‘অস্কার’ শব্দটি শুনলেই মনে পড়ে যায় সোনায় মোড়ানো মূর্তির কথা, যা অর্জন করার স্বপ্ন থাকে রুপালী পর্দার প্রতিটি মানুষের। অনেক পরিশ্রম, ত্যাগ এবং অধ্যবসায় মিশে আছে এই নামটির সাথে। অস্কার এককথায় চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ সম্মান। তবে অনেক অবাক হতে হবে, যখন মনে পড়বে, অনেক শ্রেষ্ঠ সিনেমা এবং শ্রেষ্ঠ মানুষদের কাছে ধরা দেয়নি এই সোনার হরিন। চলুন দেখে নেই তেমন কয়েকটি চলচ্চিত্রের নাম, যেগুলো সমালোচক কিংবা দর্শক সবার মন জয় করলেও অস্কার জয় করতে পারেনি।
দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন (১৯৯৪)
Hope is a good thing, maybe the best of things, and no good thing ever dies.
গল্পটি ছিলো শশাঙ্ক কারাগারে আটকা পড়া অ্যান্ডি ডুফ্রেন্সের আশা, ধৈর্য্য আর সাধনার। স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাসিকা ‘রিটা হেওয়ার্থ অ্যান্ড শশাঙ্ক রিডেম্পশন’ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটি এম্পায়ার ম্যাগাজিনে শ্রেষ্ঠ ১০০ চলচ্চিত্রের মধ্যে ভোটে ৪র্থ নির্বাচিত হয়েছিল। আর এ মুভিটি দুই কোটির বেশি ভোট পেয়ে এখনো IMDB-তে সেরা ২৫০ মুভির শীর্ষে আছে।
অস্কার মনোনয়ন: ১৯৯৫ সালের অস্কারে মোট পাঁচটি বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিলো সিনেমাটি। তার মধ্যে সেরা মুভি এবং সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মরগান ফ্রিম্যান মনোনয়ন পান। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, কোনো অস্কারই জোটেনি মুভিটির কপালে। সে একই বছর মুক্তি পেয়েছিলো ফরেস্ট গাম্প এবং পাল্প ফিকশনের মতো সেরা মুভি। তবে অস্কারে ফরেস্ট গাম্পের জয়জয়কার ছিল।
অনেকেই মুভিটিকে অস্কারের দৌড়ে টিকতে না পারার কারণ হিসেবে দায়ী করেন বক্স অফিসে ফ্লপ হওয়াকে। আর ফ্লপ হওয়ার জন্য দায়ী করা হয় মুভির টাইটেলকে।
ইটস অ্যা ওয়ান্ডারফুল লাইফ (১৯৪৬)
আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউটের মতে, এটি সর্বকালের সেরা অনুপ্রেরণাদায়ক চলচ্চিত্র। আসলেই তাই। এই সিনেমাটিতে জর্জ বেইলি যখন হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন তার সারা জীবনের ত্যাগ কীভাবে তার ভালোবাসার মানুষদের জীবন পাল্টে দিয়েছিল।
মজার বিষয় হলো, এই চলচ্চিত্রটি তৈরি করা হয় একটি ক্রিসমাস কার্ডের একটি ছোট গল্প ‘দ্য গ্রেটেস্ট গিফট’ এর উপর ভিত্তি করে।
অস্কার মনোনয়ন: সর্বমোট পাঁচটি বিভাগে মনোনয়ন পায় এই মুভিটি, যার মধ্যে সেরা চলচ্চিত্র এবং সেরা অভিনেতা হিসেবে জেমস স্টুয়ার্ট মনোনয়ন পান। কিন্তু সে বছর অস্কারে রাজত্ব করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে নির্মিত ‘দ্য বেস্ট ডেইজ অফ আওয়ার লাইভস’ মুভিটি। মোট আটটি বিষয়ে মনোনয়ন পেয়ে সাতটিই জিতে নেয়।
তবে জেমস স্টুয়ার্টের অস্কার না পাওয়া বেশ অবাক করা বিষয় ছিল। পুরো মুভিতে দুর্দান্ত অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার অভিনয়কে প্রিমিয়ার ম্যাগাজিন সর্বকালের সেরা পারফর্মেন্স হিসেবে ৮ নাম্বারে স্থান দেয়।
সাইকো (১৯৬০)
“We all go a little mad sometimes. Haven’t you?”
রবার্ট ব্লচের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট সর্বকালের সেরা থ্রিলার ফিল্ম হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। হবেই বা না কেন? তখনকার সময়ে সাইকোর মতো কোনো মুভি দর্শকদের এতটা প্রভাবিত করতে পারেনি। বেইটস মোটেলে কিছু অস্বাভাবিক হত্যাকান্ড এবং একটি অপ্রত্যাশিত সমাপ্তির কারণে আজও চলচ্চিত্রটি সমানভাবে জনপ্রিয়। আর এই চলচ্চিত্রের বিখ্যাত শাওয়ার সিনকে বলা হয় সিনেমাজগতের শ্রেষ্ঠতম। ৪৫ সেকেন্ডের সেই সিনটি শ্যুট করতে লেগেছিলো পুরো এক সপ্তাহ, ৭৭টি ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল এবং ৫২টি কাট!
অস্কার মনোনয়ন: মোট চারটি বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিল মুভিটি, যার মধ্যে সেরা পরিচালক এবং সিনেমাটোগ্রাফি ছিল। অবাক করা বিষয় হলো, মুভিটি সেরা চলচ্চিত্র এবং বার্নাড হারম্যানের সেই অসাধারণ মিউজিক স্কোরটির জন্য অস্কার মনোনয়নই পায়নি।
এক্ষেত্রে আলফ্রেড হিচককের কথা বলতেই হবে। চলচ্চিত্রজগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালক এবং আধুনিক সাসপেন্সের জনক পাঁঁচবার অস্কার মনোনয়ন পেয়েও একবারও অস্কার জিততে পারেননি।
দ্য গুড দ্য ব্যাড এন্ড দ্য আগলি (১৯৬৬)
হয়তো বা অনেকেই জানেন না, সার্জিও লিওনের ডলার ট্রিলজির শেষ মুভি ছিল এটি। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময়ে ব্লন্ডি (দ্য গুড), অ্যাঞ্জেল আইজ (দ্য ব্যাড) এবং টুকো (দ্য আগলি)-কে নিয়েই এগিয়ে যায় সিনেমাটি, যা ডিরেক্টর কুয়েন্টিন টারান্টিনোর মতে সেরা ওয়েস্টার্ন মুভি। তাছাড়া IGN এই মুভিটিকে সেরা ২৫ ওয়েস্টার্ন চলচ্চিত্রের মধ্যে সপ্তম স্থান দেয়।
অস্কার মনোনয়ন: না, চলচ্চিত্রটি কোনো অস্কার মনোনয়ন পায়নি। কারণ মুভিটি সে সময়ে ক্রিটিকদের মন জয় করতে পারেনি, যার মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় মুভিটির সাব জনরাকে, স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন (যে চলচ্চিত্রগুলো আমেরিকান ওয়েস্টার্ন ভঙ্গিতে নির্মিত, কিন্তু মুভিটির পরিচালক থাকেন ইতালিয়ান)। তাছাড়াও সিনেমাটিতে একটু বেশি সহিংসতাও ছিল। তবে বর্তমানে এই চলচ্চিত্রটি সব সমালোচনা ডিঙিয়ে পৃথিবীজুড়ে অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃত। যদিও এনিও মরিকনের দুর্দান্ত স্কোর মনোনয়ন না পাওয়ায় খারাপ লাগতেই পারে।
এর দু’বছর পরে মুক্তি পাওয়া সার্জিও লিয়নের আরেক মুভি ওয়েস্টার্ন ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট -ও কোনো অস্কার মনোনয়ন পায়নি।
টুয়েল্ভ অ্যাংরি ম্যান (১৯৫৭)
কিশোরটি কি তার বাবাকে হত্যা করেছিলো? নাকি সে নির্দোষ? তা নিয়ে জুরি বোর্ডের ১২ জন সদস্য আর তাদের আলোচনার প্রবাহ নিয়েই মুভিটি। বাইরের অল্প কিছু অংশ বাদে পুরো সিনেমাটি শ্যুট করা হয় মাত্র তিনটি রুমে। সিডনি লুমের পরিচালনায় এই চলচ্চিত্রটিকে বলা হয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা কোর্টরুম ড্রামা। অসাধারণ লেখনি আর অভিনয়ের জন্য কোনোপ্রকার অ্যাকশন কিংবা প্লট টুইস্ট না থাকা সত্ত্বেও এই সিনেমাটি বেশ উপভোগ্য।
অস্কার মনোনয়ন: সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক এবং সেরা রাইটিং এই মোট তিন বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিলো সিনেমাটি। এই তিন বিষয়েই মুভিটিকে হারিয়ে অস্কার জিতে নেয় ব্রিজ অন দ্য রিভার কোয়াই। যদিও চলচ্চিত্রটি অস্কার জিততে ব্যর্থ হয়, কিন্তু বরিস কাফম্যানের অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফি আজও সবাইকে মুগ্ধ করে।
ফাইট ক্লাব (১৯৯৯)
“Welcome to Fight Club. The first rule of Fight Club is: you do not talk about Fight Club. The second rule of Fight Club is: you DO NOT talk about Fight Club!”
দ্য ন্যারেটর আর টাইলার ডারডেনের গড়া ফাইট ক্লাব নিয়ে চলতে থাকা মুভিটি হয়তো এত জনপ্রিয় মাথা ঘুরিয়ে দেয়া এন্ডিংয়ের জন্য। চাক পালানিউকের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি টোটাল ফিল্মসের ১০০ সেরা মুভির তালিকায় দর্শকদের ভোটে চতুর্থ স্থান পায়।
অস্কার মনোনয়ন: কেবল মাত্র একটি বিভাগে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলো সিনেমাটি, সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের জন্য। সেটা জিততে পারেনি এটায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ সেই একই বছর ম্যাট্রিক্স, স্টার ওয়ার্স এপিসোড ১ একই বিভাগে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলো।
প্রথমদিকে ক্রিটিকদের সমালোচনা এবং বক্স অফিসে ভরাডুবি হয়েছিলো মুভিটির। তবে সিনেমাটোগ্রাফার ক্রোনেনওয়েথের মনোনয়ন না পাওয়া সত্যিই অবাক করা বিষয়।
ট্যাক্সি ড্রাইভার (১৯৭৬)
পুরো মুভিটাই ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত ভিয়েতনাম যুদ্ধফেরত ট্রেভিস বিকলের। ব্যর্থ এবং নিঃসঙ্গ বিকলের এই গল্প ছিল তখনকার লক্ষাধিক আমেরিকানের। ট্রেভিস বিকল একাকিত্বে আয়নায় নিজেকে প্রশ্ন করা “You takin’ to me?” চলচ্চিত্রের ইতিহাসেই অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ একটি উক্তি। প্রিমিয়ার ম্যাগাজিনের সেরা ১০০ মুভির মধ্যে এটি আটে স্থান পেয়েছে।
২০১১ সালে এম্পায়ার ম্যাগাজিন এই মুভিটিকে আখ্যায়িত করে, “A vivid fever dream we still haven’t woke up from“ হিসেবে।
অস্কার মনোনয়ন: মোট চারটি ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পায় মুভিটি, যার মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্র এবং সেরা অভিনেতা (রবার্ট ডি নিরো)। পরিচালক হিসেবে মার্টিন স্করসেজি নমিনেশন পাননি। তবে এই মুভিটিকে আখ্যায়িত করা হয় তার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে।
রিজার্ভার ডগস (১৯৯২)
কাকে রেখে কাকে বিশ্বাস করবেন? একটি গয়নার দোকানের ডাকাতের ঘটনা আর তারপরের কাহিনী নিয়ে যখন গল্প এগিয়ে যায় তখন সবার মনেই এই প্রশ্ন আসতে বাধ্য। এটা ছিল পরিচালক কুইন্টিন ট্যারান্টিনোর নির্মিত প্রথম সিনেমা। এম্পায়ার ম্যাগাজিনে এই চলচ্চিত্রটি সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় সেরা স্বাধীন চলচ্চিত্রের খেতাব পায়। যদিও এটি প্রথমদিকে দর্শকদের মন জয় করতে পারেনি, বক্স অফিসে ফ্লপ হয়। তবে পাল্প ফিকশনের সফলতার পর মুভিটি নিয়ে সবার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
অস্কার মনোনয়ন: এ মুভিটি কোনো অস্কার মনোনয়ন পায়নি। তবে অনেকেই মনে করেন, অন্তত স্ক্রিনপ্লের জন্য মনোনয়ন পাওয়া উচিত ছিল।
লিওন: দ্য প্রফেশনাল (১৯৯৪)
লিয়ন নামের একজন পেশাদার খুনীর কাছে আশ্রয় পায় মাতিলদা, যার পুরো পরিবারকেই হত্যা করেছিল গ্যারি ওল্ডম্যানের চরিত্র স্ট্যানসফিল্ড। ছোট ভাইকে হত্যার প্রতিশোধেই লিয়নের কাছেই একজন খুনী হবার প্রশিক্ষণ নিতে থাকে মাতিলদা। মুভিতে লিয়নের সাথে মাতিলদার সম্পর্ক বেশ ভালোভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। এই সিনেমার মাধ্যমেই চলচ্চিত্রের রুপালী জগতে অভিষেক হয় নাটালি পোর্টম্যানের।
অস্কার মনোনয়ন: এই চলচ্চিত্রটিও অস্কার মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়, যার একটা কারণ হতে পারে একই বছর শশাঙ্ক রিডেম্পশন, ফরেস্ট গাম্প, পাল্প ফিকশনের মতো মুভির মুক্তি পাওয়া। তবে গ্যারি ওল্ডম্যানের অসাধারণ অভিনয় মনোনয়ন না পাওয়া কিছুটা হতাশারই বলা যায়।
দ্য শাইনিং (১৯৮০)
স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাস অবলম্বনে স্ট্যানলি কুবরিকের আরেকটি মাস্টারপিস। গল্পে ওভারলুক হোটেলের দেখাশোনা করতে আসা জ্যাক টরেন্স তার আগের কেয়ারটেকারের মতোই নিজ পরিবারকে হত্যা করতে যায়। মুভিটিকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা হরর মুভি বলা হয়।
অস্কার মনোনয়ন: ৫৩ তম অস্কারে চলচ্চিত্রটি একটিও অস্কার মনোনয়ন পায়নি। এর বেশ কিছু কারণও ছিল। মুভিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই অনেকেই এটি পছন্দ করেননি। বক্স অফিসে ফ্লপও হয়েছিল মুভিটি। এমনকি স্টিফেন কিং ভিজ্যুয়াল পছন্দ করলেও বাকি সিনেমা পছন্দ করেননি। তিনি মুভিটি সম্পর্কে বলেছিলেন, “এটি জাঁকজমকপূর্ণ গাড়ি, কিন্তু এর ইঞ্জিন নেই।” আরো অবাক করা বিষয় হলো, সেবছর গোল্ডেন রাস্পবেরি অ্যাওয়ার্ডে সিনেমাটির জন্য শ্যালি ডুভেল, আর স্ট্যানলি কুবরিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন! তবে VHS এ মুক্তি পাওয়ার পর আস্তে আস্তে মুভিটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। রজার এলবার্ট বলেছিলেন, এটি ইতিহাসের সেরা হরর মুভি।
একটি তথ্য না জানালেই নয়, অভিনেত্রী শ্যালি ডুভেল জানিয়েছিলেন, ‘Here’s Johnny’ সিনটির শ্যুট করতে তিনদিন সময় লেগেছিল, এবং জ্যাক নিকলসন ষাটটি দরজা ভেঙেছিলেন! এই উক্তিটিকে প্রিমিয়ার ম্যাগাজিনের ১০০ সেরা মুভি লাইনের মধ্যে ৩৬ এ স্থান দেয়।
সিঙ্গিন’ ইন দ্য রেইন (১৯৫২)
হলিউডে সবাক চলচ্চিত্রের আবির্ভাবের পর নির্বাক চলচ্চিত্রের অভিনেতাদের ঠিক কীভাবে নতুন এ পদ্ধতির সাথে মানিয়ে নিতে হয়েছিলো তা নিয়েই এই মুভি। আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট মুভিটিকে সেরা আমেরিকান মিউজিক্যাল বলে আখ্যায়িত করে। এবং মুভিটির গান Singin’ in the Rain তাদের তালিকায় তৃতীয় স্থান পায়। এছাড়াও এম্পায়ার ম্যাগাজিনের ভোটে সেরা ১০০ মুভির তালিকায় সেরা আটে স্থান করে নেয় মুভিটি।
অস্কার মনোনয়ন: যদিও অস্কারে মিউজিক্যাল মুভির বেশ জয়জয়কার ছিল তখন, ১৯৫৪-৬৪ পর্যন্ত পাঁচটি মিউজিক্যাল মুভি অস্কার জিতেছিল। কিন্তু সে সৌভাগ্য হয়নি এই সিনেমাটির। দুটি বিষয়ে অস্কার মনোনয়ন (সেরা অভিনেত্রী এবং সেরা স্কোর) পেলেও জিততে পারেনি কোনোটিতেই।
কিং কং (১৯৩৩)
কিং কংকে নিয়ে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল এটি। তখনকার সময়ের হিসেবে মুভিটি অবাক করেছিলো সবাইকে। মুক্তি পাওয়ার প্রথম সপ্তাহান্তেই ৯০ হাজার ডলার আয় করে, যা ছিল সেসময়ের সবচাইতে বড় ওপেনিং।
অস্কার মনোনয়ন: অস্কারের মনোনয়ন জোটেনি এই মুভিটির ভাগ্যে। সেরা মুভি হিসেবে হয়তো মনোনয়ন পাওয়া উচিত ছিল মুভিটির। যারা হয়তো স্পেশাল ইফেক্টের কথা ভাবছেন, তাদের হতাশ হতে হবে এটা জেনে, তখন অস্কারে স্পেশাল ইফেক্টসের জন্য কোনো পুরস্কারের ব্যবস্থা ছিল না!
মিন স্ট্রিটস (১৯৭৩)
সেরা গ্যাংস্টার মুভির তালিকায় এই নামটিও আসবে, যেখানে চার্লি চেয়েছিল নিউ ইয়র্কের মাফিয়া তালিকায় আরো উপরে উঠতে। তারপর সে দেখতে পেলো, এই রাস্তা এত সহজ না, যতটা সে ভেবেছিল। এম্পায়ার ম্যাগাজিন এই সিনেমাটিকে আমেরিকান সেরা স্বাধীন চলচ্চিত্রের খেতাব দেয়।
অস্কার মনোনয়ন: মার্টিন স্করসেজির এই মুভিটিও অস্কারে কোনো মনোনয়ন জিততে পারেনি। এই সিনেমাতেও রবার্ট ডি নিরো অনবদ্য ছিলেন।
ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন আমেরিকা (১৯৮৪)
সার্জিও লিয়নের আরেকটি মাস্টারপিস, সাথে এনিও মরিকনের দুর্দান্ত মিউজিক স্কোর। সার্জিও লিয়ন ওয়েস্টার্ন থেকে সরে নির্মাণ করলেন গ্যাংস্টার মুভি এবং এটিই তার সর্বশেষ মুভি। মুভির কাহিনী একজন ইহুদি গ্যাংস্টারকে নিয়ে, যে ত্রিশ বছর পর ম্যানহাটনে ফিরে নিজের আগের জীবনের অনুশোচনা করে।
অস্কার মনোনয়ন: সার্জিও লিয়ন আর অস্কার যেন দুই মেরুতে অবস্থান করে। কখনোই কেউ কারো কাছে ধরা দেয়নি। এই মুভির ক্ষেত্রেও একই কথা। একটি মনোনয়নও জিততে পারেনি সিনেমাটি।
দ্য কালার পার্পল (১৯৮৫)
অ্যালিস ওয়াকারের সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘দ্য কালার পারপল’ অবলম্বনে ১৯৮৫ সালে এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন স্টিফেন স্পিলবার্গ। কেলি নামের ১৪ বছরের এক কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ের জীবনের সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছিল এই মুভিটিতে। এটি ছিল অপরাহ উইনফ্রের প্রথম মুভি।
অস্কার মনোনয়ন: অবাক করা বিষয় হলেও সত্য, এগারোটি বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে একটিও জিততে পারেনি এই মুভিটি। এই রেকর্ড আছে কেবল দ্য টার্নিং পয়েন্ট মুভিটির। এটিই প্রথম পিজি থার্টিন মুভি, যেটা অস্কারের জন্য মনোনয়ন পায়।