Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

দুষ্প্রাপ্য কিছু ক্যান্ডিড ছবিতে ফুটে ওঠা মেরিলিন মনরোর অপার সৌন্দর্য

‘মেরিলিন মনরো’ শব্দযুগলকে ব্র্যান্ড বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না। অভিনয় জগতে তিনি দেবী, আইকন। তার অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে কারো কোনো সংশয় নেই। নিজের সময়ে আবেদনের প্রতীক হয়ে ওঠা এই অভিনেত্রী দর্শকদের উপহার দিয়েছেন একের পর এক সব বাণিজ্যিকভাবে সফল সিনেমা। অজ্ঞাতনামা জীবন থেকে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণে তাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে চোখধাঁধানো রূপ-লাবণ্য।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগপর্যন্ত মনরোর জীবন কেটেছে এতিমখানা আর পালক বাবা-মায়ের বাড়িতে। জন্মসূত্রে তার নাম ছিল নর্মা জেন মর্টেনসন। বিমানবাহিনীর এক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় মনরোকে দেখতে পান সামরিক আলোকচিত্রী ডেভিড কনোভার। ডেভিড তখন যুদ্ধের সময় নারী কর্মীরা কীভাবে টিকে আছে তা-ই নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। মনরোর চেহারা আর অভিব্যক্তি দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান ডেভিড, খুব শীঘ্রই সফল একটি মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করে ফেলেন মনরো।

ভুবন ভুলানো বিখ্যাত সেই পোজে মনরো; Source: starschanges.com

আবেদনময়ী ভঙ্গিতে তোলা বেশ কিছু দেখে মনরোকে ডাকা হয় সিনেমার ছোটখাটো রোল করার জন্য। সেখান থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ‘সাম লাইক ইট হট’, ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’, ‘জেন্টেলম্যান প্রিফারস ব্লন্ড’, ‘দ্য মিসফিটস’, ‘হাউ টু ম্যারি অ্যা মিলিয়নিয়ার’, ‘বাস স্টপ’ এর মতো দুর্দান্ত সব চলচ্চিত্র নিজের ঝুলিতে বাগিয়ে নিয়েছেন। বিখ্যাত সব সিনেমার প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করে ছিনিয়ে নিয়েছেন ‘মুভি স্টার’ খেতাব।

দুর্ভাগ্যবশত, মনরোকে বিবেচনা করা হতো আর দশজন নির্বোধ স্বর্ণকেশীর মতোই প্রাণহীন, অপ্রতিভ হিসেবে। সুন্দরী হলেও মেধার জোর খুব একটা ছিল না তার। কাজেই বিখ্যাত সিনেমায় অভিনয় করেও তিনি থেকে গেছেন নিছকই একটি পুতুল চরিত্রে। একঘেয়ে এই পাশের বাড়ির মেয়ে জাতীয় চরিত্রে অভিনয় করতে করতে একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন মনরো। সিরিয়াস ফিল্মের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে চাইতেন তিনি। আফসোস, সুন্দরী এই নারীর সুপ্ত মেধাবী অভিনেত্রী রূপটিকে কেউ বের করে আনতে চায়নি।

কেবলমাত্র মনরোকে এক ঝলক দেখতে সিনেমা হলে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে- এসব কাহিনী সবার জানা। কাজেই মনরোকে সারাক্ষণ চিন্তায় থাকতে হতো, তার সৌন্দর্য যেন কোনোভাবেই মিইয়ে না পড়ে। দিনে অন্তত পাঁচবার মুখ ধুতেন তিনি, যাতে ময়লা জমে ব্রণ না উঠতে পারে। অলিভ অয়েলে মুখ ডুবিয়ে রাখতেন, যাতে ত্বক শুষ্ক হয়ে বলিরেখা দেখা না দেয়। সব মিলিয়ে, সৌন্দর্যচর্চায় ব্যস্ত মনরো পরিচালক, প্রযোজকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে সময় কাটাতেন মেকআপ রুমে। রূপসজ্জা, চুল ঠিক করা প্রতিটি জিনিসই নিখুঁত হওয়া চাই তার। ক্যামেরার সামনে যাওয়ার আগে নিজের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সব জিনিস ঠিক করে নিতেন তিনি। নিজের একটি আলাদা জগত তৈরি করে নিয়েছিলেন মেরিলিন মনরো। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কীভাবে দর্শকের দৃষ্টিতে লাস্যময়ী হয়ে উঠতে হয়, খুব ভালো করেই জানা ছিল তার।

ক্যামেরার সামনের উচ্ছ্বল তরুণী; Source: everythingaudrey.com

বিখ্যাত আলোকচিত্রী আর্নেস্ট কানিংহাম একবার বলেন-

“আমি মেরিলিন মনরোর সাথে কাজ করেছি। বলতে গেলে, বেশ নিষ্প্রভ, নীরস একজন ব্যক্তি তিনি। কিন্তু যেই আমি বলে উঠলাম ‘এখন!’, সাথে সাথে যেন জ্বলে উঠলেন তিনি। অবিশ্বাস্য রকমের পরিবর্তিত এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হলেন মুহূর্তের মধ্যেই। ক্যামেরার ক্লিক শব্দ শোনার পরপরই যেমন হঠাৎ করে জ্বলে উঠেছিলেন, তেমনি হঠাৎ করেই আবার যেন নিভে গেলেন। বুঝতে পেরেছেন তার কাজ শেষ। কৌতূহল চাপতে না পেরে জিজ্ঞেস করে বসলাম, ‘আপনার আর ক্যামেরার মধ্যে এমন কী আছে, যা আর অন্য কারো সামনে বা অন্য কখনো দেখা যায় না?’ তিনি বললেন, ‘ক্যামেরা এমন একটি জায়গা যেখানে আমি হাজার হাজার পুরুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারব, কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কোনো ভয় থাকবে না!’”

মনরোর সিনেমা আর আলোকচিত্র উভয় জায়গাতেই তার এই আকর্ষণের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। তবে কানিংহামের একটু ভুল হয়েছিল। ক্যামেরা অফ বা অনের চেয়ে বরং লোকচক্ষুর অন্তরালে লুকিয়ে থাকা মনরো অনেক বেশি সপ্রতিভ ছিলেন। উড়ন্ত সাদা ফ্রকে মনরোর সেই বিখ্যাত ছবি তো মোটামুটি সবাই দেখেছে। এবার তবে ঘুরে আসা যাক মেরিলিন মনরোর দুষ্প্রাপ্য সব ক্যান্ডিড ছবির গ্যালারি থেকে।

১.

১৯৬০ সালে ‘দ্য মিসফিটস’ সিনেমার শ্যুটিংয়ে গাড়ির সামনের সিটে বসে প্রাণ খুলে হাসছেন মেরিলিন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

২.

ফায়ারপ্লেসের সামনে মেঝেতে শুয়ে আছেন মনরো, সময় ১৯৫৫ সাল।

Source: all-that-is-interesting.com

৩.

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছেন মনরো, ১৯৫৫ সাল।

Source: all-that-is-interesting.com

৪.

সাবেক স্বামী জো ডিম্যাগিওর সাথে ইয়াংকি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুষ্টুমির ছলে ফ্রেমে বন্দী মনরো, সেটা ১৯৬১ সালের কথা।

Source: all-that-is-interesting.com

৫.

হলিউডের এজেন্ট জনি হাইডির বেভারলি হিলসের বাড়ির প্রাঙ্গণে কার্টহুইল করতে থাকা মনরো, ১৯৫০ সালে তোলা ছবি।

Source: all-that-is-interesting.com

৬.

১৯৫৪ সালের কোনো এক অনুষ্ঠানে কাউচে হেলান দিয়ে হাসছেন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

৭.

মেকআপ ঠিকঠাক করার কোনো এক মুহূর্তে ক্যামেরায় ধারণকৃত মনরো, সময় জানা যায়নি।

Source: all-that-is-interesting.com

৮.

১৯৫৪ সালে স্বামী জো ডিম্যাগিওর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাদের হানিমুন কটেজের সামনে সাংবাদিকদের তীর্যক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

৯.

১৯৬০ সালে ‘দ্য মিসফিটস’ সিনেমার শ্যুটিং করার সময় একটি ছোট কুকুরের সাথে আহ্লাদরত মেরিলিন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

 

১০.

‘সাম লাইক ইট হট’ সিনেমার সেটে তোলা হয় হাস্যোজ্জ্বল মনরোর ক্যান্ডিড এই ছবিটি, ১৯৫৯ সালের ছবি এটি।

Source: all-that-is-interesting.com

১১.

১৯৬৫ সালে নিউ ইয়র্কের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে নীরব এক মুহূর্তে মিখাইল চেখনভের লেখা ‘টু দ্য অ্যাক্টর: অন দ্য টেকনিকস অফ অ্যাক্টিং’ বইটি পড়ছেন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

 

১২.

১৯৬০ সালে সারাদিনব্যাপী ‘লেট’স মেক লাভ’ সিনেমার শ্যুটিং শেষে গাড়ির পিছনের সিটেই শুয়ে পড়েন তিনি।

Source: all-that-is-interesting.com

১৩.

১৯৫৫ সালে নিউ ইয়র্কের একটি রেস্টুরেন্টে সাধারণ মানুষের সাথে বসে নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

১৪.

১৯৬০ সালে ‘দ্য মিসফিটস’ সিনেমার কলাকুশলীদের সাথে প্রচারণার একটি মুহূর্তে মনরোর ক্যান্ডিড ছবি।

Source: all-that-is-interesting.com

১৫.

লিম্যুজিনের ভেতরে বসে হাসছেন মনরো, কে বলবে এই মানুষটি কী অসীম দুঃখ নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন!

Source: all-that-is-interesting.com

১৬.

মেকআপ ঠিক করে নিচ্ছেন মনরো, ১৯৫৩ সালের ছবি।

Source: all-that-is-interesting.com

১৭.

১৯৫৪ সালে স্বামী জো ডিম্যাগিওর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

১৮.

১৯৫৯ সালে বোস্টন আর্ট সেন্টার থিয়েটারে স্বামী আর্থার মিলার সাংবাদিকদের তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন, তখন বিরক্ত মুখে বসে থাকা মনরোর এই ছবিটি তুলে ফেলেন কোনো এক ফটোসাংবাদিক।

Source: all-that-is-interesting.com

১৯.

‘লেট’স মেক লাভ’ সিনেমার শ্যুটিংয়ের এক ফাঁকে মনরো, ১৯৬০ সালে তোলা ছবি।

Source: all-that-is-interesting.com

২০.

১৯৫৬ সালে বাইসাইকেলে চড়তে বেরিয়ে পড়েন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

২১.

১৯৬০ সালে ‘লেট’স মেক লাভ’ সিনেমার নাচের মহড়ায় মেরিলিন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

২২.

১৯৬১ সালে স্বামী আর্থার মিলারের সাথে ‘দ্য মিসফিটস’ সিনেমার সেটে মেরিলিন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

২৩.

১৯৫৫ সালে নিউ ইয়র্কে পত্রিকা হাতে মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

২৪.

১৯৪৯ সালে অভিনেতা লন ম্যাকঅ্যালিস্টারের সাথে ট্রেনে করে নিউ ইয়র্ক থেকে ওয়ারেনসবার্গে যাচ্ছিলেন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

২৫.

১৯৫৫ সালে ড্রেসিং রুমে জামা ঠিক করছিলেন মনরো। আলোকচিত্রী এড ফেইনগার্শ তখন ছবিটি তোলেন, এটাকে সেলফি বললেও খুব একটা ভুল হবে না!

Source: all-that-is-interesting.com

২৬.

১৯৫৬ সালে ‘বাস স্টপ’ সিনেমার শ্যুটিংয়ে মেকআপ ঠিক করছেন মনরো।

Source: all-that-is-interesting.com

ফিচার ইমেজ- staticflickr.com

Related Articles