কমিকের রূপালী জগতে নিঃসন্দেহে সুপারম্যান এবং ব্যাটম্যানের জনপ্রিয়তা অন্য সবার চেয়ে যোজন যোজন ক্রোশ এগিয়ে। ১৯৩০ এবং ‘৪০ এর দশকে কমিকের পাতায় অভিষেকের পর প্রায় শতবর্ষ ঘনিয়ে এলেও তাদের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাটা পড়েনি। বরং, অন্য সকল সুপারহিরোর মশাল জ্বালিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার সাহস যুগিয়েছে তারা।
লাইভ অ্যাকশনে এই দুই পপ কালচার আইকনকে দেখার জন্য বহুদিন তীর্থের কাকের মতো প্রতীক্ষায় ছিল কমিকপ্রেমীরা। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিলেন ডিসি এক্সটেন্ডেড ইউনিভার্সের সব্যসাচী রূপকার জ্যাক স্নাইডার। সুপারম্যান আর ব্যাটম্যানের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সেলুলয়েডের পর্দায় জীবন্ত করে তুললেন তিনি ভীষণ ডার্ক টোনের মাধ্যমে, যা ছিল ডিসির পাঁড় ভক্তদের বহুদিনের লালিত অভিলাষ। ডিসিইউ-র সেকেন্ড ইনস্টলম্যান্ট ‘ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান: ডন অব জাস্টিস’ সিনেমার অজানা এবং পর্দার আড়ালের কিছু দিক নিয়ে আজকের এই আলোচনা।
গোড়াপত্তন
‘Batman V Superman (BvS): Dawn of Justice’ সিনেমার মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো কমিকবুকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুই আইকন ব্যাটম্যান আর সুপারম্যানকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। তবে, দেবতা বনাম মানুষের এই দ্বৈরথ লাইভ অ্যাকশনে দেখানোর প্রচেষ্টা এই প্রথম নয়। এই ধারণার উদ্ভব ঘটে সেই ২০০১ সালেই। স্টুডিও থেকে চলচ্চিত্রের গল্প নির্মাণ এবং পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় যথাক্রমে আকিবা গোলডস্ম্যান এবং ওলফগ্যাং পিটারসেনকে। কলিন ফ্যারেলকে ব্যাটম্যান আর জুড লকে সুপারম্যান হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবা হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় এই সিনেমাটা প্রোডাকশনেই ঝুলে রইলো। ওদিকে পিটারসেনও ট্রয় সিনেমা নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে গেলেন।
শুরুর দিকে এমন কাহিনি বাছা হয়েছিল, যেখানে দেখা যাবে আলফ্রেডের মৃত্যু এবং জোকার ব্যাটম্যানের স্ত্রীকে খুন করেছে। তবে, নিজের তৈরি করা প্লটের উপর তেমন ভরসা পাচ্ছিলেন না আকিবা। তাই, এই সিনেমা আর এগোতে পারেনি। উইল স্মিথের মুভি আই এম লিজেন্ড (২০০৭)-এ ‘BvS’ এর লোগো সম্বলিত ছোট্ট একটি ইস্টার এগ ছিল। ২০১৩ সালে ম্যান অভ স্টিল সিনেমার মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড অব ডিসি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন পরিচালক জ্যাক স্নাইডার। সুপারম্যানের এই রিবুট মুভি বক্স অফিসে সফলতা লাভ করার পর বড় পর্দায় জাস্টিস লীগকে উপস্থাপন করতে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু কিছু ইনিশিয়াল স্ক্রিপ্ট আর ড্রাফট পড়ার পর জ্যাক স্নাইডারের মনে হলো জাস্টিস লীগ আনার আগে আরও অনেক কিছু গোছাতে হবে। সেজন্য তিনি এবার পাশার দান দিলেন ব্যাটম্যান আর সুপারম্যানকে দিয়ে। ২০১৩ সালেই এই সিনেমার ঘোষণা দেন তিনি। সিনেমাটি নির্মাণে স্নাইডার ফ্র্যাঙ্ক মিলারের ডার্ক নাইট কমিক বুক থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন।
বেন অ্যাফ্লেক
ডিসিইউর ব্যাটম্যান চরিত্রে বেন অ্যাফ্লেক নিজের সেরাটা ঢেলে দিয়েছেন নিঃসন্দেহে। কিন্তু তাকে ওই চরিত্রে নির্বাচিত করার আগে বহু অভিনেতাকে এই চরিত্রের জন্য ভেবে রাখা হয়েছিল। সে দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন আমেরিকান অভিনেতা জেফ্রি মরগান, যিনি স্নাইডারের সাথে ওয়াচমেন মুভিতে এডওয়ার্ড ব্ল্যাইক চরিত্রে কাজ করেছিলেন। কিন্তু BvS মুভিতে তাকে ব্রুসের পিতা থমাস ওয়েনের রোল দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশ অভিনেতা স্কট এডকিনস এই রোলের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। ছিলেন জন হ্যাম, জেরার্ড বাটলার, সুপারম্যান এন্ড লইস সিরিজে সুপারম্যান টাইলার হোয়েচলিনও।
কিন্তু শেষমেশ স্নাইডার নিজেই এই রোল অফার বেন অ্যাফ্লেককে। খবরটা শোনার পর যারপরনাই অবাক হন বেন। কারণ, তিনি নিজেও ব্যাটম্যানের একজন পাঁড় ভক্ত। বেন তার বাড়িতে একটা ব্যাটকেইভও নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি শুরুতে এই ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করার জন্য কোনোভাবেই রাজি ছিলেন না। এর পেছনেও আছে লম্বা কাহিনি। ২০০৩ সালে মারভেলের জনপ্রিয় চরিত্র ডেয়ারডেভিলের অবতারে দেখা গিয়েছিল তাকে। কিন্তু সমালোচকমহল এবং বক্স-অফিস, দুই জায়গাতেই মুখ থুবড়ে পরে সিনেমাটি। এরপরেই বেন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি আর কখনো কমিকবুক সুপারহিরোর চরিত্রে অভিনয় করবেন না। কিন্তু জ্যাক স্নাইডার যখন তার দূরদর্শী পরিকল্পনা বেনের কাছে পেশ করেছিলেন, তখন তিনি ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয়ের ভরসা পান। চরিত্রে নির্বাচিত হবার পর প্রতিদিন জিম সেন্টারে দুঘণ্টা শারীরিক ব্যায়ামের পেছনে ব্যয় করতেন তিনি। শুটিংয়ের আগপর্যন্ত তিনি ৯ কেজি ওজন বাড়ান, যা তার মোট ওজনের ৮%।
নতুন ব্যাটম্যানে সমস্যা
বিশাল বড় এক ফ্যান্ডম নিয়ে কমিক জগতে রাজত্ব করছে ব্যাটম্যান। এই পর্যন্ত যারা যারা ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সকলেই জুটিয়েছেন নিজস্ব ভক্তকুল। রিবুটের ফলে ব্যাটম্যান চরিত্রে নতুন কাউকে নেওয়া হলে, শুরুতে তাকে অনলাইন গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। সেজন্য, প্রোডাকশন হাউজ থেকে বেন অ্যাফ্লেককে সতর্ক করা হয়, কাস্ট হবার পর তিনি যাতে কয়েকদিন অনলাইন গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না ঢোকেন। কারণ, এতে ওই অভিনেতার উপর নেতিবাচক মানসিক প্রভাব পড়তে পারে।
কিন্তু কে শোনে কার কথা? ব্যাটম্যান চরিত্রে কাস্ট হবার পর স্বাভাবিকভাবেই তিনি ঢুঁ মারলেন অনলাইনে। ক্রিশ্চিয়ান বেলের ব্যাটম্যান মনেই গেঁথে যাওয়ায়, ওই স্থানে অনেকেই নতুন করে আরেকজনকে মেনে নিতে পারছিল না। শুরু হলো ব্যাপক সমালোচনা। এসব দেখে জলদিই কয়েকদিনের জন্য অনলাইন যাওয়া বাদ দিলেন বেন। তবে এটা নতুন কিছু নয়। মাইকেল কিটনের পর ক্রিশ্চিয়ান বেইল, বেইলের পর বেন অ্যাফ্লেক, অ্যাফ্লেকের পর রবার্ট প্যাটিনসন, সকলকেই সমান তালে ধোয়া হয়েছে। বাদ যাননি জোকার চরিত্রে অভিনয় করা হিথ লেজারও। তবে, যার যার জায়গা থেকে সবাই ছিলেন অতুলনীয়।
লেক্স লুথার
BvS সিনেমায় জেসি আইজেনবার্গের লেক্স লুথারের চরিত্রকে মডেল করা হয়েছে অল স্টার সুপারম্যানের লেক্স লুথারের উপর ভিত্তি করে। যেখানে এলিয়েন হবার দরুন লেক্স সুপারম্যানকে ঘৃণা করে। লেক্স লুথার চরিত্রে জেসি আইজ্যানবার্গকে নেওয়ার আগে ব্রেডলি কুপার, ম্যাট ডেমন, অ্যাডাম ড্রাইভার, টম হ্যাংক্স, ওয়াকিন ফিনিক্সকেও এই রোলের জন্য ভাবা হয়েছিল। প্রথমদিকে জেসির জিমি ওলসনের রোল প্লে করার কথা ছিল। ডেইলি প্ল্যানেটের পেশাদার এই ফটোগ্রাফার ছিল ক্লার্ক কেন্ট আর লোয়েস লেইনের সহকর্মী, ভালো বন্ধু।
জোকার
জেরাড লেটোকে জোকার চরিত্রে প্রথম দেখা গেছে ডেভিড আয়ারের সুইসাইড স্কোয়াড সিনেমায়। কিন্তু শুরুতে তার ক্যামিও থাকার কথার ছিল BvS মুভিতেই। এই মুভির একটি দৃশ্যে মৃত রবিনের স্যুট দেখানো হয়, যেখানে ‘Batman: Death in the Family’ কমিকের স্টোরি লাইনের হিন্ট দেওয়া ছিল। এই চরিত্রের জন্য রায়ান পটার টিম ড্রেকের রোলের জন্য অডিশন দিয়েছিল। কিন্তু মুভি থেকে ওই চরিত্রকেই বাদ দিয়ে দেওয়ায় নিজেকে আর মেলে ধরার সুযোগ হয়নি রায়ানের। তবে সেটা তার জন্য শাপে বর হয়ে ফিরে এসেছিল। পরবর্তীতে ডিসির টাইটান্স টিভি শো-তে তাকে বিস্ট বয় চরিত্রের জন্য কাস্ট করা হয়।
স্যুটের পার্থক্য
অনেকেই হয়তো খেয়াল করেনি, ‘ম্যান অব স্টিল’ এবং ‘ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান’, এই দুই মুভিতে সুপারম্যানের স্যুটের কিছু পার্থক্য ছিল। যদিও সাধারণ দৃষ্টিতে তা খোঁজা মুশকিল। ম্যান অব স্টিলের চেয়ে BvS সিনেমার স্যুটের নীল রঙ বেশি গাঢ় ছিল। বেল্টের ডিজাইনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভালো করে দেখলে এমব্রয়ডারিতেও পার্থক্য মিলবে। যেখানে ক্রিপ্টন ভাষায় জোসেফ জন ক্যাম্পবেলের বিখ্যাত এক উক্তি লিখা আছে,
“Where we had thought to be alone, we shall be with all the world”.
ব্যাটস্যুট
এই সিনেমায় ব্যাটম্যানের কস্টিউম বানানো হয়েছে দ্য ডার্ক নাইট কমিকের আদলে। ডিজাইন করেছেন মাইকেল উইলকিলসন। ক্লাইম্যাক্সে দেখানো ব্যাটস্যুট (ব্যাটআর্মর), এই কমিক থেকেই অনুপ্রাণিত। তবে এই স্যুট ব্যাটম্যানকে আলাদা কোনো শক্তি প্রদান করে না। এটা শুধুমাত্র সুপারম্যানের কাছ থেকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য। এর শুধুমাত্র একটা প্র্যাক্টিক্যাল ভার্সন বানানো হয়েছিল, কিন্তু বেশিরভাগ শটের জন্য মোশন ক্যাপচার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রোডাকশনের কাজ শেষ হবার পর অ্যাফ্লেক আবদার করেছিল তাকে একটা ব্যাটস্যুট দিয়ে দেওয়ার জন্য। প্রোডাকশন কোম্পানি তখন তার কাছে একটা স্যুটের জন্য ১ লাখ ডলার চেয়েছিল। তখন বেন ভাবলেন, এর চেয়ে এই স্যুটের সাথে একটা সেলফি তুলে কেটে পড়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ওয়ান্ডার ওম্যানের ক্যামিও
BvS মুভিতে ওয়ান্ডার ওম্যান হিসেবে অভিষেক ঘটে ইসরায়েলি অভিনেত্রী গ্যাল গ্যাদতের। তিনিই প্রথম অভিনেত্রী, যিনি আমেরিকান না হয়েও ওয়ান্ডার ওম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে, মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের দুজন অভিনেত্রীও চাইছিলেন ওয়ান্ডার ওম্যান হবার জন্য। তারা হলেন কোবি স্মুলডারস (এজেন্ট মারিয়া হিল), এবং জেইমি অ্যালেক্সান্ডার (থর ১ এবং ২ সিনেমার লেডি সিফ)। কিন্তু মারভেলের সাথে যুক্ত থাকায় তাদেরকে তখন নেওয়া হয়নি।
মেটালোর আগমন
সিনেমায় ওয়ান্ডার ওম্যানকে না দেখালে কাহিনিতে একটু পরিবর্তন আসত। শুরুর দিকের কনসেপ্টে এখানে সুপারম্যানের ভিলেন মেটালোকে দেখানোর কথা ছিল, যে ক্রিপ্টোনাইটের মাধ্যমে সুপারম্যানকে ঘায়েল করবে। কিন্তু ওয়ান্ডার ওম্যান আসাতে চরিত্র অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তাই, মেটালোর সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে প্রোডাকশন টিম।
ব্যাটমোবাইলের রেপ্লিকা
কমিক সুপারহিরো সিনেমায় ব্যাটম্যানের আইকনিক ব্যাটমোবাইলের বিশাল এক ভক্তকুল বিদ্যমান। নতুন ব্যাটম্যান পর্দায় নতুন ব্যাটমোবাইল নিয়ে হাজির হন। মজার ব্যাপার হলো, BvS মুভির আদলেই এক রাশিয়ান কোম্পানি ৫০০ হর্স পাওয়ার, ভি৮ ইঞ্জিন-সমেত এক ব্যাটমোবাইল নির্মাণ করেছে। ৪ টন ওজনের এই গাড়ির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার।
বিবিধ
সিনেমার স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের সময় ফুল ভার্সন দেখে যারপরনাই মুগ্ধ হন ওয়ার্নার ব্রাদারসের এক্সিকিউটিভরা। জ্যাক স্নাইডারকে প্রশংসার স্রোতে ভাসান তারা। আর বেন অ্যাফ্লেকের ব্যাটম্যানের উপর তারা এতটাই সন্তুষ্ট হন যে, বেনকে আরও তিনটা সিনেমার গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়। যথারীতি সিনেমা মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহে পাকায় যত ভজকট। প্রথম সপ্তাহান্তে ৪০০ মিলিয়নের বেশি আয় করলেও বিলিয়নের ঘর ছুঁতে পারেনি ডিসির প্রথম টিমআপ মুভি। ৮৭৩ মিলিয়ন ডলারেই থেমে যায় এর জয়রথ। দ্বিতীয় সপ্তাহে বেশ পতন আসে নেতিবাচক রিভিউয়ের জন্য।
দর্শক-সমালোচকদের অনেকেই মার্থা সিন কিংবা ব্যাটম্যানের নাইটমেয়ার দৃশ্যের আগা-মাথা বুঝতে পারেননি। পরে জানা গেল, থিয়েটারে বেশি শো পাওয়ার জন্য তিনঘণ্টার এই বিবলিকাল রেফারেন্স ইস্টার এগ সম্বলিত ভিজুয়াল মাস্টারপিসকে কাটছাঁট করে ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটে আনা হয়েছে। মূলত গণ্ডগোলটা পাকিয়েছে স্টুডিওর অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ এবং মুভিতে অতিরিক্ত কাটছাঁট। বিভিএসের এডিটর ব্রেনার জানান, মুভিটির মূল সংস্করণ ছিল প্রায় চার ঘণ্টা দীর্ঘ! পরে এক্সটেন্ডেড কাট দেখে ভুল ভাঙে সকলের। আইএমডিবি কিংবা রোটেন টম্যাটোজ, কোনোখানেই রেটিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি থিয়েটার সংস্করণটি।
অনেকেই বলন, অতিরিক্ত ডার্ক টোনের হওয়াতে সিনেমাটি অনেকে বুঝতে পারেনি। পাশাপাশি ফ্ল্যাশের টাইম ট্রাভেল, ব্রুসের নাইটমেয়ার সিকুয়েন্স, এবং ব্যাটকেভে মৃত রবিনের স্যুট এ বিষয়গুলোতে সিনেমায় কিছু তুলে ধরা হয়নি। তবে স্নাইডার যেহেতু ওয়ার্ল্ড অব ডিসি নিয়ে বিশাল এক পরিকল্পনার ছক সাজিয়েছিলেন, সেগুলোর ব্যাখ্যা সামনের মুভিগুলোতেই পাওয়া যেত। পরবর্তীতে ওয়ার্নার ব্রোসের সাথে বিভিন্ন ঝামেলার কারণে ওয়ার্ল্ড অব ডিসি থেকে নিজেকে সরিয়ে আনেন স্নাইডার। ডিসি কমিকস নিয়ে তার সর্বশেষ কাজ ছিল ৪ ঘণ্টার জ্যাক স্নাইডার্স জাস্টিজ লীগ মুভিটি।
স্নাইডারের গল্প বলার ধরন বেশ খানিকটা দুর্বোধ্যই বলা চলে। সাধারণ সিনেমার ফ্রেমকে রেনেসাঁ যুগের চিত্রকর্মে পরিণত করার অসামান্য দক্ষতা তার আছে নিঃসন্দেহে। ডিসিকে নিয়ে তিনি যে দূরদর্শী পরিকল্পনায় এগোচ্ছিলেন, স্টুডিও তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিলে তিনি হয়তো ডিসি এক্সটেন্ডেড ইউনিভার্সকে নিয়ে যেতে পারতেন সফলতার শিখরে।