মানুষমাত্রই ভোজনবিলাসী। ভোজনপ্রিয় মানবজাতি হাঁস মুরগি থেকে শুরু করে নানা ধরণের পোকাও খেতে ছাড়েনি। বিভিন্ন উপায়ে কেটেকুটে রেঁধে সবই হজম করতে ওস্তাদ আমরা। চলুন আজ দেখে আসি কিছু আজব খাবারের নমুনা। সেইসাথে দেখে নিব উদ্ভট সব খাবারের প্রাপ্তিস্থান।
Khash – Middle East, East Europe and Turkey
খাশ তৈরি হয় খাসি বা গরুর মাথা এবং পায়ার স্টু থেকে। খাসি এবং গরুর মাথা এবং পায়াকে প্রচুর মসলা দিয়ে রান্না করা হয়। এতে প্রচুর ঝোল থাকে। পায়া এবং মাথাগুলো ঝোলের মাঝে ডুবানো থাকে। আরবীয় অঞ্চলগুলোতে এ খাবারের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।
Jing Leed – Thailand, Mexico
ঘাসফড়িঙ খুবই উপাদেয় খাদ্য যদি একে ভালোভাবে মেরিনেট করে ভাজা হয়। তখন এটা খেতে অনেকটা ফ্রায়েড চিকেনের মতো লাগে। সাথে লেবু আর টমেটো থাকলে তো কথাই নেই।
Escargots à la bourguignonne – France
শামুকের অন্যান্য রেসিপির মাঝে এই রেসিপিটি সেরা। আর হবেই বা না কেন ভোজনরসিকের দেশ ফ্রান্সের খাবার বলে কথা।
Sannakji – Koreya
এটি মূলত অক্টোপাসের রেসিপি। অক্টোপাস কেটে ছোট ছোট টুকরা করে সসে ডুবিয়ে খেতে হয়।
Wasp Crackers – Japan
আশা করি বুঝে ফেলেছেন, এটা যে বোলাতার বিস্কিট। শুধু একবার ভেবে দেখুন যে বোলতার কামড় আপনি এত ভয় পান সেই বোলাতাই জাপানিরা এক কামড়ে শেষ করে দেয়। আমরা যে চকোলেট বিস্কিট খাই তাতে চকোলেটের চিপসগুলো যেভাবে ছড়িয়ে থাকে ঠিক সেভাবে বোলাতাও ফ্রাই হয়ে বিস্কিটের মাঝে আটকে থাকে। আর বোলতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জাপানিরা আরাম করে কামড় দিয়ে খায় এই বিস্কিট।
Soup Number Five – Philippines
Soup Number Five নামটা দেখে অনেকেই খাবারটি অর্ডার করেন। কিন্তু খাবার মুখে দেয়ার পর টের পান জিনিসটি কি। এটি হল ষাঁড়ের প্রাইভেট পার্ট মানে পেনিস এবং শুক্রাশয়ের স্যুপ। আহা বেচারা ষাঁড়ের প্রাইভেট পার্টও মানুষের জিভের হাত থেকে রক্ষা পেল না।
Crocodile Meat- Australia, Southeast Asia and Africa
কুমির নাকি মানুষ খায়। দিনকাল যা যাচ্ছে মানুষই এখন কুমির গ্রিলড এবং ফ্রাই করে খাচ্ছে। কুমিরের মাংসে উচ্চ প্রোটিন এবং কম ফ্যাট থাকায় এই খাদ্য বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
Beondegi – Koryea
বিয়োন্ডেগি কোরিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় নাস্তা। এটা এতটাই জনপ্রিয় যে খাবারটি ফুটপাথেও পাওয়া যায়। রেশমগুটি পোকাকে ভালমত সেদ্ধ করে তারপর হালকা মসলা এবং সস দিয়ে তৈরি হয় কোরিয়ান এই নাস্তা। তবে খেতে খানিকটা কাঠ কাঠ লাগতে পারে।
Sago Delight – Southeast Asia
Sago Delight মূলত সাগু কিটের তৈরি। তৈরি না বলে আসলে সাগু কীটই বলা চলে কারণ এই পোকাটি রান্না না করেই খাওয়া হয়। খেতে খানিকটা মিষ্টি চিংড়ির মতো লাগে।
Mopane Worm – Southern Africa
মোপেন পোকা ভাজলে খেতে অনেকটা পটেটো চিপসের মতো লাগে। তবে মোপেনে মাংসের চেয়ে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন থাকে।
Bird’s Nest Soup – Southeast Asia
পৃথিবীর অন্যতম দামি খাবারের একটি হল পাখির বাসার স্যুপ। স্যুইফ্লেট পাখিরা অন্য পাখিদের মতো খড় এবং কাঠি দিয়ে বাসা বুনে না। এরা মুখ থেকে নিস্রিত লালা দিয়ে বাসা তৈরি করে যা পড়ে বাতাসে শুকিয়ে কঠিন হয়ে পড়ে। অতি দুর্লভ এই খাবারটি খেতে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।এর স্বাদ চিরজীবন মুখে লেগে থাকার মতো।
Smalahove (ভেড়ার মাথা) – Norway
আস্ত ভেড়ার মাথা থেকে মগজ আলাদা করে ফেলা হয় তারপর পানিতে সেদ্ধ করে লবণ দিয়ে মাখিয়ে রাখা হয়। তারপর মসলা দিয়ে মেরিনেট করে রাখা হয়। অতঃপর মাথার খুলিটি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং টমেটো সস দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
Shiokara – Japan
স্কুইডের নাড়িভুড়ি অন্ত্রের গ্যাস্ট্রিক রস দিয়ে এই খাবারটি তৈরি হয়। হালকা লবণ, সয়া সস এবং সস দিয়ে খাবারটি পরিবেশন করা হয়।
Stake Tartare – France
এটা পুরোটাই কাচা মাংসের রেসিপি। তবে মাংসটা খানিকটা কিমা করা হয়। কাচা ডিম আর পেঁয়াজ দিয়ে খেতে দারুন লাগে এই খাবারটি।
Frog Legs – France, Southeast Asia
ব্যাঙের পায়ের ফ্রাই খাওয়া হয়। তবে ফ্রান্সে এই খাবারের প্রচলন সবচেয়ে বেশি। তবে গ্রিলড বা ঝাল ফ্রাই হিসেবে অনেক দেশেই এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে সবচেয়ে মজার হল এর ফ্রাই, ক্রিমসস, হোয়াইট সস দিয়ে খেতে দারুন লাগে।
Turtle Soup – China, Singapore, United States
কচ্ছপের মাংস, চামড়া এবং খোলসের নরম অংশ থেকে তৈরি হয় এই স্যুপ। তবে চীনেও এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
Kangaroo Meat – Australia
ক্যাঙ্গারুর দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ক্যাঙ্গারুর মাংস গ্রিলড কিংবা কাবার করে খাওয়া হয়।
Dragon in Flame of Desire – China
ষাঁড়ের পেনিস দিয়ে তৈরি এই খাবার ত্বকের জন্য ভালো।
Earthworms
প্রথমে কেঁচোগুলোকে ময়দা এবং ভুট্টার গুড়ার মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয় যাতে ময়লা পরিশাক্র হয় ভালোমত। তারপর যেকোনো রান্নায় ব্যবহার করা যায়। মোটামুটী সারা পৃথিবী জুড়ে এই ধরণের খাদ্যাভ্যাসের প্রচলন রয়েছে।
Ant Eggs Soup – Laos
লাওসে পিঁপড়ার ডিম মাছ, মাংস, সবজির রেসিপি এবং স্যুপে ব্যবহার করা হয় হয়। প্রথমে ডিমগুলোকে বালতির পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। তারপর প্রয়োজনমতো বিভিন্ন পদের সাথে পরিবেশন করা হয়।