Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নিকোলাস রে’র ‘ইন আ লোনলি প্লেইস’: ফিল্ম নোয়াহ্’র সংজ্ঞা বদলে দেওয়া গ্রেট সিনেমা

ভদ্রতা, বিনয়ের লেশমাত্র নেই লোকটির মাঝে। উদ্ধতপূর্ণ আচরণ দেখে মনে হয়, নীল রক্তধারী। স্বভাবটাও বেশ ঠোঁটকাটা। সুন্দরী যখন গালভরা সুমিষ্ট হাসি দিয়ে বলে উঠল, “মনে করতে পারছেন না? আমি আপনার লেখা অমুক সিনেমার অভিনেত্রী ছিলাম।” জবাবে লোকটি চোয়াল শক্ত রেখেই আঁটসাঁট উত্তর ছুঁড়ে দিল, “আমি নিজের লেখা সিনেমা কখনো দেখি না।” সুন্দরীর পাশে বসা স্বামীর কথার পিঠেই আরেকটু হলে মাঝরাস্তার ট্রাফিক সিগন্যালে তুমুল হাতাহাতি বেঁধে যেত স্যুট-ব্যুট পড়া ভদ্রবেশি দুই মেজাজি লোকের। ডিক্সন স্টিল নামক লোকটি তো গাড়ি থেকে নেমেই পড়েছেন “কিছু একটা ঘটাব” উদ্দেশ্য নিয়ে। ভাগ্যিস, সবুজ বাতিও জ্বলে উঠল, আর সুন্দরীর স্বামী শেষমূহুর্তে মেজাজ ধরে গিয়ারে চাপও দিল। সুন্দরী যদি শুরুতেই ডিক্সন স্টিলের পরিচয় না দিতেন, তবে নিশ্চিতভাবে ধরে নেওয়া যেত, এই লোক হয় নিশ্চয় কোনো ডাকাত সর্দার। 

In A Lonely Place (1950) | Geeks
সিনেমার পোস্টার; Image Source: Vocal

সিনেমার ছোট্ট কিন্তু অর্থবহ এই প্রারম্ভিক দৃশ্য, প্রধান চরিত্র ডিক্সন স্টিল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সফলতার সাথেই দেয়। পরের দৃশ্যে তা আরো বেশি পরিষ্কার হয়। হলিউডের একসময়ের সফল চিত্রনাট্যকার এই লোক, দীর্ঘসময় ধরেই নতুন কোনো চিত্রনাট্য লেখেননি। বারের দৃশ্যে ডিক্সনের পাশে বসা হিট পরিচালক ডিক্সনকে খোঁচা দিয়ে যখন বলেন, “যুদ্ধের আগ থেকেই তো তোমার কোনো হিট নেই।” জবাবে ডিক্সন বলে, “তুমি তো গত ২০ বছর ধরেই ওই রিমেক, অ্যাডাপশন করেই টিকে আছো, বাজারি পরিচালক কোথাকার!” এখানে যে বিষয়টি স্পষ্ট, তা হলো; আত্মমগ্ন, উদ্ধতস্বভাবের এই ডিক্সন স্টিল হুটহাট মেজাজ হারিয়ে প্রচণ্ড সহিংস হয়ে উঠতে পারেন। মেজাজ চড়ে গেলে স্থান-কাল-পাত্র কিছুই তার মাথায় থাকে না। বারে, মদের গ্লাস হাতে রাগে অন্ধ হয়ে যাওয়া, তারপর কারো না কারো গায়ে হাত তোলা- এসব হল্লা বাঁধানো ডিক্সনের রোজকার কাজ।

ডিক্সন স্টিলকে একটি পাঠকপ্রিয় উপন্যাসের উপযুক্ত চিত্রনাট্য লেখার ভার দেওয়া হয়। কাজটি করতে একদমই অনাগ্রহী তিনি, কিন্তু অসার হয়ে পড়া ক্যারিয়ারটাকেও তো চাঙ্গা করে তুলতে হবে। উপন্যাসটি পড়ার বিতৃষ্ণা থেকেই  তিনি, বারে আসা ব্যক্তিদের টুপি/কোট সামলে রাখার দায়িত্বরত মেয়েটিকে তার বাসায় আসতে বলেন। সরাসরি বাসায় আসার প্রস্তাবে মিলড্রেড নামের মেয়েটা ভেবে বসে, বড় এই চিত্রনাট্যকার পরোক্ষভাবে তাকে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করছেন। তবে অবিলম্বেই মিলড্রেডের ভুল ভাঙে এবং কারণ জানতে পেরে আনন্দে আপ্লুত হয়ে ওঠে সে।

ডিক্সন, মিলড্রেডকে ওই উপন্যাসটি তাকে পড়ে শোনানোর জন্য বাসায় আমন্ত্রণ জানান। নিজে পড়ার কষ্টটাও হবে না, আর যদি মিলড্রেডের বয়ানে গল্পটা তার ভালো লাগে, তবে চিত্রনাট্য লেখার কাজেও হাত দেওয়া যাবে। তা বাড়িতে প্রবেশের আগেই বাড়ির আঙিনায় ডিক্সন আর মিলড্রেডের সাক্ষাৎ হয়, ডিক্সনের প্রতিবেশী লরেলের সাথে। তার বাড়ির ঠিক উল্টোদিকের বাড়িটাই লরেলের।

লরেলের সাথে সাক্ষাতের মুহূর্তে;
Image Source: IMDB

 

আঙিনা আর ফোয়ারা সমন্বিত এই বাড়িগুলো স্প্যানিশ ধাঁচে সাজানো। একটা ঘরের জানালা থেকে আরেকটা ঘরের কর্মকাণ্ড সহজেই লক্ষ করা যায়। তা যাক। তো সে রাতে ডিক্সনকে গল্প বর্ণনার পর বাড়ি ফেরার পথে খুন হয় মিলড্রেড! অতীতের ভায়োলেন্ট রেকর্ড এবং সর্বশেষ মিলড্রেড আর তাকে একসাথে দেখা যাওয়ায়, যৌক্তিক অর্থেই সন্দেহের খাতায় ডিক্সন স্টিলের নামটিই প্রথমে টুকে নেওয়া হয়। তবে, প্রতিবেশী লরেলের সাক্ষ্যে জামিন পান এই রগচটা লেখক। এই ঘটনা এক অন্যরকম আকর্ষণের জন্ম দেয় পাশাপাশি বাড়িতে থেকেও কখনো পরিচিত না হওয়া দুই আগন্তুকের মাঝে। সৃষ্ট আকর্ষণ ধীরে ধীরে গাঢ় অনুভূতির জন্ম দেয়। পুলিশের খাতা থেকে অবশ্য ডিক্সনের নামটি তখনো মোছেনি এবং লরেলের গভীর বিশ্বাসেও সন্দেহের সূক্ষ্ম আঁচড় একসময় বড় ঘায়ের জন্ম দেয়।

থানায় সাক্ষ্য দেওয়ার দৃশ্যে;
Image Source: IMDB

 

‘গ্রেট পরিচালক’ হিসেবে সমাদৃত নিকোলাস রে সম্বন্ধে আরেক গ্রেট পরিচালক জাঁ-লুক গদার বলেছিলেন, “চলচ্চিত্র হলো নিকোলাস রে।” ফরাসি সিনেমার নবকল্লোলের পেছনে অনেক বড় প্রভাব রয়েছে ভবঘুরে এই পরিচালকের। তার গুণগ্রাহীদের মাঝে ফ্রাঁসোয়া ক্রফো, উইম উয়েন্ডার্স (ভিম ভেন্ডার্স), মার্টিন স্করসেজির মতো পরিচালকেরা রয়েছেন। ‘ইন আ লোনলি প্লেইস’ (১৯৫০)-কে নিক রে’র শ্রেষ্ঠ সিনেমা দাবি করার ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকতে পারলেও, অন্যতম শ্রেষ্ঠ সিনেমা দাবিতে কোনোরকম দ্বিমত থাকার কথা নয়।

জঁনরা বিচারে ‘ইন আ লোনলি প্লেইস’কে ‘ফিল্ম-নোয়াহ্’ উল্লেখ করা হলেও, নিকোলাস রে মূলত ফিল্ম-নোয়াহ্’র উপাদান সম্বলিত একটি নিগূঢ় ‘ক্যারেক্টার-ড্রামা’ সিনেমা বানিয়েছেন। মার্ডার/মিস্ট্রি গল্প দিয়ে সূচনা করে ফিল্ম-নোয়াহ্’র লুক, অলঙ্কারের উপস্থিতি ঘটালেও শেকড়ে, ‘ইন আ লোনলি প্লেইস’ প্রেমের সিনেমা। বিধ্বংসী প্রেমের সিনেমা। বদরাগী এক পুরুষের হৃদয়ের অন্ধকার জায়গা (যেটিকে নির্দেশ করতেই সিনেমার ও নাম) এবং সেই জায়গাটি উন্মোচন করে তাতে আলোয় ভরিয়ে দেওয়ার বাসনা নিয়ে আবির্ভূত হওয়া এক নারীকে ঘিরেই এই সিনেমা।

দ্বিমতের সুযোগ পাশে রেখেই বলতে হয়, ডিক্সন স্টিল হামফ্রি বোগার্টের শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনয়। ‘পৌরুষ’পূর্ণ চরিত্রগুলোর তুলনায়, মানসিকভাবে আহত এবং সাংঘর্ষিক এই চরিত্রেই বোগার্ট শ্রেষ্ঠ অভিনয় দিয়েছেন। ডিক্সন স্টিল চরিত্রটি বোগার্টের ব্যক্তিগত জীবনের ছায়া ভালোভাবেই মাড়িয়েছে। তার ব্যক্তিগত জীবনের মেজাজি, মদ্যপ স্বভাবেই বেড়ে উঠেছে চরিত্রটি।

ডিক্সনের রোজ বিকালে বারে বসে মদের গ্লাসে শটিত হতে দেওয়া আত্মসম্মানকে পুনরায় ফিরিয়ে দিতে আসে লরেল চরিত্রটি। ওই মেজাজ উপেক্ষা করেই ডিক্সনের অবসাদগ্রস্ত সত্ত্বাটিকে উদ্যমী করে তুলতে চায় লরেল। কিন্তু মদ পেটে পড়ার যেন ডিক্সন স্টিল হয়ে ওঠেন অন্য কেউ। এ যেন ‘ডক্টর জেকিল অ্যান্ড মি. হাইড’। লো-কি লাইটিং, লো-অ্যাঙ্গেল আর ক্লোজ আপে বোগার্টের শীতল, বিস্তৃত চোখের দৃষ্টিতেই যেন বাস করছে সোশিওপ্যাথ মি. হাইড (ডিক্সন স্টিল)। লরেলের ভয়টাও তখন যৌক্তিক হয়ে ওঠে।

ডিক্সন তখন হয়ে উঠেছেন মি. হাইড;
Image Source: IMDB

 

ডিক্সন যখন তাকে জড়িয়ে ধরে, দু’পাশ হতে হাত দুটো তার পিঠে ছোঁয়াতে লরেল ইতস্তত বোধ করে। ডিক্সন চরিত্রটির অস্পষ্টতাই লরেলের মাঝে সন্দেহ জাগায়। অন্যদিকে, লরেল চরিত্রটি ৫০ দশকের আদর্শ ঘরণী চরিত্রের সকল আর্কিটাইপ পূরণ করেছে। লরেল একইসময়ে তার স্বীয় বৈশিষ্ট্যে ডিক্সনের প্রেমিকা, ম্যানেজার, মা’র দায়িত্ব পালন করে গেছে। নিজের চাওয়াগুলো সরিয়ে, ডিক্সনের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়েছে সে। তবে একেবারে ভোলাভালাও সে নয়। এই নারী তার পথ চেনে। ডিক্সন কখনো ছেড়ে গেলে, থিতু হতে পারার ব্যবস্থাটাও তাই সে করে রেখেছে। আদর্শ প্রেমিকা এবং চৌকস নারীর এই চরিত্রটিতে গ্লোরিয়া গ্রাহাম মনে রাখার মতো অভিনয় দিয়েছেন।

পরিচালক নিকোলাস রে, সিনেমায় ডিক্সন স্টিল চরিত্রটিতে তার ‘আত্মমগ্ন সত্ত্বা’র সমালোচনা করেছেন সূক্ষ্মভাবে। প্রধান দু’টি চরিত্র ডিক্সন এবং লরেলের সাইকির সাথে, নিকোলাস রে’র নিজের সাইকিও আবছায়ায় উঠে আসে সিনেমায়। অভিনেত্রী গ্লোরিয়া গ্রাহাম, তখন পরিচালক নিকোলাস রে’র স্ত্রী ছিলেন। ইন আ লোনলি প্লেইসের শ্যুটিং চলাকালীন রে, তার প্রথম বিয়ের সন্তান অ্যান্টনি আর তার দ্বিতীয় স্ত্রী গ্লোরিয়াকে একসাথে বিছানায় আবিষ্কার করেন। তবে, দু’জনেই পেশাদারী মনোভাবের পরিচয় দিয়ে এই বিষয়টি তখন খোলাসা করেননি।

কাগজে-কলমে ১৯৫২’তে তাদের বিচ্ছেদ ঘটেছিল। কিন্তু আবেগের মাঝে ছেদটা যে তখনই (৫০ এ) তৈরি হয়েছিল, তা অনুভূত হয় সিনেমাতেই। সিনেমার আবেগপ্রবণতা থেকে বিচ্ছিন্ন চরিত্রগুলোতেই তা স্পষ্ট। নিজ সিনেমার চরিত্রগুলোকে এমন বৈশিষ্ট্যে গঠন করার ধারা রে তার প্রায় প্রতিটি সিনেমাতেই অনুসরণ করেছেন, ‘বিগার দ্যান লাইফ’ সিনেমাটি যার একটি নিখুঁত প্রমাণ।

নিকোলাস রে আর হলিউডের মূলধারার একটা দ্বন্দ্ব ছিল সবসময়। বেশ কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি, তখনকার প্রচলিত হলিউডি ধারার। এর ফলে ভেতরকার রাজনীতিতেও পড়তে হয়েছিল তাকে। তা উল্লেখ করছি কারণ, ইন আ লোনলি প্লেইস’কে হলিউডের ভেতরের গল্প হিসেবেও দেখা যায়। রে সিনেমার অনেক দৃশ্যেই চতুর সংলাপে স্পষ্ট সমালোচনা করেছেন তৎকালীন হলিউড স্টুডিও ধারার ও ভেতরের রাজনীতির।

ইন আ লোনলি প্লেইসে, সবচেয়ে জটিল ন্যারেটিভ নিকোলাস রে সৃষ্টি করেন মিলড্রেড চরিত্রটি দিয়ে। বলতে গেলে, গোটা সিনেমাতেই তিনি এই চরিত্রটিকে ব্যবহার করেছেন ‘ম্যাকগাফিন’ হিসেবে। গল্পবয়ানে তো বরাবরই নিক রে বিদিত। তিনি গল্পবয়ানে দর্শককে বারবার ম্যানুপুলেট করতেন, সফলভাবেই। তার সিনেমার চরিত্রদের দুর্বল দিকগুলোকেই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতেন।

প্রত্যেকটি ক্ষুদ্র বিবরণেই গল্পে সামনে কী হতে চলেছে, তার আভাস রাখতেন নিকোলাস রে। এই সিনেমার একটি দৃশ্যের কথাই ধরা যাক; ডিক্সন যখন তার হাতের আংটি’টায় আঙুল বোলাচ্ছিলেন, দর্শক তখনই বুঝতে পারে, লরেলকে বিয়ের প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন ডিক্সন। লরেলও তখন ডিক্সনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সন্দিহান। এ অবস্থায় ডিক্সনের প্রস্তাবে লরেল কী জবাব দেবেন, আর যদি ‘না’ করেন- তাহলে ডিক্সন কতটা ভায়োলেন্ট হয়ে উঠতে পারেন, তা ভাবতে গিয়েই শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি কাজ করা অস্বাভাবিক নয়।

লরেল তখন শঙ্কিত ডিক্সনের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে;
Image Source: IMDB

 

নিকোলাস রে গোটা সিনেমাকে গলার মালার মতো সুন্দর করে বানাতে চাইতেন। শটগুলোকে তিনি বিবেচনা করতেন মালার পুঁতি হিসেবে। প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁতি (শট) তৈরিতেই তিনি মনোযোগ দিতেন। যখন যে পুঁতি তৈরি করছেন, ওই পুঁতিতেই তার মনোযোগ নিবদ্ধ থাকত। আর যখন সব পুঁতি (শট) সাজানো বা বসানো শেষ, তখনই তিনি সম্পূর্ণ মালার (সিনেমা) দিকে তাকাতেন। আলাদা আলাদা করে ইন আ লোনলি প্লেইসের প্রতিটি শট তিনি যেভাবে বুনেছেন এবং শেষত চমৎকার সম্পাদনায় যেভাবে জোড়া লাগিয়েছেন, সে ক্রম লক্ষ করলেই পরিচালকের মাস্টারি চোখে পড়ে।

সিনেমায় চেম্বার মিউজিকের ব্যবহার চমকপ্রদ। সেট ডিজাইন শিল্পানুগ। স্প্যানিশ ধাঁচে বাড়িগুলোকে যেভাবে তিনি সাজিয়েছেন, তাতেই স্পষ্টভাবে দৃশ্যায়িত হয় লরেল আর ডিক্সনের একে অপরের উপর নির্ভরতা। নিকোলাস রে’র নির্দেশনায় বার্নেট গাফির লো-কি লাইটিং এবং ক্যামেরা; চরিত্রগুলোর নির্ভরতা, তাদের শূন্য অংশটুকুর প্রয়োজনীয়তা ভালোভাবেই বুঝতে সক্ষম হয়েছে।

রে, সিনেমার শেষ দৃশ্য সবসময় শেষেই ধারণ করতে চাইতেন। কারণ তিনি মনে করতেন, এর মাঝে হয়তো পরিবর্তন ঘটতে পারে অনেক কিছুর, হয়ত শেষ হয়ে যেতে পারে টাকাকড়ি। এবং তার এ মন্তব্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়, ইন আ লোনলি প্লেইসের অন্তিম দৃশ্য দেখে। রে’র কিছু বাড়তি দৃশ্য ধারণ করে রাখার স্বভাবের দারুণ উপকারিতা এ সিনেমাতেই বুঝতে পারা যায়। শেষ হতে পারত ‘ফিল্ম-নোয়াহ্’র চেনা পদচারণায়। কিন্তু গায়ে ফিল্ম-নোয়াহ্’র অলঙ্কার জড়িয়েও প্রতি মুহূর্তে স্বতন্ত্রতার পরিচয় দেওয়া এই সিনেমা সে স্বতন্ত্রতা ধরে রেখেই ইতি টেনেছে। সেই ‘বিধ্বংসী প্রেমের সিনেমা’ বিশেষণ’টাও তখন পূর্ণতা পায়।

সেদিনই ছিল সব বদলে যাওয়ার দিন;
Image Source: IMDB

 

ডিক্সন স্টিল যেই চিত্রনাট্যটি লিখছিলেন সিনেমায়, সেই চিত্রনাট্যের একটি সংলাপ তিনি লরেল’কে শুনিয়েছিলেন,

“আমি জন্মেছিলাম তার চুম্বনে। আমি মরেছিলাম তার পরিত্যাগে। আমি বেঁচে ছিলাম কিছু সপ্তাহ, তার ভালোবাসায়।”

ডিক্সন হয়তো অবচেতনে তার আর লরেলের ভবিষ্যৎ’টা দেখতে পেয়েছিলেন। তাই অমন সংলাপটা লরেল’কে শুনিয়েছিলেন। ‘হয়তো’টাকে হয়তো অগ্রাহ্য করা যায় কিন্তু ধীরলয়ে সিঁড়ি ভেঙে অন্ধকার আর একাকিত্বে ফের মিলিয়ে যাওয়ার আগে ডিক্সনের আলতো করে ঘাড় ঘুরিয়ে মেলে ধরা সেই করুণ দৃষ্টিকে নয়।

This bengali article is an in-depth review of the great film 'In A Lonely Place' (1950). It's a classic example of the 'Film-Noir' genre. It's directed by one of the greatests American director of all time, Nicholas Ray. He is a great film director of the Cinema history as well. Not only American. Maestro Jean-Luc Godard once said, "CINEMA IS NICHOLAS RAY!" This film is one of the bests or the very best of Ray.

Featured Image: Columbia Pictures

Related Articles