প্রতিবছর বিশ্বে কয়েক হাজার সিনেমা মুক্তি পায় এবং এই সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। তাই কারো পক্ষেই সবগুলো মুভি দেখা সম্ভব নয়, সম্ভব শুধুমাত্র ভাল মুভিগুলোই দেখা। তাই আমরা প্রত্যেকেই কোনো মুভি দেখার আগে সেটি ভাল না খারাপ তা জানার জন্য কোনো না কোনো মুভি রিভিউ ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারি। তবে সব ওয়েবসাইটের রিভিউ এবং রেটিং দেয়ার ধরন একরকম নয়। তবে আমাদের সবচাইতে পছন্দ দুটি ওয়েবসাইট। সে দুটো ওয়েবসাইট নিয়েই আজকের আয়োজন। আমরা দেখব দুটো ওয়েবসাইটের জন্ম কীভাবে হলো এবং তারা কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে রেটিং দিয়ে থাকে এবং কার রেটিং সবচাইতে গ্রহণযোগ্য।
রটেন টম্যাটোস
এই নাম শুনলেই মনে পড়ে যাবে পুরনো সময়ের কথা, যেখানে মঞ্চে কোনো বাজে প্রদর্শনী হলে দর্শক তার উত্তর হিসেবে পচা টমেটো ছুঁড়ে মারতো। এই ওয়েবসাইটের নামকরণও অনেকটাই সেই ঘটনাকে স্মরণ করে।
১৯৯৮ সালের ১৮ আগস্ট রটেন টম্যাটোসের যাত্রা শুরু হয় সেনহ ড্যুংয়ের হাত ধরে। তিনি ছিলেন জ্যাকি চ্যানের অনেক বড় ভক্ত। তাই জ্যাকি চ্যানের নতুন মুভি কেমন তা জানার চেষ্টা করতে গিয়েই তিনি বুঝতে পারলেন, বিভিন্ন সমালোচকের রিভিউ যদি আলাদা আলাদা না থেকে একজায়গায় থাকতো, তাহলে কেমন হতো? সে ভাবনা নিয়েই কাজ শুরু করেন ড্যুং। তখন তিনি ডিজাইন রিয়েক্টর নামের এক ওয়েব ডিজাইন স্টুডিওতে কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে তিনি এই ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করা শুরু করলেন। মোট দুই সপ্তাহ লেগেছিলো ডিজাইন এবং কোডিং করতে।
এই ওয়েবসাইটের নামকরণের পেছনের গল্পও অনেক মজার। প্রথমে তিনি চেয়েছিলেন তার প্রিয় টিভি শো সিস্কেল অ্যান্ড এলবার্টের মতো থাম্বস আপ বা থাম্বস ডাউন নাম দিতে। কিন্তু সেই ডোমেইন নেম আগেই কেউ নিয়ে ফেলেছিলো। তারপর তিনি চেষ্টা করলেন ক্রিটিকস, রিভিউ এসব নাম দিতে। কিন্তু সেগুলোতেও কোনো কাজ হচ্ছিলো না। হঠাৎ তার মনে পড়লো ‘লিওলো’ নামের এক অদ্ভুত মুভির কথা, যেখানে এক ছেলে নিজেকে টমেটো কল্পনা করত। তখন তিনি ভাবলেন একটি টমেটোর অবস্থা দিয়ে একটি মুভির রেটিং বেশ ভালোভাবেই দেয়া যায়। পঁচা টমেটো মানে বাজে মুভি আর ফ্রেশ বা তাজা টমেটো মানে ভালো মুভি। ব্যাস হয়ে গেলো ওয়েবসাইটের নাম রটেন টম্যাটোস।
ড্যুং চেয়েছিলেন এই ওয়েবসাইটটি আগস্টের ২০ তারিখে চালু করতে, কারণ সেই একই দিনে জ্যাকি চ্যানের রাশ আওয়ার মুভিটিও মুক্তি পাবে। কিন্তু হঠাৎ করে মুভিটির মুক্তি পেছানো হলো। এদিকে সাইটের সব কিছু আগেই প্রস্তুত করে রেখেছিলেন ড্যুং। তাই তিনি রাশ আওয়ারের মুক্তির অপেক্ষা না করে ১৮ আগস্ট থেকেই সাইটটি চালু করে দিলেন। রটেন টম্যাটোসে দেয়া প্রথম মুভির রিভিউ ছিল Your Friends & Neighbors। যদিও ড্যুং চেয়েছিলেন প্রথম মুভি হিসেবে রাশ আওয়ারের রিভিউ দিতে।
এরপর ড্যুং দিনে ডিজাইন রিয়েক্টরে কাজ করতেন, রাতে তিনি সাইট সামলাতেন। কিন্তু একসময় তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, পুরো সময় তিনি রটেন টম্যাটোসের পিছনেই ব্যয় করবেন। তাই তিনি চাকরি ছেড়ে দেন এবং দুজন স্কুল ফ্রেন্ডকে নিয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করেন।
যা-ই হোক, সেই ওয়েবসাইটের মালিকানা কয়েক হাত ঘুরে এখন ফান্ডাংগোর কাছে। ২০১৬ সালে ফান্ডাংগো রটেন টম্যাটোসের প্যারেন্ট সাইন ফ্লিক্সস্টার কিনে নেয়।
বর্তমানে অনেকেই রটেন টম্যাটোসের রেটিং ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট না। বিশেষ করে কিছু ভালো মুভি যখন টম্যাটোমিটারে কম রেটিং পায়। প্রশ্ন জাগতেই পারে, ঠিক কীভাবে তারা কোনো মুভির রেটিং দেয়?
প্রক্রিয়াটি যতটা ভাবা হয়, তার চেয়েও জটিল। মূলত রটেন টম্যাটোতে দুটি রেটিং দেখা যায়। একটি টম্যাটোমিটার, আরেকটি অডিয়েন্স স্কোর। টম্যাটোমিটার সমালোচকদের রিভিউ আর অডিয়েন্স স্কোর সাধারণ দর্শকদের। তবে অনেক সময় দেখা যায়, কিছু মুভি টম্যাটোমিটারে রটেন পেলেও সাধারণ দর্শকেরা বেশ পছন্দ করেছে। তবে সে বিষয়ে কথা বলার আগে কথা বলে নিই টম্যাটোমিটার ঠিক কীভাবে কাজ করে।
টম্যাটোমিটার নির্ধারিত হয় পেশাদার সমালোচকদের রিভিউয়ের উপর ভিত্তি করে। টম্যাটোমিটার কোনো অ্যাভারেজ নাম্বার নয়, বরং তা বোঝায় শতকরা কতজন সমালোচকের ভাল লেগেছে। রটেন টম্যাটোসে প্রায় তিন হাজার নিবন্ধিত সমালোচক আছে। যদিও সব সমালোচক সব সিনেমার জন্য রিভিউ দেন না। তাই প্রতিটি মুভির জন্য সর্বোচ্চ কয়েকশো সমালোচকের রিভিউ নেয়া হয়। এই সমালোচকদের প্রতি বছর কমপক্ষে একটি রিভিউ কোনো স্বীকৃত ওয়েবসাইট কিংবা কোনো নিউজপেপার ইত্যাদিতে প্রকাশ হতে হবে।
রটেন টম্যাটোসে কিউরেটরদের একটি গ্রুপ আছে, যাদের কাজ কেবল মুভি এবং টেলিভিশন সিরিজ নিয়ে রিভিউ পড়া এবং সিদ্ধান্ত নেয়া সেগুলো কি ফ্রেশ নাকি রটেন। এজন্য তাদের খুব সাবধান থাকতে হয় এবং বেশ মনোযোগ সহকারে প্রতিটি রিভিউ পড়তে হয়। যদি কোনো রিভিউতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকে, তাহলে তারা সেই সমালোচককে জিজ্ঞেস করা হয়, এটা কি রটেন নাকি ফ্রেশ?
তারপর কোনো মুভি বা টিভি সিরিজের মোট যতগুলো রিভিউ নেয়া হলো, তার মধ্যে যতগুলো ভাল রিভিউ এসেছে সেগুলোর পার্সেন্টেজই হলো টম্যাটোমিটার। রটেন টমেটোতে একটি মুভি বা সিরিজ তিনটি স্বীকৃতি পেতে পারে।
১) রটেন, যদি সেটি ৬০% এর কম ভাল রিভিউ পায়।
২) ফ্রেশ যদি তা ৬০% এর বেশি ভাল রিভিউ পায়।
৩) কোনো মুভি বা সিরিজ যদি ৭৫% এর বেশি ভাল রিভিউ পায়, তার মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন টপ সমালোচকের রিভিউ থাকলে সেই মুভি বা সিরিজ সার্টিফাইড ফ্রেশ স্বীকৃতি পায় । তবে কোনো মুভির টম্যাটোমিটার যদি আস্তে আস্তে ৭০% এর নিচে চলে যায়, তাহলে সেই মুভি সার্টিফাইড ফ্রেশ স্ট্যাটাস হারাবে।
এছাড়াও বিভিন্ন ক্রিটিক বিভিন্ন উপায়ে মুভির জন্য রেটিং দিয়ে থাকেন। যেমন- কেউ ১-৫ এর মধ্যে, কেউ A, A+ ইত্যাদির মাধ্যমে। রটেন টম্যাটো তাদের এই রেটংগুলোকে ১-১০ এ রুপান্তর করে একটি গড় মান দিয়ে থাকে। এটি টম্যাটোমিটারের নিচে থাকে।
আর অডিয়েন্স স্কোর পুরোটাই সাধারণ দর্শকদের মতামত। রটেন টম্যাটোতে কেউ ইমেইল দিয়ে নিবন্ধিত হওয়ার পর চাইলেই অডিয়েন্স স্কোরে নিজের রেটিং দিতে পারে। তখন রেটিং দিতে হবে ১-৫ এর মধ্যে। সেখানেও যদি ব্যবহারকারীদের ৬০% কোনো মুভি বা সিরিজকে ৩.৫ বা এর বেশি রেটিং দেয়, তাহলে একটি পপকর্ন ভর্তি বাকেট দেখাবে, অর্থাৎ ফ্রেশ। আর ৬০% এর কম ব্যবহারকারী যদি ৩.৫ এর কম রেটিং দেয়, তাহলে একটি পপকর্ন বাকেট পড়ে থাকতে দেখা যাবে। অর্থাৎ সেই মুভি বা সিরিজটি রটেন। আর নীল রংয়ের প্লাস সাইন বোঝাবে মুভি বা সিরিজটি কোনো ব্যবহারকারীর রেটিং এখনো পায়নি।
আইএমডিবি
ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ বা IMDb বিশ্বের সবচাইতে বড় অনলাইন মুভি ডেটাবেজ। কোনো মুভি কিংবা সেই মুভিতে কে কে থাকছেন, মুভির পরিচালনায় কে কিংবা মুভির বাজেট কত, শ্যুটিং কোথায় কোথায় হয়েছে ইত্যাদি জানতে ইন্টারনেটে আমাদের প্রথম গন্তব্যই আইএমডিবি।
আইএমডিবির প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান সিইও কোল নিডহ্যাম। যখন তার মাত্র চার বছর বয়স তখন একটি ছবি আঁকা প্রতিযোগীতায় পুরষ্কার হিসেবে জিতে নেন ‘’স্নো হোয়াইট অ্যান্ড দ্য সেভেন ডোয়ার্ফ” সিনেমার টিকেট। সেখান থেকেই চলচ্চিত্রের প্রতি ভালো লাগা শুরু। তারপর বাসায় যখন ভিসিআর আসলো, তখন আরো বেড়ে গেলো। এক পারিবারিক বন্ধুর একটি ভিডিও স্টোর ছিল, যেখান থেকে তিনি দুই সপ্তাহের জন্য ভিসিআর টেপ বাসায় আনতে পারতেন। তিনি এলিয়েন মুভিটি বাসায় আনার পর ১৪ দিনে ১৪ বার দেখেছিলেন।
তারপর থেকে তিনি একের পর এক মুভি দেখেই চলেছেন। একসময় তিনি এত মুভি দেখছিলেন যে, খেই হারিয়ে ফেলছিলেন। তিনি তখন মনে করতে পারছিলেন না যে, কোন মুভিটি তিনি দেখেছেন আর কোন মুভিটি দেখেননি। তারপর তিনি শুরু করেন ডায়েরিতে সবকিছু নোট করা। মুভির নাম, পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে প্রযোজক, স্টুডিও সব কিছু তিনি নোট করতে থাকলেন। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর তিনি ভাবলেন, আমি ডায়েরিতে লেখার কষ্ট কেন করছি? আমি তো একটি ডাটাবেজেই সবকিছু যোগ করতে পারি।
সিনেমার পাশাপাশি প্রযুক্তিতে তার অনেক আগ্রহ ছিল। ১২ বছর বয়সে বড়দিনের উপহার হিসেবে তিনি একটি কম্পিউটার পান। এরপর তিনি ইউনিভার্সিটি অফ লিডস থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।
তারও আগে তিনি একটি ডাটাবেজে তিনি যত সিনেমা দেখেছেন সেগুলোর সব তথ্য লিখতে থাকলেন। এগুলো তিনি সব শখের বশেই করতেন। ১৯৮৫ সালে তিনি অনলাইনে একটি ডিস্কাশন গ্রুপের সাথে পরিচিত হলেন, যেখানে মুভিপ্রেমীরাও তাকে তার এই ডেটাবেজ সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে।
১৯৯০ সালে তিনি এই ডেটাবেজকে একটি সফটওয়্যারে পরিণত করলেন, যাতে সেটি ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়। তারপর সেটি অনলাইনে পাবলিশ করলেন IMDb নামে।
১৯৯৩ সালে কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির এক পিএইচডি স্টুডেন্ট তাকে মেইল করে পরামর্শ দিলেন, এই ডেটাবেজকে একটি ওয়েবসাইটের সাথে সংযুক্ত করতে। কারণ এর মাধ্যমে আরো অনেকেই এই ডেটেবেজের সাথে যুক্ত হতে পারবে। তারপরেই আইএমডিবি ওয়েবসাইট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। ১৯৯৫ সালের মধ্যেই তাই ট্রাফিক প্রতি সপ্তাহে দ্বিগুণ হতে থাকলো। তারপরই ধীরে ধীরে একটি কোম্পানিতে পরিণত হলো।
১৯৯৮ সালে অ্যামাজন ৫৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে আইএমডিবিকে কিনে নেয়।
আইএমডিবির রেটিং পদ্ধতিকে যতটা সহজ ভাবা হয় আসলে তা নয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন, আইএমডিবি গাণিতিক গড় ব্যবহার করেই রেটিং দিয়ে থাকে। কিন্তু যদি কোনো রেটিংয়ের বিস্তারিত পাতায় যাওয়া যায় তাহলে বুঝবেন আসলে তা নয়।
আইএমবিডি মূলত ব্যবহারকারী নির্ভর একটি ওয়েবসাইট। তাই এর রেটিংও নির্ধারিত হয় ব্যবহারকারীদের দেয়া রেটিংয়ের উপর। যদিও এই ওয়েবসাইটের প্রাথমিক উদ্দেশ্য রটেন টম্যাটোর মতো মুভি রিভিউ কিংবা রেটিং দেয়া নয়, তারপরেও তারা তাদের রেটিং ব্যবস্থা যথেষ্ট সাবধানতার সাথে পরিচালনা করে।
কোনো মুভি বা সিরিজ যখন রিলিজ কনফার্ম করা হয়, তখন আইএমডিবি সেই মুভিতে রেটিং দেয়ার সুযোগ করে দেয়। তারপর প্রত্যেক নিবন্ধিত ব্যবহারকারী সে মুভিতে রেটিং দেয়ার সুযোগ পায়। প্রত্যেকে একটি মুভিকে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রেটিং দিতে পারবেন। তবে রেটিং চাইলে আবার যেকোনো সময় পরিবর্তন করা যাবে।
তারপর কোনো এক গাণিতিক পদ্ধতির মাধ্যমে মোট রেটিংগুলোকে বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত একটি রেটিং দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তা আইএমডিবি প্রকাশ করেনি। তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা যায়, তারা একসময় নিম্নলিখিত গাণিতিক সূত্র অনুসরণ করত-
weighted rating (WR) = (v ÷ (v+m)) × R + (m ÷ (v+m)) × C
Where:
R = average for the movie (mean) = (Rating)
v = number of votes for the movie = (votes)
m = minimum votes required to be listed in the Top 250 (currently 25,000)
C = the mean vote across the whole report
তবে আইএমডিবিতে যারা নিয়মিত মুভি রিভিউ এবং রেটিং দিয়ে থাকেন, তাদের রেটিংই মূল রেটিংকে সবচাইতে বেশি প্রভাবিত করে। তাদের ভোটের মাধ্যমেই কোনো মুভির মূল রেটিং বাড়তে বা কমতে পারে। এ পদ্ধতিকে বলা হয়ে ‘Weighted average’। আইএমডিবি এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যাতে বেশ নিখুঁত একটি রেটিং পাওয়া যায়। কারণ অনেক ব্যবহারকারীকে দেখা যায় কোনো নির্দিষ্ট পরিচালক, অভিনেতা কিংবা কোম্পানীর (যেমন- মার্ভেল বা ডিসি) ভক্ত। তাই অনেকেই মুভি রিলিজের আগেই সেই মুভিকে ১০/১০ রিভিউ দিয়ে বসে। অনেক সময় এ কারণেই কোনো মুভি রিলিজের আগে অস্বাভাবিক রেটিং পায়। তাই আইএমডিবি এমন এক পদ্ধতি অবলম্বন করে, যাতে তাদের দেয়া রেটিং আসল রেটিংকে প্রভাবিত না করতে পারে।
আইএমডিবির সেরা ২৫০ মুভির একটি তালিকা আছে। সেই তালিকায় ব্যবহারকারীদের ভোটে সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া সিনেমাগুলো আছে। অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করবেন, অনেক মুভি, যেগুলোর রেটিং অনেক বেশি (যেমন- আয়নাবাজি, IMDb rating 9.3/10), তারা এই টপ ২৫০ এর মধ্যে নেই কেন? কারণ এই টপ ২৫০ লিস্টটি করা হয় পুরোপুরি নিয়মিত ব্যবহারকারীদের ভোটে। এখানে অন্য কারো রেটিং গণনা করা হয় না। তাছাড়া সেই মুভিকে কমপক্ষে ২৫,০০০ ভোট পেতে হবে। যেহেতু কেবল নিয়মিত ব্যবহারকারীদের ভোটে এই লিস্টটি করা হয়, তাই এই লিস্টে দেখানো মুভির রেটিং এবং মুভির আসল রেটিংয়ে অনেক সময় পার্থক্য দেখা যায়।
তো, আমরা দেখতেই পাচ্ছি, রটেন টম্যাটোস এবং আইএমডিবি দুটো সাইটই ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার মুভির রিভিউ এবং রেটিং দিয়ে থাকে। তাই যদি দুটো ওয়েবসাইটের তুলনা করা হয়, একদিকে রটেন টম্যাটোস সমালোচক নির্ভর এবং আইএমডিবি পুরোটাই ব্যবহারকারী নির্ভর। তবে রটেন টম্যাটোসে সমালোচক এবং সাধারণ দর্শক, সবার মতামত দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় বলে মুভির রিভিউয়ের জন্য বেশিরভাগ মানুষই রটেন টম্যাটোস পছন্দ করে। আর এক ক্লিকে কোনো মুভি, অভিনেতা, কিংবা এই সংশ্লিষ্ট সব তথ্য পাওয়া যায় বলে এখনো সিনেমাপ্রেমীদের প্রথম ক্লিকটিই হয় আইএমডিবিতে।