মিখিয়েল ডি রুইটার (পর্ব-১২): ১৬৬৬ সালের সমাপ্তি

[১১ তম পর্ব পড়ুন]

দেশে ফিরেও ডি রুইটার বেশি দিন থাকতে পারলেন না। ১৬৬৬ সালের ৩রা জুলাই এস্টেট জেনারেলরা তাকে যথাশীঘ্রই ব্রিটিশদের চূড়ান্ত বিহিত করতে সাগরযাত্রার নির্দেশ জারি করেন। বলা হলো- যদি ফরাসিরা তার সাথে যোগ দেয় তাহলে ভাল, নাহলেও ব্রিটিশদের দেখামাত্র আক্রমণ করতে হবে।

৫-৬ তারিখের দিকে ডি রুইটার সাগরে নেমে পড়লেন। তার সাথে ৭৫টি যুদ্ধজাহাজ আর ফ্রিগেট, এবং সাতটি ফায়ারশিপ। সরবরাহকারী জাহাজে নেয়া হয়েছিল ৬,০০০-৭,০০০ মেরিন সেনা, উদ্দেশ্য ইংল্যান্ডের উপকূলে নেমে হামলা চালানো। হবে। জোহান ডি উইটের ভাই কর্নেলিস ডি উইট তার সঙ্গী হন। ডি লিফড আর ব্যাঙ্কার্ট নামে দুই অফিসার আগে আগে গেলেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে। 

কর্নেলিস ডি উইট; Image Source: artvee.com

প্রতিকূল বাতাসের কারণে ইংল্যান্ডে পৌঁছতে বেশ দেরি হয়ে যায়। টেমসের কাছাকাছি এসে ডি রুইটার ভাবলেন উত্তর ফোরল্যান্ডে সৈনিকরা অবতরণ করতে পারবে। কিন্তু লিফড আর ব্যাঙ্কার্ট খবর নিয়ে এলেন মঙ্ক আর রুপার্টের নেতৃত্বে ১৬টি ফায়ারশিপসহ ৬৫টি জাহাজ কুইন্সবরোর তীরে সমবেত হয়েছে। চার দিনের যুদ্ধে ডাচরা যেরকম মনে করেছিল সেরকম ক্ষতি আসলে ব্রিটিশদের হয়নি- এটা বুঝতে পেরে ডাচরা কিছুটা হতচকিত হয়ে যায়।

সাগরে ডাচ ফ্লিট; Image Source: pubhist.com

ডি রুইটার বুঝলেন- এই পরিস্থিতিতে মেরিনদের তীরে নামানো আত্মঘাতী হবে, ফলে তাদের ফেরত পাঠানো হলো। চতুর্দশ লুই ২,০০০ সেনা দিয়ে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু একই কারণে সেই সাহায্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে রয়্যাল নেভি ডাচদের ভাবনার চেয়েও দ্রুততার সাথে মেরামত সম্পন্ন করে অগাস্টের শুরুতেই পুরো বহর নামিয়ে দেয়। 

ব্যাটল অফ নর্থ ফোরল্যান্ড

১লা আগস্ট ৮০-৯০টি রণতরী আর ১৮-১৯টি ফায়ারশিপ নিয়ে ব্রিটিশ নৌবহর এগিয়ে এলো। প্রতিকূল বাতাস থাকায় ডি রুইটার উত্তরে সরে যান। ২ তারিখ তুমুল ঝড় কোনো পক্ষকেই যুদ্ধের সুযোগ দিল না। পরদিনও ঝড় চলতে থাকে, ফলে ডি রুইটার অনুকূল বাতাস পাবার জন্য সরতে থাকলেও শেষ অবধি নোঙর করতে বাধ্য হলেন। রাত নয়টা নাগাদ দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে নোঙর করে ছিল। প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরদিনের জন্য।

৪ আগস্ট, ১৬৬৬।

ওয়েদার গেজ পেয়ে গেল ব্রিটিশরা। বাতাসের তোড়ে ডি রুইটারের বহর কিছুটা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে, ফলে লাইন বজায় রাখতে তাদের সমস্যা হচ্ছিল। সম্মুখ বা ভ্যান অংশ কমান্ড করছিলেন চার দিনের যুদ্ধে নিহত এভারস্টজুনের ভাই, প্রথম অ্যাংলো-ডাচ যুদ্ধের অ্যাডমিরাল এভারস্টজুন এবং ডি ভ্রাইস। ভাইয়ের মৃত্যুর পর এভারস্টজুন অবসর ভেঙে ফিরে এসেছেন।

এভারস্টজুন; Image Source: geni.com

রিয়ার বা পশ্চাৎ ছিল ট্রম্পের অধীনে। আগের যুদ্ধগুলোতে তার হঠকারী আচরণ দেখে ডি রুইটার পইপই করে তাকে বলে দিয়েছিলেন- কোনো ভাবেই যেন ট্রম্প নিজেদের সারি ভেঙে একা সামনে এগিয়ে না যান। ডি রুইটার আর তার সহকারি ব্যাঙ্কার্ট সেন্টার বা মধ্যভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।

ব্রিটিশ সার্বিক কম্যান্ডে ছিলেন মঙ্ক। তার মনে চার দিনের যুদ্ধে পিছিয়ে আসার অপমান দাউ দাউ করে জ্বলছে। প্রতিশোধ নিতে তিনি বদ্ধপরিকর। তার অধীনস্থ রেড স্কোয়াড্রন ব্রিটিশ ব্যুহের মধ্যভাগে, ভাইস অ্যাডমিরাল থমাস অ্যালেনের হোয়াইট স্কোয়াড্রন সম্মুখ আর স্যার স্মিথের ব্লু স্কোয়াড্রন রিয়ারে অবস্থান নেয়।

স্যার থমাস অ্যালেন © Peter Lely

প্রতিকূল বাতাসের কারণে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়া ডাচ বহর প্রথম থেকেই ছিল বিপাকে। এর সাথে যোগ হলো ট্রম্পের হঠকারিতা। তার অধীনেই ছিল সবচেয়ে বেশি জাহাজ। তিন অন্যান্য অংশের থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে ছিলেন। এগিয়ে এসে ডি রুইটারকে শক্তিশালি করার কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি তার মাঝে। যুদ্ধের শুরুতে যখন ব্রিটিশদের আঘাতে ডাচ নৌবহর বিপদের মুখোমুখি, তখনও তিনি নিশ্চল। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন- ডি রুইটারের অধীনে কাজ করার অনিচ্ছাই তাকে বাধা দিয়েছিল ডাচ নৌবহরের সাহায্যে এগিয়ে যেতে।

ট্রম্পকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্মিথের ব্লু স্কোয়াড্রন এগিয়ে যায়। ট্রম্প তার অভ্যাসমতো তেড়ে গেলেন। স্মিথের তুলনায় তার শক্তি ছিল বেশি। তিনি ব্রিটিশ জাহাজ রেজল্যুশন গোলা মেরে ডুবিয়ে দিলেন। স্মিথ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে লেজ তুলে পালান, ট্রম্প তাকে ধাওয়া করে সেই যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে গেলেন, সারাদিন তার আর দেখাই পাওয়া গেল না। অনেকেই দাবি করেন- স্মিথ আসলে পালানোর ছল করে ট্রম্পকে ডি রুইটারের থেকে আলাদা করে দিয়েছিলেন।

ওদিকে ট্রম্প যখন পেছনে অবসর সময় কাটাচ্ছেন, তখন এভারস্টজুনের সাথেই প্রথম সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো। ঘড়িতে তখন দুপুর বারোটা। এভারস্টজুনে ডি রুইটারের মূল অংশের থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। মঙ্ক সুযোগ দেখে চারিদিকে ঘেরাও করে তার জাহাজগুলোর উপর গোলা ছুড়লেন। এভারস্টজুন আর ডি ভ্রাইস নিহত হন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই।

ব্যাটল অফ নর্থ ফোরল্যান্ড; Image Source: artuk.org

ওদিকে ডি রুইটারের সাথেও ব্রিটিশদের লড়াই চলতে থাকে। ট্রম্পের অনুপস্থিতিতে তারা পেছন থেকে অরক্ষিত হয়ে গিয়েছিলেন। এই ফাঁকে ব্রিটিশরা চারদিক থেকে গোলা দেগে তাদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলল। ব্যাঙ্কার্টের জাহাজ ডুবে গেলে তিনি অন্য একটি জাহাজে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। আরেকটি ডাচ জাহাজ পুড়ে যায়। ভাইস অ্যাডমিরাল কোয়েন্ডার্স নিহত হলে তার নাবিকেরা জাহাজ ঘুরিয়ে পালাল। তাদের দেখাদেখি আরো কয়েকটি জাহাজও একই কাজ করে।

এই বিশৃঙ্খলা আর পরাজয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ডি রুইটার নির্ভীকভবে লড়ে যান। তার নাবিক আর সৈনিকেরা অবিশ্রান্তভাবে তোপ দেগে যেতে থাকে। তিন ঘণ্টা ধরে ডি রুইটারের জাহাজ, সেভেন প্রভিন্সেস সরাসরি মঙ্কের পতাকাবাহি জাহাজ বা ফ্ল্যাগশিপের সাথে লড়াই করে যায়। মঙ্ক আর রুপার্ট তাদের জাহাজ মেরামতের জন্য বিরতি নিলে তাদের সহকারীরা সংঘাত জারি রাখে।

অবশেষে দেখা গেল- ডাচ সারির ভ্যান বা সম্মুখ অংশ প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ডি রুইটারের বেশ কয়েকজন অফিসারও নিহত। অনেক জাহাজ মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ডি রুইটার তাই পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্ক ২২টি জাহাজ নিয়ে তাকে ধাওয়া করলেন, কিন্তু অগভীর তীর ঘেঁষে ডাচ জাহাজ চলার কারণে ব্রিটিশরা তাকে ধরতে ব্যর্থ হয়।

ডি রুইটার দ্রুত দেশে ফিরে গেলেন জাহাজ মেরামত করতে। সেভেন প্রভিন্সেস নিয়ে এ কারণে তিনি চলে যান নিজ গ্রাম ভ্লিসিঞ্জেনের বন্দরে। এখানে তার ১১ বছরের মেয়ে অ্যান তার সাথে দেখা করতে এসে অসুখে পড়ে মারা গেল। কিন্তু শোক সরিয়ে ডি রুইটার মনযোগী হলেন নৌবহর পুনর্গঠনে।

ট্রম্প ৬ আগস্ট উইলিঙ্গেনে এসে নোঙর করেছিলেন। তার কারণেই ডাচদের এই বিপর্যয়। ডি রুইটারের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে পেয়ে এস্টেট জেনারেলরা ট্রম্পকে বাহিনী থেকে বহিষ্কার করেন। বীরত্বের সাথে লড়াই করায় ডি রুইটাররের কপালে জুটল আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ। ফ্রান্স থেকে চতুর্দশ লুইও পুরষ্কারস্বরূপ ডি রুইটারের বাঁধাই করা একটি ছবি পাঠিয়ে দেন।

সর্বাধিনায়কের আদেশ অমান্যের অভিযোগে নৌবাহিনী থেকে সরিয়ে দেয়া হয় ট্রম্পকে; Image Source: artuk.org

উত্তর ফোরল্যান্ডের যুদ্ধে ডাচরা প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের মাত্র ৮টি জাহাজ ব্যবহার উপযোগী ছিল। তারা যদিও দাবি করে ব্রিটিশদের চারটি জাহাজ ধ্বংস করবার, তবে ব্রিটিশ রেকর্ড বলে মাত্র একটি জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। ব্রিটিশদের দাবি ছিল- ডাচদের ২০টি জাহাজ ধ্বংস হয়ে যায়, হতাহত হয় ৭,০০০। যা-ই হোক, এই লড়াইতে বিজয়ী হন মঙ্ক, কারণ এরপর সাময়িকভাবে সাগরে রয়্যাল নেভির পূর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা চারদিকে বিনা বাধায় ডাচ বানিজ্য জাহাজের উপর হামলা চালিয়ে তাদের অর্থনীতি অনেকটা স্থবির করে দেয়।

হোমসের অভিযান

রবার্ট হোমস, যার হামলা থেকেই মূলত সংঘর্ষের শুরু, তাকে এতদিনে চার্লস স্যার উপাধি দিয়ে দিয়েছেন। ব্যাটল অফ নর্থ ফোরল্যান্ডের পর পরই ৮ তারিখে তার উপর আদেশ জারি হলো নেদারল্যান্ডসে ভ্লিল্যান্ড আর টার শিলিং দ্বীপে আক্রমণের। ১৬টি জাহাজ আর ৫টি ফায়ারশিপ নিয়ে হোমস নেদারল্যান্ডসের উপকূলে পৌঁছলেন ২০ আগস্ট। তক্কে তক্কে থাকলেন সুযোগের।

ভ্লিল্যান্ডে অবতরণের চেষ্টা ঝড়ের জন্য ব্যর্থ হলেও হোমসের নজরে ধরা পড়ল সাগরে থাকা দেড়শ বাণিজ্য জাহাজ, তাদের পাহারা দিচ্ছে মাত্র দুটি রণতরী। রয়্যাল নেভির নজর এড়িয়ে তারা নেদারল্যান্ডসের বন্দরে ঢোকার পাঁয়তারা করছিল। হোমস পেয়ে গেলেন সহজ শিকার। সহজেই প্রহরারত দুটি রণতরীকে কাবু করে বাণিজ্য বহরের দিকে পাঠিয়ে দিলেন ফায়ারশিপ। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ডাচদের মালামাল বোঝাই বহু জাহাজ, মাত্র কয়েকজন প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে যেতে পেরেছিল।

হোমস ডাচ বাণিজ্য জাহাজের উপর আক্রমণ চালান; Image Source: rct.uk

এই এক আঘাতে ডাচদের তৎকালীন মুদ্রায় এক মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, যা তখনকার ইংল্যান্ডের বার্ষিক রাজস্বের কাছাকাছি। এরপর টার শিলিং দ্বীপে হোমস নামতে সক্ষম হলেন। এখানে ব্র্যান্ডারিস শহর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হলো।

গ্রেট ফায়ার অফ লন্ডন

১৬৬৬ সালে দোসরা সেপ্টেম্বর লন্ডন ব্রিজের কাছে ছোট্ট একটি বেকারিতে আগুন লাগে। তখন চলছে তীব্র গরম। এসময় ছোটখাট আগুন প্রায়শই লাগত। কিন্তু সপ্তাহখানেক বৃষ্টি না হওয়ায় তৎকালীন কাঠের বাড়িঘরগুলো ছিল খটখটে শুকনো। ফলে সেগুলো লাকড়ির কাজ করল। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

৪ তারিখের ভেতর অর্ধেক লন্ডনই জ্বলতে থাকে। দমকল কর্মীদের সাথে একসময় রাজাও নেমে পড়েন পানি বহনে। ৬ তারিখে আগুন যখন নিয়ন্ত্রণে আসলো, তখন লন্ডনের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ অক্ষত ছিল, তবে মারা গিয়েছিল মাত্র ৬ জন। ৫-৭ মিলিয়ন পাউন্ডের ক্ষতি হয় এই অগ্নিকান্ডে, ব্রিটিশ যুদ্ধপ্রস্তুতিও প্রচণ্ড রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

লন্ডনের অগ্নিকান্ড; Image Source: history.com

আবার সাগরে

সেপ্টেম্বরের প্রারম্ভে ৯৯টি জাহাজ আর ২৬-২৭টি ফায়ারশিপ নিয়ে আবার সাগরে ভেসে পড়লেন ডি রুইটার। ডোভার প্রণালির কাছে এসে ব্রিটিশদের দেখা পাওয়া গেল। তারা হারউইচ শহরের তীর ধরে অপেক্ষা করছে। তাদের বহরে ৯০টির মতো জাহাজ। ডি রুইটারকে তারা অনুসরণ করলেও সাগরে মুখোমুখি লড়াইয়ের ইচ্ছা দেখা গেল না। মূলত দুই পক্ষেরই রসদপত্র ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতি ছিল, তাছাড়া কয়েকবার সংঘর্ষের পরেও চূড়ান্ত কোনো ফলাফল না পেয়ে দুই পক্ষই একটু বেশি সতর্ক।

ডি রুইটার ইংলিশ চ্যানেল ধরে ফরাসি উপকূলে চলে গেলেন। সেখানে নোঙর করলেন বুঁলোর (Boulogne) কাছে এটাপ্লস (Etaples) বন্দরে।কয়েকদিন এখানে অধীনস্থদের প্রশিক্ষণ দিলেন তিনি। এ সময় দুর্ঘটনায় ডি রুইটার শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। নানা রোগে তার অনেক নাবিক আর অফিসারও অসুস্থ হয়ে যায়। ডাচরা যখন এটাপ্লসে বিশ্রাম নিচ্ছে, তখন ফরাসি দূত কাউন্ট ডি ফিউলেডস এসে পৌঁছেন। তিনি ডাচদের লুইয়ের তরফ থেকে অনুরোধ করলেন ডাচদের ফ্রান্সের ব্রেশট বন্দর বরাবর রওনা দিতে। রোশেল থেকে ফরাসি নৌবহর পথে আছে এবং ব্রেশটই হতে পারে তাদের সাথে সম্মিলনের উপযুক্ত জায়গা।

ডাচরা পাল তুলে যাত্রা করল। কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বর প্রবল ঝড়ে তাদের বেশ কয়েকটি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে নির্দিষ্ট তারিখ পেরিয়ে গেলেও ফরাসি নৌবহরের দেখা মিলল না। ডাচরা উত্তরে অস্টেন্ড আর ব্ল্যাঙ্কেনবার্গের মাঝে অবস্থান নিয়ে এস্টেট জেনারেলদের আদেশের অপেক্ষা করতে থাকে। এদিকে লন্ডনের অগ্নিকান্ডে ব্রিটিশ বহরেও চলছিল বিশৃঙ্খলা, কারণ এর ফলে ডাচদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতে হবে সেই সম্পর্কে লন্ডনে থেকে নৌ অধিদপ্তর কোনো পরিষ্কার নির্দেশনা দিতে পারছিল না।   

এস্টেট জেনারেলরা তাদের বহরের সাথে পরামর্শদাতা হিসেবে তিনজন কমিশনার নিযুক্ত করবার সিদ্ধান্ত নিলেন। অবিলম্বে যাবার মতো একজনকেই পাওয়া গেল- গ্র্যান্ড পেনশনার ডি উইট। তিনি জাহাজে ডি রুইটারের সাথে যোগ দিলেন। কিন্তু ডি রুইটারের স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতি হতে থাকলে অক্টোবরের ৫ তারিখ তিনি আমস্টারডামে এসে নামেন। প্রায় দুই মাস বাসায় থেকে অবশেষে সুস্থ হলেন ডি রুইটার। ৫ ডিসেম্বর বাসা থেকে বের হতে পারলেন তিনি। পরবর্তী বছর মার্চে তাকে পুনরায় নৌবাহিনী প্রধান নিয়োগ দেয়া হয়।

This is a Bengali language article about the intrepid Dutch Admiral, Michiel De Ruyter. The article describes the De Ruyter’s lie and achievements. Necessary references are mentioned below.

References

  1. Douglas, P. Michiel De Ruyter, Held van Nederland. New Netherland Institute.
  2. Grinnell-Milne, G.(1896). Life of Lieut.-Admiral de Ruyter. London: K. Paul, Trench, Trübner & Company.
  3. Curtler, W. T. (1967). Iron vs. gold : a study of the three Anglo-Dutch wars, 1652-1674. Master's Theses. Paper 262.
  4. Michiel Adriaanszoon De Ruyter. Encyclopedia Britannica

Feature Image © Adriaen Van Diest

Related Articles

Exit mobile version