বাচ্চাদের সবচেয়ে প্রিয় কাজ কী? খেলাধুলা করা। আর সবচেয়ে অপ্রিয় কাজ কী? পড়াশোনা করা। এখন যারা অভিভাবক, তারা যখন শিশু ছিলেন, তখনও এই দুটি প্রশ্নের উত্তর একই ছিল। মোটাদাগে আমাদের দেশের শিক্ষার ব্যবস্থাটাই এরকম- পড়া আর খেলা এই দুটি বিষয় এখানে ঠিক বিপরীত জায়গায় অবস্থান করে। যেন একটি করলে আরেকটি করা যাবে না। আর দুটোই একসাথে চালানোর কথা তো এখানে অভিভাবকেরা ভাবতেই পারেন না!
অথচ শিশুদের মনোজগতটা কিন্তু অন্যরকম। বড়রা বুঝতে পারেন না কিংবা বুঝতে চান না যে, শিশুদের মন তো আর বড়দের মতো না। তাকে ইচ্ছেমতো খেলতে দিলেই সে সবচেয়ে খুশি হবে, জোর করে পড়তে বসালে না। একগাদা বই-খাতা সহ একটা ভারী ব্যাগ তার কাঁধে চাপিয়ে দিলে সে পড়ালেখা বিষয়টাকে মোটেই ভালো চোখে দেখবে না, বরং বই-খাতাকে ভাবতে শুরু করবে নিজের শত্রু। হয়তো দেখা যাবে, স্মার্টফোনের যে গেমটির প্রথম ধাপ পেরুতেই আপনার কষ্ট হয়ে যায়, সেটার যাবতীয় কলাকৌশল আয়ত্ত করে ইতিমধ্যেই আপনার বাচ্চা সেই গেমে ‘এক্সপার্ট’ হয়ে গেছে। অথচ একটা ট্রান্সলেশন করতে বললেই যেন তার ছোট্ট মাথাটা একদমই কাজ করে না। অংকের খাতায় যে শিশুটা সাধারণ যোগ-বিয়োগের হিসাব মেলাতে পারছে না, দেখা যাবে, সে আবার ক্রিকেট খেলার সময় নিজের রানের হিসাব ঠিকই মুখে মুখে করে ফেলছে!
এরকম কেন হয়? আসলে একটা শিশু কীভাবে তার চারপাশটাকে দেখে? সে কী করতে পছন্দ করে? কোন কোন বিষয় নিয়ে তার আগ্রহ? এরকম কতগুলো প্রশ্নের উত্তর যদি জানা যায়, তাহলে কিন্তু তাকে কিছু শেখানোর জন্য খুব একটা বেগ পেতে হবে না। যদি একটা বাচ্চা খেলতে খেলতেই শেখার সুযোগ পায়, তাহলেই সে কেবল ঐ শেখার কাজটিতে আনন্দ খুঁজে পাবে। আগ্রহী হয়ে উঠবে আরও নতুন কিছু শিখতে।
অথচ আমাদের স্কুলগুলো তো এমন না। এখানে বাচ্চাদের পড়াশোনা মানে একগাদা বই, হোমওয়ার্ক, টিউটোরিয়াল, ক্লাস টেস্ট, ফাইনাল- ঠিক বড়দের পড়ালেখার মতোই। একদম ছোট্ট বয়সেই ‘ভর্তি পরীক্ষা’র মতো কঠিন প্রতিযোগিতায় পর্যন্ত তাকে বসতে হয়। খেলার মাঠ তো নেই-ই, স্কুল ছুটির দিনে টিভি দেখা বা গেম খেলা কিংবা বড়দের সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসে থাকা ছাড়া তার আর কিছু করার থাকে না। টুকটাক খেলার সুযোগ যা একটু থাকে, তাতে তো তার মন ভরে না। রিমোট কন্ট্রোল খেলনা গাড়ি বা রোবটগুলোও বেশিদিন ভালো লাগে না তার। ওদিকে স্কুলের হোমওয়ার্ক হিসাবে হাতের লেখা সুন্দর করার নামে পাতার পর পাতা জুড়ে তাকে বর্ণমালা লিখতে হয়। সে হাঁপিয়ে উঠে, বর্ণগুলোর প্রতি তার মনে তৈরি হয় বিরুদ্ধতা। শিশু বয়স থেকেই ধীরে ধীরে পড়াশোনাটা তার কাছে পরিণত হতে থাকে বিরক্তিকর ও বিস্বাদ এক বস্তুতে।
কিন্তু এমন একটা স্কুল যদি হতো, যে স্কুলে কোনো পড়ালেখা নেই! সেখানে শিশুরা শুধু খেলে, গল্প করে আর ছবি আঁকে! সেখানে তারা গল্প শুনে, এরপর নিজেরা গল্প বানায়, গল্প লিখে, আবার ছবি এঁকে এঁকে গল্পের বইও বানিয়ে ফেলে। এই গল্পের মতো করে পুতুল বানিয়ে আবার তারা পুতুল নাচও করে! সেই স্কুলের শিশুরা আইসক্রিমের কাঠি দিয়ে প্লেন বানায়, প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বানায় কলমদানি, কিংবা নারকেলের পাতা পেলে বানিয়ে ফেলতে পারে পাতার চশমাও! এখানে রোবট নিয়ে খেলার আগে বাচ্চাগুলো নিজেরাই সেটা বানিয়ে নেয়, কিংবা বানায় ছোট্ট পুতুলের ঘরও! খেলতে খেলতে এখানে তারা টেরও পায় না যে, এসব খেলার ভেতর দিয়েই তারা শিখে ফেলছে অনেক কিছু, একগাদা বইয়ের বালাই ছাড়াই!
এমন স্কুল কিন্তু সত্যি সত্যি আমাদের দেশেই আছে! সেই স্কুলে বাচ্চারা খেলে আর শেখে। একদল বুদ্ধিদীপ্ত তরুণের হাত ধরে স্কুলটি চলছে ঢাকা আর চট্টগ্রাম দুই শহরেই, সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে। নাম তার কিডস টাইম।
স্কুলটি মূলত ৪ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের জন্য। এই বয়সের শিশুদের পড়াশোনার ধরনটা যদি হয় একঘেঁয়ে, তাহলে পড়ালেখা ব্যাপারটা তার কাছে সারাজীবন একঘেঁয়েই লাগবে। আবার যদি উল্টোটা হয়, মানে পড়াশোনার মাঝে শিশু যদি আনন্দ খুঁজে পায় এই বয়সেই, তাহলে সেটাই সে সারাজীবন মনে রাখবে। এই স্কুলের শুরুটা সেই চিন্তাটি নিয়েই। কীভাবে শিশুর মাঝে সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা আর মূল্যবোধ- এই তিনের সমন্বয়ে একটা আনন্দময় স্কুলজীবন তৈরি করা যায়, সেই ভাবনা নিয়েই কিডস টাইমের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। একদম শুরুতে স্কুলটির পাঠ্যবিষয় ছিল একটিমাত্র কোর্স, যার নাম ক্রাফট কোর্স।
ক্রাফট কোর্স মানে সত্যি সত্যি হাতে কলমে ‘কিছু বানাতে শেখা’। ‘দীপু নাম্বার টু’ সিনেমাটি আমাদের প্রায় সবারই দেখা। সেখানে দীপুকে দেখা যায়, সে নানারকম হাতের কাজে অভ্যস্ত। সে বই বাঁধাই করতে পারে, কিংবা শর্ট সার্কিটে পুড়ে যাওয়া ফিউজও ঠিক করে ফেলতে পারে। এই ধরনের সহজ কিছু কাজ বড়দের অনেকেই করতে পারে না শুধু না জানার কারণে নয়, সেই সাথে অনভ্যস্ততার কারণেও। শিশুরা যদি এই বয়সে একটা কিছু তৈরি করতে শেখে, তাহলে তাদের মাঝে এই অভ্যস্ততাটুকু চলে আসে। সে যখন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে রং-বেরঙের মুখোশ বানায়, ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আইসক্রিমের কাঠি আর কাগজ দিয়ে শহিদ মিনার বানায়, তাহলে তার মাঝে জন্ম নেয় সৃজনশীলতার বোধ। একই সাথে নিজের সংস্কৃতিকে লালন করার একটা শিক্ষাও সে পায় এখান থেকে। সেই সাথে এগুলো করতে গিয়ে হাত-পায়ের ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের ছোট্ট শরীরে যে একটা ভারসাম্য তৈরি হয়, সেটাও কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের হাতে ছোটখাট উপকরণ তুলে দিলেই তারা খেলাচ্ছলে বানিয়ে ফেলতে পারে দারুণ সব জিনিস, আর তাদের মাঝ থেকে সেই সৃষ্টিশীলতার গুণটুকু তুলে আনা হয় এই স্কুলে।
এই কোর্সটির মাধ্যমে স্কুল চালু হওয়ার পর ধীরে ধীরে যখন বাচ্চাদের কলকাকলি বাড়তে লাগল ক্লাসগুলোতে, শুরু হলো আরও নতুন নতুন কোর্স। এমনই একটা দারুণ কোর্সের কাজ হলো, গল্পের বই তৈরি করা। বাড়িতে নানু-দাদুদের কাছে গল্প শোনার যে ঐতিহ্যটা ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের দেশে, সেটা কিন্তু একটা শিশুর মেধার বিকাশে খুব জরুরি ভূমিকা রাখত। গল্পের মধ্য দিয়েই মানুষের কল্পনাশক্তি বিকাশ লাভ করে। সেই কল্পনাশক্তির জোরেই সে ভাবতে পারে, কীভাবে বেলুনে চড়ে পৃথিবী ঘোরা যায় কিংবা কীভাবে উড়ে উড়ে আকাশের তারাদের কাছে যাওয়া যায়। এই ভাবনাগুলোই তার চিন্তার গভীরতা বাড়ায়, তাকে নতুন নতুন প্রশ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করে। কিডস টাইমে শিশুরা শুধু গল্প শোনে তা নয়, তারা এখানে গল্প তৈরি করে। একেকটা চরিত্রকে মিলিয়ে কীভাবে গল্প বানাতে হয়, চরিত্রগুলোর জীবনের নানা সমস্যার সমাধান করে কীভাবে গল্পটার পরিণতি টানতে হয়- এসব তারা শেখে গল্প শুনতে শুনতেই। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই গল্পগুলো নিয়ে এরপর তারা ছবি আঁকে, লিখে, গল্পের বই বানায়। সেই বই আবার ই-বুক হিসেবে চলে আসে স্কুলের ওয়েবসাইটে। সেখান থেকে শিশুদের লেখা সেই গল্পের বই পড়তে পারে যে কেউ!
মাত্রই একটু বড় হয়েছে এমন বাচ্চারা, যাদের বয়স ৮ থেকে ১২ বছরের মধ্যে, তাদের জন্য এই স্কুলে আছে হাতে-কলমে বিজ্ঞান শেখার একটা মজার কোর্স। এর নাম রোবোকিডস। বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলো শিশুরা এখানে কীভাবে শেখে জানেন? রোবট বানাতে বানাতে! হ্যাঁ, বাজার থেকে যেটা কিনে রিমোট দিয়ে চালিয়ে খেলার কথা, এই স্কুলের শিশুরা সেই রোবটই এখানে বানিয়ে ফেলে নিজেদের হাতেই। রোবট বানানোর একেকটা ধাপে বিজ্ঞানের নানা বিষয় সামনে চলে আসে, আসে নানান প্রশ্ন। এই প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজতে গিয়ে বাচ্চারা বিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণা পায়, বিজ্ঞান তার ভালো লাগতে শুরু করে। রোবট বানানোর কাজ পুরোপুরি শেষ হতে হতে সে বুঝতে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের গুরুত্বটা। স্মার্টফোনে মুখ গুঁজে থাকার চেয়ে বাচ্চার মধ্যে যদি স্মার্টফোন কীভাবে কাজ করে এই বিষয়টি জানার আগ্রহ তৈরি করা যায়, তাহলে তার চিন্তাশক্তি আরও প্রখর হবে নিশ্চয়ই, তার মাঝে তৈরি হবে একটা বিজ্ঞানমনস্ক মন। বড়বেলায় এসে যে অংকভীতি কিংবা পদার্থবিদ্যার সূত্রভীতি আমাদের ছিল, এই স্কুলের পড়ালেখা শিশুদের মনের সেই ভীতিটা কাটিয়ে দেয়। বরং তার মনে এই জটিল সূত্রগুলোর অর্থটা বোঝার আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে।
এমনই আরেকটা দারুণ কোর্সের নাম হলো ক্রিয়েটিভ ডিজাইন অ্যান্ড আর্ট। ছবি আঁকার কাজটাই একটু ভিন্নভাবে শেখানো হয় এখানে। এমনিতে শিশুর হাতে কাগজ আর রং-পেন্সিল তুলে দিলে সে আঁকবেই। অজস্র রকমের বিষয় নিয়ে হাজারো ছবি আঁকার কাজটিই একটা শিশুর কল্পনাশক্তিকে শাণিত করে। যদি কেউ সত্যিই মনের কল্পনায় যা চলছে তা কাগজে তুলে আনতে চায়, তাহলে তার লাইন আঁকা, বৃত্ত আঁকা, পরিমাপ আর দৃষ্টিকোণের ব্যাপারে কিছু ধারণা থাকতে হবে। কিন্তু এসব মাপজোখের বিষয় তো আর শিশুদের বোঝার জিনিস নয়। তাই এখানে শিশুর আঁকাআঁকি শেখানোর কাজটাতে যোগ করা হয় একটুখানি কৌশল। তাদেরকে রেখা, বৃত্ত ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির কাগজ দিয়ে সেগুলোকেই ছবিতে রূপ দিতে বলা হয়। এগুলো দিয়ে বিভিন্ন কিছু আঁকা, বানানো, ডিজাইন করা, রং লাগানো- এসব করতে করতে শিশুর মাঝে একটা শৈল্পিক মনন তৈরি হয়। ছবি আঁকা শেখা তো হয়ই, সাথে তার মনের মাঝে জন্ম নেয় সৃজনশীলতার চারা।
আপনাদের মনে প্রশ্ন আসবেই, শিশুদের এমন ধরনের শিক্ষার দরকারটা কী? উত্তর খুঁজতে চাইলে চোখ রাখতে হবে ভবিষ্যতের দিকে। পৃথিবী প্রতি মুহূর্তে আরও আধুনিক হচ্ছে প্রযুক্তির ক্রমাগত উৎকর্ষতার কারণে। সেকারণে মানুষের কাজের ধরনটাও কিন্তু পাল্টে যাচ্ছে পাল্লা দিয়ে। ভবিষ্যতের পৃথিবী প্রযুক্তির এমন উন্নতি দেখবে, যেখানে মানুষের কাজের ধরনটা হবে আজকের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। তখন পালটে যাবে মানুষের যোগ্যতা পরিমাপের কাঠামোটাও। আজ থেকে বিশ বছর আগেও একটা স্নাতক পাশের সার্টিফিকেট যে পরিমাণ গুরুত্ব বহন করত, এখন কি তা করে? কিংবা আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে ম্যাট্রিক পাশ করাটা সমাজে যেমন সম্মানের ব্যাপার ছিল, আজ কি তা আছে? তাহলে আজ থেকে বিশ কিংবা চল্লিশ বছর পরের কথাই চিন্তা করুন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে পাওয়া সার্টিফিকেটের গুরুত্ব তখন কেমন হতে পারে বলে আপনার মনে হয়?
ভবিষ্যতের পৃথিবীতে মানুষ টিকে থাকবে তার সৃজনশীলতা দিয়ে। সমস্যা সমাধানে তার দক্ষতা দিয়ে, তার মানবিক বুদ্ধিবৃত্তি দিয়ে। পাতার পর পাতা লিখে হাতের লেখা সোজা করে, একগাদা সূত্র মুখস্থ করে, ট্রান্সলেশন গলধঃকরণ করে যদি আপনার শিশু বড় হতে থাকে, তাহলে তার সেই পৃথিবীতে ভালোভাবে টিকে থাকাটাই মুশকিল হয়ে যাবে। উন্নত বিশ্ব কিন্তু অনেক আগেই সেকেলে শিক্ষার ধারণা থেকে বেরিয়ে এসেছে, আপনি হয়তো পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে সেই আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্বটা অনুভব করতে পারছেন না। আর আপনার এই না জানাটা কিন্তু হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে আপনার শিশুর ভবিষ্যতের জন্যই।
জোর করে চাপিয়ে দেওয়া পড়াশোনা করে আপনার শিশু কি পারবে অদূর ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে? কখন কোথায় ব্যথা পায় এই ভয়ে ঘরে আটকা থাকলে সে কি পারবে এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখতে? তাই দরকার এমন একটা জায়গা, যেখানে শিশুরা তৈরি হবে নতুন পৃথিবীর জন্য। যেখানে শিশুরা খেলতে খেলতেই শিখবে, গল্প বলতে বলতেই জানবে। প্রতিটি শিশু যে অপরিসীম মেধা নিয়ে জন্মায়, সেই মেধাটাকে লালন করে, তার প্রতিভার বিকাশ হবে এখানে। আত্মবিশ্বাসী আর আনন্দময় মন তৈরির মাধ্যমে এখানে শিশু পাবে সৃজনশীল মানুষ হয়ে উঠবার প্রেরণা। তাই নিয়ে আসুন আপনার শিশুকে, সৃষ্টিশীলতার পাঠশালায় শুরু হোক তার দুরন্ত পরিভ্রমণ!
ফিচার ইমেজ © Kids Time