গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে স্টার প্লাসে প্রচারিত হয়েছে আমির খান প্রযোজিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র রুবারু রোশনি। এই প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট। প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছে তিনটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যেগুলো দর্শককে শিক্ষা দিয়েছে ক্ষমাশীলতার। তাই স্বাভাবিকভাবেই যে কারো মনে প্রশ্ন জাগতে বাধ্য, আমির নিজে কি ক্ষমা করতে পেরেছেন বিজয় কৃষ্ণ আচার্যকে, যার পরিচালনায় থাগস অফ হিন্দুস্তানের মাধ্যমে তিনি পেয়েছেন তার ক্যারিয়ারের অন্যতম লজ্জাজনক ফ্লপ ছবিটি? সম্প্রতি রমেশ এসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন আমির। সেখানে আরো উঠে এসেছে তার ভবিষ্যৎ প্রকল্পগুলো এবং ব্যক্তিজীবনের নানা অজানা অধ্যায়। অন্তর্মুখী স্বভাবের কারণে বাকি দুই খানের চেয়ে আমিরকে সাধারণ মানুষ একটু কমই চেনে। কিন্তু এই সাক্ষাৎকারটি নিঃসন্দেহে সর্বসাধারণের সামনে আমিরকে এক নতুন আলোয় উপস্থাপিত করবে।
আমির খান পরবর্তী কোন ছবিতে কাজ করছেন?
আমার হাতে চারটি ভালো চিত্রনাট্য আছে। আমি এখনো জানি না কোনটি আমি গ্রহণ করব। এখনো এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারিনি, তবে আগামী এক মাসের মধ্যেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব। এবং সম্ভবত আমি ছবিটি প্রযোজনাও করব। যখন আমি পরবর্তী ছবির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করি, তখন আমি মাথার চুল বড় করতে থাকি, দাঁড়ি রাখতে শুরু করি, এবং চরিত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী শারীরিক পরিবর্তন আনতে থাকি। এরপর, শুটিং শুরুর আগেই, আমি আমার চেহারার সাথে মানিয়ে নিই। আমি আমার পরবর্তী ছবির জন্য ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছি, কারণ আমাকে পাতলা ও রোগা হতে হবে। এই মুহূর্তে দুটি ছবি বিবেচনাধীন রয়েছে, এবং সেই দুটি ছবিতেই আমার চরিত্র রোগা-পাতলা ধরনের।
আপনি কি রাকেশ শর্মার বায়োপিক করছেন?
আমার ধারণা শাহরুখ খান এটি করছে। যদি সে এখনো এ ব্যাপারে কোনো বিবৃতি দিয়ে না থাকে, তাহলে অপেক্ষা করুন।
বায়োপিকের কথা যখন উঠলই, আপনি আপনার নিজের জীবনের উপর ভিত্তি করে কোনো ছবি নির্মাণের কথা কি ভেবেছেন? সেখানে আপনার ভূমিকায় কার অভিনয় করা উচিৎ?
আমার ছেলে জুনাইদ আমার বায়োপিকে অভিনয় করতে পারে।
এখন কি জুনাইদ কোনো কাজ করছে?
আমরা জুনাইদের জন্য খুব বিশেষ কিছুর খোঁজ করছি। আমি তার কাজ দেখেছি, এবং সেটি নিয়ে আমি ভীষণ খুশি। কিন্তু কেবলমাত্র সঠিক একটি গল্প পেলেই আমরা তাকে লঞ্চ করব। আমি স্ক্রিন টেস্টে বিশ্বাসী, এবং তাকে সেখানেও পাশ করতে হবে। যদি সে টেস্টে ভালো করে, তাহলে সে ওই ছবিতে থাকবে। আর নাহলে থাকবে না।
সে অভিনেতা হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছে। দুই বছর সে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং থিয়েটার করেছে লস অ্যাঞ্জেলসের আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টসে। এরপর এক বছর সে সেখানে শুধু নাটকে অভিনয়ও করেছে। সবমিলিয়ে গত তিন বছর যাবত সে থিয়েটারের সাথে সম্পৃক্ত আছে। আমি তাকে একজন সৃজনশীল ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চাই, এবং এমন একজন মুখ্য অভিনেতা হিসেবে, যে চরিত্রে রূপদান করে, কারণ আমি নিজেও সবসময় এই দর্শনেই বিশ্বাস করে এসেছি।
আপনাকে চরিত্রাভিনেতা হতে হবে, নায়ক নয়। আমার সবসময়ই অনেক ভালো লাগে যে, যখনই আমার কোনো ছবি বের হয়, মানুষ আমাকে আমার চরিত্রের নাম ধরে ডাকে। এ থেকে আমি বুঝতে পারি যে আমি কাজটা ভালোভাবে করতে পেরেছি, যে কারণে মানুষ আমাকে ওই চরিত্র হিসেবেই দেখতে আরম্ভ করেছে।
সে (জুনাইদ) অনেকটা রীনার মতো দেখতে হয়েছে; শুধু তার উচ্চতা আমার চেয়ে বেশি।
ঠিক কবে থেকে আপনি রুবারু রোশনির পরিচালক স্বাতী চক্রবর্তী ভাটকলকে চেনেন?
স্বাতী আমাকে সেই ১৯৮৪ সাল থেকেই চেনে, কারণ সে আমার স্কুলের বন্ধু সত্যকে (সত্যজিৎ ভাটকল) বিয়ে করেছে। ওদিকে আমি রীনাকে গোপনে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিয়ে করেছিলাম, যেখানে তিনজন সাক্ষী ছিল। তাদের মধ্যে দুজন স্বাতী ও সত্য। তৃতীয়জন ছিলেন সত্যের কাজিন আনন্দ।
রীনার সাথে আমার বিয়েতে খুবই কম খরচ হয়েছিল। আমি ২১১ নম্বর বাস ধরি, আর ৫০ পয়সার টিকেট কিনি। বান্দ্রা স্টেশনের পশ্চিম দিকে নামার পর ব্রিজ পার হয়ে পূর্ব দিকে চলে আসি, এবং হাইওয়ের দিকে হাঁটতে শুরু করি। হাইওয়ে পার হয়ে আমি গৃহ নির্মাণ ভবনে ঢুকে পড়ি, কারণ ওখানেই ছিল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিস। তো, সব মিলিয়ে আমার বিয়েতে খরচ হয়েছিল দশ রুপিরও কম!
আমাদেরকে বলুন, রুবারু রোশনি কীভাবে নির্মিত হলো?
স্বাতী তার আইডিয়া আমার সাথে শেয়ার করে এবং বলে সে ক্ষমাশীলতার উপর একটি ছবি বানাতে চায়। সে চেয়েছিল কিছু সত্য ঘটনা বাছাই করতে, যাতে তার আইডিয়া প্রদর্শনে সুবিধা হবে। সে আমাকে তিনটি কাহিনী বলেছিল, যদিও তখন সে তার গবেষণা শুরু করেনি, এমনকি কাহিনীগুলোর সাথে সম্পৃক্ত মানুষদের সাথে সাক্ষাতও করেনি।
সে কেবল সংক্ষেপে আমাকে অবন্তিকা, রানী মারিয়া ও কিয়া শারের সাথে ঘটা তিনটি সত্য ঘটনা আমাকে শুনিয়েছিল। যখন আমি সেগুলো শুনলাম, আমার কাছে মনে হলো কনসেপ্টটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ হিসেবে আমরা ক্ষমাশীলতার শক্তি ভুলতে বসেছি। আমরা ভুলতে বসেছিল ক্ষমাশীলতার সাহায্যে কীভাবে যেকোনো যন্ত্রণার উপশম ঘটানো যায়। এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলা খুবই জরুরি, কারণ আপনার পক্ষে তো আর অতীতে ফিরে গিয়ে ভুল সংশোধন করা সম্ভব নয়। এখন সবকিছু আপনার উপরই নির্ভর করবে যে কীভাবে আপনি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন, আপনি কি কষ্ট পাবেন নাকি রাগ করবেন। তবে আপনি যেটাই করতে চান, এমনভাবে করবেন যাতে অন্তত আপনার নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট না হয়। কারণ অতীত আপনার হাতে নেই, কিন্তু ভবিষ্যৎ আছে।
ক্ষমাশীলতার কথা যেহেতু বলছেন, জৈন ধর্মে কিন্তু এই নীতি অনুসরণ করা হয়। এ ব্যাপারে আপনার কী বক্তব্য?
ব্যক্তিগতভাবে জৈন ধর্ম আমার জীবনকে প্রচন্ড রকমের প্রভাবিত করে। তাদের কাছে কিছু অসাধারণ চিন্তা রয়েছে, যেমন- ক্ষমাশীলতা, অহিংসা, এবং কেবল সেগুলোই ব্যবহার করা যা আপনার প্রয়োজন। এ ধর্ম আরো বলে যে প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজের মত ও ধারণা প্রকাশের অধিকার, এবং অন্যদের উচিৎ সেই অধিকারকে সম্মান করা।
আপনি কি আপনার সন্তানদেরকে ক্ষমাশীলতা ও এসব মূল্যবোধের ব্যাপারে বলেন?
হ্যাঁ, বলি। আমি তাদের সাথে অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলি।
সত্যমেভ জয়তে যখন টিভিতে প্রচারিত হচ্ছিল, আমার বাচ্চারা, আমার মা এবং আমি একসাথে বসে প্রতিটি পর্বই দেখতাম। যদিও আমি অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সবই জানতাম, যেহেতু আমিই সেগুলো বানিয়েছি, তারপরও আমাদের রুটিন ছিল প্রতি রবিবারেই একসাথে সেটি আবারো দেখা। অনেক সময় সত্য আর স্বাতীও আমাদের সাথে যোগ দিত।
রুবারু রোশনি দেখার পর কি আপনি আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন?
খুবই। তাছাড়া আমার তো কাঁদার ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। যেমন ধরুন, কেউ হাসলে যেমন আমরা সেটির বিরোধিতা করি না বা কিছু মনে করি না, একইভাবে, কেউ কাঁদলেও তাতে আমাদের কিছু মনে করা উচিৎ না। যখন আমাদের কান্না পাবে, আমাদের কাঁদা উচিৎ। আমি নিজে অনেক কাঁদি। এমনকি অনেক সময় প্রকাশ্যেও কাঁদি।
যেমন ধরুন, ফাতিমা (সানা শেখ), সানিয়া (মালহোত্রা) এবং আমি ভ্রমণ করছিলাম, এবং সেদিন দাঙ্গালের ট্রেইলার মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কেউ একজন আমাদেরকে বললো, বেলা এগারোটার সময় সেটি মুক্তি পাবে, তাই কারো ফোনে আমরা ট্রেইলারটি দেখলাম। দেখার পর আমি কাঁদলাম, যদিও আমি সেটি আগেই দেখেছি। প্রকৃতপক্ষে, সানিয়া ও আমি দুজনেই কাঁদছিলাম, কারণ আমরা কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। আমি খুব সামান্য সামান্য বিষয় নিয়েও কাঁদি।
রুবারু রোশনির শুটিং চলাকালে কি আপনার জীবনের কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল?
ইশক ছবির শুটিংয়ের সময় আমার জুহির (চাওলা) সাথে মনোমালিন্য হয়েছিল, এবং তারপর সাত বছর আমি তার সাথে কথা বলিনি। খুবই ছোট একটি ইস্যু ছিল। কিন্তু আমার মনে হয় আমি তখন কিছুটা ইগোয়িস্টিক ছিলাম। তাই আমি ঠিক করেছিলাম আর কখনোই তার সাথে কথা বলব না। এমনকি ইশকের সেটেও আমি তার থেকে দূরে দূরে থাকতাম। যখন সে এসে আমার পাশে বসত, আমি উঠে চলে যেতাম। আমি কখনোই দেখা হলে তাকে শুভেচ্ছা জানাতাম না কিংবা চলে আসার সময় বিদায় নিতাম না। কেবলমাত্র শট নেওয়ার সময় পেশাদারী কারণে আমি তার সাথে কথা বলতাম।
যখন রীনার সাথে আমার ডিভোর্সের খবর সে শুনতে পেল, সে আশাতীতভাবেই আমাকে ফোন করল এবং আমার সাথে দেখা করতে চাইল। জুহি আমার আর রীনার খুব ঘনিষ্ঠ ছিল, তাই সে আমাদের মধ্যকার সমস্যা সমাধান করে দিতে চেয়েছিল। তার মনে হয়েছিল আমি হয়তো তার ফোন ধরব না, কিন্তু তারপরও সে আমাকে কল দিয়েছিল। আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম যে, সে আমাকে কল দিয়েছিল। তার এই আন্তরিকতা আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছিল। সেই থেকে আমি বুঝতে পারলাম যে, মাঝখানের সময়টাতে আমাদের ভেতর যা-ই হয়ে থাকুক না কেন, তা আমাদের বন্ধুত্বকে বিন্দুমাত্র প্রভাবিত করতে পারেনি। আমরা হয়তো অনেকদিন পরস্পরের সাথে কথা বলিনি, তবু আমরা একে অপরের ভালোমন্দের কথা চিন্তা করতাম।
ক্ষমার কথা থেকে মনে পড়ল, থাগস অফ হিন্দুস্তানের পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ আচার্যকে কি আপনি ক্ষমা করতে পেরেছেন?
(হাসি) তাকে তো ক্ষমা করার কোনো প্রয়োজন নেই! আমি যেসব পরিচালকের সাথে কাজ করেছি, তারা প্রত্যেকেই অনেক ভালো, ঠিক তাদের লক্ষ্যের মতো। আমরা সকলেই চাই ভালো ছবি বানাতে, কিন্তু কখনো কখনো তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ছবি বানানো আসলে খুব কঠিন কাজ। আর আমি একজন টিম প্লেয়ার। যদি আমার পরিচালক কোনো ভুল করে থাকেন, তাহলে আমিও তার সাথে ভুল করেছি। আমরা আমাদের ভুলগুলো থেকেই শিক্ষাগ্রহণ করব।
আপনি কি থাগস অফ হিন্দুস্তানের ব্যর্থতার দায়ভার নিচ্ছেন?
দর্শক আমার নাম শুনেই ছবিটি দেখতে এসেছিল, তাই আমার দায় তো আছেই। ঐসব দর্শকের কাছে আমি সম্পূর্ণরূপে দায়ী।
আপনার কি মনে হয় ছবিটির সমালোচনা একটি বেশিই রূঢ় হয়ে গেছে?
এমন অনেকের সাথেও আমার দেখা হয়েছে যারা আমাকে বলেছেন ছবিটি তাদের কাছে ভালো লেগেছে। কিন্তু আমি এই বিষয়ে কাউকে বিচার করতে চাই না। আমার মনে হয় দর্শকের পূর্ণ অধিকার রয়েছে তারা কী চান তা বলার। তারা তাদের সমালোচনার জায়গায় রূঢ় হতেই পারেন, কারণ তাদের সেই অধিকার রয়েছে। তাছাড়া আমি অনেকদিন কোনো ফ্লপ ছবি দিইনি (হাসি), তাই এবার আমার উপর যাদের রাগ ছিল, তারা সেটি প্রকাশের সুযোগ পেয়েছেন। এটিও একটি ভালো দিক।
এই ধরনের ব্যর্থতা আপনি কী করে কাটিয়ে ওঠেন?
আমার সামনে তো কেবল একটি রাস্তাই খোলা আছে, তা হলো একটি ভালো ছবি করা। এই মুহূর্তে আমি সেটিরই পরিকল্পনা করছি।
আপনি কি রুবারু রোশনিকে অস্কারে পাঠাবার চিন্তাভাবনা করছেন?
আমি কখনো পুরস্কার নিয়ে ভাবি না। তাই আমি ওসব নিয়ে চিন্তা করছি না। কিন্তু এটি এমন একটি প্রামাণ্যচিত্র যেটি সকলের দেখা উচিৎ। অস্কারে বিদেশী ছবির ক্যাটাগরি সবচেয়ে কঠিন। প্রায় ৯০টি দেশ তাদের সেরা ছবিগুলোকে এখানে পাঠায়, তাই আপনাকে সেরাদের সেরা যারা, তাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়, হোক সেটি ব্রাজিল, ইরান কিংবা আর্জেন্টিনার কারো সাথে। আপনি যদি কোনোভাবে সেরা পাঁচে পৌঁছাতে পারেন, ধরে নেবেন ইতিমধ্যেই আপনার জয় হয়ে গেছে।
বিদেশী ভাষা কমিটির প্রধান মার্ক জনসনের একটি কথা আমার মনে পড়ে। তিনি রেইন ম্যান ছবিটিরও প্রযোজক, এবং আমাকে তিনি বলেছিলেন, বিদেশী ভাষার ক্যাটাগরিতে থাকা পাঁচটি ছবিই মূল ক্যাটাগরিতে থাকা ছবিগুলোর থেকে ভালো। তাই আপনি যদি মনোনীত হন, সেটিই একটি বিশাল ব্যাপার।
আপনি কেন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকেন?
আমি আমার ক্যারিয়ারের প্রথম দুই-এক বছর অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানগুলোতে যেতাম। কিন্তু এরপর আমি যাওয়া বন্ধ করে দিই, কারণ আমার মনে হয়েছিল ওসব পুরস্কারের মূল্য আমি হারিয়ে ফেলেছি। এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভালোভাবে এটুকুই আমি বলতে পারি।
হ্যাঁ, এটি একটি খুবই মনোরম সন্ধ্যা হয়, যেখানে সব সৃজনশীল ব্যক্তিরা একত্র হয়ে একে অপরের কাজের সাফল্য উদযাপন করতে পারেন। আমি বুঝি এটির পেছনের সুন্দর আবেগটি, এবং আমিও ওই গোষ্ঠী ও আবেগের শরীক হতে চাই, কিন্তু সবার আগে আমার কাছে জিনিসটির মূল্য থাকতে হবে।
এমন একটা সময় ছিল যখন জুরি বোর্ডের সদস্যদের কোনো ধারণাই ছিল না ছবি বানানোর ব্যাপারে। তাই সেই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ একজন যদি আমাকে বলেন যে, আমি ভালো অভিনেতা, তাতে কী যায় আসে? যদি দিলীপ কুমার, রাজ কাপুর বা লতা মঙ্গেশকর আমাকে বলেন আমি ভালো অভিনেতা বা আমি ভালো কাজ করেছি, আমি উঠে দাঁড়িয়ে সেই প্রশংসাটি গ্রহণ করব, কারণ আমার কাছে তাদের বক্তব্যের অনেক মূল্য আছে।
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/