বঙ্গোপসাগরের নাম ‘বঙ্গোপসাগর’ যেভাবে হলো

বঙ্গ+উপ+সাগর = বঙ্গোপসাগর। অর্থাৎ ‘বঙ্গ দেশের উপসাগর’ বা ‘বাংলাদেশের উপসাগর’। তবে ‘বঙ্গ দেশের উপসাগর’ বলাই শ্রেয়; কেননা এর সাথে কলকাতা বা পশ্চিম বাংলারও সংযোগ রয়েছে। তাছাড়া দেশভাগের আগে উভয় বাংলা তো এক সাথেই ছিল। কিন্তু জটিলতাটা শুরু হয় অন্য জায়গায়। বঙ্গোপসাগরের সাথে তো আরও অনেক দেশ বা অঞ্চলের সংযুক্তি রয়েছে, যেমন- মায়ানমার, ভারত, শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ড; আরও রয়েছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। ফলে অনুসন্ধিৎসু মনে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, বঙ্গোপসাগরের নাম তাহলে ‘মায়ানমার উপসাগর’, ‘ভারত উপসাগর’ বা ‘শ্রীলংকা উপসাগর’ ইত্যাদি হলো না কেন? আজ আপনাদের সেই প্রশ্নের উত্তরই দেয়া হবে।

প্রথম কথা হচ্ছে, বঙ্গোপসাগরের নামকরণের পেছনে অবশ্যই কোনো না কোনো ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। তবে সেই কারণটা কী তা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ইতিহাসের পাতায় পাওয়া যায় না। তবুও বঙ্গোপসাগরের নামকরণের পেছনে আমরা তিনটি অনুমান ধরে নিতে পারি।

প্রথমত, প্রাচীন বঙ্গ অঞ্চলের নামানুসারেই বঙ্গোপসাগর নামকরণ করা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, ভারতের প্রাচীন গ্রন্থগুলোতে বঙ্গোপসাগরের নাম উল্লেখ থাকায় এমন নামকরণ করা হয়েছে।
তৃতীয়ত, প্রাচীন বঙ্গ অঞ্চলের মানুষের এমন কোনো বীরত্বগাঁথা ছিল যার কারণে তাদের সম্মানার্থে বা প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের নামকরণ বঙ্গোপসাগর করা হয়েছে।

এখন আমরা এই তিনটি পূর্বানুমান যাচাই বাছাই করে দেখবো।

বঙ্গোপসাগরের মানচিত্র; Image Source: wikimedia

প্রথমে যে অনুমানটি আমরা ধরে নিয়েছি সেটা হচ্ছে, বঙ্গ অঞ্চলের নামানুসারেই বঙ্গোপসাগর নামকরণ করা হয়েছে। সাধারণভাবে এই অনুমানটিই অধিকাংশ মানুষ সঠিক মনে করে, কেননা ‘বঙ্গ+উপসাগর’ নামটি ‘বঙ্গ’ থেকে এসেছে এটা ধরে নেয়াই সবচেয়ে সহজ ও স্বাভাবিক। কিন্তু এই অনুমানের ব্যাপারে খানিকটা আপত্তি আমরা ভূমিকাতেই তুলে ধরেছি।

এখন আমরা আরেকটু অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে অনুসন্ধান করে দেখাবো যে, বাংলাদেশ বা প্রাচীন বঙ্গদেশের সাথে বঙ্গোপসাগরের যতটুকু সীমানা জড়িত রয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি সীমান্ত জড়িত রয়েছে মায়ানমার, ভারত কিংবা থাইল্যান্ডের সাথে (উপরের মানচিত্র দ্রষ্টব্য)। তাহলে এসব দেশ বা অঞ্চল বিশেষের নামানুসারেও তো বঙ্গোপসাগরের নামকরণ হতে পারতো। দ্বিতীয়ত, প্রাচীনকাল থেকে অত্র অঞ্চলের পরিচয় ‘ভারত’ হিসেবে অধিক প্রতিষ্ঠিত ছিল; কেননা ‘ভারত’ দ্বারা অধিক বিস্তৃত অঞ্চল ও সভ্যতা নির্দিষ্ট করা যায়। ফলে ‘বঙ্গ উপসাগর’ নামকরণের থেকে ‘ভারত উপসাগর’ নামকরণ করা কি অধিক যুক্তিপূর্ণ নয়? এমন কিছু আপত্তির কাছে আমাদের প্রথম অনুমান সন্দেহপূর্ণ হয়ে পড়ে।

আমাদের দ্বিতীয় অনুমান ছিল, ভারতীয় প্রাচীন গ্রন্থগুলোতে ‘বঙ্গোপসাগর’ শব্দটির উল্লেখ থাকা; এই অনুমানটি প্রথম অনুমানের চেয়ে অধিক শক্তিশালী। কেননা প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রে সংস্কৃত শব্দ ‘বঙ্গোপসাগর’, ‘বঙ্গসাগর’, ‘পূর্বপয়োধি’ প্রভৃতি শব্দের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু প্রাচীনকালে বঙ্গ অঞ্চল ব্যতীত ভারতের অন্যান্য এলাকায় বঙ্গোপসাগরকে ‘মহোদধি’ নামে ডাকা হতো। প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রেও ‘মহোদধি’ শব্দের উল্লেখ রয়েছে, যার আক্ষরিক অর্থ ‘বিরাট জলাধার’। পাশাপাশি প্রাচীন মানচিত্রগুলোতে বঙ্গোপসাগরের নাম ‘সাইনাস গ্যাঞ্জেটিকাস’ বা ‘গ্যাঞ্জেটিকাস সাইনাস’ উল্লেখ করা হয়েছে (নিচের মানচিত্র দ্রষ্টব্য), যার অর্থ ‘গঙ্গা উপসাগর’।

গঙ্গা হিন্দু ধর্মের একজন প্রভাবশালী দেবীর নাম, পবিত্র মহাভারতে গঙ্গা দেবীর নাম উল্লেখিত আছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে প্রাচীন গ্রন্থ থেকে ‘বঙ্গোপসাগর’ নামকরণ করা হয়েছে এমন অনুমানও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। কেননা প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ অনুসারে বঙ্গোপসাগরের নাম ‘মহোদধি’ বা ‘গঙ্গা উপসাগর’ও হতে পারতো। এছাড়া প্রাচীন গ্রন্থগুলোতে ‘বঙ্গোপসাগর’ শব্দটি উল্লেখ থাকলেও এই শব্দের উৎপত্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া নেই।

১৭৯৪ সালে জে. বি. বি. ডি. অ্যানভিল কর্তৃক অঙ্কিত এই মানচিত্রে বঙ্গোপসাগরের নাম ‘গ্যাঞ্জেটিকাস সাইনাস’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে; Image Source: wikimedia

আমাদের তৃতীয় যে অনুমান ছিল তা হলো, প্রাচীনকালে বঙ্গ অঞ্চলের মানুষের এমন কোনো বীরত্বগাঁথা ছিল, যার কারণে তাদের সম্মানার্থে বা প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের নামকরণ ‘বঙ্গোপসাগর’ করা হয়েছে। অনেক ঐতিহাসিক এই অনুমানকেই সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তাদের মতে, সেই বীরত্বগাঁথা হচ্ছে- বঙ্গ এলাকায় অত্যন্ত সাহসী ও যোগ্যতাসম্পন্ন নাবিকদের জন্ম হওয়া।

প্রাচীনকাল থেকেই এখান বহু আন্তর্জাতিক নাবিকের জন্ম হয়েছে। এখানকার নাবিকরা শুধু বঙ্গোপসাগর নয়, বরং সারা বিশ্বে নিজেদের প্রভাব বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। এই অনুমানের স্বপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট সাহিত্যিক শ্রী অন্নদা শঙ্কর রায় ‘সাপ্তাহিক দেশ’ পত্রিকার একটি প্রবন্ধে লিখেছেন :

বাংলাদেশ কেবল মাত্র নদীমাতৃক নয়, সমুদ্র তীরবর্তী দেশ। বঙ্গোপসাগরের নাম যে দেশের নামানুসারে হয়েছে সেই দেশ একদা সমুদ্র যাত্রায় অগ্রণী ছিল। ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর- এসব নাম অকারণে রাখা হয়নি। যারা রেখেছিল তারা পৃথিবীর নাবিক সম্প্রদায়। তাদের মধ্যে বাঙালি গণ্যমান্য ছিল। সেসব নাবিকদের বংশধর এখন ‘লস্কর’ নামে বিদিত। বিশ্বের সব দেশে এদেরকে চেনে। এদেরও সব দেশ চেনা। কিন্তু এদের নিজেদের কোনো জাহাজ নেই। পরের জাহাজেই এদের জীবন কেটে যায়। এদের দুঃখের কাহিনী আমার জানা। একদা এদের কারো কারো প্রাণ হানির বা অঙ্গহানির ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছিল আমাদের বিচার্য বিষয়। এদের সবাই পূর্ব বাংলার লোক। সাধারণত চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট জেলার।

ফিশিং বোট, এই ট্রলারে করে সাগরে মাছ ধরতে যান বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী জেলেরা; Image Source: iucn.org

অন্নদা শঙ্করের এই লেখায় দেখা যাচ্ছে, বঙ্গ দেশের নামকরণ এখানকার দুঃসাহসী অথচ নিঃস্ব একদল নাবিকদের হাত ধরে এসেছে। তাদের নিজেদের কোনো জাহাজ ছিল না; স্বভাবতই তারা অনেক ধন-সম্পদের মালিকও ছিলেন না। কিন্তু তারা ছিলেন অত্যন্ত গুণবান। আরও লক্ষ্যণীয় যে, অন্নদা শঙ্কর এসব নাবিকের আবাস্থলও নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে দিয়েছেন- চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট জেলা; অর্থাৎ তাদের নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশে।

সময়ের পরিবর্তনে হয়তো এই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে; সিলেট জেলার সাথে এখন সাগরের সংযোগ নেই, কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ এখনো পেশাগতভাবে সামুদ্রিক জেলে। তারা প্রাচীনকালের মতোই মাছ ধরতে সমুদ্রে গমন করে। এদের নিজেদের কোনো জাহাজ বা ট্রলার ছিল না। মহাজনের ট্রলার নিয়ে জীবন বাজি রেখে বেড়িয়ে পড়েন সমুদ্রপানে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মাঝে মাঝেই আমরা তাদের নিহত হওয়ার খবর পাই।

সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের পুরুষেরা সমুদ্রে গিয়ে আর ফিরে আসেননি; ফেরত আসেনি তাদের লাশও। যা-ই হোক, আমাদের আলোচিত সেসব প্রাচীন লস্করগণ শুধুমাত্র বঙ্গপসাগরে সীমাবদ্ধ থাকতেন না, যোগ্যতাবলে বিভিন্ন সাগর-মহাসাগরে জাহাজ পরিচালনা করে বেড়াতেন। বিশেষ করে আরব বণিকগণ তাদেরকে জাহাজ চালক হিসেবে বঙ্গ সন্তানদের সাথে নিতেন। তাদের যোগ্যতা সম্পর্কে অন্নদা শঙ্কর তার প্রবন্ধে লিখেছেন :

এই একটি ক্ষেত্র যেখানে বাঙালি নাবিকরা ও বণিকরা অল্প দিনের মধ্যেই গ্রিকদের মতো কুশলী হতে পারে। যে যার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে বড় হয়। বাংলাদেশের একটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করলুম। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কথা সকলেই জানেন।

‘স্যার ল্যান্সেলোট’ নামক এই জাহাজটি ১৮৯৫ সালের ১ অক্টোবর এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে বঙ্গোপসাগরে হারিয়ে যায়; Image Source: wikimedia

এখন অন্নদা শঙ্করের দাবীর প্রেক্ষিতে একটি প্রশ্ন এসে যায় যে, সেসব নাবিক বা লস্করদের যদি জাহাজ না থেকে থাকত তাহলে তারা কাদের জাহাজ পরিচালনা করতেন। তাছাড়া সেসব বাণিজ্যিক জাহাজ কাদের ছিল। এসব প্রশ্নের অনুসন্ধানে আমরা দেখতে পাবো যে, প্রাচীনকালে অত্র অঞ্চলে আরব বণিকদের আগমন ঘটেছিল। তারা বঙ্গদেশের নাবিকদের সাথে নিতেন, প্রশিক্ষণ দিতেন। বিভিন্ন সময়ে এসব আরব বনিকগণ চীন হয়ে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্য করতে আসতেন। এ সম্পর্কে ঐতিহাসিক এলফিনস্টোন তার ‘দি হিস্টোরি অফ ইন্ডিয়া’ গ্রন্থে লিখেছেন : 

সর্বাগ্রে অনাবাদী ও কর্কশ মরুভূমির আরব উপদ্বীপ ও ভূ-মণ্ডলের লোকেরা পৃথিবীর যে দিকে মাটি, সোনা, পানি, মুক্তা, অরণ্য ও সুগন্ধি বৃক্ষরাজি পাওয়া যেত সেদিকে ছুটে যেতো। একদিকে মিসর, সিরিয়া ও ইরাক, অপরদিকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চল (বর্তমান বাংলাদেশ), এশিয়া ও আফ্রিকা নামের দুটি মহাদেশের উর্বর ও বিস্তৃত ভূ-ভাগে আরবগণ তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ অনুসন্ধান করে বাণিজ্য করতেন। জীবন ধারণের জন্য অন্য কোনো উপায় না থাকায় অবস্থাগত কারণে বাধ্য হয়ে আরবগণ অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কঠিন জীবন সংগ্রামে রত থাকতেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও মেষ পালনের মাধ্যমে জীবিকা অবলম্বন করত।

প্রকৃতপক্ষে, তারা পৃথিবীর মতোই প্রাচীন ব্যবসায়ী। পশ্চিম, দক্ষিণ এবং পূর্বে সমুদ্রের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকায় তারা নৌ-চালনায় অভ্যস্ত ছিল এবং সমুদ্রগামী নৌযানের সাহায্যে অতলস্পর্শ সমুদ্র যাত্রা করিত। প্রকৃতপক্ষে আরবকে জাহাজের পরিচালক, নাবিক ও ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িত ব্যক্তিদের দ্বারা পূর্ণ একটি দেশ হিসাবে গণ্য করা হতো। ভারত এবং নিকটবর্তী এশিয়ার সাথে তাদের বাণিজ্য চলাচলের প্রধান রাস্তা ছিল সম্ভবত আরব সাগরের মধ্য দিয়ে। তারা ভারতের উপকূলবর্তী প্রতিটি শহর ও ভারতীয় দ্বীপসমূহ স্পর্শ করে অনুসরণ করতো। তাদের নৌযানসমূহ প্রায়শঃ বঙ্গোপসাগর ও বঙ্গদেশের ব্রহ্মপুত্র নদী হয়ে আসামের অভ্যন্তর ভাগেও পৌঁছাইত।

১৮৭৫ সালে বঙ্গোপসাগরের বুকে একটি পাল তোলা জাহাজ; Image source: Old Ship Picture Galleries

এভাবে তারা বঙ্গদেশ বা বর্তমান বাংলাদেশে আগমন করতো। প্রাচীনকাল থেকেই চট্টগ্রামে সমুদ্র বন্দর ছিল, সেখানে আরব বণিকগণ আসতেন। তাদের জাহাজে কাজ করার সুবাদে এখানে অসংখ্য সাহসী নাবিক তৈরি হয়েছিল। খুব কম সময়ে তারা অত্যন্ত দূরদর্শী ও যোগ্যতাসম্পন্ন নাবিকে পরিণত হতে পারতেন বিধায় আরবগণ সহসাই তাদের সাথে নিতেন। আর তাদের কারণে বঙ্গোপসাগরের নাম বঙ্গোপসাগর হয়ে যেতে লাগল। এই নাম তৎকালীন নাবিকদেরই দেয়া। ইতিহাসবিদ আনিসুল হক চৌধুরী তার ‘বাংলার মূল’ গ্রন্থে লিখেছেন :

অতঃপর বঙ্গদেশের নামানুসারে বঙ্গোপসাগরের নাম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করিলেও দৃষ্ট হয় যে বঙ্গদেশের নাবিকদের তথা তাহাদের আরবীয় নাবিক পূর্ব পুরুষদের সমুদ্র পথে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় বঙ্গোপসাগরে একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করিবার কারণেই অন্য কোনো দেশের নামে না হইয়া বঙ্গদেশের নামেই বঙ্গোপসাগরের নাম হইয়াছে।  

এ সকল যুক্তিতর্ককে সামনে রেখে আমরা আমাদের তৃতীয় অনুমানের উপরে তুলনামূলক বেশি নির্ভর করতে পারি, অর্থাৎ বঙ্গদেশের দুঃসাহসী নাবিকদের কারণেই বঙ্গোপসাগরের নাম বঙ্গোপসাগর হয়েছে- তবে এটিই একমাত্র দাবী নয়, কেননা নামকরণের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ইতিহাস থেকে সরাসরি আমাদের জানার সুযোগ হয়নি।

বঙ্গোপসাগর; Image source: wikimedia

ফিচার ইমেজ – irving.com.bd

তথ্যসূত্র:

১।  শ্রী অন্নদা শঙ্কর রায়, মোদের গরব মোদের আশা, সাপ্তাহিক দেশ, কোলকাতা, ২৯শে জানুয়ারি, ১৯৭২

২। মাউন্ট স্টুয়ার্ট এলফিনস্টোন, দি হিস্টোরি অফ ইন্ডিয়া, লন্ডন, ১৮৪৩ 

৩। আনিসুল হক চৌধুরী, বাংলার মূল, ঢাকা, ১৯৯৫ 

Related Articles

Exit mobile version