রোজবাড!
এটি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত সিনেমাগুলোর একটি সিনেমা, যাকে অনেকে বলে থাকেন ‘বেস্ট ফিল্ম এভার মেড!’ রোজবাড এই সিনেমারই একটি ডায়লগ। নিছক ডায়লগ? এটি তার চেয়ে বড় কিছু। এই শব্দটির ভেতরেই তো লুকিয়ে আছে পুরো সিনেমার মর্মকথা। কতজনে কত মর্মার্থ বের করলেন এই শব্দটির, তবুও কোনোটিই সর্বজনের মন গলাতে পারেনি। সিনেমাটি মুক্তির আজ ৭০ বছরের অধিক সময় পার হয়ে গেছে, মুক্তি পেয়েছে কত শত মাস্টারপিস, তবুও সেই ১৯৪১ সালের সাদাকালো সিনেমাটির মধ্যেই মজে থাকেন আধুনিক কালের বাঘা বাঘা চলচিত্র সমালোচকরা। পরিচালকরা আজও সিনেমা বানাতে গিয়ে অনুসরণ করেন সেই সিনেমাটি, যা ২৬ বছর বয়সী অনভিজ্ঞ এক তরুণ পরিচালকের জীবনের প্রথম সিনেমা ছিল! প্রকৃত সিনেমাপ্রেমীরা রোজবাড শব্দটি দেখার সাথে সাথেই জানেন যে এখানে ‘সিটিজেন কেইন’ সিনেমার কথা বলা হচ্ছে।
কিছু সিনেমা তাদের অনন্য অসাধারণ গল্পের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে, কিছু ক্ষেত্রে সিনেমাকে ছাপিয়ে চরিত্রগুলো স্থান পায় ইতিহাসের পাতায়, কখনোবা সিনেমার নির্মাণ কৌশল এবং পরিচালনা একে অমর করে রাখে। তবে সবগুলোর মিশ্রণ যখন এক পাত্রে ঢালা হবে, তখন বেরিয়ে আসবে সিটিজেন কেইনের মতো মাস্টারপিস।
১৯৩৮ সালে ‘মার্কারি থিয়েটার অন দ্য এয়ার’ নামক ধারাবাহিক অনুষ্ঠানসূচীর আওতায় এইচ. জি. ওয়েলসের ‘দ্য ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ রেডিওতে প্রচার করেন ওরসন ওয়েলস। লোড শেডিং এর কারণে অনুষ্ঠানের সূচনা শুনতে পারেননি অনেকেই। আর তাই সত্যি সত্যি পৃথিবীতে এলিয়েন আক্রমণ হয়েছে বিশ্বাস করে ব্যাপক ভয়ভীতি ছড়িয়ে পরে শ্রোতাদের মনে। এ ঘটনাই ছিল হলিউডের পথে তথা সিটিজেন কেইন নির্মাণের পথে ওরসন ওয়েলসের যাত্রার প্রথম ধাপ।
কোনো সিনেমাকে হুট করেই সর্বকালের সেরা বলে দেয়া যায় না। এ কাজটি ভীষণ কঠিন এবং অনেকের মতে অসম্ভব। সিটিজেন কেইনকেও হুট করেই কালের শ্রেষ্ঠ সিনেমা বলে দেয়া হয়নি। যদিও ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের তালিকায় সেরা সিনেমার অবস্থানটি বর্তমানে ভার্টিগোর দখলে, তথাপি সিটিজেন কেইন সেখানে ছিল অনেকদিন। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। এ ছবির টেকনিক্যাল দিক, যা সিনেমা নির্মাণে অনেক প্রথমের সূচনা করেছিল, এর সহজ স্বাভাবিক গল্পের আড়ালে বিভিন্ন সামাজিক অস্বচ্ছতাকে কটাক্ষ করা, পরোক্ষভাবে উইলিয়াম র্যান্ডলফ হার্স্টের জীবনী কিংবা রোজবাড। এসবের বাইরেও তরুণ অনভিজ্ঞ নির্মাতা ওরসন ওয়েলসের প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করে দেয়ার ব্যাপার তো আছেই।
তখন হলিউডের স্বর্ণযুগ চলছে। স্বর্ণযুগের সবচেয়ে সফল ৫টি সিনেমা নির্মাণকারী কোম্পানির একটি হচ্ছে ‘আরকে রেডিও পিকচারস’। পরপর দু’টি সিনেমার স্ক্রিপ্ট জমা দিয়েও আরকে স্টুডিওর মন গলাতে ব্যর্থ ওয়েলস সফল হন তৃতীয়বারের চেষ্টায়। সেবার তিনি সিটিজেন কেইনের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। গ্রেগ টডের মতো প্রতিভাবান আলোকচিত্রগ্রাহকের কাঁধে ক্যামেরার দায়িত্ব তুলে দিয়ে সাংবাদিক হারমান জে ম্যাকেঞ্জির সাথে চিত্রনাট্য লেখার কাজ করলেন নিজেও। আর সিনেমার পর্দার নায়ক এবং পর্দার আড়ালের নায়ক, এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হলেন ওয়েলস! হ্যাঁ, তিনিই এই সিনেমার পরিচালক এবং মূল চরিত্র চার্লস ফস্টার কেইনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সিনেমার প্রযোজকও ছিলেন তিনিই!
সিনেমার শুরুটা হয় চার্লস ফস্টার কেইনের সুবিশাল, জাঁকালো, প্রাসাদতুল্য বাড়ি জেনেডুকে বাইরে থেকে দেখানোর মধ্য দিয়েই। এরপরই রহস্যময় শব্দ ‘রোজবাড’ উচ্চারণ করে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। পুরো সিনেমাটি তার জীবনের গল্পই বলে চলে ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে। সাংবাদিক লিল্যান্ড, ব্যবসায়ী বার্নিস্টাইন এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুজানের সাক্ষাৎকারই এই স্মৃতিচারণের উৎস। চার্লস ফস্টার কেইনের হলুদ সাংবাদিকতার চর্চা করে ধনী হয়ে ওঠা, নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং শেষকালে সার্বিক ব্যর্থতায় হতাশার সাগরে খাবি খাওয়া মানসিক যন্ত্রণাই গল্পের মূল উপজীব্য। আর সেই রহস্যময় শব্দ রোজবাড? সিনেমার শেষ দৃশ্যে দেখা যায় সেটি হচ্ছে কেইনের শৈশবের স্লেজ গাড়িটি, যেটি তাকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেয়ার সময় কিনে দেয়া হয়। এ দৃশ্যের পর সিনেমাটি একটি শৈশব হারানো মানুষের স্মৃতিকাতরতার সিনেমাও হয়ে গেল না?
যা-ই হোক, সিটিজেন কেইন নির্মাণের পর প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও নাটকীয়তার সম্মুখীন হয়। অনেক ডিস্ট্রিবিউটর তথা পরিবেশকই ছবিটি প্রদর্শন করতে অসম্মতি জানান। তাদের অসম্মতি যে বাস্তবসম্মত ছিল তা সিনেমা মুক্তির কিছুদিনের মধ্যেই বোঝা যায়। বক্স অফিসে ভীষণভাবে ব্যর্থ হয় ছবিটি। উচ্চাকাঙ্ক্ষী এই ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসার বন্যায় ভাসলেও সমকালীন দর্শকদের মনে ঠাঁই করে নিতে পারেনি। তা অবশ্য এর ৫টি ক্যাটাগরিতে অস্কার জয়ে বাঁধা হতে পারেনি।
সমকালীন সমালোচকগণ তো একবাক্যে মেনে নিয়েছিলেন যে সিটিজেন কেইন তখন পর্যন্ত টেকনিক্যালি হলিউডের শ্রেষ্ঠ সিনেমা, যেখানে এমন অনেক নির্মাণশৈলী ব্যবহার করা হয়েছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি। মাইকেল অ্যারেন্ডা নামক একজন সমালোচক এ ব্যাপারে বলেছিলেন,
সিটিজেন কেইনের নির্মাতারা সিনেমা নির্মাণে এবং সৃষ্টিশীলতায় স্বাধীনতা পেয়েছেন। আর তারা সেটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন। তাদের নির্মাণকৌশল নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো সিনেমা নির্মাণ সম্পর্কে ধারণাই বদলে দিয়েছে। এতদিন সিনেমা কেবল গল্পের মাধ্যমে গল্প বলতো, এখন নির্মাণকৌশলের মাধ্যমেও গল্প বলবে।
সিনেমার প্রযুক্তিগত অনন্যতা এবং নানাবিধ নতুনত্বের প্রচলন সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই চলে আসবে এর সিনেম্যাটোগ্রাফি বা আলোকচিত্রগ্রহণের দিকটা। সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যেই ডিপ ফোকাস লেন্সের ব্যবহার করা হয়েছে যাতে একটি দৃশ্যের সবগুলো উপকরণ এক ফ্রেমেই ধরা পড়ে।
ফোরগ্রাউন্ড এবং ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা করে ফোকাস করার সেই সময়কার প্রচলিত নিয়ম ভাঙাটা ছিল এই সিনেমার প্রথম উদ্ভাবন। অন্যদিকে, কোনো দৃশ্যে কোনো একটি চরিত্রকে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তুলতে সিটিজেন কেইন ঐ চরিত্রটির উপর পুরো দৃষ্টি নিবদ্ধ করে না। বরং, কথোপকথনের মাঝে যাকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হবে, তার গতিবিধির উপর ফোকাস করা হয় অন্যান্য চরিত্রকে ফ্রেমে রেখেই।
প্রায় প্রতিটি দৃশ্যেই দর্শককে ভাবিয়ে তোলার জন্য কোনো না কোনো উপকরণ এনে হাজির করে সিটিজেন কেইন। কোনো কোনো দৃশ্যে সে উপকরণ হাজির করা হয়েছে নিছক ক্যামেরার চাতুরি এবং উপমার সাহায্যে। সেই দৃশ্যটির কথা মনে আছে, যখন চার্লস ফস্টার কেইনকে তার সমস্ত সংবাদপত্র ব্যবসার বাজেয়াপ্ত হয়ে যাওয়ার সংবাদ পড়ে শোনানো হচ্ছে? তখন তিনি ফায়ার প্লেসের পাশে বিশাল জানালাগুলোর দিকে ধীর লয়ে হেঁটে যেতে থাকেন। প্রথমে জানালাগুলো তার চেয়ে ছোট দেখালেও ধীরে ধীরে মনে হয় যেন সেগুলো বড় হয়ে যাচ্ছে এবং কেইনের দেহ সঙ্কুচিত হচ্ছে।
পরিপার্শ্বের মাঝে কেইনের ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়া তার সমস্ত ব্যবসার উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোরই উপমা। এর পাশাপাশি গল্পের বুননটাও দেখুন একবার। এর আগের দৃশ্যেই মিস্টার থ্যাচারকে কটাক্ষ করে কেইন একটি উক্তি করেন, এভাবে চালিয়ে গেলে ৬০ বছর পর এই কোম্পানিটি বন্ধ করতে হবে। পরবর্তী জীবনে কেইনের এই কটাক্ষভরা উক্তিটিই বাস্তবায়িত হয়েছিল, যা এর পরের দৃশ্যেই ফ্ল্যাশব্যাক করা হয়। গল্প বলার চমৎকার ধরণ, তাই নয় কি?
ক্যামেরার সৃষ্টিশীল চালনা যে দর্শককে সিনেমার একেকটি দৃশ্যের গভীরে তলিয়ে দেখতে সহায়তা করে, তা সিটিজেন কেইন সিনেমার মাধ্যমে সার্বজনীন রূপ পেয়েছিল। উদাহরণ স্বরূপ কেইনের বালক বয়সের দৃশ্যটিই কল্পনা করা যাক। জানালার বাইরে খেলতে থাকা কেইনকে ফ্রেমে রেখেই ভেতরে আলাপরত কেইনের মা, বাবা ও থ্যাচরকে দেখানো হয়।
কেইনের মা জানালা থেকে সরে এসে টেবিলের পাশে রাখা চেয়ারটিতে বসার অংশটিতে দুটি বিষয় উদ্ভাবন করেছেন ওয়েলস। প্রথমটি সিনেমা সেটের সবকিছুকে সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত দেখানো। এটি করতে গিয়ে তিনি একটি বিশেষ টেবিল ব্যবহার করেছেন যেটি মাঝখান থেকে দু’ভাগ হয়ে দু’দিকে সরে যেতে এবং পুনরায় একত্রিত হতে সক্ষম। ফলে ক্যামেরা পিছিয়ে আনার সময় এই টেবিল কোনো বাঁধার সৃষ্টি করেনি এবং ক্যামেরা স্থির হলে টেবিলটিকে যথার্থই দেখাচ্ছিল।
দ্বিতীয় ব্যাপারটা হলো ক্যামেরার চলন। আগেই বলা হয়েছে, সিটিজেন কেইনে কারো উপর ফোকাস করবার জন্য তার গতিবিধিকে ফোকাস করা হয়েছে। এ দৃশ্যে দেখা যায়, কেইনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কেইনের বাবার মতামতের গুরুত্ব দেননি তার মা মেরি। অর্থাৎ, মেরিই এই দৃশ্যের প্রধান ব্যক্তিত্ব যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। আর এ ব্যাপারটি ক্যামেরার মাধ্যমে অভিনব উপায়ে ফুটিয়ে তুলেছিলেন ওয়েলস।
প্রতিটি ফ্রেমেই যতক্ষণ মেরি হেঁটেছেন, ততক্ষণ মেরির গতিবিধিকে ফোকাসে রেখে ক্যামেরার অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে, যদিও বাকি দু’জনও ফ্রেমে ছিলেন পরিপূর্ণভাবে। যখনই মেরি থেমে গেলেন জানালার কাছে এসে, তখন ক্যামেরাও স্থির হয়ে গেল, যদিও কেইনের বাবা হাঁটাচলা করছিলেন। আর এ ফ্রেমগুলোতে বারবারই মেরিকে থ্যাচার এবং কেইনের বাবার মাঝখানে রেখে ফোকাস করা হয়েছে। অর্থাৎ, সকল আকর্ষণের কেন্দ্রে তো তিনিই!
সিনেমার চরিত্রকে প্রয়োজন মাফিক ‘লার্জার দেন লাইফ’ করে উপস্থাপন করার জন্য কেইনের অমর উদ্ভাবন অপেক্ষাকৃত নিচু কোণে শট নেওয়া। কেইনের নির্বাচনী প্রচারণায় বিশেষভাবে এই শট ব্যবহার করা হয়, যা করতে সেটের মাঝে গর্ত পর্যন্ত করা হয়! অপটিকাল প্রিন্টারের ব্যবহার ছিল আরো একটি বৈপ্লবিক উদ্ভাবন। দর্শকের মনে বিশেষ রহস্য কিংবা আতিশয্যের ভাব সৃষ্টি করতে তিনি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। এতে দু’টি দৃশ্যের পৃথকভাবে ছবি তুলে একই ফ্রেমে বসিয়ে দেয়া হয়। সিনেমার প্রথমেই বাইরে থেকে ধীরে ধীরে জানালা দিয়ে জেনেডুর ভেতরে নিয়ে যাওয়া কিংবা কেইনের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী প্রচারণার জমায়েতের দৃশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে এ প্রযুক্তি।
এতসব ক্যামেরার চাতুরি আর নির্মাণের অভিনব কৌশল যে এ সিনেমায় লুকিয়ে আছে, তা একজন সাধারণ দর্শকের চোখে নাও ধরা দিতে পারে। কারণ, সিটিজেন কেইনের গল্প বলার স্টাইল একরৈখিক এবং এর গল্পও খুব একটা আহামরি কিছু নয়। আহামরি ততক্ষণ নয়, যতক্ষণ না আপনি জানতে পারছেন এই সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যই গল্প বলছে এর নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে।
অন্যদিকে সিনেমাকে বাস্তব জীবনের সাথে পুরোপুরি এক সুতোয় গেঁথে ফেলতে মেকআপের গুরুত্ব কত বেশি তা সিটিজেন কেইন দেখলে অনুধাবন করা যায়। চার্লস ফস্টার কেইনের বৃদ্ধ বয়সের দৃশ্যগুলোতে একবারের জন্যও কি হয়েছে যে এই লোকটিই ২৬ বছর বয়সী ওয়েলস? বার্নার্ড হারম্যানের মিউজিক আর আইজেনস্টাইনের সম্পাদনাও ছিল চমৎকার।
সিটিজেন কেইন সিনেমা থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে। হলুদ সাংবাদিকতার খারাপ দিক কিংবা অর্থবান হয়ে নির্বাচনের মতো গণতান্ত্রিক ব্যাপারগুলো প্রভাবিত করা, নৈতিক স্খলন ইত্যাদি। আবার শেষ বয়সে কেইনের যুবতী সুজানকে বিয়ে করার রহস্য খুলে যায় শেষ দৃশ্যের রোজবাড নামক স্লেজগাড়িটির পুড়ে যাওয়া দেখে।
শৈশবেই বাবা-মা’র সান্নিধ্য থেকে দূরে এসে বোর্ডিং স্কুলে বেড়ে ওঠা কেইন, শেষ বয়সে অনেকটাই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন এবং নিজের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট সুজানের মাঝেই যেন রঙহীন শৈশবের ক্ষতিপূরণ খুঁজে পেতে চেষ্টা করেন। সিটিজেন কেইনের গল্পের এসব দিকও ছাপিয়ে যায় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এর উদ্ভাবনী প্রভাবের জন্য। এই সিনেমা মুক্তির পর সিনেমা নির্মাণের কৌশলই পাল্টে যায়, সিনেমা শিল্প হয়ে ওঠার দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে যায়। ট্রুফো, স্করসেসে আর স্পিলবার্গের মতো কিংবদন্তী পরিচালকারও প্রভাবিত ওরসন ওয়েলসের অমর সিনেমা সিটিজেন কেইন দ্বারা। তাহলে একে সর্বকালের সেরা সিনেমা বলতে দোষ কোথায়?
ফিচার ছবি: youtube.com