
Guess I got what I deserved
Kept you waiting there too long, my love…
লম্বা দাড়ি আর পাখির বাসার মতো এলোমেলো চুল মাথায়, চশমাটা কিছুটা ঘোলা, চেহারায় বার্ধক্যের চেয়ে বেশি গ্লানির ছাপ স্পষ্ট; স্ত্রী, সন্তান, শ্যালিকা আর ভগ্নীপতিকে নিয়ে সুখী মধ্যবিত্তের জীবন, স্কুলের রসায়ন গবেষণাগার- সকল সুখস্মৃতি পেছনে ফেলে জীবন সায়াহ্নে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক মেথ ল্যাবে ওয়াল্টার তখন দাঁড়িয়ে। কিন্তু কোনোকিছুই আর তাকে স্পর্শ করছে না, চেহারা তার রাজ্যের সুখানুভূতিতে পূর্ণ! প্রিয়তমার কোলে মাথা রেখে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগেও যে চরম সুখ! সেই সুখের হাসি ঠোঁটে লাগিয়ে যখন চোখ বুজলেন ওয়াল্টার, তখন তার প্রিয়তমার সাথে মিলনের হৃদয়গ্রাসী গানটা বেজে চলেছে, “তোমার জন্য ভালোবাসা, প্রিয় বেবি ব্লু!”

২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রচারিত হওয়া অসম্ভব জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ ব্রেকিং ব্যাডের শেষ এপিসোডের শেষ দৃশ্যগুলোর এই বর্ণনা নিতান্তই সাদামাটা। ব্রেকিং ব্যাড ভক্তদের নিকট এই দৃশ্য বর্ণনার অতীত। এক অদ্ভুত বেদনা আর সুখের শিহরণ জাগানো সে দৃশ্যটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপদান হলো ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে চলা গান ‘বেবি ব্লু’। ব্রেকিং ব্যাড সমাপ্তিতে পুরনো এই গান নতুন করে এর পথ খুঁজে পায় শ্রোতাদের প্লে-লিস্টে। আর তাদের মুখে উচ্চারিত হতে থাকে বহুকাল ধরে অনুচ্চারিত এক নাম, ‘ব্যাডফিঙ্গার’। কী এই ব্যাডফিঙ্গার?
ব্যাডফিঙ্গার হলো ওয়েলসের একটি সাবেক রক ব্যান্ড, যাদের জন্ম ১৯৬০’র দশকে। ‘৭০-এর দশকের শুরুতে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া এ ব্যান্ডকে এক সময় মনে করা হচ্ছিল পরবর্তী ‘ফ্যাব ফোর’ তথা বিটলস। কিন্তু ৮০’র দশকের শুরুর অর্ধেকের মাঝেই প্রাণশক্তি খুইয়ে নিস্তেজ ও নিঃশ্বেষ হয়ে যায় সম্ভাবনাময় এই ব্যান্ডটি। শুরুর ব্রেকিং ব্যাড সম্পর্কিত আলোচনা মূলত এই ব্যাডফিঙ্গারকে উদ্ধৃত করবার জন্যই। একটু খটকা লাগছে কি? যাদের কি না পরবর্তী ‘ফ্যাব ফোর’ হবার কথা ছিল, তারাই আজ এতটা বিস্মৃত যে তাদেরকে স্মরণ করতে হচ্ছে একটি জনপ্রিয় টিভি সিরিজের মাধ্যমে!

বাংলাদেশের দর্শকদের নিকট ব্যাড ফিঙ্গারের মর্যাদা আরেকটি কারণে বিশেষ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সাথে মিশে যাওয়া ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এ অংশ নিয়েছিল এই ব্যান্ড। ম্যাডিসন স্কয়ারে জর্জ হ্যারিসনের গাওয়া বিখ্যাত সেই ‘হেয়ার কামস দ্য সান’ গানটিতে হ্যারিসনের পাশে দাঁড়িয়ে সেদিন গিটার বাজিয়েছিলেন ব্যাডফিঙ্গারের বেস গিটারিস্ট পিট হ্যাম। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা ব্যান্ডটির প্রধান মুখ, সে সময়ের সম্ভাবনাময় মিউজিশিয়ানদের একজন এই পিট হ্যামই কি না কিছুকাল পর মাত্র ২৭ বছর বয়সে আত্মহত্যা করে বসেন! তার আত্মহত্যার সাথে সাথেই মৃত্যু হয়েছিল দুর্দান্ত এই ব্যান্ডটির, যদিও এটি আরো কিছুকাল ধুঁকতে ধুঁকতে সক্রিয় ছিল।
ব্যাডফিঙ্গারের জন্ম ’৬০-এর দশকে। ‘দ্য আইভিস’ নামে শুরু করা ব্যান্ডটিতে ছিল অসাধারণ কয়েকটি তরুণ প্রতিভা। পিট হ্যাম, রন গ্রিফিথ, ডেভিড জেনকিনস, রয় এন্ডারসনদের নিয়ে পথচলা শুরু হয় ব্যান্ডটির; পরবর্তীতে যোগ দেন ড্রামার মাইক গিবিনস। এতোগুলো প্রতিভা একসাথে হলে তার বিচ্ছুরণ ঘটাই স্বাভাবিক। শুরু থেকেই নজর কাড়তে থাকা আইভিস ইয়ারবার্ডস আর মুডি ব্লুজের মতো বিখ্যাত ব্যান্ডের ওপেনিং করতো। এরপর কিছুকাল চললো সাইকেডেলিক পপ সহ বিখ্যাত সব গানের কভার। কিছুকাল পর তারা ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেয় বিল কলিন্সকে। ম্যানেজার হিসেবে ৫ বছরের চুক্তিতে ব্যান্ডটির সাথে যুক্ত হন কলিন্স। তখন জেনকিনসের স্থলাভিষিক্ত হন টম ইভানস।

এদিকে এর মাত্র বছরখানেক পরই সমকালীন পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় রক ব্যান্ড বিটলস কর্তৃক ‘অ্যাপল রেকর্ডস’ প্রতিষ্ঠিত হয়। অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের আওতাধীন এই স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানটি মূলত বিটলসের কাজগুলো সংগ্রহের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে অবশ্য অন্যান্য ব্যান্ডও যুক্ত হয় এতে। তবে বিটলসের বাইরে প্রথম ব্যান্ড হিসেবে অ্যাপল রেকর্ডসে যুক্ত হয়ে ইতিহাসে স্থান করে নেয় আইভিস। হ্যাম আর গ্রিফিথদের চমৎকার সব গানের কিছু ডেমো প্রথমবার দেখেই পছন্দ করে ফেলেন বিটলসের সহযোগী ম্যাল ইভানস। তিনিই বিটলসের তারকাদের রাজি করান আইভিসকে যুক্ত করবার জন্য। তখনো এই ব্যান্ডটির ভবিষ্যৎটা ঝলমলেই মনে হচ্ছিল; কেননা বর্তমানটায় সেই আভাসই মিলতো, সেখানে ভবিতব্য দুর্যোগের চিহ্নমাত্র ছিল না।
প্রতিটি বিস্ময়কর আর চোখ ধাঁধানো উত্থানের পেছনে বিশেষ কোনো শুভাকাঙ্ক্ষীর অবদান থাকে। আইভিসের সেই শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে এসেছিলেন বিটলসের সহযোগী লিড ভোকালিস্ট এবং বেস গিটার বাদক পল ম্যাককার্টনি, যিনি একজন বিশ্বখ্যাত গীতিকারও। অ্যাপল রেকর্ডসে যুক্ত হয়েও যখন আশানুরূপ কিছু হচ্ছিল না, তখন ম্যাককার্টনিই উদীয়মান এই ব্যান্ডটির ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভূত হন।

আইভিসের শুরুর কিছু কাজই অ্যাপল রেকর্ডের মনঃপুত হলো না, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের টপ-চার্টে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হলো। এতে একদিকে যেমন অ্যাপল রেকর্ড হতাশ হয়ে পড়ছিল, হতাশ হতে হচ্ছিল ব্যান্ড সদস্যদেরও যাদের একটির পর একটি গান ফেরত আসছিল। তখনই সবকিছু পাল্টে যায় মাত্র একটি গানে, একটি সুপার-হিট গানে। ‘কাম অ্যান্ড গেট ইট’- গানটির নামের মধ্য দিয়েই যেন বলা হচ্ছিল, “এসো, তোমাদের সৌভাগ্য নিয়ে যাও!” ম্যাককার্টনির লিখে দেয়া এ গানটি মুক্তি পেতেই সবকিছু বদলে যায়। আইভিস যুক্তরাষ্ট্রের বিলবোর্ডে সপ্তম আর যুক্তরাজ্যে চতুর্থ স্থান দখল করে নেয়। বিটলসেরই একটি পুরনো গান ‘উইদ আ লিটল হেল্প ফ্রম মাই ফ্রেন্ডস’ এর প্রাথমিক নাম ‘ব্যাড ফিঙ্গার বুগিস’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যাডফিঙ্গার নামে আনুষ্ঠানিক পথ চলা শুরু করে আইভিস।
যেখান থেকে উত্থানের শুরু, পতনের শুরুটাও সেখান থেকেই। ব্যক্তিগত কারণে গ্রিফিথ ব্যাডফিঙ্গার ছেড়ে গেলে সদস্যদের মাঝে কিছু ঝামেলা হয়, যার সূত্র ধরে ব্যান্ডের পথচলায় পরিবর্তন আনতে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক ব্যবসায়ী স্ট্যান পলিকে দৃশ্যপটে নিয়ে আসেন ব্যান্ডের আরেক সদস্য কলিন্স। অবিশ্বাস্য এক বিয়োগান্ত নাটকের শুরুটা এখানেই, যে নাটকের খলনায়ক হয়েছিলেন পলি।
শুরু থেকেই পলির সিদ্ধান্তগুলো ছিল ভুলে ভরা। তিনি অ্যাপল রেকর্ডের মতো করে ‘ব্যাডফিঙ্গার ইনকর্পোরেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন, যেটিতে ব্যান্ডের প্রত্যেক সদস্যকে যুক্ত করেন। একটি উঠতি ব্যান্ডের জন্য এই প্রতিষ্ঠান ছিল একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। যে চুক্তিতে তিনি ব্যান্ড সদস্যদের সই করান, সেটি অনুযায়ী ব্যান্ডের প্রতিটি অ্যালবাম, ট্যুর, এমনকি লেখা গানের রয়্যালটির বড় অংশটাই চলে যেত প্রতিষ্ঠানে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে আসন গেড়ে বসা পলি তাই ব্যান্ড সদস্যদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। পলির এই ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্তের ফলাফল সবাই অনুধাবন করতে পেরেছিল। তবে উপলব্ধি যখন হয়, তখন বড্ড দেরী হয়ে গেছে।

’৭০-এর দশকের শুরু থেকেই ব্যাডফিঙ্গার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়, ‘পরবর্তী ফ্যাব ফোর’ হিসেবে আখ্যায়িত হতে শুরু করে। এসময় তাদের সাথে যোগ দেয় আরো একজন গিটারিস্ট জোয় মোলেন্ড। ‘কাম অ্যান্ড গেট ইট’ দিয়ে শুরু করে ‘নো ম্যাটার হোয়াট’, ‘ডে আফটার ডে’ আর ‘বেবি ব্লু’র মাধ্যমে টানা ৪টি হিট গান উপহার দিয়ে নামের প্রতি সুবিচারও করছিল ব্যান্ডটি। কিন্তু এই একক হিট গানগুলো দিয়ে শেষ রক্ষা হয়নি। প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নানারূপ আর্থিক ঝামেলা আর আইনগত সমস্যা থেকে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়া এ গানগুলো আর জনপ্রিয় কিছু ট্যুরও টেনে তুলতে পারেনি তাদের। বরং এ সময় উকিলদের পকেটেই গেছে তাদের সমস্ত উপার্জন।
এদিকে একক হিটের বাইরে কোনো সফল অ্যালবাম উপহার দিতে না পারায় ব্যাডফিঙ্গারের রয়্যালটি কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাপলস রেকর্ড। এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে পলি ওয়ার্নার ব্রোস রেকর্ডসের সাথে নতুন চুক্তি করেন। সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারতো ব্যাডফিঙ্গার ইনকর্পোরেশনের অর্থনৈতিক কাঠামো বদল। সেটি না হয়ে বরং সমস্যা আরো জটিলতর হয় পলির এ সিদ্ধান্তে। ব্যান্ড সদস্যরা প্রথমে বিভ্রান্ত বোধ করলেও শেষতক চুক্তিতে সই করে দেন। এ চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত প্রতি ছয়মাসে ওয়ার্নার ব্রোসের জন্য একটি করে নতুন অ্যালবাম রেকর্ডের বাধ্যবাধকতা তৈরি হয় ব্যাডফিঙ্গারের।
এই চুক্তিটিই ছিল ব্যাডফিঙ্গারের কফিনে সর্বশেষ পেরেক। চুক্তি অনুযায়ী ওয়ার্নার ব্রোসকে আড়াই লক্ষ ডলার অগ্রীম প্রদান করার কথা ব্যাডফিঙ্গার ইনকর্পোরেশনের, যে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান পলি! এতে করে প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা করে ওয়ার্নার ব্রোস, যার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ছিলেন প্রত্যেক ব্যান্ড সদস্য। অর্থাৎ, টাকা আত্মসাৎ করে ম্যানেজার নিরুদ্দেশ হলেও আইনের মারপ্যাঁচে পড়তে হলো ব্যাডফিঙ্গারের সদস্যদের যাদের কাছে তখন কোনো অর্থই ছিল না। কারণ তাদের আয়ের প্রায় পুরোটাই যেত প্রতিষ্ঠানের নিকট। ফলে ব্যাডফিঙ্গার তখন একটি দেউলিয়া ব্যান্ড, যাদের নামের পাশে ঝুলছে একাধিক মামলা ও আইনি জটিলতা। একজন কলিন্স একাই একটি ব্যান্ডকে চির অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়ে ঠিক যেন বাষ্প হয়ে উবে গিয়েছিলেন।

এই জটিলতায় সম্ভবত সবচেয়ে কোণঠাসা ও বিপর্যস্ত ছিলেন পিট হ্যাম। নিজেদের ব্যান্ড দেউলিয়া হবার কিছুকাল আগেই কিনেছিলেন একটি বাড়ি, যেখানে বান্ধবীর সাথে বসবাস শুরু করেন। ব্যান্ডের সুনাম, বাড়ির ঋণ শোধ, গর্ভবতী বান্ধবীয় দায়িত্ব, আইনি লড়াই আর প্রাতিষ্ঠানিক দেনা- সবকিছুর ভারে নুহ্য পিট ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল, নিজের ২৭তম জন্মদিনের তিনদিন আগে চূড়ান্ত সমাধানের পথ বেছে নেন আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে। ব্যাডফিঙ্গার নামক বিয়োগান্ত নাটকের অপূর্ণতা আর অপ্রাপ্তির সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে মুক্তির পথ খুঁজে নেন পিট, কিন্তু বাকিরা?
১৯৭৭ সালের মাঝেই ভেঙে যায় ব্যাডফিঙ্গার। ম্যানেজারের প্রতারণা, অর্থনৈতিক টানাপড়েন এর সাথে পিটের মৃত্যু যোগ হবার পর ব্যাডফিঙ্গারের আদতে কোনো ভবিষ্যৎ ছিলই না। দেনা শোধ করাই তখন তাদের বড় দায়। মোলেন্ড আর ইভানস তো সঙ্গীতচর্চাই ছেড়ে দেন। অবশ্য ৮০’র দশকের শুরুর কয়েকবছর দুজনেই দুটি পৃথক ব্যান্ড পরিচলনা করেন ব্যাডফিঙ্গার নামে, যা নানাসময়ে তাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণ হয়। এরই মাঝে নতুন একটি ট্যুরের ব্যর্থতায় ৫ মিলিয়ন ডলারের আরো একটি মামলা হয় ইভানসের নামে।

অ্যাপল রেকর্ডসের পূর্ববর্তী বন্ড আর ‘উইদাউট ইউ’ গানের রয়্যালটি (যে অর্থ তখনো পাচ্ছিলেন ইভানস) নিয়ে ১৯৮৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে মোলেন্ডের সাথে ব্যাপক কথা কাটাকাটি হয় ইভানসের। এসব দ্বন্দ্ব আর অর্থনৈতিক টানাপড়েন, আর পূর্বের মামলাগুলোর সাথে নতুন যুক্ত হওয়া মামলার অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতে পরদিন সকালে ইভানও বন্ধু পিটের দেখানো পথে হাঁটলেন আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে। আর এর মধ্য দিয়ে একটি সম্ভাবনাময় ব্যান্ডের বিয়োগান্ত গল্পের শেষ দৃশ্যটি মঞ্চায়িত হয়।
২০১৩ সালে ‘উইদাউট ইউ’ গানটির রয়্যালটি মামলা নিষ্পত্তি হয়, ইভানের মৃত্যুর ৩০ বছর পর। যে গানটির রয়্যালটি নিয়ে দ্বন্দ্বের পরদিন আত্মহনন করেন ইভান, ১৯৯৪ সালে মারিয়া ক্যারির করা সেই গানটির কভার থেকে মিলিয়ন ডলার আয় হয়; ১৮০ জন শিল্পী গানটির কভার রেকর্ড করে বিভিন্ন সময়ে!

ব্যাডফিঙ্গারের করুণ কাহিনী আর ব্রেকিং ব্যাডের ওয়াল্টার হোয়াইটের গল্প যেন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। যে ওয়াল্টার হতে পারতেন একজন খ্যাতিমান রসায়নবিদ, তিনি শেষতক মারা গেলেন একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে। যে ব্যাডফিঙ্গার হতে পারতো বিটলসের ছায়া, সে ব্যান্ডটিই কিনা লোনের বোঝা, আইনি মামলার জটিলতা আর সদস্যদের আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে হারিয়ে গেল চিরতরে। ওয়াল্টারের বানানো স্বচ্ছ নীল মেথের মাঝে ব্যাডফিঙ্গারের বেবি ব্লু’র নীল মিশে একাকার হয়ে যে বেদনার রঙ তৈরি হয়, সে রঙে রঙিন হয়ে ইতিহাসের মাঝে নিভু নিভু করে বেঁচে থাকবে ব্যাডফিঙ্গার নামটি, আর তাদের বেবি ব্লু!
Just one thing before I go
Take good care, baby, let me know!