Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পাইরোম্যানিয়া: যে বিরল রোগে কেবল আগুন জ্বালিয়েই মিলে স্বস্তি

তুমি যে সুরের আগুন জ্বালিয়ে দিলে মোর প্রাণে,
সে আগুনে ছড়িয়ে গেল সবখানে, সবখানে, সবখানে। 
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সুরের আগুন সবখানে ছড়িয়ে পড়লে অসুবিধা নেই। কিন্তু সত্যিকারের আগুন সম্পর্কেও কি এই কথাটি বলতে পারবেন? অবশ্যই না। আগুন একটি অ-নিয়ন্ত্রণযোগ্য ক্ষতিকারক প্রাকৃতিক শক্তি, যা একইসাথে মানুষের পরম বন্ধু এবং শত্রুও। জেনে-বুঝে কেউই খেলতে চাইবে না এই সপ্তমুখী শক্তির সাথে। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছেন যারা এই আগুনের উপস্থিতিতেই বরং বেশি স্বস্তি অনুভব করেন।

আগুনের প্রতি ভালোবাসার অপর নাম পাইরোম্যানিয়া

আগুন জ্বলতে দেখলেই এই রোগে শান্তি পাওয়া যায়; Image Source: wisegeek.com

যারা আগুনের উপস্থিতিতে স্বস্তি অনুভব করেন, তারা একটি বিশেষ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত, যার নাম পাইরোম্যানিয়া। এটি একটি গ্রিক শব্দ, যার অর্থ আগুনের প্রতি আকর্ষণ। আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন এমন রোগের কথা তো আগে শুনিনি! অন্যান্য মানসিক রোগের তুলনায় পাইরোম্যানিয়া রোগীর সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য এবং আরও ভয়ের বিষয় হলো এর কোনো ধরাবাধা কারণ বা নির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই।

সব আগুনই পাইরোম্যানিয়ার লক্ষণ নয়

মূলত যারা পাইরোম্যানিয়ায় আক্রান্ত, তারা অকারণে আগুন জ্বালাতে পটু। মানসিক রোগের শ্রেণীকরণের জন্য প্রণীত ডায়গনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিসক্যাল ম্যানুয়াল অব মেন্টাল ডিসঅর্ডার (ডিএসএম) একে একধরনের ঝোঁক বা তীব্র আকর্ষণের ডিসঅর্ডার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই ধরনের ডিসঅর্ডারে মানুষের কিছু অদ্ভুত ঝোঁক তৈরি হয়, যা ঠিক তখনই নিবৃত্ত করা তার জন্য জরুরি হয়ে পড়ে। ঐ একই শ্রেণীর অন্তর্গত আরেকটি রোগ হলো ক্লেপটোম্যানিয়া, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যের জিনিস চুরি করার প্রতি ঝোঁক অনুভব করেন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত চুরি না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তি অনুভব করেন না।

শিশু থেকে বয়ঃসন্ধিতে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়; Image Source: slate.com

এখন প্রশ্ন হলো, যদি উপরের কথাই সত্যি হয় এবং পাইরোম্যানিয়া শুধু একটি ঝোঁক পূরণের ডিসঅর্ডার হয়ে থাকে, তাহলে সব ধরনের অগ্নিকাণ্ডকে কি পাইরোম্যানিয়ার প্রকাশ বলা উচিত? না। কেন পাইরোম্যানিয়া অন্যান্য অগ্নিকাণ্ড ঘটনার চেয়ে আলাদা তা বুঝতে হলে আমাদের এই রোগে আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ সম্পর্কে আগে জেনে নিতে হবে-

  • আগুনের প্রতি অপ্রতিরোধ্য আগ্রহ অনুভব করা।
  • কোথাও আগুন জ্বললে তা দেখতে ভালো লাগা।
  • আগুন জ্বালানোর আগে একটি অস্বস্তি, চাপা উত্তেজনা অনুভব করা এবং আগুন জ্বলতে দেখলে তা উপশম হওয়া।
  • একটি সফল অগ্নিকাণ্ড ঘটানোর পর প্রশান্তি অনুভব করা
  • আগুনের পর যা যা ক্ষয়ক্ষতি হয় তা দেখতে ভালোবাসা, অনেক সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে নিজেই সাহায্য করা
  • অনেকেরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়। অনেকে আবার নিজেই ফায়ার ব্রিগেডে কাজ নিয়ে নেন।

অর্থাৎ, বোঝাই যাচ্ছে আগুনের সাথে ব্যাক্তির একটি অন্যরকম সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। অনেকটা খাওয়া-ঘুম-প্রাকৃতিক কাজ সারার মতো আগুন জ্বালানো একই রকম ঠেকে পাইরম্যানিয়াক ব্যক্তির কাছে। সে কেবল এক-দুবার আগুন লাগিয়েই ক্ষান্ত হয় না।

অন্য আরেকটি বিষয়, যা একে সাধারণ অগ্নিকাণ্ড থেকে আলাদা করে, তা হলো এর পেছনে অগ্নিদাতার কোনো দুরভিসন্ধি থাকে না। সাধারণত অপরাধীরা কারো ক্ষতি করার জন্য, কাউকে শাস্তি দেয়ার জন্য বা নিছকই শত্রুতার বশে আগুন লাগায়। অন্যদিকে পাইরোম্যানিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি এমন নয় যাকে ত্রাস সৃষ্টিকারী বা অপরাধী হবে। হয়তো সে আট-দশজনের মতোই সাধারণ ভদ্র ঘরের নির্ভেজাল মানুষ, কিন্তু মানসিক অস্বাভাবিকতার কারণে তিনি আগুন জ্বালিয়ে তার ভিতরের চাপা উত্তেজনা, অশান্তি দূর করেন। তিনি ভাবেন না, বা তার সেটি ভাবার ক্ষমতাই নেই যে এই ধরনের আচরণে তার আশেপাশের মানুষের ক্ষতি, এমনকি জীবনও যেতে পারে।

এমনটি হওয়ার কারণ কী?

আগেই বলা হয়েছে, পাইরোম্যানিয়া একটি বিরল রোগ, সেজন্য লক্ষণের মতোই তার সঠিক কারণ আসলে কী সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা একমত হতে পারেননি। অন্যসব মানসিক সমস্যার মতো পাইরোম্যানিয়ার পেছনেও জেনেটিক এবং প্রাকৃতিক নিয়ামক আছে বলে মনে করা হয়। এর কারণগুলোকে মোটা দাগে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

১) সিগমুন্ড ফ্রয়েডের ধারণা

বিখ্যাত অস্ট্রীয় মনোবিজ্ঞানী এবং মনোবিশ্লেষণের জনক ড. সিগমুন্ড ফ্রয়েড পাইরোম্যানিয়ার উৎস সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। যেহেতু ফ্রয়েডিয়ান তত্ত্বে সকল ধরনের মানসিক অস্বাভাবিকতার পেছনে যৌনতাকে দায়ী করা হয়, ফ্রয়েড পাইরোম্যানিয়াকেও বাদ দেননি।

ডাক্তার সিগমুন্ড ফ্রয়েড; Image Source: simplypsychology.com

ফ্রয়েডের মতে, মানুষের মধ্যে একটি আদিম আগ্রহ রয়েছে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার, যা সে সবরাচর চেপে রাখে বা ফ্রয়েডের ভাষায় ‘অবদমন’ করে। ফলে আগুন জ্বালানোর মাধ্যমে সে অবদমন থেকে মুক্তিলাভ করে এবং একটি যৌন প্রশান্তিও অনুভব করে।

ফ্রয়েডের আরেকটি কালজয়ী ধারণা ইডিপাস কমপ্লেক্স থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ছেলে শিশুরা যখন তাদের লিঙ্গচ্ছেদের ভয়ে বিচলিত হয়ে পড়ে, তখন তারা অন্যান্য প্রাপ্তবয়স্কদের উপর কর্তৃত্ব দেখানোর জন্য আগুন জ্বালায়। যেহেতু ফ্রয়েড আগুন জ্বালানোর ক্ষমতাকে স্বয়ং প্রকৃতির ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সমান মনে করেন, সেহেতু তিনি একে একটি কর্তৃত্ব বা জোর খাটানোর কাজ হিসেবেই মনে করলেন। একইসাথে একে শুধু ইডিপাস কমপ্লেক্সের চোখ দিয়ে দেখলে পাইরোম্যানিয়া হয়ে ওঠে শুধু পুরুষদের রোগ। পাইরোম্যানিয়া ছেলে-মেয়ে উভয়ের মধ্যেই দেখা যায়, যদিও ছেলেদের মাঝেই এই রোগ বেশি দেখা যায়। 

ইডিপাস কমপ্লেক্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে দেখতে পারেন রোর বাংলার এই লেখাটি। 

২) ব্যক্তিগত কারণ

পাইরোম্যানিয়ার ব্যক্তিগত কারণ অনেকটাই তার মানসিক অবস্থার সাথে জড়িত। পাইরোম্যানিয়া ৩ বছরের বাচ্চা থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধ, যেকোনো মানুষের দেখা দিতে পারে। তবে এটি শিশুকাল থেকে বয়ঃসন্ধিকালের সময়েই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

যদিও শিশুকাল থেকে বয়ঃসন্ধিতে পড়া কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা দেয়, তাদের সবার আগুন লাগানোর পেছনেও কারণ পাইরোম্যানিয়া নয়।

শিশুকাল থেকে বয়ঃসন্ধিতে আগুন জ্বালানোর কারণ হতে পারে-

  • অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করা- শিশু যখন বুঝতে শেখে যে আগুন জ্বালালে তাকে বাঁচানোর জন্য হলেও বড়রা তার প্রতি দৃষ্টি দেবে, তখন সে সেই মনোযোগটি পাওয়ার জন্যই আগুন জ্বালাতে পারে।
  • অসামাজিক আচরণ করা এবং ঘরকুনো থাকা- পাইরোম্যানিয়া অবশ্যই এমন কারো হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম যে সবসময় বন্ধুদের সাথে মেতে থাকে। যারা সবসময়েই একাকী থাকতে পছন্দ করে এবং যাদের সামাজিক জীবন খুবই সীমিত, তারাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
  • বিনোদনের অভাব- অনেকে কিছু করার না পেলে ছবি আঁকে, গান গায়, গিটার বাজায়, নয়তো একটি মুভিই দেখে নেয়। কিন্তু পাইরোম্যানিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা এমন সাধারণভাবে তাদের অলস সময় কাটায় না। সময় কাটানোর জন্য তারা ছোটখাট আগুন জ্বালায়।

অন্যদিকে, বয়ঃসন্ধি পেরিয়ে যৌবন বা বার্ধক্যেও অনেকের আগুনের শখ হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে সম্ভাবনা বেশি যে উক্ত ব্যাক্তি পাইরোম্যানিয়াতেই আক্রান্ত। এছাড়াও অন্যান্য কোনো মানসিক সমস্যার সম্পূরক হিসেবেও প্রাপ্তবয়স্কদের পাইরোম্যানিয়া দেখা দিতে পারে

যেমন, অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি), মাদকাসক্তি, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার (এডিএইচডি), অ্যান্টি-সোশ্যাল ডিসঅর্ডার ইত্যাদি রোগে আগে থেকেই আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে পাইরোম্যানিয়া দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে মনে রাখতে হবে, মানসিক অন্য কোনো রোগের লক্ষণ হিসেবে যদি কেউ আগুন লাগায়, তাহলে তাকে পাইরোম্যানিয়াক বলা যাবে না। পাইরোম্যানিয়াক হওয়ার কিছু কঠিন শর্ত রয়েছে বলেই এটি একটি বিরল এবং অ-নির্ণয়যোগ্য রোগ।

৩) পরিবেশগত কারণ

এতক্ষণ যত কারণ বলা হলো তা সবই ব্যক্তির মানসিক সমস্যা বা অস্বাভাবিকতার সাথে জড়িত। কিন্তু পাইরোম্যানিয়া শুধু মানসিক কারণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। কেননা একটি শিশু নানা কারণে, হয়তো খেলার ছলেই না বুঝে এমন আচরণ করে, যা এটি প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয় যে সে পাইরোম্যানিয়ায় আক্রান্ত।

গবেষকরা পাইরোম্যানিয়ার সম্ভাব্য কিছু পরিবেশগত কারণের কথাও বলেছেন-

  • একটি অসংবেদনশীল পরিবেশে শিশুর বেড়ে ওঠা
  • বাবা-মায়ের পর্যাপ্ত মনোযোগ এবং যত্ন না পাওয়া। বিশেষ করে আগুনের ক্ষেত্রে যদি বড়রা খেয়াল না রাখেন।
  • ছোটবেলায় বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ইত্যাদি যে কারো দ্বারা শারীরিক, মানসিক বা যৌন অত্যাচারের শিকার হওয়া।
  • পরিবারে অশান্তি দেখে বড় হওয়া, বাবা-মায়ের মাদকাসক্তিও শিশুর মধ্যে পাইরোম্যানিয়া জন্ম দিতে পারে।
  • এছাড়াও খেলার সাথীরা যদি আগুন নিয়ে খেলে, ধূমপান করে তাহলে অনেকে চাপের মুখেও আগুনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।

এর প্রতিকার কী?

পাইরোম্যানিয়াকে অনেকেই খুব বড় কোনো সমস্যা মনে করেন না। অনেক সময় এই রোগের উপস্থিতি বোঝাও যায় না। কারণ এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যদের সামনে খুবই স্বাভাবিক আচরণ করতে পারে এবং যখনই তার মাথায় আগুন জ্বালানোর ঝোঁক ওঠে, কেবল তখনই সে এই আচরণ করে। রাগের বশে বা হুট করে পাইরোম্যানিয়াকরা আগুন লাগায় না। বরং তারা বেশ ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনার সাথেই এগোয়।

তারা সবসময় যে বড় বড় বিল্ডিং বেছে নেন, তা-ও নয়। যেকোনো পাইরোম্যানিয়াকের বাসায় আপনি পেতে পারেন- অসংখ্য দেয়াশলাইয়ের বাক্স, পোড়া বিছানার চাদর, সোফার কভার বা যেকোনো অর্ধদগ্ধ কাপড়, লাইটার, মোম ইত্যাদি। অর্থাৎ যেকোনো জিনিস, যাতে আগুন ধরানো যায়।

এর প্রতিকারের জন্য কোনো স্বীকৃত ঔষধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। ডাক্তাররা মনে করেন, যথাযথ পারিবারিক সাহায্য ও সার্বিক মানসিকতার পরিবর্তনই পারে এই রোগের প্রতিকার করতে।

কী করে বুঝবেন আপনি পাইরোম্যানিয়াক কি না?

পাইরোম্যানিয়া কোনো হেলাফেলার বিষয় নয়। এটি ভবিষ্যতে হতে পারে এমন কোনো মারাত্মক মানসিক রোগের সংকেতও দেয়।

গবেষণায় পাওয়া গেছে, যারা ভবিষ্যতে সিরিয়াল কিলার বা সাইকোপ্যাথের তকমা পেয়েছেন, তারা অনেকেই ছোট বয়সে তিন ধরনের সমস্যায় ভুগতেন- ১) পশুদের উপর অত্যাচার করা, ২) রাতে ঘুমানোর সময় বিছানা ভিজিয়ে ফেলা ও ৩) অযথা আগুন জ্বালানোর প্রবণতা।

একজন পাইরোম্যানিয়াক ডেভিড বারকোউইটজ; Image Source: extrastory.cz

যদিও অনেকে বিছানা ভেজানোর ব্যাপারে একমত নন, কিন্তু পশু-অত্যাচার এবং অযথা আগুন জ্বালানো ও ক্ষয়ক্ষতির প্রবণতা যাদের বেশি, তারাই বড় হয়ে কুখ্যাত সব অপকর্ম করেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় কুখ্যাত আমেরিকান সিরিয়াল কিলার ডেভিড বারকোউইটজের কথা, যে হত্যা করার আগেই কমপক্ষে ১০০টির মতো অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে।

আগুন ধরানো মানেই পাইরোম্যানিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ না। এমনকি, আমরা সবাই আমাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে আগুনের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেছি। মনে করে দেখুন, আপনি মোমের আলোতে কলম ছুয়িয়েছেন কি না, অদরকারী কাগজগুলো পুড়িয়েছেন কি না। তবে সমস্যা তখন হয় যখন মানুষের আগুন জ্বালানো আর আগুন জ্বলতে দেখার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বেড়ে যায়। আপনি যদি একজন পাইরোম্যানিয়েক হন, তাহলে-

  • আপনি একের অধিক সময় অপ্রয়োজনে আগুন জ্বালিয়েছেন।
  • আপনার আগুন জ্বালানোর পেছনে কোন আর্থিক বা পার্থিব লাভের চিন্তা ছিল না। আপনি অন্যের ক্ষতিও করতে চাননি।
  • আপনি আগুন জ্বালান নিজের শান্তির জন্য। আগুন জ্বালানোর আগে আপনি আনন্দ অনুভব করেন এবং এটি নিভে গেলে স্বস্তি পান।
  • এর পেছনে আপনার কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা দায়ী নয়।

উপরের কোনো একটিও যদি আপনার বা আপনার প্রিয়জনের ক্ষেত্রে সত্য হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পাইরোম্যানিয়ার একমাত্র নিরাময় হলো সচেতনতা।

Feautre Image: avocadosweet.com

Related Articles