ভূত বলতেই অজানা এক রহস্য। ভয় আর আতঙ্কের দুশ্চিন্তা মনের কোণে সবসময় উঁকি দেয়। এমন অনেকেই আছেন যারা ভূত বিশ্বাস করেন না, কিন্তু ভূতুড়ে রহস্যের গল্প শুনতে ভীষণ পছন্দ করেন। এইতো বেশ কিছুদিন আগেই ভূতুড়ে এক সেলফি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জগতে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হলো। আসলেই এসবের সঠিক ব্যাখ্যা কেউ কখনো দিতে পারেন না। অশরীরী কিছুর অস্তিত্ত্বকে অনেকেই মেনে নিতে না চাইলেও প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে এমন অনেক কিছুই ঘটছে যা আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা ব্যাখ্যা করতে গেলেও হার মানতে হয়। ধীরে ধীরে এইসব রহস্য থিতু হয়ে লেখকের কোন গল্পে ঠাঁই করে নেয়। কিন্তু মানুষের স্মৃতির চিত্রপটে তা রহস্যেই থেকে যায়। ঠিক সে রকমই কিছু রহস্য ঘেরা বিখ্যাত হোটেলের গল্প নিয়ে সাজানো আজকের এই লেখা। এসব ভূতুড়ে হোটেলগুলোর কুখ্যাতির পেছনে লুকিয়ে রয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত বিষাদময় কোনো ঘটনা। আসুন জেনে নিই কয়েকটি বিখ্যাত হোটেলের এমনিই কিছু রহস্যময় ঘটনা।
বিশ্বের সব ভূতুড়ে হোটেলের তালিকায় সন্দেহাতীতভাবে শীর্ষে যে হোটেলের অবস্থান থাকার কথা সেটি অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানলি হোটেল। ১৯০৯ সালে এই হোটেলটি নির্মাণ করেন ফ্রিলান অস্কার স্ট্যানলি। হোটেলটি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের এস্টেস পার্ক শহরে অবস্থিত। কথিত আছে, স্ট্যানলি হোটেলের মালিকের স্ত্রী ফ্লোরা স্ট্যানলির ভূত হেঁটে বেড়ায় বিভিন্ন কামরায়। তবে অনেকের ভাষ্য মতে ফ্লোরা স্ট্যানলির ভূত দৃশ্যমান, বিভিন্ন সময়ে চোখের সামনেই তাকে অনেকে দেখতে পেয়েছেন। ফ্লোরা স্ট্যানলি ভালো পিয়ানো বাজাতেন। স্ট্যানলি হোটেলে রাত কাটিয়ে আসা অনেকেই বলেছেন, তারা রাতের বেলা পিয়ানো বাজানোর আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন।
এই হোটেলের অদ্ভুত সব কাণ্ডকারখানা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিখ্যাত থ্রিলার রাইটার স্টিফেন কিং ১৯৭৭ সালে লিখেছিলেন তার বেস্ট সেলার হরর উপন্যাস ‘দ্য সাইনিং’। এক রাতে স্টিফেন কিং সস্ত্রীক উপস্থিত হন স্ট্যানলি হোটেলে। ট্যুরিস্ট সিজন শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই সময় হোটেলটিতে আর কোনো অতিথি ছিল না। হোটেলের নিস্তব্ধ আঙ্গিনা, লম্বা অন্ধকার করিডর, মনুষ্যবিহীন বিশাল ডাইনিং রুমসহ সবখানেই ভয়ের উপাদান ছড়িয়ে ছিল। স্টিফেন কিং রাতযাপন করেছিলেন হোটেলের ২১৭ নম্বর কামরায়। সারা রাত অদ্ভুত সব আওয়াজ, অদ্ভুত চিৎকার আর পায়ের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন তিনি। শেষ রাতে ঘুমিয়ে মারাত্মক দুঃস্বপ্ন দেখেন। এই বাস্তব অভিজ্ঞতাই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন উপন্যাসের পাতায় পাতায়। ২০০৬ সালে টেলিভিশন শো “ঘোস্ট হান্টারের” একটি পর্ব নির্মাণ করা হয় স্ট্যানলি হোটেলের ওপর। এত কিছুর পরও কিন্তু থেমে থাকেনি স্ট্যানলি হোটেলে অতিথিদের আনাগোনা।
১৮৮৫ সালে নির্মিত এই ল্যাংহাম হোটেলে বহু অভিজাত লোকজন বিভিন্ন সময়ে এসে থেকে গিয়েছেন। অদ্ভুত ব্যাপার হল এই হোটেলে শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই রুম নাম্বার ৩৩৩ এ ভিক্টোরিয়ান ইভনিং পোশাক পরা এক পুরুষের ছায়া দেখা যায়। অন্য কোনো মাসে এরকম দেখা যায় না। আবার অনেকেই হোটেলের ৪ তলার জানালায় মিলিটারি পোশাক পরিহিত একজনকে দেখতে পান বলে জানা গেছে। আগে জার্মান প্রিন্স জানালা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। অনেকের মতে এই আত্মাই হোটেলের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায়।
ক্যাসেল স্টুয়ার্ট , স্কটল্যান্ড
তৎকালীন স্কটল্যান্ডের রানীর ভাই জেমস স্টুয়ার্ট ১৬২৫ সালে এই ক্যাসেলটি নির্মাণ করেন। রহস্যজনকভাবেই ক্যাসেলটি নির্মাণের পর পরই ঘটতে থাকে সব অদ্ভুত ঘটনা। অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন অলৌকিক কিছুর উপস্থিতি। আর তাই জেমস স্টুয়ার্ট ঘোষণা দেন যে যদি কেউ এক রাত ঐ ক্যাসেলে থেকে প্রমাণ করতে পারেন যে ওখানে ভূত নেই তবে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। এই ঘোষণায় এলাকার ধর্ম যাজক পেট্টি চার্চ প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন ও সেখানে রাত্রি যাপন করতে যান। পরদিনই ঐ ক্যাসেলে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃতদেহের মুখে অসম্ভব ভয়ার্ততার ছাপ ছিল।
দ্যা হাউসটন হোটেল, যুক্তরাষ্ট্র
হাউসটন হোটেলের ৬১২ নম্বর রুম রহস্যের আজও কোনো কুল-কিনারা হয়নি। আমেরিকার ম্যাসাচুয়েটসে অবস্থিত এই হোটেলটিতে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ও তার স্ত্রী থেকে গিয়েছেন। তবে হোটেলের ভৌতিক ঘটনা হল রুম নম্বর ৬১২ এর সামনে এক নারীর অবয়ব দেখতে পান অনেকেই কিন্তু পিছু নিতে গেলেই আর খুঁজে পাওয়া যায়না সেই নারীকে। তাছাড়া চোখের সামনে থেকেই চাবি গায়েব হওয়া, সুইচ অন ছাড়াই বাতি জ্বলা ও নিভে যাওয়া, হঠাৎ পানির কল ছাড়ার শব্দ ইত্যাদি আরও নানা রকম সমস্যা রয়েছে এই হোটেলটিতে।
অবরেয় গ্র্যান্ড হোটেল, কলকাতা
কলকাতার ভূতুড়ে হোটেল বলতেই গ্র্যান্ড হোটেলটি বিশেষ পরিচিত। তাছাড়া এটি নামীদামী হোটেল গুলোর মাঝেও অন্যতম। জওহরলাল নেহেরু রোডের উপর অবস্থিত অবরেয় হোটেল এন্ড রিসোর্ট। গুজব বা সত্যি যাই হোক এই হোটেলের ভূতুড়ে কাণ্ড কীর্তন নিয়ে মানুষের আতঙ্ক আর কৌতূহলের কোনোরকম কমতি নেই। ১৯৪৫ সালে টেডি বেদাফোর নামের বিখ্যাত পিয়ানো বাদক এই হোটেলে অদ্ভুতভাবে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রাত হলেই এই হোটেলে শুরু হয় অদ্ভুত সব ঘটনা। কখনোও হোটেল সুইটের পাশের ঘর থেকে ভেসে আসে নারীর কান্না শব্দ। কখনোবা মধ্যরাতে রুমের বাইরে ফিসফিসানির শব্দ, মানুষের পদচারনা, কোনও বাতাস বা নড়াচড়া ছাড়াই টেবিলের গ্লাস মেঝেতে পড়ে যাওয়া, জানালা খোলা ছাড়াও হঠাত দমকা হাওয়া ইত্যাদি অভিযোগ আসে হোটেল বাসিদের কাছ থেকে।
কিন্তু কে বা কারা এরা তা বিভিন্ন সময় তদন্ত করতে গিয়েও কোনও ক্লু বা নমুনা ধরা পড়েনি কার কাছেই। একবার রাতের বেলাতেই হোটেল বয় লবিতে ক্লিনার ভূত দেখতে পেয়েছিলেন। হোটেল কতৃপক্ষ এইসব ঘটনাকে মনের ভুল বলে উড়িয়ে দিলেই কিন্তু এইসব ভৌতিক কার্যাবলী থেমে থাকেনি। এসন ঘটনা এতবারই ঘটেছে যে তা আর গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়ার দরজা খোলা রাখে না।
স্কিরিড মাউন্টেইন হোটেল, ওয়েলস
এই হোটেল টি কে বা কারা তৈরি করেছেন তা নিয়ে কোনো ইতিহাস না থাকলেও এর সাথে জড়িয়ে আছে ৯০০ বছরের পুরোনো ইতিবৃত্ত। এটি ছিল মূলত একটি মদের দোকান। পরে খদ্দের বেড়ে যাওয়াতে এটি পরিণত হয় হোটেলে। তখন হোটেলের নিচের ফ্লোরটি কোটরুম ছিল, যেখানে সামান্য ভেড়া চুরির অপরাধেও মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠিন শাস্তি দেওয়া হতো বলে জনশ্রুতি আছে।
এই স্কিরিড মাউন্টেইন হোটেলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক বিপ্লবের ইতিহাস। ১৪০০ সালের কথা। ওয়েলসের অধিবাসীরা ইংল্যান্ডের রাজা চতুর্থ হেনরির বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নামে। বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে প্রায় ১৮০ জন বিদ্রোহীকে বন্দী করে স্কিরিড মাউন্টেইন হোটেলে এনে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। এরপর থেকে হোটেলটিকে ঘিরে নানা অতিপ্রাকৃত ঘটনার কথা শোনা যায়। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, স্কিরিড মাউন্টেইন হচ্ছে কয়েকটি ভূতের আবাসস্থল। এখানে রাতযাপনকারী অনেকেই নানা সময়ে ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। হোটেলে থাকতে আসা অনেকেই আচমকা বিভিন্ন কড়িকাঠে মানুষের লাশ ঝুলতে দেখেছেন। অনেকে আবার বলেছেন এমন অদ্ভুত অনুভুতির কথা যে, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তার যেন মনে হয়েছে কেউ তার গলায় অদৃশ্য দড়ি পরাচ্ছেন। আইটিভির ‘এক্সট্রিম ঘোস্ট স্টোরিস’ নামের ডকুমেন্টারি টিভি সিরিজেও স্কিরিড মাউন্টেইনের ভূতুড়ে ঘটনাগুলোকে নিয়ে ছবি বানানো হয়েছিল।
নর্থ কাপুনডা, অস্ট্রেলিয়া
বিশেষ টিভি সিরিজ “হন্টিং অস্ট্রেলিয়া”তে এই হোটেলটি নিয়ে একটি এপিসোডে হোটেলের ভৌতিক ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়। তারা তদন্ত করে জানান যে এইসব ঘটনা হোটেলের কিছু অব্যবহৃত অংশেই ঘটে থাকে যার কোনো ব্যাখ্যা নেই। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ভীতিকর জায়গাগুলোর মাঝে এই হোটেলটি অন্যতম। হোটেলটি তৈরি হয় ১৮৪৯ সালে। তখন এর নাম ছিল নর্থ কাপুন্ডা আর্মস। ১৮৫৬ সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় নর্থ কাপুন্ডা হোটেল। তখন তামা খনিতে কাজ করতে অনেক শ্রমিক কাপুন্ডা শহরে এসে বসবাস শুরু করে। তাদের জন্যেই তৈরি হয়েছিল হোটেলটি। কাপুনডা শহরের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে হোটেলের অতীত ইতিহাস।
১৮৫৯ সালে কাপুনডা শহরে দাঙ্গা হয়েছিল। তৎকালীন পুলিশ সুপার মিস্টার কুয়েলি কাপুনডা হোটেলের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো মানুষের উদ্দেশ্যে বিশেষ দাঙ্গা আইন পড়ে শোনান। জনমত আছে যে, সে সময় খনি শ্রমিকরা হোটেলের নিচ দিয়ে বেশ কিছু টানেল নির্মাণ করেন যা স্থানীয় বিভিন্ন খনির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। টানেলে আটকা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু ও পতিতাদের ধরে এনে নির্যাতন করে মেরে ফেলাসহ এখানে আরও অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যায়। হঠাৎ করেই হোটেলটিতে শুরু হয় ভৌতিক কার্যকলাপ যার চাক্ষুষ সাক্ষী আছে অনেকেই। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই হোটেলে মৃত্যুবরণকারী সব অধিবাসীর ভূত এখনো বাস করছে এখানে। এদের মধ্যে আছে হোটেলের এক সময়কার মালিক, খনি শ্রমিক, রাজনীতিবিদ, রূপসী মেয়েসহ আরও অনেকে।
কানাডার সবচেয়ে বিলাসবহুল অভিজাত হোটেলগুলোর একটি ব্যানফ স্প্রিং। আমেরিকান আর্কিটেক্ট ব্রুস প্রিন্সের সহায়তায় ১৮৮৭-১৮৮৮ সালের মধ্যে কানাডিয়ান প্যাসিফিক রেলওয়ের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হয়। এই হোটেলের আরেক পরিচিতি হল এটি অন্যতম ভূতুড়ে হোটেল। কথিত আছে, হোটেলটির সিঁড়িঘরে দুর্ঘটনায় একজন বিয়ের কনের মৃত্যুর কারণে এটি অভিশপ্ত স্থানে পরিণত হয়েছে। মেয়েটি বিয়ের সাদা গাউন পরা অবস্থায় তার স্বামীর আগমন পথের সিঁড়িতে মোমবাতি জ্বালাচ্ছিল। হঠাৎ একটা মোমের আগুন লেগে যায় মেয়েটির গাউনে। সে আতঙ্কিত অবস্থায় সিঁড়িতে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় এবং মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে তার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে বিয়ের গাউন পরা অবস্থায় তার আত্মাকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় হোটেলের বিভিন্ন স্থানে।
হোটেলটিকে ঘিরে আরও একটি ঘটনা রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে হোটেলটির ৮৭৩ নম্বর রুমে বাস করত একটি পরিবার। অজানা কারণে একদিন ঐ পরিবারের সবাই খুন হন। তারপর থেকেই শুরু হয় সব ভূতুড়ে কাণ্ড। রাতে আসবাবপত্র টানাটানির শব্দ, ছোট বাচ্চার কান্না, স্বামী- স্ত্রীর ঝগড়া এমন অনেক কিছুই ঘটতে থাকে। ঐ রুমে কেউ থাকার সাহস পেত না তাই কতৃপক্ষ ঐ রুমের কপাট আটকে দেয়, জানালাগুলো ও ঢেকে দেয় কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হলোনা, চলতেই থাকে ভূতুড়ে অত্যাচার।
চার্লস গেট হোটেল, বোস্টন
বোস্টনের চার্লস গেট হোটেলটি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হোস্টেল হিসেবে ব্যবহার করতো। কিন্তু একবার এক ছাত্র এখানে আত্মহত্যা করায় কর্তৃপক্ষ এমারসন কলেজকে ১৯৮১ সালে তা বিক্রি করে দেয়। তার পরেই আরেকবার লিফটে এক ছাত্রীর মৃত্যু হওয়ায় ধরে নেয়া হল যে হোটেলটি ভুতুড়ে। অনেক শিক্ষার্থী নাকি রহস্যময় ছায়া দেখতে পেয়েছিল। অনুসন্ধান করতে নেমে তারা এক রহস্যাবৃত সত্য উদ্ঘাটন করল। হোটেলের দেয়ালের ভেতরে এক গোপন কামরায় তারা কাল জাদু চর্চার প্রমাণ পায়। ১৯৯৪ সালে হোটেলটি নিলামে বিক্রি হয়ে গেলে কনডোমিয়ামে রূপান্তরিত করা হয়।