প্রতি বছরের মতো এ বছরও আমেরিকার বিখ্যাত ডিকশনারি মেরিয়াম-ওয়েবস্টার প্রকাশ করেছে তাদের দৃষ্টিতে বর্ষসেরা শব্দ। তবে এ বছর তাদের নির্বাচিত বর্ষসেরা শব্দটি বিস্ময়ের জন্ম দিতে পারে অনেকের মনেই।
অন্যান্য অধিকাংশ বছরের মতো খুব গুরুগম্ভীর, অপেক্ষাকৃত কম প্রচলিত শব্দ এবার বেছে নেয়নি তারা, যেটির ব্যবহার অতি সম্প্রতি শুরু হয়েছে। এর বদলে তারা বর্ষসেরা তকমা দিয়েছে এমন একটি শব্দকে, ইংরেজি ভাষার সবচেয়ে পরিচিত শব্দগুলোর একটি যেটি, এবং যেটির ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে হাজার হাজার বছর ধরে।
আর ভণিতা না করে জানিয়েই দেয়া যাক এ বছরের বর্ষসেরা শব্দটি: they. হ্যাঁ, আমাদের সকলের অতি পরিচিত Pronoun বা সর্বনাম they-র কথাই বলছি। তবে তফাৎটা হলো, আমরা ছোটবেলা থেকে they বলতে বুঝে এসেছি ‘তারা’, অর্থাৎ বহুচন। একাধিক ব্যক্তি বা কোনো গোষ্ঠীকে বোঝানোর জন্য, কিংবা এমনকি একাধিক জড় বস্তুকে নির্দেশ করার জন্যও আমরা এই সর্বনামটির ব্যবহার শিখেছি।
কিন্তু মেরিয়াম-ওয়েবস্টার সেই চিরাচরিত ‘তারা’ অর্থে they শব্দটিকে বেছে নেয়নি। they বলতে তারা একবচনকে বুঝিয়েছে, এবং এর অর্থ হিসেবে তারা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্ত সংজ্ঞাটিকে বেছে নিয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, they সর্বনামটি ব্যবহৃত হবে কোনো লিঙ্গ-নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নির্দেশের ক্ষেত্রে। এর মানে দাঁড়াচ্ছে, যারা প্রচলিত রীতিতে নারী বা পুরুষ নন, কিংবা নিজেদেরকে নারী বা পুরুষ হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না, তাদেরকে নির্দেশিত করতে he বা she নয়, they-ই ব্যবহার করতে হবে!
আবার অনেক সময় আমরা হয়তো কোনো ব্যক্তির আসল পরিচয় জানি না। সেক্ষেত্রে তার লিঙ্গ সম্পর্কেও আমাদের কোনো ধারণা থাকে না। এমন অবস্থায় তাকে he দ্বারা পুরুষ, কিংবা she দ্বারা নারী হিসেবে নির্দেশের বদলে, they দ্বারা নির্দেশ করতে হবে, যেন তিনি যে যেকোনো লিঙ্গের, তা পরিষ্কারভাবে বোঝানো যায়।
কেন এটি বর্ষসেরা শব্দ?
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, হুট করে they কেন বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ ২০১৯ সালে সাধারণ মানুষের কাছে এই শব্দটির ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ বৃদ্ধি।
মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের যে ওয়েবসাইট রয়েছে, সেখানে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে they শব্দটি খোঁজার হার ৩১৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের সম্পাদক, লেক্সিকোগ্রাফার পিটার সোকোলোস্কি বলেন:
আমাকে বলতেই হচ্ছে এটি আমার কাছে অত্যন্ত বিস্ময়কর। এটি এমন একটি শব্দ, যেটি আমরা সকলেই জানি এবং ভালোবাসি। তারপরও এত মানুষ এই শব্দটি নিয়ে কথা বলছিলেন।
সোকোলোস্কি এবং তার দল জানার চেষ্টা করেছেন, ঠিক কখন থেকে they শব্দটির প্রতি মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে উঠেছে। এবং তারা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আবিষ্কার করেছেন, ঘটনাটি ঘটেছে মূলত ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে, ফ্যাশন দুনিয়ায় অসলো গ্রেস নামের একজন মডেলের উত্থানের সাথে সাথে। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার ওই মডেল নিজের পরিচয় দেন একজন ট্রান্সজেন্ডার ননবাইনারি হিসেবে, যিনি বিশ্বব্যাপী নারী ও পুরুষ উভয় শ্রেণির ফ্যাশন শোতেই হেঁটে থাকেন।
শব্দটির প্রতি আগ্রহ আরো এক দফা বৃদ্ধি পেয়েছে এপ্রিলে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রমিলা জয়াপাল একটি হাউজ কমিটির শুনানিতে এলজিবিটিকিউ অধিকারের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে নিজের লিঙ্গ-অনির্ধারিত সন্তানের কথা স্মরণ করে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।
কেন they সর্বনামটি গুরুত্বপূর্ণ?
মূলত এই দুইটি ঘটনার সূত্র ধরেই মেরিয়াম-ওয়েবস্টার তাদের অনলাইন ডিকশনারিতে they-র নতুন অর্থ যোগ করে যে, লৈঙ্গিক পরিচয় দ্বৈত এমন কোনো একক ব্যক্তিবিশেষকে নির্দেশের ক্ষেত্রে এই সর্বনামটি ব্যবহার করতে হবে। এরপর অক্টোবর মাসে আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও জানায় যে, এখন থেকে গবেষণাপত্রে একবচনীয় তৃতীয় পুরুষের সর্বনাম হিসেবে they শব্দটি ব্যবহার করা যাবে।
এরও আগে ২০১৫ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের কপি এডিটর বিল ওয়ালশ ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তার ডেস্ক এখন থেকে they ব্যবহারকে গ্রহণ করবে, কেননা ইংরেজি এমন একটি ভাষা যেখানে কোনো লিঙ্গ নিরপেক্ষ তৃতীয় পুরুষের একবচনীয় সর্বনাম নেই।
লিঙ্গ নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে he ব্যবহার করাটা আমার কাছে সেক্সিস্ট মনে হয়, আর she ব্যবহার করলে মনে হয় তাদেরকে অনুগ্রহ করা হচ্ছে। he বা she এর যেকোনো একটি লেখা, he/she, (s)he লেখা কিংবা অন্য আর যত ধরনের প্রচেষ্টা দেখা যায়, তার সবগুলোকেই আমার কাছে ছেলেমানুষি মনে হয়।
এছাড়া উত্তর আমেরিকায় ইংরেজি ভাষা নিয়ে গবেষণার কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ‘দ্য আমেরিকান ডায়ালেক্ট সোসাইটি’-ও they-কে ২০১৫ সালে বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। তারাও এর মাধ্যমে স্বীকৃতি ও সম্মান দেখাতে চেয়েছিল সেইসব মানুষদেরকে, যারা he ও she-কে বর্জন করেন।
সুতরাং এই সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ট্রান্সজেন্ডার, নন বাইনারি, এজেন্ডার, ইন্টারসেক্স কিংবা এমনকি সিসজেন্ডার — যারাই নিজেদেরকে সরাসরি নারী বা পুরুষ বলে মনে করেন না, তাদের ক্ষেত্রে he বা she এর পরিবর্তে they ব্যবহার করাই হবে সমীচীন।
টাইম ম্যাগাজিন they সর্বনামের এই নতুন রূপকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছে:
একবচনীয় they-র উর্ধ্বগতির পেছনে কারণ মূলত দুইটি। একটি হলো, এটি একটি সুবিধাজনক উপায় লিঙ্গ-নিরপেক্ষভাবে নির্দেশ করতে এমন কোনো ব্যক্তিকে, যে আপনার অজ্ঞাত। এছাড়া এটি ‘he or she’ কিংবা এ ধরনের কিছু লেখা বা বলার কষ্ট থেকেও আপনাকে দায়মুক্ত করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণমাধ্যমে এই জাতিবাচক they-র ব্যবহার অনেক বেশি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, কেননা এটির ব্যবহার পাঠক-লেখক উভয়ের জীবনকেই আরো সহজ করে দিয়েছে।
একবচনীয় they-র ইতিহাস
একবচন হিসেবে they-র ব্যবহারে যারা চমৎকৃত হয়েছেন, তাদের জন্য আরো চমকপ্রদ তথ্য হলো, অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি একবচনীয় they-র হদিস পেয়েছে সেই সুদূর চতুর্দশ শতকেও। তারা অনুসন্ধান করে দেখছে, ১৩৭৫ সালের মধ্যযুগীয় রোমান্স ‘উইলিয়াম অ্যান্ড দ্য ওয়্যারউলফ’-এ অজানা ব্যক্তিকে নির্দেশের জন্য they ব্যবহৃত হয়েছিল, যা আজকের দিনেও খুবই আধুনিক মনে হয়।
সেখানে মধ্যযুগীয় ইংরেজিতে লেখা হয়েছিল:
Hastely hiȝed eche . . . þei neyȝþed so neiȝh . . . þere william & his worþi lef were liand i-fere.
আর এটির আধুনিক ইংরেজি করলে দাঁড়ায়:
Each man hurried . . . till they drew near . . . where William and his darling were lying together.
এমনকি ইংরেজি সাহিত্যাকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত হন যে এমিলি ডিকিনসন, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, উইলিয়াম ওয়ার্ডওয়ার্থ কিংবা জিওফ্রে চসার, তারা সকলেও প্রচলিত ব্যকরণের নিয়মকে অগ্রাহ্য করে একবচনীয় they ব্যবহার করে গেছেন।
১৮৮১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখে লেখা একটি চিঠিতে ডিকিনসন লিখেছিলেন,
Almost anyone under the circumstances would have doubted if [the letter] were theirs, or indeed if they were themself — but to us it was clear.
আবার ‘হ্যামলেট’-এ শেক্সপিয়ার them-কে ব্যবহার করেছিলেন mother শব্দটির সর্বনাম হিসেবে:
Tis meet that some more audience than a mother — Since nature makes them partial — should o’erhear the speech.
তবে এসব দৃষ্টান্তের পরও অনেক রক্ষণশীল সমাজের কাছে they-র একবচনীয় সর্বনাম হিসেবে ব্যবহার গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। যেমন ২০১৭ সালে ফ্লোরিডার এক ট্রান্সজেন্ডার স্কুল শিক্ষিকাকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার অপরাধ ছিল, তিনি তার শিক্ষার্থীদেরকে বলেছিলেন তাকে যেন লিঙ্গ-নিরপেক্ষভাবে they সর্বনাম দ্বারা নির্দেশ করা হয়।
(এখানে পাঠক একটি মজার ব্যাপার নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, আমাদের বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সে, তিনি, তারা ইত্যাদি কিন্তু লিঙ্গ নিরপেক্ষ সর্বনাম, কেননা এগুলো দ্বারা সকল লিঙ্গের মানুষকেই নির্দেশ করা যায়।)
বিতর্ক রয়েছে you নিয়েও
ইংরেজি ভাষায় they-ই একমাত্র বিতর্কিত সর্বনাম নয়। বিতর্ক রয়েছে you সর্বনামটি নিয়েও। ১৬৬০ সালে জর্জ ফক্স একটি পুরো বই লিখেছিলেন এ বিষয়ে, যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন যে you-কে যারা একবচন হিসেবে ব্যবহার করে তারা সবাই বোকা। অষ্টাদশ শতকের ব্যাকরণবিদ রবার্ট লোথ এবং লিন্ডলে মারে thou-কে একবচন এবং you-কে বহুবচন হিসেবে ব্যবহার করতেন। কিন্তু এরপরও, বর্তমান সময়ে একবচন ও বহুবচন উভয় হিসেবেই you-র ব্যবহার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
এমন বড় বিতর্ক না থাকলেও, কিছুটা অস্পষ্টতা রয়েছে we নিয়েও। নিশ্চয়ই খেয়াল করে দেখছেন, অনেক রাজা-বাদশাই I এর পরিবর্তে we বলে থাকেন। আবার অনেক ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয়তেও we ব্যবহৃত হয়। অথচ উভয়ক্ষেত্রেই কিন্তু we দ্বারা প্রথম পুরুষের একবচনই নির্দেশিত হয়।
বছরের আরো দুইটি সর্বোচ্চ আলোচিত শব্দ
মেরিয়াম-ওয়েবস্টার যেমন they-কে বেছে নিয়েছে তাদের বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে, তেমনই ডিকশনারি ডট কম এবং অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিরও রয়েছে নিজস্ব প্রার্থী।
ডিকশনারি ডট কম নির্বাচিত বর্ষসেরা শব্দ হলো existential, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় অস্তিত্ব-সম্বন্ধীয়। এ শব্দটিকে তারা নির্বাচিত করেছে তিনটি বিষয়ের উপর অনুপ্রাণিত হয়ে: জলবায়ু পরিবর্তন, বন্দুক সহিংসতা, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বিডেন কর্তৃক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পকে নিয়ে বলা একটি মন্তব্য, “Trump is an existential threat to America.”
অন্যদিকে অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ হলো climate emergency, অর্থাৎ জলবায়ুর জরুরি অবস্থা। তাদের মতে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে এই শব্দগুচ্ছ শতগুণ বেশি ব্যবহৃত হয়েছে।
এছাড়া মেরিয়াম-ওয়েবস্টার তাদের দ্বিতীয় বর্ষসেরা শব্দ কোনটি- তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না করলেও, এটি জানা গেছে যে “quid pro quo” প্রবচনটির প্রতি মানুষের আগ্রহ ২০১৮ সালের তুলনায় ৬৪৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। লাতিন ভাষার এই প্রবচনটির অর্থ, “কোনোকিছুর বিনিময়ে কোনোকিছু।” অর্থাৎ, “একটি জিনিস দিয়ে আরেকটি জিনিস নেয়া।” ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানি চলাকালে বারবার এই প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়েছে।
মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের দশকসেরা শব্দগুলো
শুরু যেহেতু করেছিলেম মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের বর্ষসেরা শব্দের মাধ্যমে, শেষও তাদেরকে দিয়েই করা যাক। একটি বিষয় নিশ্চয়ই আপনারা এতক্ষণে বুঝে গেছেন, একটি শব্দ বর্ষসেরা হওয়ার সাথে আরো কিছু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ও যুক্ত থাকে।
একটি শব্দ বর্ষসেরা হয়েছে মানে, সাধারণ মানুষ ওই শব্দটির অর্থ সবচেয়ে বেশিবার খুঁজেছে, এবং দৈনন্দিন জীবনে শব্দটিকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহারও করেছে। দৈনন্দিন জীবনে সর্বাধিক ব্যবহৃত শব্দ থেকে বোঝা যায়, একটি নির্দিষ্ট বছরে সাধারণ মানুষের কাছে সবচেয়ে আগ্রহোদ্দীপক বিষয় কী ছিল। এবং সিএনএন দাবি করছে, প্রতি বছরের বর্ষসেরা শব্দ দ্বারা গোটা একটি দশকের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কেও কিছুটা আন্দাজ করা যায়।
তাই চলুন জেনে নিই, মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের দৃষ্টিতে ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রতি বছরের বর্ষসেরা শব্দগুলো কী কী ছিল।
- ২০১০: austerity — ভোগক্লিষ্টতা। এ দশকের প্রথম বছরে সংবাদমাধ্যমে বারবারই এসেছে শব্দটি, যা গ্রিসের অর্থনৈতিক মন্দার সূত্র ধরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
- ২০১১: pragmatic — একটি প্রশংসনীয় গুণ যেটিকে মানুষ নিজেদের জন্য খুব উঁচুদরে মূল্যায়ন করে, এবং অন্যদের মাঝেও দেখতে চায়, বিশেষত তাদের নেতা ও তাদের গৃহীত নীতিতে। বোঝাই যাচ্ছে, দেশনেতাদের কাছ থেকে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটির প্রতিফলন ঘটেছিল এ শব্দে।
- ২০১২: socialism, capitalsm — সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদ। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের বছর, এবং ওবামাকেয়ারকে কেন্দ্র করে বারবারই উঠে আসছিল সমাজতন্ত্রের প্রসঙ্গ। সাধারণ মানুষ যখনই সমাজতন্ত্রের অর্থ খুঁজেছে, সেই সাথে পুঁজিবাদটাকেও আরেকবার ঝালিয়ে নিয়েছে।
- ২০১৩: science — বিজ্ঞান। যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর ফেডারাল ফান্ডিংয়ে কর্তনের ফলে ভবিষ্যতের অনেক সম্ভাব্য উদ্ভাবন পড়েছিল হুমকির মুখে। হিগস বসন নিয়ে আবিষ্কৃত নতুন সব তথ্য, আর মানুষের স্টেম সেলের ক্লোনিংয়ে সফলতার ফলে বিজ্ঞান নিয়ে দার্শনিক ও নৈতিক বিতর্কও উদ্ভূত হয়েছিল।
- ২০১৪: culture — সংস্কৃতি। মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের মতে, “নিয়মতান্ত্রিক আচরণের উপর এক ধরনের কেতাবি মনোযোগ।” এ বছর সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট নতুন নতুন সব ধারণা ও ইস্যু নিয়ে তো কথা হচ্ছিলই, কিন্তু প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল হুকআপ সংস্কৃতি, ধর্ষণ সংস্কৃতি ও গাড়ি সংস্কৃতি।
- ২০১৫: ism — এটিকে হয়তো সরাসরি একটি শব্দ বলা যায় না। কিন্তু বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ‘ইজম’ বা ‘বাদ’ নিয়ে আলোচনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। এদের মধ্যে প্রধান ছিল সমাজতন্ত্রবাদ, ফ্যাসিবাদ, বর্ণবাদ, নারীবাদ, সাম্যবাদ, পুঁজিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ।
- ২০১৬: surreal — পরাবাস্তব। অনেক পরাবাস্তব ঘটনাই এ বছর ঘটেছিল। সবচেয়ে বড় ঘটনাটি অবশ্যই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে জয়।
- ২০১৭: feminism — নারীবাদ। মেরিয়াম-ওয়েবস্টারের সংজ্ঞায়িত একটি অর্থ হলো, “নারীদের অধিকার ও আগ্রহের পক্ষে সংগঠিত কার্যক্রম।” #MeToo আন্দোলন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল এ বছর। বড় ও ছোট পর্দায় এসেছিল নারীকেন্দ্রিক ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’ এবং ‘দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেল’।
- ২০১৮: justice — ন্যায়বিচার। এটির দাবি তো প্রতিবছরই ওঠে। ২০১৮ সালে একটু বেশি উঠেছিল আর কী! এমনকি আমাদের বাংলাদেশের রাজপথেও ধ্বনিত হয়েছিল “We want justice” স্লোগান।