ব্যাটল অফ ইলিপা (২০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
বাকুলাতে হাসড্রুবালকে পরাজিত করার পর লম্বা সময় কার্থেজিনিয়ানরা সিপিওর সাথে বড় সংঘর্ষ এড়িয়ে চলছিল। এর মাঝে কার্থেজ থেকে হ্যানোর নেতৃত্বে নতুন সেনা এসে পৌঁছালে গিসগো সিপিওর সাথে চূড়ান্ত লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমান সেভিলের কাছে ইলিপার প্রান্তরে ৭০,০০০ পদাতিক এবং ৪,০০০ অশ্বারোহী আর ৩২টি হাতি নিয়ে তিনি শিবির করলেন।
সিপিওর নেতৃত্বে রোমান সেনাদলে ছিল ৪৫,০০০ এর মত পদাতিক আর ৩,০০০ ঘোড়সওয়ার। তিনি ছোট কিছু পাহাড়ের সামনে ক্যাম্প করতে শুরু করলে গিসগো ম্যাসিনিসার নেতৃত্বে নুমিডিয়ান অশ্বারোহীদের পাঠালেন অতর্কিত আক্রমণ চালাতে। কিন্তু এরকম কিছু হতে পারে সিপিও আগেই বুঝেছিলেন। তার নির্দেশে রোমান অশ্বারোহীদের এক দল পাহাড়ের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। তারাই উল্টো ম্যাসিনিসার উপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ল। রোমান পদাতিকরা তাদের সাথে যোগ দিলে বেশ কিছু নুমিডিয়ান হতাহত হয়ে পালিয়ে আসে।
এরপর কয়েকদিন ধরে দুই পক্ষ সৈন্য সমাবেশ করতে থাকে, কিন্তু কেউই যুদ্ধের আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। সিপিও লক্ষ্য করেন, গিসগো একটি নির্দিষ্ট ধরন অনুসরণ করছে। বেলা বাড়লে তিনি সেনাদের এমনভাবে সাজান যেন তার পদাতিক আফ্রিকান যোদ্ধারা মাঝে এবং স্প্যানিশ মিত্ররা দুপাশে থাকে। সামনে থাকে হস্তীবাহিনী এবং দুই বাহুতে অশ্বারোহী দল।
সিপিও ফন্দি আঁটলেন। তিনি প্রতিদিন গিসগোর পর সেনাসমাবেশ করতেন। রোমানরা থাকত মাঝে আর স্প্যানিশ মিত্ররা দুই পাশে। একদিন তিনি সৈনিকদের ভোরে নাস্তা করে নিতে বললেন এবং অগ্রগামী হাল্কা অস্ত্রে সজ্জিত কিছু সেনা পাঠালেন গিসগোর শিবির আক্রমণ করে সরে আসতে।
গিসগোর সেনারা প্রস্তুত হবার আগেই দেখল রোমানরা এগিয়ে আসছে। অভুক্ত অবস্থাতেই গিসগো দ্রুত তাদের বিন্যস্ত করতে থাকলেন। কিন্তু এ কী! রোমানরা এখন অবস্থান নিয়েছে বাহিনীর দুই বাহুতে আরে স্প্যানিশরা সরে এসেছে মাঝে। গিসগো হতবাক হয়ে গেলেন।
সিপিওর নির্দেশে সেনাবাহিনীর মাঝের অংশ ধীরে ধীরে এগোতে থাকল। দুই পাশের অশ্বারোহীরা তুলনামূলক দ্রুততায় কিছু জটিল পথ অনুসরণ করে কার্থেজের বাহিনীর পাশ দিয়ে ঘুরে তাদের আটকে ফেলল। সিপিওর নির্দেশে এরপর হামলা শুরু হলো।
রোমানদের ছুঁড়ে মারা বর্শা আর অন্যান্য অস্ত্রে গিসগোর হাতি তার নিজের দলের ওপর দিয়েই চলে যেতে লাগল। রোমান সেনাদলের প্রবল হামলায় শেষ পর্যন্ত গিসগো আর দাঁড়াতে পারলেন না। সেনারা তাদের ক্যাম্পের দিকে ছুটে পালাল। এরপর থেকে গিসগোর স্প্যানিশ মিত্ররা তার পক্ষ ত্যাগ করে রোমানদের সাথে একে একে যোগ দিতে থাকলে গিসগো ক্যাম্প ত্যাগ করলেন। সিপিও ছেড়ে দিলেন না। তিনি তাদের তাড়া করে গেলেন বেটিস নদীর তীর পর্যন্ত। এখানে কার্থেজের বাহিনী ম্যাসাকার করে ফেলল রোমানরা। মাত্র ৬,০০০ যোদ্ধা নিয়ে গিসগো এক পাহাড়ে পালিয়ে গেলেন। সেখান থেকে তিনি ও ম্যাগো দুইজনই স্পেন ত্যাগ করেন। ওদিকে ম্যাসিনিসা রোমের সাথে গোপন চুক্তি করে আফ্রিকাতে ফিরে যান তার স্বজাতিদের রোমের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য।
লক্রির যুদ্ধ (২০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
২০৫ সালে সিপিও ও ক্রান্সুস কন্সাল নির্বাচিত হন। আফ্রিকাতে সরাসরি অভিযান চালানোর জন্য সিপিও সিসিলিতে ঘাঁটি করে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করতে থাকেন।
এদিকে ২১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে লক্রি কার্থেজের পক্ষাবলম্বন করলে রোমান সমর্থক অভিজাতরা পার্শ্ববর্তী শহর রেগিয়ামে এসে আশ্রয় নেয়। এখান থেকে তাড়া প্রায়শই লক্রির সীমানাতে হামলা করত। সিপিও যখন সিসিলিতে ব্যস্ত তখন লক্রির কিছু লোক রোম সমর্থকদের হাতে বন্দি হলো। এরা কার্থেজিনিয়ানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে রাজি হয়। ফলে লক্রি থেকে তাদের মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
রোমান সমর্থকরা সিপিওর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্লেমিনিয়াসকে সার্বিক অভিযানের দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দিলেন। নির্দিষ্ট রাতে বিশ্বাসঘাতকদের সহযোগিতায় রোমানরা লক্রির প্রাচীর টপকে রক্ষীদের আক্রমণ করলে তারা পালিয়ে শহরের ভিতরে চলে যায়। সেখানে কার্থেজিনিয়ান হ্যামিলকার প্রতিরোধ গড়ে তুললেন।
শহর দুই ভাগ হয়ে যায়। একভাগে রোমান আর অন্য দিকে কার্থেজিনিয়ানরা। দুই পক্ষই বাড়তি সেনা যোগ করে। এর মধ্যে হ্যানিবাল লক্রির দিকে এগিয়ে আসেন। সিপিওর কানে এ খবর পৌঁছলে তিনি নিজেই লক্রির দিকে যাত্রা করলেন।
হ্যানিবাল হ্যামিলকারকে জানালেন, রোমানদের ভেতর ও বাইরে দুদিক থেকেই আক্রমণ করা হবে। কিন্তু তার সাথে কোনো মই ছিল না, তাই সেইদিনের আক্রমণ মুলতবী করা হলো। পরদিন যখন মই তৈরি করে হ্যানিবালের সৈন্যরা প্রাচীরের গায়ে লাগাবে ঠিক তখনই শহরের দরজা খুলে রোমান সৈনিকেরা হামলা করল। সিপিও আগের দিন পৌঁছে প্লেমিনিয়াসের সাথে মিলিত হয়েছেন। সুতরাং রোমানরা এখন সংখ্যায় ভারি।
হ্যানিবাল যুদ্ধ করলেন না। তিনি শিবির উঠিয়ে নিয়ে চলে গেলেন। শহরের ভেতরের কার্থেজিনিয়ান যোদ্ধারাও রাতের আঁধারে পাততাড়ি গুটিয়ে তার সাথে গিয়ে যোগ দিলে।
ক্রোটনার সংঘাত (২০৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
লিভির মতে, সেই বছরের রোমান কন্সাল টিউডেটেনাস ক্রোটনার কাছাকাছি হ্যানিবালের বাহিনীর সাথে ছোট সংঘর্ষের পর পিছিয়ে আসেন। তিনি ক্রান্সুসের অধীনে থাকা নিকটবর্তী রোমান সেনাদলকে ডেকে পাঠান। সম্মিলিতভাবে তারা আবার হ্যানিবালের উপর হামলা করে প্রায় ৪,০০০ সেনাকে হত্যা করেন। হ্যানিবাল পিছু হটে ক্রোটনায় ঢুকে পড়েন।
আগাথক্লেসের টাওয়ারের যুদ্ধ (২০৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
সিসিলি থেকে প্রায় ৩৫,০০০ সৈন্য নিয়ে সিপিও আফ্রিকার উপকূলে অবতরণ করলেন। কার্থেজের পাঠানো ছোট স্কাউটিং দলকে ধ্বংস করে আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রোমান নিয়ন্ত্রণ কায়েম হলো। ম্যাসিনিসা নুমিডিয়ান অশ্বারোহী নিয়ে সিপিওর সাথে যোগ দিলেন।
কার্থেজ থেকে হ্যানোর অধীনে একটি সেনাদল সেলেকা শহরে ছাউনি ফেলে সিপিওর সাথে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ম্যাসিনিসার সাথে পরামর্শ করে সিপিও ফাঁদ পাতলেন। রোমান অশ্বারোহীরা পাহাড়ের পাদদেশে পুরনো এক দুর্গের কাছে লুকিয়ে থাকল। এই দুর্গের একটি টাওয়ার নির্মাণ করেছিলেন সিরাকিউজের এককালের একনায়ক আগাথক্লেস।
ম্যাসিনিসা সেলেকার সামনে এলে হ্যানোর অশ্বারোহীরা তাদের আক্রমণ করে। ম্যাসিনিসা ধীরে ধীরে পিছিয়ে যেতে থাকলে তারাও এগিয়ে আসতে থাকে। নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছালে রোমান অশ্বারোহী যোদ্ধারা আচমকা তাদের ওপর হামলা করে বসে। কার্থেজিনিয়ানরা পরাজিত হলো। সেলেকা সিপিও দখল করে নিলেন।
উটিকা অবরোধ এবং কার্থেজিনিয়ান ক্যাম্প অ্যামবুশ (২০৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
সিপিও উটিকা অবরোধ করলে কার্থেজ থেকে হাসড্রুবাল ও নুমিডিয়া থেকে ম্যাসিনিসার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা সাইফ্যাক্স তার বিরুদ্ধে অগ্রসর হলেন। রোমান শিবিরের ১১ কিলোমিটারের মধ্যে তাড়া ভিন্ন ভিন্ন ক্যাম্প স্থাপন করেন। তাদের মিলিত সেনা সংখ্যা রোমানদের অনেক বেশি ছিল। সুতরাং সিপিও অবরোধ তুলে নিয়ে নিজের অবস্থান সুরক্ষিত করতে মনোযোগী হলেন।
সিপিও সাইফ্যাক্সের কাছে প্রতিনিধিদল প্রেরণ করেন। দুই পক্ষের মধ্যে কোনো চুক্তি হতে পারে কি না সেই আলোচনা চলতে থাকে। রোমান প্রতিনিধিদলে সিপিও গুপ্তচর ঢুকিয়ে দিলেন, যারা তাকে দুই ক্যাম্পের সমস্ত খবরাখবর এনে দিল। ম্যাসিনিসার সাথে আলোচনা করে সিপিও এবার তার পরিকল্পনা সাজালেন।
নির্দিষ্ট দিন রাত ৯ টায় খাওয়া সেরে সিপিও, লেইলাস ও ম্যাসিনিসা নিজ নিজ বাহিনী নিয়ে শত্রুপক্ষের দিকে অগ্রসর হলেন। সিপিও হাসড্রুবালের ক্যাম্প এবং অন্যরা সাইফ্যাক্সের ক্যাম্প ঘিরে অবস্থান নিল। সিপিওর ইঙ্গিতে সাইফ্যাক্সের শিবিরে অগ্নিসংযোগ করা হলো। নুমিডিয়ান সেনারা আগুন থেকে বাঁচতে ছুটে বেরিয়ে এলে তারা শত্রুর তলোয়ারের মুখে পড়ল।
নুমিডিয়ান ক্যাম্পে হট্টগোলে হাসড্রুবাল সচকিত হয়ে উঠলেন। ব্যাপার বুঝতে তার সেনারা যখন বের হয়ে এল সিপিও তাদের কচুকাটা করতে লাগলেন। প্রায় ৪০,০০০-৪৫,০০০ সেনা হারিয়ে সাইফ্যাক্স ও হাসড্রুবাল পালিয়ে যান। হাসড্রুবাল নিকটবর্তী শহরে আশ্রয় নেন। রোমান সেনাবাহিনী এগিয়ে এলে তিন আবার পালিয়ে যান। সিপিও সেই শহর দখল করে নেন।
ব্যাটল অফ বাগ্রাডেস (২০৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
হাসড্রুবাল ও সাইফ্যাক্সের সম্মিলিত বাহিনীর শোচনীয় পরিণতি কার্থেজকে আতঙ্কিত করে তুলল এই ভেবে যে, সিপিও খুব দ্রুত কার্থেজ আক্রমণ করবেন। কিন্তু তিনি সেরকম কিছু না করে উটিকাতে রয়ে গেলেন।
দ্রুত হাসড্রুবাল আরেকটি বাহিনী গড়ে তুললেন। সাইফ্যাক্সের সাথে মিলে প্রায় ৩০,০০০ সেনা নিয়ে বাগ্রাডেস নদীর কাছাকাছি গ্রেট প্লেইন্সে তারা শিবির স্থাপন করলেন। সিপিও কার্থেজের নতুন এই বাহিনীর সংবাদ পেয়ে তার পূর্ণ বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হলেন। বাগ্রাডেসের কাছে দুই বাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হলো।
ম্যাসিনিসা ও রোমান অশ্বারোহীদের চাপে কার্থেজের অশ্বারোহী যোদ্ধারা পিছিয়ে গেল। তাদের পদাতিক সেনারা তখন সামনে রোমান পদাতিক ও দুই পাশে শত্রু ঘোড়সওয়ার দিয়ে আটকে গেল। কার্থেজের বহু সৈন্য নিহত হলো। হাসড্রুবাল ও সাইফ্যাক্স পরাজিত হলেন।
ব্যাটল অফ যামা (২০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
কার্থেজ ইটালি থেকে হ্যানিবালকে ডেকে পাঠাল। অন্যদিকে সিপিওর সাথে তারা শান্তি আলোচনা শুরু করল। হ্যানিবাল এসে পৌঁছলে তিনি সেনা সমাবেশ করতে শুরু করলেন। এদিকে কার্থেজ থেকে রোমান দূতরা চলে যাওয়ায় সময় হাসড্রুবাল তাদের জাহাজে হামলা চালালে শান্তি আলোচনা ভেঙে যায়।
ওদিকে সিপিওর সাহায্যে ম্যাসিনিসা নুমিডিয়াতে ফিরে গিয়ে ততদিনে সাইফ্যাক্সকে পরাস্ত করে নিজের ক্ষমতা পোক্ত করেছেন। সিপিওর বার্তা পেয়ে তিনি রোমানদের সাথে যোগ দিলেন।
সিপিও আশেপাশের সব শহর ছারখার করে কার্থেজের দিকে এগিয়ে এলে যামার প্রান্তরে হ্যানিবাল তার মুখোমুখি হলেন। তার সাথে ছিল ৩৬,০০০ পদাতিক এবং ৪,০০০ অশ্বারোহী ও হস্তীবাহিনী। অন্যদিকে সিপিওর বাহিনীতে ২৯,০০০ পদাতিক থাকলেও দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধে এই প্রথম রোমান অশ্বারোহী যোদ্ধা ছিল বেশি। ম্যাসিনিসার নেতৃত্বে নুমডিয়ানরা তখন রোমের পক্ষে লড়াই করছিল। ৬,০০০ ঘোড়সওয়ার নিয়ে সিপিও তার বাহিনীর দুই পাশ সুরক্ষিত করলেন।
যুদ্ধের শুরুতে হ্যানিবাল হস্তীবাহিনী লেলিয়ে দিলে সিপিওর সেনারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ছোট ছোট দলে দুই পাশে সরে যায়। মধ্যবর্তী খালি জায়গা দিয়ে হাতিগুলো বের হয়ে যায়। রোমান সেনারা শিঙ্গা ফুঁকে ও তীর এবং বর্শা ছুঁড়ে পশুগুলোকে আহত ও দ্বিধাগ্রস্ত করে তোলে। ফলে অনেক হাতি কার্থেজের বাহিনীর উপর দিয়ে ছুটে যায়।
ম্যাসিনিসা ও রোমান অশ্বারোহীরা হ্যানিবালের অশ্বারোহী যোদ্ধাদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে থাকে। এর মধ্যে দুই দলের পদাতিকদের তুমুল যুদ্ধ চলতে থাকে। কেউ কাউকে একচুলও ছাড় দিচ্ছিল না। রক্ত আর নিহতদের মৃতদেহে যুদ্ধক্ষেত্র পূর্ণ হয়ে ওঠে। এসময় রোমান অশ্বারোহী বাহিনী ফিরে এসে হ্যানিবালের সেনাদের পেছন থেকে আক্রমণ করে। এই প্রথম হ্যানিবাল চরমভাবে পরাজিত হন। তিনি কার্থেজকে শান্তিচুক্তি করতে বলেন।
কার্থেজ রোমের চুক্তি মেনে নিতে বাধ্য হয়। ম্যাসিনিসার কাছে নুমিডিয়াসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল তাদের বিসর্জন দিতে হয়। বাকি সব অঞ্চল রোমের হাতে চলে যায়। মাত্র ১০টি জাহাজ রাখার অনুমতি পায় তারা। এছাড়াও রোমের অনুমতি ব্যতিরেকে কার্থেজের যেকোনো যুদ্ধে জড়ানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বার্ষিক ১০,০০০ ট্যালেন্ট রৌপ্য আগামী ৫০ বছর পর্যন্ত রোমকে দিতে তারা বাধ্য হয়। শেষ হয় দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধ।
হ্যানিবাল এর সাত বছর পর পর্যন্ত কার্থেজে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন। রোমের দাবী অনুসারে এরপর তিনি নির্বাসনে চলে যান। রোমানরা তাকে কোথাও শান্তিতে টিকতে দেয়নি। তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল সেটা নিয়ে মতভেদ আছে। লিভির মতে, ১৮৩ বা ১৮১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমান সেনারা হ্যানিবালের বাসস্থান ঘিরে ফেললে তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেন।