের দীর্ঘ নাবিক জীবনে বারবার দুর্ভাগ্যের শিকার চার্লস লাইটওলার দায়িত্ব পেতেন লাইফবোটের, উদ্ধার করতেন ডুবে যাওয়া কিংবা বেঁচে যাওয়াদের। সে অভিজ্ঞতাই হয়তো তাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল ইতিহাসের এক অলৌলিক উদ্ধারকাজের সক্রিয় অংশ হতে। ডানকার্ক সিনেমায় ‘মি. ডসন’ চরিত্রটি তার আদলেই তৈরি করা।
তার ছোট ছেলে ব্রায়ান রয়্যাল এয়ারফোর্সের সদস্য ছিলেন, যিনি ১৯৩৯ সালে জার্মান বোমা হামলায় মারা যান। বড় ছেলে রজার, যাকে নিয়ে ডানকার্ক উদ্ধারকাজে গিয়েছিলেন, রয়্যাল নেভিতে যোগ দেন এবং যুদ্ধ শেষের কয়েক মাস আগে ফ্রান্সে জার্মান কমান্ডো হামলায় মারা যান। তার দ্বিতীয় ছেলে রিচার্ড আর্মিতে যোগ দেন, জেনারেল মন্টিগোমারির অধীনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল র্যাঙ্ক পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। চার্লসের নাতিও রয়্যাল নেভিতে যোগ দেন এবং ‘৭০ এর দশকে তিনি সাবমেরিন কমান্ডার ছিলেন।
নাবিক জীবনের শুরু থেকেই ঝড়, সাইক্লোন ও জাহাজডুবির সাক্ষী হয়েছিলেন চার্লস লাইটওলার। ভাগ্য তাকে বারবার নিয়ে গেছে সেই খারাপের দিকেই। এই দুর্ভাগা মানুষটি শেষ জীবনে ডানকার্ক উদ্ধারে অংশ নিয়ে নিজের জীবনের গল্পটি বদলে ফেলেন। টাইটানিক থেকে ডানকার্ক, ইতিহাসের সাক্ষী এ মানুষটি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৯৫২ সালের ৮ ডিসেম্বর। তার বিখ্যাত ইয়টটি বর্তমানে রামসগেট জাদুঘরে রাখা আছে।