বর্তমান পৃথিবীতে বিলাসিতার অন্যতম একটি উপকরণ গাড়ি। বিখ্যাত সব ব্র্যান্ডের অসাধারণ ডিজাইনের এসব গাড়ি যে কারো চোখ ধাঁধিয়ে দিতে যথেষ্ট। ফেরারি, বিএমডব্লিউ, পোর্শে, রোলস রয়েস, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বেন্টলি ইত্যাদি কোম্পানির গাড়ি যেমন রাস্তায় গতির ঝড় তুলতে ওস্তাদ, তেমনই এদের নির্মাণশৈলীও অসাধারণ। প্রতিনিয়ত আরও নতুন নতুন প্রযুক্তির উন্নত মডেলের সব গাড়ি বাজারে আসছে। এসব গাড়ি একদিকে যেমন চোখের প্রশান্তি আনে, অন্যদিকে ভ্রমণে আনে আভিজাত্য। বিলাসবহুল এসব গাড়ির পাশাপাশি বর্তমানে বাজারে রয়েছে মাঝারি এবং স্বল্পমূল্যের অপেক্ষাকৃত কম সুবিধাযুক্ত গাড়ি।
গাড়ির ইতিহাসের একটি অসাধারণ দিক হলো, এটি একক কোনো ব্যক্তির হাত ধরে আজকের অবস্থানে আসেনি। এর পেছনে নেই কোনো ইউরেকা মুহূর্তও। ইঞ্জিন থেকে শুরু করে চাকা, গিয়ার এমনকি ওয়াইড স্ক্রিন ওয়াইপার সবকিছুই ধীরে ধীরে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে আবিষ্কৃত হয়েছে এবং এগুলোর সমন্বয়েই আমরা পেয়েছি আজকের পরিপূর্ণ গাড়ি।
তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল কীভাবে? কাদের হাত ধরেই বা এতটা পথ চলতে চলতে গাড়িগুলো আজকের এই অবস্থানে চলে এসেছে? আজ আমরা এই বিষয়গুলো সম্পর্কেই জানবো।
বাষ্পীয় যুগ
বেশিরভাগ ঐতিহাসিকই এ ব্যাপারে একমত যে, ফ্রান্সের নিকোলাস-জোসেফ নট সর্বপ্রথম সত্যিকারের একটি মোটর চালিত গাড়ি তৈরিতে সক্ষম হন। ১৭৬৯ সালে আবিষ্কৃত তার এই গাড়িটি ছিল অত্যন্ত ভারী, বিশালাকার এবং বাষ্পচালিত একটি ত্রিচক্রযান। এর গতি ছিল ঘন্টায় ৩.৬ কিলোমিটার এবং চারজন মানুষকে নিয়ে একটানা ২০ মিনিট চলতে পারতো। এরপর তাকে ২০ মিনিট থামতে হতো। নটের এই গাড়িটিকে মানুষের তৈরি প্রথম গাড়ির মর্যাদা দেয়া হলেও রাস্তায় চলাচলের জন্য এটি ছিল একেবারেই অনুপযুক্ত। এর বিশালাকৃতি এবং অতি সামান্য গতিই ছিল এর জন্য দায়ী।
নটের এই আবিষ্কার সবাইকে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখায়। ১৭৯০ সালে নটের গাড়ির চেয়ে কিছুটা উন্নতমানের বাষ্পচালিত গাড়ি ফ্রান্সের রাস্তায় চলতে দেখা যায়। ১৮০০ সালের মধ্যে বাষ্পচালিত বাস ফ্রান্সের রাস্তায় চলতে শুরু করে। ১৮০০-৩০ সালের মধ্যে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগের কিছু বাষ্পচালিত গাড়ি দেখা যায়।
ইংল্যান্ডের উদ্ভাবকেরাও বসে ছিলেন না। ১৮৩০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডেও এসব গাড়ি চলতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে আরও ছোট আকৃতির ও কম ওজনের গাড়ি তৈরি হতে থাকে। লন্ডনের রাস্তায় এ সময় রিচার্ড ট্রেভিথিকের উদ্ভাবিত দশ মিটার ব্যাসের বাষ্পচালিত গাড়ি চলতে দেখা যায়। স্যার গোল্ডসওর্দি গার্নি সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে বাষ্পচালিত গাড়ি তৈরি করেন। তার এই গাড়ি ছ’জন মানুষ বহনে সক্ষম ছিল এবং এটি ঘন্টায় ২৭ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারতো।
ব্রিটেনে বাষ্পচালিত এসব গাড়ির স্বর্ণযুগ ছিল ১৮৩০ সাল। সেই সময় বিভিন্ন রুটে এসব গাড়ি চলতে দেখা যায়, যার মধ্যে একটি অন্যতম রুট ছিল লন্ডন থেকে ক্যাম্ব্রিজ পর্যন্ত। তবে এই গাড়িগুলোর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা, যেমন- উচ্চ শব্দ, ধোঁয়া নিঃসরণ, বিশালাকৃতির কারণে এবং ঘোড়া চালিত গাড়ির জনপ্রিয়তার কারণে ইংল্যান্ডে আইন করে এসব গাড়ির চলাচলকে সঙ্কুচিত করে দেয়া হয়। এসব আইনের মধ্যে ছিল শহুরে রাস্তায় ঘন্টায় ৪ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চালানো যাবে না, যেকোনো টোল গেটে ৫ ইউরো করে টোল দিতে হবে, যেখানে কি না ঘোড়াচালিত গাড়িকে দিতে হত ৩ পেন্স, প্রতিটি গাড়িতে একজন করে ক্রু রাখতে হবে, যিনি গাড়ি চলার সময় লাল পতাকা উড়িয়ে সতর্কবার্তা দেবেন ইত্যাদি।
এসব আইনের কারণে ইংল্যান্ডে বাষ্পচালিত গাড়ি তৈরি একসময় থমকে যায়। তবে তখনও আমেরিকা, ফ্রান্স এবং জার্মানিতে আরও হালকা ওজনের এসব গাড়ি তৈরি হচ্ছিলো। ১৯০৬ সালে স্ট্যানলি ভাইদের তৈরি একটি বাষ্পচালিত গাড়ি ২০৫.৪৪ কিলোমিটার গতিতে চলে বিশ্বরেকর্ড গড়ে। তাদের তৈরি এ গাড়িটি ছিল বাণিজ্যিকভাবে তৈরি আমেরিকার প্রথম মোটর গাড়ি। এমনকি ২০০০ সালে এসেও আমেরিকাতে ৬০০টির মতো বাষ্পচালিত গাড়ি পুরোপুরি সচল অবস্থায় ছিল।
ব্যাটারিচালিত গাড়ি
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে আমেরিকার ৪০ শতাংশ গাড়ি ছিল বাষ্পচালিত, ৩৮ শতাংশ ছিল ব্যাটারিচালিত এবং ২২ শতাংশ ছিল গ্যাসোলিন-চালিত। নিঃশব্দ চলাচল এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক কম হওয়ায় বিদ্যুৎচালিত গাড়িগুলো দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।
১৮৬০ সালে গ্ল্যাস্টন প্ল্যান্ট দ্বারা স্টোরেজ ব্যাটারির আবিষ্কার এবং ১৯৮১ সালে ক্যামেলিয়া ফরের দ্বারা এর প্রভূত উন্নতি সাধন ব্যাটারিচালিত গাড়ি তৈরির পথ করে দেয়। ১৮৮১ সালে ফ্রান্সের রাস্তায় প্রথমবারের মতো ব্যাটারিচালিত ত্রিচক্রযান চলতে দেখা যায়। ১৯৮৮ সালের শুরু থেকে এ ধরনের গাড়ি আমেরিকা ও ব্রিটেনের রাস্তায় চলতে শুরু করে।
১৯১২ সালের পর থেকে ব্যাটারি চালিত এসব গাড়ির স্বর্ণযুগ শুরু হয়। আমেরিকাতে এই ধরনের গাড়িগুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায়। এই সময়ের মধ্যে শুধু আমেরিকাতেই ৩৩,৮৪২টি ব্যাটারিচালিত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করা হয়। তবে এদের স্বল্প গতি, একবারের চার্জে মাত্র ৫০-৬৪ কি.মি যাওয়ার সক্ষমতা এবং ব্যাটারির চার্জ হতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে ধীরে ধীরে এসব ব্যাটারিচালিত গাড়ি জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে। ফলে ১৯২০ সালের মধ্যেই এসব গাড়ি তাদের সুদিন হারিয়ে ফেলে এবং অধিকাংশ কোম্পানি ব্যাটারিচালিত গাড়ি উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
গ্যাসোলিন চালিত গাড়ি
এবার দৃশ্যপটে আসবেন নিকোলাস অগাস্ট অটো, যিনি না থাকলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আজকের অবস্থানে কখনোই আসতে পারতো না। ১৮৭৬ সালে তিনি সর্বপ্রথম চতুর্ঘাত বিশিষ্ট গ্যাসোলিন ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন, যেখানে ইঞ্জিনের ভেতরে চারটি ধাপে জ্বালানী পুড়িয়ে শক্তি উৎপন্ন করা হয় এবং সেই শক্তির দ্বারা ইঞ্জিনের পিস্টনগুলো কর্মক্ষম হয় ও যান্ত্রিক শক্তি অর্জিত হয়।
১৮৮৫ সালের দিকে কার্ল বেঞ্জ একটি ত্রিচক্রযানের সাথে অটো ইঞ্জিন জুড়ে দিয়ে তৈরি করেন পৃথিবীর প্রথম গ্যাসোলিন-চালিত গাড়ি। তবে বেঞ্জের তৈরি এই গাড়িটি প্রথমদিকে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি।
এরই মধ্যে একদিন বেঞ্জের স্ত্রী বার্থা এবং দুই পুত্র ১০০ কি.মি দূরে অবস্থিত দাদীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেঞ্জকে না বলে গাড়িটি ব্যবহার করেন। সম্পূর্ণ রাস্তায় জ্বালানীর জন্য তাদের বেশ কয়েকবার থামতে হয় এবং এক্ষেত্রে তারা রাস্তার পাশের রাসায়নিক দ্রব্যাদির দোকান থেকে কেনা গ্যাসোলিন ব্যবহার করে। খাড়া রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বার্থার ছেলেদের গাড়িটিকে ঠেলতে দেখা যায়। রাস্তার মাঝে চুলের ক্লিপ ব্যবহার করে বার্থাকে অচল হয়ে যাওয়া গাড়িটি ঠিক করতেও দেখা যায়। তারা যখন গন্তব্যে পৌঁছেন, ততক্ষণে সাধারণ মানুষের মধ্যে তাদের ব্যবহৃত নতুন ধরনের এই গাড়িটি নিয়ে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বেঞ্জের গাড়িটি। পরবর্তীতে একে চার চাকায় উন্নীত করেন বেঞ্জ। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে তিনি পৃথিবীর অন্যতম প্রধান গাড়ি নির্মাতাতে পরিণত হন।
এই সময়ের মধ্যে গট্লিব ডাইমলার এবং উইলহেম মেব্যাক মিলিতভাবে গ্যাসোলিন-চালিত গাড়ি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে থাকেন এবং ১৮৯৯ সালে তারা তাদের প্রথম গাড়ি বাজারে নিয়ে আসেন, যার নাম ছিল মার্সিডিজ। প্রথমদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও ১৯২০ সালের পর বেঞ্জ ও ডাইমলারের কোম্পানি একীভূত হয় এবং যাত্রা শুরু হয় মার্সিডিজ-বেঞ্জ কোম্পানির।
একজন হেনরি ফোর্ডের উত্থান
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের গ্যাসোলিন চালিত গাড়িগুলো ছিল দ্রুতগতির এবং নির্ভরযোগ্য। তবে একইসাথে অত্যন্ত ব্যয়বহুলও বটে। ১৮৯৩ সালে কার্ল বেঞ্জের তৈরি ভিক্টোরিয়া নামের একটি গাড়ির মূল্য ছিল ৯,০০০ ইউরো (বর্তমানে ৫০,০০০ ইউরো), যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ঐ সময়ে গাড়ি নির্মাতারা যেসব গাড়ি তৈরি করছিলেন, তা ছিল আকারে বড় এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে সাধারণ মানুষকে তখনও ঘোড়ার গাড়ির ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছিল। এ সমস্যা দূরীকরণে এগিয়ে আসেন একজন আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার, হেনরি ফোর্ড।
সব শ্রেণীর মানুষ যেন ব্যবহার করতে পারে সেই লক্ষ্যে তিনি ১৯০৮ সালে বাজারে আনেন মডেল টি (Model T) নামের একটি গাড়ি। স্বল্প মূল্যের (৮৫০ ইউরো) কারণে গাড়িটি খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। প্রায় ১৫ মিলিয়নের মতো মডেল টি বিক্রি হয়, যা কি না রাতারাতি ফোর্ডকে বিশাল ধনীতে পরিণত করে।
ফোর্ডের এই সাফল্যের অন্যতম রহস্য ছিল অ্যাসেম্বলি লাইন। যেখানে অন্যান্য নির্মাতারা মেকানিক্সদের ছোট একটি গ্রুপের মাধ্যমেই খুব ধীর গতিতে সম্পূর্ণ গাড়ি তৈরি করত সেখানে ফোর্ড অ্যাসেম্বলি লাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন দলকে দিয়ে গাড়ির বিভিন্ন অংশ তৈরি করিয়ে নিতেন। পরবর্তীতে সব অংশ একত্রিত করে পূর্ণাঙ্গ গাড়িতে পরিণত করা হতো। এভাবে তৈরি করার ফলে গাড়ির উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যায়। উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে দামও কমে আসে।
পিপল্স ওয়াগন
ফোর্ডের মডেল টি দেখে উৎসাহিত হয়ে জার্মান একনায়ক হিটলার নিজ দেশেও সাধারণ জনগণের ব্যবহারোপযোগী স্বল্পমূল্যের একটি গাড়ি নির্মাণের ইচ্ছা পোষণ করেন। এজন্য তিনি জার্মান গাড়ি নির্মাতা ফার্ডিনান্ড পোর্শেকে একটি জনতার গাড়ি বা ভলক্স ওয়াগন তৈরির নির্দেশ দেন, পরবর্তীতে যেটি বিটল্স নামে খ্যাতি লাভ করে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০ মিলিয়ন বিটল্স বিক্রি হয় এবং এটি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় গাড়ির মর্যাদা লাভ করে।
ডিজেল চালিত গাড়ি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গাড়ি চালনার ক্ষেত্রে ডিজেল ইঞ্জিন ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে। জ্বালানী খরচ কম লাগা তার অন্যতম একটি কারণ। ১৯৭০ সালের দিকে এসে জেনারেল মোটর্স তাদের কিছু কিছু গ্যাসোলিন-চালিত গাড়িকে আরও সশ্রয়ী করে তোলার জন্য ডিজেল চালিত গাড়িতে রুপান্তরিত করে। একই কাজ করে মার্সিডিজ-বেঞ্জ, ভলক্স ওয়াগন এবং পিউগটের মতো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউরোপে ব্যক্তিগত গাড়িগুলোর জন্য ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যবহার জনপ্রিয় হয় ১৯৯০ সালের দিকে। ২০০৫ সালের মধ্যে সমগ্র ইউরোপের প্রায় অর্ধেক ব্যক্তিগত গাড়িই ডিজেল দ্বারা চালিত ছিল।
ইলেক্ট্রিক কার
১৯৭৩-৭৪ সালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানী সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে সবাই আবার ব্যাটারিচালিত গাড়ির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা শুরু করে। ব্যাটারিচালিত গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বেশ কিছু ইলেক্ট্রিক কারের সাথে বিশ্ববাসী পরিচিতি লাভ করে। এর মধ্যে সিটি কার এবং জেনারেল মোটরের EV1 গাড়িটি বেশ প্রসিদ্ধ।
ইলেক্ট্রিক-গ্যাসোলিন হাইব্রিড
১৯৯৭ সালে টয়োটা জাপানের বাজারে নিয়ে আসে প্রিয়াস নামের একটি হাইব্রিড গাড়ি। এতে একটি ছোট গ্যাসোলিন ইঞ্জিনের পাশাপাশি রয়েছে একটি ইলেক্ট্রিক মোটর। উন্নতমানের কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে যখন প্রিয়াসের ইলেক্ট্রিক ব্যাটারি চার্জ দিতে হয়, ঠিক তখনই শুধুমাত্র এটি গ্যাসোলিন ইঞ্জিন ব্যবহার করে।
আমেরিকার বাজারে এ ধরনের হাইব্রিড গাড়ি প্রথম পরিচয় করিয়ে দেয় হোন্ডা। এ ধরনের পরিবেশ বান্ধব গাড়ির উৎপাদন উৎসাহিত করার জন্য আমেরিকাসহ বেশ কিছু দেশের সরকার অন্যান্য গাড়ির ওপর অর্পিত কর এসব ইলেক্ট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে মওকুফ করে দেয়।
২০১০ সালে জেনারেল মোটরস শেভরোলেট ভোল্ট নামক একটি হাইব্রিড গাড়ির সাথে বিশ্ববাসীর পরিচয় করিয়ে দেয়, যা একটানা ৩৫ কিলোমিটার গ্যাসোলিন দিয়ে এবং এরপর ব্যাটারি ব্যবহার করে চার্জ শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত একটানা চলতে পারতো।
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ
প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে গাড়ি শিল্পও এগিয়ে যাচ্ছে পাল্লা দিয়ে। বর্তমানে গাড়ি নির্মাতারা ফুয়েল সেল নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিকল্প জ্বালানী ব্যবহার করে গাড়ি তৈরির জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও চালকবিহীন গাড়ি, উড়ুক্কু গাড়ি যেটি কি না একইসাথে রাস্তায় চলার পাশাপাশি আকাশেও উড়তে পারবে, তা নিয়েও গবেষণা চলছে।
ভবিষ্যতে হয়তো আপনাকে আর ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে আটকে থাকতে হবে না। একটি সুইচ টিপে নিজের গাড়িকে বিমানে পরিণত করে হয়ত সহজেই উড়ে যেতে পারবেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে!