তুমি বাবলা কাঠের একটি মঞ্জুষা তৈরি করবে; তা আড়াই হাত লম্বা, দেড় হাত চওড়া ও দেড় হাত উঁচু হবে
– যাত্রাপুস্তক, ২৫:১০Have them make an ark of acacia wood – tow and a half cubits long, a cubit and a half wide, and a cubit and a half high (Exodus 25:10)
আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট কিংবা আর্ক অফ দ্য টেস্টিমনি; বুক অফ এক্সোডাসের বর্ণনামতে, বনি ইসরাইল জাতির নবী হযরত মুসা (আ) স্রষ্টার আদেশ অনুসারে যখন এটি নির্মাণ করেন, তখন তার অনুসারীরা সিনাই পর্বতের পাদদেশে অস্থায়ী বসতি স্থাপন করেছিল। (বুক অফ এক্সোডাস, ২৫:১০-২২, ৩৭:১-৯)
এটি একটি সিন্দুকের মতো, যা বানানো হয় বাবলা তথা অ্যাকাসিয়া গাছের কাঠ থেকে, লম্বায় আড়াই ফুট এবং প্রস্থে ও উচ্চতায় দেড় ফুট। পুরো বাক্সটির ভেতর ও বাইরে সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। সিন্দুকটির নিচের ভাগে লাগানো হয় চারটি সোনার রিং, যার মধ্য দিয়ে বাবলা গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি এবং সোনায় মোড়ানো দুটো দণ্ড প্রবেশ করানো হতো যাতে একে বহন করা যায়। ইহুদীদের প্রাচীন ইতিহাসের বর্ণনামতে, কেহাথ-এর পরিবার এবং লেভাই নামক গোত্রই এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট বহন করত।
কী ছিল এই সিন্দুকের ভেতর?
আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টের ভেতরে কী ছিল, তা নিয়ে খানিকটা বিতর্ক আছে। তবে প্রচলিত মতে, এই সিন্দুকের ভেতরে বনি ইসরাইলদের নবী হযরত মুসা (আ) তাঁর স্রষ্টার কাছ থেকে পাওয়া দশটি আদেশ সম্বলিত দুটি প্রস্তরখণ্ড রাখা ছিল। বলা হয়ে থাকে, এই দুটি প্রস্তরখণ্ডের উপর স্রষ্টা নিজেই লিখেছিলেন। ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তওরাতে এর বর্ণনা পাওয়া যায় এভাবে:
“যখন প্রভু সিনাই পর্বতে মোশির সঙ্গে কথা বলা শেষ করলেন, তখন সাক্ষ্যের সেই দুই ফলক, পরমেশ্বরের আপন আঙুল দিয়ে লেখা সেই দুই প্রস্তরফলক, তাঁকে দিলেন।”
– যাত্রাপুস্তক ৩১:১৮
কোনো এক বর্ণনায় বলা হয়, হযরত মুসা (আ) যখন প্রথমবার প্রস্তরখণ্ড দুটি নিয়ে ফিরে আসেন তার লোকদের কাছে, তখন তিনি দেখলেন, তারা বাছুর পূজা করছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি প্রস্তরখণ্ড দুটি ভেঙে ফেলেন। তার অনুসারীরা বাছুর পূজা ত্যাগ করার পর, তিনি আবার সিনাই পর্বতে যান এবং সেখানে তাঁকে সেই প্রস্তরখণ্ড দুটি পাল্টে, এবং মতান্তরে তাঁকে নতুন দুটি প্রস্তরখণ্ড দেওয়া হয়। এই প্রস্তরখণ্ডগুলো রাখার জন্যই তাকে আদেশ দেওয়া হয় একটি সিন্দুক বানানোর জন্য। আর বাইবেলের বিবৃতি অনুযায়ী, সেই সাথে হযরত হারুন (আ) (বাইবেলে যাকে বলা হয় Aaron) এর কাছ থেকে পাওয়া একটি লাঠি এবং মানা (এক ধরনের বিশেষ খাবার, যা কিনা বনি ইসরাইল জাতিকে স্রষ্টার পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল, পবিত্র কোরআন শরীফেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়) রাখার জন্য ব্যবহার করা একটি পাত্র রাখা হয়।
এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে রাখার জন্য দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিশেষ ধরনের ‘বহনযোগ্য উপাসনালয়’ বানানো হয়, যার প্রথম কক্ষটিকে বলা হতো পবিত্র এবং দ্বিতীয় কক্ষটিকে বলা হতো সবচেয়ে পবিত্র। দ্বিতীয় কক্ষে সিন্দুকটি রাখা হতো এবং সেখানে একজন ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার ছিল না, আর তিনি সকলের সম্মতিতে নির্বাচিত হতেন। বলা হয়ে থাকে, যদি ঐ নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ ওই ঘরে প্রবেশ করত, তাহলে হযরত মুসা (আ) এর প্রভু তাকে সাথে সাথে মেরে ফেলতেন।
আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট এর বিশেষত্ব
আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে ধরা হয় হযরত মুসা (আ) এর স্রষ্টার পক্ষ থেকে সাহায্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। তবে শর্ত একটিই ছিল, যতদিন তারা স্রষ্টার আদেশ মেনে চলবে (যা কিনা দুটি পাথরের খণ্ডের উপর লেখা ছিল) ততদিন তারা তাদের স্রষ্টার সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। ইহুদীরা এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে দেখত তাদের স্রষ্টার উপস্থিতির নিদর্শন হিসেবে। বুক অফ এক্সোডাসে ইহুদীদের নবী এবং তাঁর স্রষ্টার কথোপকথনের বর্ণনা অনুযায়ী পাওয়া যায়:
“আমি সেখানে তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করব, এবং প্রায়শ্চিত্তাসনের উপরের অংশ থেকে, সাক্ষ্য-মঞ্জুষার উপরে বসানো দুই খেরুবের মধ্য থেকে তোমার সঙ্গে কথা বলে ইসরায়েল সন্তানদের বিষয়ে আমার সমস্ত আজ্ঞা তোমাকে জানাব।”
(বুক অফ এক্সোডাস ২৫:২২)
মরুর বুকে ৪০ বছর যাযাবরের মতো জীবনযাপন কালে, একদিনের জন্যও ইহুদীরা এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে চোখের আড়াল করেনি। ইহুদীরা যখন ‘ল্যান্ড অফ ক্যানন’ এ এসে পৌঁছায়, তখন তাদের সেখানে আসার পথ দেখিয়েছিল এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট। শুধু হযরত মুসা (আ) এর জীবদ্দশাতেই না, এটি পরবর্তীকালেও বনি ইসরাঈল জাতির জন্য সুরক্ষা কবচ হিসেবে বিবেচিত হতো। যশুয়ার নেতৃত্বে ইহুদীরা যখন প্রতিশ্রুত ভূমি তথা জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে, যাত্রাপথে তারা জর্ডান নদীর তীরে এসে পৌঁছায়। বলা হয়ে থাকে, এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট এর সম্মুখভাগের বহনকারী দুজন ধর্মগুরুর পায়ের সংস্পর্শে জর্ডান নদীর পানি আসলে তা দু’ভাগ হয়ে সরে গিয়ে তাদের জন্য পথ করে দেয়, যেমনটি হয়েছিল যখন হযরত মুসা (আ) বনি ইসরাইলের ১২টি গোত্র নিয়ে লোহিত সাগর পাড়ি দিচ্ছিলেন।
যুদ্ধক্ষেত্রেও ইহুদীরা এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট কে বহন করে নিয়ে যেত। জেরিকো শহর দখলের যুদ্ধে প্রতিদিন এটিকে নিয়ে শহরের চারপাশ প্রদক্ষিণ করতেন সাতজন ধর্মগুরু এবং একদল সশস্ত্র বাহিনী। সপ্তম দিনের মাথায় শহরটিকে প্রদক্ষিণ করার একপর্যায়ে শহর রক্ষা প্রাচীর আচমকাই ভেঙে পড়ে এবং ইহুদীরা পরবর্তীতে সেই শহরের দখল নিয়ে নেয়।
ঈশ্বরের সাথে চুক্তিভঙ্গ এবং অতঃপর
ইহুদীরা ততদিনই তাদের ঈশ্বর কর্তৃক সাহায্যপ্রাপ্ত হচ্ছিল যতদিন তারা ঈশ্বরের আদেশসমূহ মেনে চলছিল। কিন্তু বিভিন্ন যুদ্ধে ইহুদীরা সফলতা লাভ করায় তারা মনে করতে শুরু করে এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টের শক্তির বলেই তারা সফলতা পেয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা পাবে। কিন্তু তারা এটা ভুলে যায় যে, এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট এর নিজস্ব কোনো শক্তি ছিল না, হযরত মুসা (আ) এর প্রভুই সবকিছু করতেন। তারা তাদের প্রভুর দশটি আদেশের সবগুলাই অমান্য করা শুরু করে এবং পাপাচারে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনের এক অংশ আক্রমণের সময়, তারা আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যায়, কেননা তাদের বিশ্বাস ছিল, বরাবরের মতো এবারও এই সিন্দুকটি তাদের যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করবে। বলা হয়ে থাকে, ইহুদীরা এতই বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, তারা যুদ্ধ শেষ হবার আগেই বিজয়োল্লাস করতে থাকে। কিন্তু তাদের প্রভুর ইচ্ছে ছিল অন্যরকম। ইহুদীদের চার হাজার সৈন্য নিহত হয়, তারা যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং তাদের সৌভাগ্যের নিশ্চায়ক সেই সিন্দুকটি ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা দখল করে নেয়।
অভিশপ্ত আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট
কিন্তু ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা এটা জানত না যে, এই আর্ক অফ দ্য কোভেনেন্টের উপর সামগ্রিক অধিকার একমাত্র ইহুদী জাতিরই ছিল। তারা এই আর্কটিকে আসদোদ নামক স্থানের এক মন্দিরে তাদের সূর্য দেবতার পাশে স্থাপন করে। পরদিন তারা দেখতে পায়, তাদের সূর্য দেবতা ডাগনের মূর্তিটি মুখ থুবড়ে সিন্দুকটির সামনে পড়ে আছে। লোকেরা মূর্তিটাকে তুলে নিয়ে আবার জায়গামত রেখে দেয়। কিন্তু পরের দিন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়, তবে এবার দেবতার মাথা এবং হাত দুটোই ভাঙা ছিল। এই কারণে আজও নাকি ডাগনের মন্দিরের চৌকাঠ কেউ নাকি পাড়াতে চায় না। (বুক অফ স্যামুয়েলস-১: ৫-৪ ও ৫)
এখানেই শেষ নয়, আসদোদের অধিবাসীরা যেখানেই এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে নিয়ে যেত সেখানেই তারা বিপদের সম্মুখীন হত। প্রথমে তাদের গায়ে টিউমারের মতো রোগ দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে তারা প্লেগ এর মহামারীতে আক্রান্ত হয়। অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে। পরবর্তীতে উপায়ান্তর না দেখে তারা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টকে তারা যেখান থেকে এনেছিল সেখানে রেখে আসবে।
আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট এর ভাগ্য
এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট পরবর্তীতে বেথ-শেমাইট নামক শহরে ফিরে যায় এবং সেখানকার অধিবাসীরা এর অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য তাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মূল্যবান দ্রব্যাদি উৎসর্গ করে। কিন্তু একদল অতি উৎসাহী লোক এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টের ভিতর কী আছে তা দেখার চেষ্টা করলে, স্রষ্টা শাস্তিস্বরূপ তাদের পঞ্চাশ হাজার লোককে ভস্মীভূত করে দেন। এরপর বেথ-শেমাইট এর অধিবাসীরা কিরযাথ-যিয়ারিম নামক জায়গায় পাঠিয়ে দেয়, যেখানে কোনো এক পবিত্র জায়গায় বিশ বছর আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। কালক্রমে রাজা ডেভিড (হযরত দাউদ (আ)) এবং তাঁর পুত্র সলোমান (হযরত সুলায়মান (আ)) এটিকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করে সেখানেই সুরক্ষিত অবস্থায় রেখে দেন। বাইবেলের বিবৃতি অনুসারে, রাজা ডেভিডের পুত্র সলোমান ঈশ্বরের আদেশে আদিষ্ট হয়ে একটি মন্দির নির্মাণ করেন এবং সেখানেই আর্কটিকে রেখে দেওয়া হয়।
এই সলোমনের মন্দির থেকেই কি আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট চিরতরে হারিয়ে যায়। কেউ কেউ বলেন, ব্যাবিলনের সম্রাট নেবুচাদনেজার যখন সলোমনের মন্দির আক্রমণ করে ধ্বংস করে ফেলেন, তখন আর্কটি তার সাথে করে তিনি নিয়ে যান। অনেকেই বলেন, সলোমন তথা হযরত সুলায়মান (আ) এই সিন্দুকটির ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার কথা বুঝতে পেরে মন্দির থেকে গোপনে সরিয়ে নিয়ে মৃত সাগর তথা ডেড সির কাছে কোনো এক গুহায় সেটিকে লুকিয়ে ফেলেন। আরও শোনা যায়, সুলতান সালাহদীন আইয়ুবির সময় ইউরোপিয়ান নাইট টেম্পলার যোদ্ধারা সিন্দুকটি জেরুজালেম থেকে পুনরুদ্ধার করে আয়ারল্যান্ডে নিয়ে যায়। কেউ কেউ বলেন, এই সিন্দুকটি নাকি ইথিওপিয়ান অর্থোডক্স চার্চে সুরক্ষিত আছে। আবার কেউ বলেন, এটি নাকি ভ্যাটিকানের চার্চের গোপন কুঠরিতে সুরক্ষিত আছে। কিন্তু এসব তথ্যের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এবং এর ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিয়ে প্রকৃত তথ্যও আর পাওয়া যায় না। ব্রিটিশদের দাবি অনুযায়ী, নাইট টেম্পলাররা তাদের কাছে এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টটি হস্তান্তর করে।
কোরআন শরীফে আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট এর বর্ণনা
প্রসঙ্গত, মুসলিমরা সিম্বলিজম কিংবা কোনো বিশেষ বস্তুর দৈবশক্তিতে বিশ্বাসী না, কারণ, তারা বিশ্বাস করে সব কিছুর মূল নিয়ন্ত্রণে স্বয়ং আল্লাহই আছেন। তবে সুরা বাকারাহতে আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায় এভাবে,
“বনি ইসারাইলদেরকে তাদের নবী বললেন, তালুতের (বলিষ্ঠ) নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে, তোমাদের কাছে একটি সিন্দুক আসবে যাতে থাকবে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের প্রশান্তি, আর তাতে থাকবে মূসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যাক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটি বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।”
(সুরা বাকারাহ: ২৪৮)
তাফসির ইবনে কাসির এর বর্ণনা অনুযায়ী পাওয়া যায়, বনি ইসরাইলরা তাদের নবীকে তাদের মধ্য থেকে একজনকে বাদশাহ হিসেবে নিযুক্ত করতে বললে আল্লাহর নির্দেশে নবী তালুতকে তাদের সামনে পেশ করেন। আর সেই সময়ে এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট তথা সিন্দুকটিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের নিদর্শন স্বরূপ তালূতকে দেওয়া হয়। তাবারির বর্ণনা মতে (তাবারি ৫/৩৩৩), এই সিন্দুকের মধ্যে ছিল মান্না এর পাত্র আবং তাওরাতের তক্তা। অন্যরা বলেন, সেখানে ছিল হযরত মুসা (আ) এর কিছু কাপড় এবং জুতা (তাবারি ৫/৩৩৩)।
সত্যিই কি ছিল আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট?
এই প্রশ্নটি পেন স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাচীন ইতিহাসের অধ্যাপক বারুক হ্যালপার্নকে জিজ্ঞেস করা হলে প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, ভিন্ন ভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এই প্রসঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন উত্তর পাওয়া যাবে। তার মতে, ওল্ড টেস্টামেন্টের বিভিন্ন জায়গায় যেসব বর্ণনা পাওয়া যায় তা সবগুলো এক সুতোয় গাঁথলে মনে হয়, আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট বলতে আসলেই কিছু ছিল। তাই এই নিয়ে অনুসন্ধানও কম হয়নি, যদিও এই আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বলা হয়ে থাকে, কালক্রমে নাকি আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টের স্থান হয়েছিল ইথিওপিয়ার আকসুম শহরের সেন্ট মেরি অফ জিওন এর ক্যাথেড্রেলে। কিন্তু আর্কের রক্ষক ছাড়া আর কারোরই সেই আর্ক দেখার অনুমতি না থাকায়, আর্কটি আসলেই ইথিওপিয়াতে আছে কিনা তা বাইরের কেউই যাচাই করে দেখতে পারেনি।
অন্য বর্ণনা অনুযায়ী, জেরুজালেমের প্রথম মন্দিরের তলদেশের কোনো এক গুপ্ত কুঠুরীতে আজও আর্ক অফ দ্য কভেনেন্টটি লুকায়িত অবস্থায় আছে। কিন্তু এই বর্ণনাটিরও সত্যতা যাচাই করে দেখা সম্ভব হয়নি, কেননা ডোম অফ দ্য রক এর নিচের প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের জন্য মাটি খোঁড়ার কাজের অনুমতি কখনও পাওয়া যাবে না। তাই হলিউডের সিনেমাগুলাতে আর্ক অফ দ্য কভেনেন্ট খুঁজে পাওয়া গেলেও, বাস্তব জীবনে আজও এটি রহস্য হিসেবে রয়ে গেছে।
ইতিহাসের চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কেঃ roar.media/contribute/
হযরত মুসা (আঃ) সম্পর্কে আরও জানতে পড়তে পারেন এই বইগুলোঃ