জনরা হিসেবে ফ্যান্টাসির ব্যাপ্তি বিশাল। পৃথিবী জুড়ে তুমুল জনপ্রিয় সব বই কিংবা সিনেমার সিংহভাগই সম্ভবত এ জনরার অন্তর্ভুক্ত। হ্যারি পটার, দ্য লর্ড অভ দ্য রিংস কিংবা ক্রনিকলস অব নার্নিয়ার নাম শোনেননি, এমন কোনো বইপোকা কিংবা সিনেমাপ্রেমী খুঁজে পেতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে। এই জনরার মধ্যে আবার রয়েছে অনেক সাব-জনরা: হাই/এপিক ফ্যান্টাসি, লো ফ্যান্টাসি, গ্রিম-ডার্ক ফ্যান্টাসি, আরবান ফ্যান্টাসি ইত্যাদি। সাব-জনরার মারপ্যাঁচ নিয়ে না হয় আরেকদিন কথা হবে, আজকে নজর ফেরানো যাক আরবান ফ্যান্টাসির দিকে। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, আরবান ফ্যান্টাসি জনরার চমৎকার একটি সিরিজ, দ্য ড্রেসডেন ফাইলসের দিকে।
‘ফ্যান্টাসি’ শব্দটা শুনলেই হয়তো চট করে কোনো জাদুময় দুনিয়ার কথা মাথায় ঘুরতে থাকে। কিন্তু আরবান ফ্যান্টাসির প্লটগুলো সাধারণত নগরাঞ্চল কেন্দ্রিক হয়। কোনো একটা গ্রাম বা শহরের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অলৌকিক উপাদান, চরিত্র ইত্যাদি মিলে তৈরি হয় আরবান ফ্যান্টাসি। এ ধরনের কাহিনীর সময়কাল সাধারণ উনিশ-বিশ-একুশ শতক কিংবা আমাদের বর্তমানটাই হয়ে থাকে। তাই অনেকে আরবান ফ্যান্টাসিকে মডার্ন বা কন্টেমপোরারি ফ্যান্টাসিও বলে থাকেন।
জিম বুচারের লেখা ‘দ্য ড্রেসডেন ফাইলস’ ১৯টি বইয়ের একটি সিরিজ, যা এখনও চলমান। এর মাঝে ১৭টি উপন্যাস ও বাকি ২টি বই ছোট গল্প বা নভেলার সংকলন। সিরিজটি বর্তমানে ফ্যান্টাসিপ্রেমীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় এবং আরবান ফ্যান্টাসি জনরার একটি চমৎকার উদাহরণ।
হ্যারি ব্ল্যাকস্টোন কপারফিল্ড ড্রেসডেন। লোকে তাকে হ্যারি ড্রেসডেন নামেই চেনে। শিকাগো শহরের একমাত্র পেশাদার জাদুকর সে। প্রায় সাতফুট লম্বা দেহটা সবসময় মোড়ানো থাকে কালো চামড়ার ডাস্টারে। ড্রেসডেনের ভিজিটিং কার্ডটা কিছুটা এরকম-
বেশ বিচিত্র সব কেস আসে তার কাছে। আবার কখনও উদ্ভট কোনো কেসের সমাধান না পেলে শিকাগো পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশনস ব্রাঞ্চ থেকে ডাক পড়ে তার। এক হাতে ব্লাস্টিং রড আর অন্যহাতে কাঠের স্ট্যাফ নিয়ে এসব অদ্ভুতুড়ে, অলৌকিক রহস্য সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়ে হ্যারি ড্রেসডেন।
সিরিজের সবগুলো বই (কিছু ছোটগল্প বাদে) উত্তম পুরুষে লেখা। মূল চরিত্র হ্যারি ড্রেসডেনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সবকিছু বর্ণনা করেছেন লেখক। আর এই ন্যারেটিভ স্টাইলের কারণে পড়তে গেলে মনে হয়, কেউ বুঝি নিজের মুখে তার ভয়ানক আর অব্যাখ্যেয় সব অভিজ্ঞতার গল্প শোনাচ্ছে।
সিরিজের প্রতিটি বই এক হিসেবে ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’। কিন্তু আগে বই না পড়া থাকলে পরের বইয়ে বিভিন্ন চরিত্রের আনাগোনা, সেইসাথে অনেককিছুর ব্যাখ্যা কিংবা রেফারেন্স মিস করে যাবেন। তাই সবগুলো বই সিরিয়াল মেনেই পড়া উচিত।
মূল চরিত্র হ্যারি ড্রেসডেনের পরিচয় তো দেওয়াই হলো। সিরিজ জুড়ে তার সাথে যুক্ত হয় আরও দারুণ দারুণ সব চরিত্র। যেমন-
ক্যারিন মার্ফি
শহরে ঘটে যাওয়া ব্যাখ্যাতীত ঘটনাগুলোর তদন্তের ভার শিকাগো পুলিশের ‘স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন্স’ ব্রাঞ্চের ওপর। আর এর কর্ণধার হচ্ছে হ্যারির বান্ধবী ক্যারিন মার্ফি। অতিলৌকিকে সবার বিশ্বাস না থাকলেও মার্ফির আছে, আর হ্যারির মূল্যও সে বোঝে। তাই তো মাঝে মাঝে নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করেই তলব করে হ্যারিকে।
জেন্টলম্যান জন মারকোন
শিকাগোর আন্ডারওয়ার্ল্ডের হর্তাকর্তা হচ্ছে জন মারকোন। সিরিজ জুড়ে হ্যারি আর মারকোনের মধ্যকার দ্বন্দ্বটা বেশ উপভোগ্য।
সুজান রদ্রিগেজ
মিডওয়েস্টার্ন আরকেইন পত্রিকার সাংবাদিক সুজান রদ্রিগেজ হচ্ছে হ্যারির প্রেমিকা। বেশিরভাগ বই জুড়ে হ্যারির গায়ে যে কালো চামড়ার ডাস্টারটা দেখা যায়, ওটা সুজানেরই দেওয়া উপহার।
মাইকেল কার্পেন্টার
হ্যারির বিশ্বস্ত বন্ধু মাইকেল কার্পেন্টার। সে পবিত্র তলোয়ারধারী তিনজন ‘নাইট অব দ্য ক্রস’-এর একজন। ফলেন অ্যাঞ্জেল আর ব্ল্যাকেন্ড ডিনারিয়ানসদের কাছ থেকে দুনিয়া রক্ষার দায়িত্বটা তার কাঁধেই ন্যস্ত। ধার্মিক মাইকেল আর তার পরিবারের বেশ আনাগোনা রয়েছে পুরো সিরিজ জুড়ে।
হোয়াইট কাউন্সিলের সদস্যরা
হোয়াইট কাউন্সিল জাদুকরদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। প্রতি বইয়েই এ কাউন্সিলের বিভিন্ন সদস্যের উপস্থিতি রয়েছে। এর মধ্যে ওয়ার্ডেন মরগান, সিনিয়র জাদুকর অ্যাবেনিজার ম্যাককয়, ওয়ার্ডেন রামিরেজ, কমান্ডার লুচিও প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ম্যাকঅ্যানালি, ওয়ালডো বাটারস, ফাদার ফোর্টহিলসহ নানা চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে বইয়ে।
এরা সবাই তো মানবরূপী। কিন্তু এদের বাইরেও দারুণ কিছু অতিপ্রাকৃত চরিত্রের দেখা পাওয়া যায় সিরিজ জুড়ে।
দ্য আলফা’স
জাদুর সাহায্যে নিজেকে নেকড়েতে পরিণত করতে পারে, এমন কয়েকজন উয়্যারউল্ভস অর্থাৎ, মায়ানেকড়ের দল হচ্ছে দ্য আলফা’স। বেশ কয়েকটি বইয়ে এদেরকে হ্যারির সহযোগী হিসেবে দেখা যায়।
ফেইরি কুইন
ফেইরিরা দু’টি অংশে বিভক্ত; উইন্টার কোর্ট আর সামার কোর্ট। উইন্টার কোর্টের রানী ম্যাব, আর সামার কোর্টের রানী টাইটানিয়া। প্রবল ক্ষমতাধর এই দুই চরিত্রের মারাত্মক প্রভাব রয়েছে কাহিনীগুলোয়।
নিকোডিমাস আর্কলিয়ন
‘অর্ডার অব দ্য ব্ল্যাকেন্ড ডিনারিউস’ হচ্ছে ফলেন অ্যাঞ্জেলদের কয়েনধারী একদল ভয়ানক মানুষের সংঘ। আর এর প্রধান হচ্ছে নিকোডিমাস আর্কলিয়ন, এক দুর্ধর্ষ তলোয়ারবাজ।
ভ্যাম্পায়ার
নানা কিসিমের ভ্যাম্পায়ারের আসা-যাওয়া আছে এ সিরিজে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গায় মারাত্মক বিপজ্জনক। রেড কোর্ট, হোয়াইট কোর্ট আর ব্ল্যাক কোর্ট- সব ভ্যাম্পায়ার এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত। এছাড়াও আছে ঘুউল, পিজ্জাখেকো পিচ্চি পিচ্চি ফেইরিসহ আরও নানান অতিপ্রাকৃত চরিত্র।
সেই সাথে হ্যারির গরিবী অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা, পোষা বেড়াল মিস্টারের কথা না বললেই নয় (যদিও হ্যারির মতে, ও বিড়ালটাকে না, বিড়ালটাই বোধহয় ওকে পোষে!)। কিছু বই পরে হাজির হয় আরেক পোষ্য, বিশালাকার ফু-ডগ, মাউস। আর হ্যারির সহকারী, ববের কথা বাদ দিই কী করে! বব হচ্ছে মানবখুলিতে বসবাসরত একটা স্পিরিট বা আত্মা, যে বিভিন্ন জাদুকরদের সাথে কাজ করছে শত শত বছর ধরে। অবশ্য ব্যাটার জ্ঞানের সীমা-পরিসীমা মাপা দুষ্কর হলে কী হবে, কাজ করাতে গিয়ে ঘুষ দিতে হয় গাদা গাদা রোমান্টিক বই!
ও আচ্ছা, সিরিজ জুড়ে স্যান্টা ক্লজ, নর্স মিথলজির ওডিন, ভালকাইরি, গ্রিক মিথলজির হেডিস, আর আমাদের চেনা-জানা নানা চরিত্রের আনাগোনা লক্ষ করে অবাক হওয়ার দরকার নেই মোটেও। কারণ খানিক পরপর হ্যারির মুখে ব্যাটম্যান, স্পাইডারম্যান কিংবা কুইনের গানের রেফারেন্স শুনে আরও বেশি অবাক হবারও অবকাশ আছে!
শুরু থেকে শেষ
জিম বুচার হ্যারি ড্রেসডেনের আবির্ভাব ঘটান ‘রিস্টোরেশন অভ ফেইথ’ নামের এক ছোটগল্পে। তবে ছাপার অক্ষরে প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘স্টর্ম ফ্রন্ট’, যা ২০০০ সালে আলোর মুখ দেখে। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় আরও ১৬টি উপন্যাস এবং দারুণ কিছু ছোট গল্প ও নভেলা।
প্রকাশকাল সহ সিরিজের সবগুলো বই-
- স্টর্ম ফ্রন্ট (২০০০)
- ফুল মুন (২০০১)
- গ্রেভ পেরিল (২০০১)
- সামার নাইট (২০০২)
- ডেথ মাস্কস (২০০৩)
- ব্লাড রাইটস (২০০৪)
- ডেড বিট (২০০৫)
- প্রুভেন গিল্টি (২০০৬)
- হোয়াইট নাইট (২০০৭)
- স্মল ফেভার (২০০৮)
- টার্ন কোট (২০০৯)
- চেঞ্জেস (২০১০)
- গোস্ট স্টোরি (২০১১)
- কোল্ড ডেইজ (২০১২)
- স্কিন গেম (২০১৪)
- পিস টকস (২০২০)
- ব্যাটল গ্রাউন্ড (২০২০)
এছাড়াও রয়েছে দু’টি গল্প সংকলন; ‘সাইড জবস’ এবং ‘ব্রিফ কেসেস’। এগুলো ছাড়াও কিছু গ্রাফিক নভেল নানা সময়ে প্রকাশিত হয়েছে ডায়নামাইট থেকে। যেগুলোর মাঝে ‘স্টোর্ম ফ্রন্ট’ আর ‘ফুল মুন’ আঁকা হয়েছে মূল উপন্যাসদ্বয় অবলম্বনে।
একটি উপন্যাস পড়ে অন্যটায় চলে গেলে কাহিনী মিস করে গেলেও ছোট গল্প কিংবা গ্রাফিক নভেলগুলো পড়ার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা নেই কোনো। না পড়লেও মূল সিরিজের কাহিনী বুঝতে অসুবিধা হবে না। তবে যদি পড়তে চান, সিরিয়াল মেনে পড়াই ভালো; কেননা, স্পয়লারের চিন্তা তো আছেই।
শুরুতে সিরিজের মোট উপন্যাস সংখ্যা তেইশটি হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু লেখকের পরিকল্পনা মোতাবেক এখন তা গিয়ে ঠেকেছে পঁচিশে। আসলে কত সংখ্যক বইয়ে গিয়ে যবনিকাপাত হবে এ সিরিজের, তা সময়ই বলে দেবে।
কীভাবে পড়ব?
সিরিজের সবগুলো বইয়ের সফটকপিই পাওয়া যায় অনলাইনে। চাইলে সফটকপি পড়তে পারেন, কিংবা পড়ার সুবিধার্থে প্রিন্ট করিয়ে নিতে পারেন। যদি অডিওবুক শোনার অভ্যাস থাকে, তাহলে খুঁজলে পেয়ে যাবেন পুরো সিরিজের অডিওবুক। জেমস মাস্টার্স চমৎকারভাবে ন্যারেট করেছেন বইগুলো।
আর যারা ইংরেজিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না, তাদের মন খারাপের কারণ নেই। বাতিঘর প্রকাশনী থেকে ইতোমধ্যেই বেরিয়েছে সিরিজের প্রথম পাঁচটি বইয়ের অনুবাদ। বাকিগুলোও হয়তো এসে যাবে ধীরে ধীরে।
টিভি সিরিজ
এই সিরিজের জনপ্রিয়তা ঠাহর করতে চাইলে আরেকটি দিকে নজর দেয়া যেতে পারে আর তা হচ্ছে টিভি সিরিজ। ২০০৭ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল ‘দ্য ড্রেসডেন ফাইলস’ নামক ১২ পর্বের একটি টিভি সিরিজ, যার আইএমডিবি রেটিং ৭.৭। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন পল ব্ল্যাকথর্ন।
ভিডিও গেম
২০১০ সালে ইভিল হ্যাট প্রোডাকশনস থেকে দুটো ভলিউমে মুক্তি পায় ভিডিও গেম ‘দ্য ড্রেসডেন ফাইলস রোলপ্লেয়িং গেম’, যা জিতে নেয় অসংখ্য পুরস্কার। তারপর ২০১৭ সালের জুনে মুক্তি পায় টেবিলটপ গেম ‘দ্য ড্রেসডেন ফাইলস কো-অপারেটিভ কার্ডগেম’। একসাথে পাঁচজন পর্যন্ত খেলা যায় এ গেমটি।
লেখক
জিম বুচারের জন্ম ১৯৭১ সালে, আমেরিকার মিশৌরিতে। ‘দ্য লর্ড অভ দ্য রিংস’ আর ‘দ্য হান সোলো অ্যাডভেঞ্চার্স’ এর কল্যাণে ছোটবেলা থেকেই ফ্যান্টাসি আর সায়েন্স ফিকশনের প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মেছিল তার। প্রথম উপন্যাসটি লিখে শেষ করেন কৈশোরেই, প্রয়াস পান পুরোদস্তুর লেখক বনে যাবার। কিন্তু শুরুতে ব্যর্থ হন। ১৯৯৬ সালে হ্যারি ড্রেসডেন চরিত্রটি তৈরি করেন তিনি। ২০০০ সালে প্রথম বই ‘স্টর্ম ফ্রন্ট’ প্রকাশ পাবার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি বুচারকে।
‘দ্য ড্রেসডেন ফাইলস’ ছাড়া আরও দু’টি সিরিজের বেশ ক’টি বই বেরিয়েছে তার হাত ধরে। এর মাঝে ‘কোডেক্স অ্যালেরা’ সিরিজের পরিসমাপ্তি ঘটেছে ছ’টি বইয়ের পর। ‘দ্য সিন্ডার স্পায়ার্স’ নামক একটি স্টিমপাংক জনরার সিরিজ নিয়ে কাজ করছেন বর্তমানে। শুধু একটি বই প্রকাশ পাওয়া এ সিরিজটি এখনও চলমান। এছাড়াও ২০০৬ সালে মার্ভেল কমিকসের বিখ্যাত চরিত্র স্পাইডারম্যান নিয়ে একটি উপন্যাস লিখেছেন তিনি।
ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং, ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে গল্পের বুনন কিংবা লেখার ধরন- সবদিকেই দক্ষতার ছাপ রেখেছেন বুচার। বাস্তব দুনিয়ার সাথে নানা ধরনের কাল্পনিক উপাদান এত চমৎকারভাবে মিশিয়ে দিয়েছেন লেখক যে, ওগুলোকে তেমন অবিশ্বাস্যও মনে হয় না। যদি ফ্যান্টাসি ভালো লাগে, আর বিশেষত আরবান ফ্যান্টাসি জনরা ভীষণ পছন্দের হয়, তাহলে বসে পড়ুন ড্রেসডেন ফাইলস নিয়ে। আশা করি, ঠকবেন না!