Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রহস্যে ঘেরা আমাজনের অনবদ্য থ্রিলার

রহস্য অনেকেই ভালোবাসে। কোনো কিছুর অনিশ্চয়তা, উত্তেজনা, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা মানব মস্তিষ্কে এক অন্য অনুভূতির জন্ম দেয়। সেই অনুভূতি রহস্য সম্পর্কে আরো গভীরে জানতে চাওয়ার এক ভীতিমিশ্রিত অনুভূতি। ‘আমাজন’ এই পৃথিবীর সেরকম এক রহস্য। বিপদসঙ্কুল এই অরণ্যের অনেক কিছুই এখনো অজানা। বরাবরের মতোই আমাজন যেন ভালোবাসে অনিশ্চয়তা। আর কোনো বই যখন হয় সেই আমাজনকে নিয়েই, তখন সেটা লুফে নেবার মতো পাঠকের ঘাটতি হয় না বটে। তার উপর যদি হয় থ্রিলার, রহস্যপ্রিয় পাঠক তো অবশ্যই হাতছাড়া করতে চাইবেন না।

আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে জনপ্রিয় একাধিক বেস্টসেলার অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার থ্রিলারের লেখক জেমস রোলিন্স তার বই ‘আমাজনিয়া’তে পাতায় পাতায় যে রহস্য আর প্রযুক্তির খেলা খেলেছেন, সেটি আকর্ষণীয়।

লেখক জেমস রোলিন্স; Image Source: The San Diego Inion- Tribune

গল্পটা ২৫ জুলাই, সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে আমাজনের মিশনারির এক গ্রামে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উপনীত এক আগন্তুকের হোঁচট খাওয়া দিয়ে শুরু। যে আগন্তুক চার বছর আগে হারিয়ে যায় আমাজনের বিপদসঙ্কুলতায়। তার পরিচয়- তিনি সিআইএ’র একজন অপারেটিভ এবং সাবেক স্পেশাল ফোর্সের সৈনিক এজেন্ট জেরাল্ড ক্লার্ক।

চার বছর পর হঠাৎ তার এই আবির্ভাবে ওয়াশিংটনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন। অবাক করার মতো বিষয় হলো, এজেন্ট যখন আমাজনে গিয়েছিলেন, তখন তার একটিমাত্র হাত ছিল, কিন্তু চার বছর পর তিনি ফিরে আসেন দুটি হাত নিয়ে।

এই এজেন্টের সাথে সাথে হারিয়ে গিয়েছিলেন গবেষণাকারী দলের আরো চারজন সদস্য। এই চার বছর এজেন্ট ও তার দলের সদস্যরা কোথায় ছিলেন, কীভাবে তার আর একটি হাত গজিয়েছিল- এসব উত্তর তদন্ত করার জন্য আমাজনের সবচেয়ে অভিজ্ঞ নৃ-উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাথান র‍্যান্ডের নেতৃত্বে আমেরিকান রেঞ্জার্সদের একটি দল পাঠানো হলো। নাথার র‍্যান্ডের বাবা কার্ল র‍্যান্ড সেই গবেষণাকারী দলের একজন ছিলেন, যিনি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে বার্তা পাঠিয়েছিলেন-

সাহায্য পাঠাও… বেশি সময় টিকতে পারছি না। ওহ্ ঈশ্বর! ওরা আমাদের ঘিরে আছে…!

কারা ঘিরে আছে? আর কীভাবে এর পরেই নিখোঁজ হয়ে গেল সেই দল, যার চার বছর পর ফিরে এসেছিল এজেন্ট ক্লার্ক এক অজ্ঞাত রোগ নিয়ে, যার চিকিৎসা মিশনারিতে এক শামান (আদিবাসী চিকিৎসক) দিতে নারাজ হয়েছিল। শামান বলেছিল, সে অভিশপ্ত, অভিশাপ বয়ে এনেছে, যাকে পুড়িয়ে না ফেললে এর ফল ভালো হবে না।

গহীন অরণ্যের বুক চিরে বয়ে গেছে প্রমত্তা আমাজন নদী; Image Source: Freethinking

আর সেটিই সত্যি হয়েছিল ক্লার্ক-এর মৃত্যুর পর। সেই মিশনারির বাচ্চারা আক্রান্ত হতে লাগলো অজ্ঞাত ছোঁয়াচে রোগে। ক্লার্কের মৃতদেহ বহন করে আকাশপথে আনা হয়েছিল ভার্জিনিয়ার ফরেনসিকে, আর সে মৃতদেহ আনার পরপর পুরো শহরই ছেয়ে যায় সেই অজ্ঞাত রোগে, যার প্রতিষেধক জানা নেই কারো।

আবালবৃদ্ধবনিতা আক্রান্ত হতে থাকে, মৃত্যুবরণ করতে থাকে। ভয়াবহ দ্রুততায় ছড়িয়ে পড়ে কিছু বোঝার আগেই। এই রোগে আক্রান্তদের ক্রোমোজোমের ডাবল হেলিক্স গঠন সবাইকে চিন্তিত এবং ভীত করে তুলে। আসলেই কি এই রোগের কোন প্রতিষেধক নেই? নাকি লুকিয়ে আছে এই রহস্যঘন জঙ্গলে, যা আজো অনাবিষ্কৃত?

এত সবকিছুর রহস্য উদঘাটনে এই বিপদসঙ্কুলতা পাড়ি দেয়া দলটি অচিরেই জানতে পারে, তাদের পেছনে লেগেছে কেউ। কে লেগেছে? আমাজনেরই কোন রহস্যময় জাতি? নাকি অন্য কোন ছদ্মবেশী দল? এমতাবস্থায় কী করবে তার দল? 

জেমস রোলিন্স এর জন্ম ১৯৬১ সালে আমেরিকার শিকাগোতে। ছোটবেলা থেকেই এডভেঞ্চার প্রিয় ছিলেন তিনি। ফারাও রাজা তুতেন খামেনের কবর আবিষ্কারক হাওয়ার্ড কার্টারের জীবনকাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু করেন লেখালেখি। 

তার প্রায় সব লেখাতেই দেখা যায় এডভেঞ্চারের ছাপ। তাঁর জনপ্রিয় লেখাগুলোর মাঝে আমাজনিয়া, এক্সকেভেশান, আইস হান্ট, সাবটেরেনিয়ান, দীপ ফ্যাদম এবং স্যান্ডস্টর্ম অন্যতম। এছাড়াও তিনি ইন্ডিয়ানা জোন্স-এর চতুর্থ সিনেমার ‘ইন্ডিয়ান জোন্স-দ্যা কিংডম অব ক্রিস্টাল স্কাল’ কাহিনী লিখেছেন। তিনি বর্তমানে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়াতে বসবাস করছেন।

বইটি অনুবাদ করেছেন মো. রাকিব হাসান। আমাজনিয়া তার প্রথম অনুবাদগ্রন্থ।

আমাজনিয়া
আমাজনিয় : রহস্যময় আমাজনের অনবদ্য থৃলার

রহস্য পিপাসু আমি। সেই পিপাসা পূরণেক্ষেত্রে বইটিকে শতভাগ সফল বলবো। যুগ যুগ ধরে সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা আমাজন সম্পর্কে পাতায় পাতায় তথ্য দিয়ে রেখেছেন লেখক। যত গভীরে যাওয়া যায় ততই আগ্রহ বাড়বে বৈ কমবে না। পাঠক যদি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন, যদি উদ্ভিদতাত্ত্বিক হয়ে থাকেন, এমনকি যদি চিকিৎসকও হয়ে থাকেন, এই বই সব দিক দিয়ে পাঠকের জ্ঞানের ক্ষুধা মেটাবে বলে আশা করি আমি।

জেমস রোলিন্স অনবদ্য একজন লেখক। পাশাপাশি অনুবাদকের প্রথম বই হিসেবেও বলবো- অসাধারণ। মো. রাকিব হাসান তার অনুবাদে সার্থক। ভাবের আদান-প্রদান, প্রাচীন মিথ, বিস্ময়কর প্রযুক্তির সঠিক অনুবাদ কিছুটা কঠিন হলেও তিনি সফলভাবে শেষ করেছেন।

বইয়ের নাম: আমাজনিয়া || লেখক: জেমস রোলিন্স

প্রকাশক: অ্যাভোন বুকস্‌ ||  বাংলাদেশে প্রকাশক || বাতিঘর প্রকাশনী

অনলাইন প্রাপ্তিস্থান: রকমারি.কম

This Bengali article is the review of the book, 'Amazonia' written by James Rollins.

Featured Image: herpercollins.com

RB-TI/SM

Related Articles